চায়ের কাপে চলছিল তুমুল আড্ডা। হঠাৎ-ই পাল্টে যায় দৃশ্যপট, শুরু হয় তীব্র বাতাস। ঝড়ো হাওয়ায় টপাটপ পড়তে থাকে আম। আর সেগুলো কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছেলে-বুড়োরা।
গ্রামগঞ্জে অহরহ দেখা গেলেও শহুরে জীবনে এ দৃশ্য ভার। ঝড়ে আম কুড়ানোর হারিয়ে যাওয়া সে দৃশ্য দেখা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সদরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বিকেলে আম কুড়ানোর ধুম পড়ে। অনেকেরই ছিল এটি প্রথম অভিজ্ঞতা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাহ উলফাৎ রহমান অর্পিতা তার মা-বাবার কাছে শুনেছেন আম কুড়ানোর কথা। তবে শহুরে জীবনে আম কুড়ানোর কোনো সুখস্মৃতির সুযোগ হয়ে ওঠেনি তার।
অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই বলছিলেন, ‘জীবনে কখনও ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোই হয়নি, অন্যরা গেলেও আমাকে বাসা থেকে কখনও যেতে দেয়নি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের হাসপাতাল রোড এলাকার জাহিদা ফেরদৌস মিম বলেন, ‘ঝড়ের সময় আম কুড়ানো আমাদের শহুরে জীবনে এখন অনেকটাই বিরল। তবে ঝড় হলে গ্রামে আম কুড়াতে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট বাচ্চার মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় রীতিমতো।
‘আমি একবার নানুবাড়িতে মামাতো বোনের সঙ্গে ঝড়ে আম কুড়িয়েছিলাম। ভাবতেই পারিনি প্রায় এক বস্তা আম কুড়াতে পারব আমরা। অন্য কোথাও এমন হয় কি না জানি না, তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম কুড়ানো সত্যি আনন্দের।’
শিবগঞ্জ উপজেলার পুখুরিয়া এলাকায় রাস্তার পাশের একটি বড় বাগানে দেখা যায় বেশ কয়েকজন শিশু আম খুঁজছে বাগানের মধ্যে। বাগানে থাকা কুঁড়েঘরে বসে আছেন বাগানটির পাহারাদার সাজেদুল ইসলাম।
তিনি জানান, কখনও আম কুড়ানোর ক্ষেত্রে কাউকে বাধা দেয়া হয় না। বছরের ফলে সবারই হক আছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আম উদ্যোক্তা আহসান হাবিব জানান, ‘আম কুড়াতে তার বাগানে কাউকে কখনও বাধা দেয়া হয় না, সব বাগানেই একই নিয়ম, যে যখন খুশি ঝড়ে পড়া আম কুড়াতে পারে।’
এ উদ্যোক্তা জানান, ঢাকাসহ শহরে থাকাদের আম কুড়ানোর আনন্দ দিতে তিনি আগামী বছর থেকে তার বাগানে মেলার আয়োজন করবেন। সেখানে ঘুরে ঘুরে আম কুড়ানো বা গাছ থেকে আম পেড়ে খাওয়ার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা।
ড. মাযহারুল ইসলাম তরু বলেন, ‘আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এখানকার আম পৃথিবী বিখ্যাত। এ অঞ্চলজুড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়, আম পাড়া থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের কিছু না কিছু আনন্দ জড়িয়ে থাকে।
‘এখানে শ্রমিকরা যেমন আমের পরিচর্যা করেন, তারপর আম উঠে গেলে তারা যে উপার্জন করেন সেটা দিয়ে তাদের পুরো বছরের খরচ উঠে যায়। যারা প্যাকেট করে তাদের একটা অর্জন আছে, যারা ট্রাকে তোলে তাদের একটা অর্জন আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবার গাছে যখন বড় বড় আম হয়, তখন বিভিন্ন ঝড়-ঝাপটায় আমগুলো পড়ে যায়। সে আমগুলো কুড়ানোর আবার একটা মজা আছে, আনন্দ আছে। আমরা যারা এ অঞ্চলের মানুষ তারা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আম কুড়িয়েই অনেক মজা করি।
‘এখানে একটা নিয়ম আছে যে, গাছ থেকে আম পড়ে গেলে সেটা যে পায়, সে সেটা নিয়ে নিতে পারে।’
আরও পড়ুন:খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে আরও ৪৩ কোটি টাকা আয় করেছেন আবদুস সালাম মুর্শেদী। এ নিয়ে তার মোট সম্পদ হয়েছে ১৩৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকার।
অন্যদিকে মুর্শেদীর ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদ গত পাঁচ বছরে ১৮ গুণ বেড়ে হয়েছে ২৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার।
এমপি থাকাকালীন আবদুস সালাম মুর্শেদীর বার্ষিক আয়ও বেড়েছে। পাঁচ বছর আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর বর্তমানে তার বার্ষিক আয় ৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আবদুস সালাম মুর্শেদী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্পদের এ হিসাব জমা দিয়েছেন।
আবদুস সালাম মুর্শেদীর হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে, বর্তমানে তার হাতে নগদ অর্থ রয়েছে ২৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বিভিন্ন কোম্পানিতে মুর্শেদীর শেয়ার রয়েছে ৯৪ কোটি ৪২ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের ভবন। গাড়ি, গৃহ, সম্পত্তি ছাড়াও অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। ব্যাংকে তার ঋণ রয়েছে ৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার।
আবদুস সালাম মুর্শেদীর স্ত্রীর কাছে ১ কোটি ৮৬ লাখ নগদ টাকা, ব্যাংকে ১৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা এবং ৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে। অন্যান্য সম্পদ রয়েছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের।
২০১৮ সালে মুর্শেদীর হলফনামায় উল্লেখ ছিল, তার বার্ষিক আয় ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর বার্যিক আয় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। তার নিজের ৯৫ কোটি ১১ লাখ টাকার, স্ত্রীর ২২ কোটি ৩১ লাখ টাকার এবং নির্ভরশীলের (মেয়ে) ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।
বর্তমানে নিজেকে পাবলিক-প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পোশাক শিল্প, বস্ত্রশিল্প, ব্যাংক, হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করেছেন আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস। তার নামে নেই কোনো মামলা।
২০১৮ সালের উপনির্বাচনে আবদুস সালাম মুর্শেদী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের দলের মনোনয়ন নিয়ে তিনি বিজয়ী হন।
রাজনীতিক হিসেবে মুর্শেদী যতটা পরিচিত, তার চেয়ে বড় পরিচয় খেলোয়াড় ও ব্যবসায়ী হিসেবে। ১৯৮২ সালে মুর্শেদী তার খেলোয়াড়ি জীবনে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অনুষ্ঠিত আশিস-জব্বার গোল্ড কাপে ১০টি গোল করার মধ্য দিয়ে মৌসুম শুরু করেন। ঢাকা মোহামেডানের হয়ে শিরোপা জয়ের পাশাপাশি এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে মুর্শেদী এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক ছিলেন।
বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন আবদুস সালাম মুর্শেদী। এর আগে তিনি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতির দয়িত্বও পালন করেছেন।
আরও পড়ুন:পুরো খুলনা শহরের মাদক ব্যবসা, ভূমি দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়াটে খুনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তিনটি শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বিশেষ শাখার প্রতিবেদনে তিন গ্রুপের অস্ত্রাধারী সদস্যদের অধিকাংশকেই পলাতক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাখা হয়েছে।
তবে তারা পুলিশের দৃষ্টির আড়ালে থাকলেও, থেমে নেই তাদের অপরাধের রাজত্ব। তাদের সরবরাহ করা অস্ত্র ও মাদক নিয়মিত শহর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে উদ্ধার হলেও, ওই সিন্ডিকেটের হোতারা রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ দমনে তারা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
আশিক গ্রুপ
কেএমপির বিশেষ শাখার তালিকায়, খুলনা শহরের বর্তমানে সব থেকে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে আশিক গ্রুপ। ওই বাহিনীর প্রধান আশিক নিজ নামে দলটি গঠন করেছে। তিনি খুলনা মহানগরীর সদর থানাধীন চানমারী এলাকার বাসিন্দা। ২০১৮ সালে ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম হত্যা মামলায় জড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত হন। এ পর্যন্ত তার নামে বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। তার দলে সদস্য রয়েছেন ২৩ জন। তাদের নামে মোট মামলা রয়েছে ১১০টি।
আশিক গ্রুপের প্রধান সহকারী ফয়সাল। তিনি খুলনা সদর থানাধীন দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ২০১৬ সালে তিনিও হত্যা মামলায় জড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আশিকের গ্রুপের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। তার নামে এ পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় আটটি মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া ওই গ্রুপের সদস্য আব্দুল্লাহর নামে ৯টি, জাহিদুল ইসলামের নামে ৩টি, বস মিজানের নামে ৭টি, পালসার সোহেলের নামে ৪টি, কাউট বাসারের নামে ২টি, হেলালের নামে ৮টি, পারভেজের নামে ৬টি, দুলালের নামে ৮টি, নাদিমের নামে ২টি, ডালিমের নামে ৩টি, অপুর নামে ৩টি, জিহাদ হোসেন জিয়ার নামে ৫টি, মো. সাগর লেলিনের নামে ৮টি, শেখ গোলাম মোস্তফা ওরফে ট্যারা মোস্তর নামে ২৭টি, আরমানের নামে ৭টি, সাইফুল ইসলাম পিটিলের নামে ৩টি, মো. ইয়াছিনের নামে ৫টি, মো. নিয়াজ মোর্শেদের নামে ৮টি, স্পিকার মিরাজের নামে ৩টি ও শেখ বাবুল শেখের নামে ২টি মামলা রয়েছে।
এসব মামলাগুলো হত্যা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় হয়েছে। এদের মধ্যে বস মিজান, পারভেজ, অপু, জিহাদ হোসেন জিয়া, মো. সাগর লেলিন বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে ওয়ারেন্ট জারি থাকলেও আশিক, ফয়সাল, ইমন, দুলাল পলাতক রয়েছেন।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আশিক গ্রুপের প্রধান, আশিকের বয়স মাত্র ২৭ বছর। ৭ বছর আগে এলাকার কিশোরদের নিয়ে তিনি গ্যাং সৃষ্টি করে মহড়া দিয়ে বেড়াতেন। পরে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ওই এলাকায় মাদক ও পরবর্তীতে অস্ত্র বিক্রি শুরু করেন। ধীরে ধীরে এলাকার জমি ব্যবসায়ী তাকে ভাড়ায় নিয়ে বিভিন্নজনের জমি দখল শুরু করেন।
বর্তমানে শহরের শীর্ষ মাদক সরবরাহকারীও আশিক গ্রুপ। সর্বশেষ গত ১ আগস্ট খুলনার রূপসা সেতু টোল প্লাজা থেকে ৯ হাজার ৩৫০ ইয়াবাসহ আশিকের আপন ভাই সজিবকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল, চট্টগ্রাম থেকে মাদকের বড় বড় চোরাচালান এনে খুলনা শহরে তা বিক্রি করে চক্রটি। ওই মামলায় কয়েকদিন আগে কারাগার থেকে জমিনে বের হয়েছেন সজিব। আশিক এখন পর্দার অন্তরালে থাকলেও, সজিব প্রকাশে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন।
নূর আজিম গ্রুপ
আশিক গ্রুপের পরেই সব থেকে বেশি অস্ত্রধারী সদস্য রয়েছে নূর আজিমের গ্রুপে। তাদের দলে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। ওই দলের নেতৃত্ব দেন শেখ নূর আজিম। তার বয়স মাত্র ২৬ বছর। তিনি নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। কিশোর গ্যাং সৃষ্টির মাধ্যমে ২০১৬ সালে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। বর্তমানে তার নামে মোট মামলা রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে খুলনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আপিলে বের হরে পরে পুনরায় হত্যা মামলায় আসামি হন। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাদের দলের সদস্যদের নামে মামলা রয়েছে ৫৮টি।
নূর আজিম পলাতক থাকায় ওই গ্রুপটির বর্তমান নেতৃত্বে রয়েছেন রাজু। তিনি নগরীর লবনচরা থানাধীন উকিলের কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা। তার নামে মোট মামলা রয়েছে ৭টি।
এ ছাড়া ওই গ্রুপের চেগা সোহেলের নামে ১টি, দাঁত ভাঙ্গা মামুনের নামে ১টি, মাসুদের নামে ১টি, মেহেদী হাসানের নামে ৫টি, বিকুলের নামে ৩টি, মিরাজ শিকদারের নামে ১টি, কাটা রাশেদের নামে ২টি, কালু সরদারের নামে ৪টি, কালা লাভলুর নামে ৩টি, সাদ্দাম মল্লিকের নামে ৫টি, টগরের নামে ২টি ও মো. রাশেদুল ইসলাম খোকনের নামে ২টি মামলা রয়েছে।
গত বছর ৬ অক্টোবর দুপুরে নগরীর চাঁনমারি খ্রিস্টানপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীরা পলাশ নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা ও সৌরভ নামে আরেক যুবককে কুপিয়ে আহত করে। ওই সময় পুলিশ জানিয়েছিল, স্থানীয় নূর আজিম গ্রুপ ও আশিক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। পলাশ আশিকের গ্রুপের সদস্য ছিল।
এরই জেরে আজিম গ্রুপের ৮ থেকে ১০ জন ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। নূর আজিম সেই থেকে এখনও ধরা পড়েনি। তবে ওই বছরের ২৮ অক্টোবর পশ্চিম টুটপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ দুটি পিস্তল ও একটি গুলির খোসাসহ নূর আজিমের সহযোগী নাহিদ হাসান সরদারকে গ্রেপ্তার করেছিল।
নূর আজিমের গ্রুপের সদস্য কাটা রাশেদ খুলনা সদর থানার একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। এ ছাড়া ওই গ্রুপের বাকি সব সদস্য বর্তমানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
গ্রেনেড বাবু গ্রুপ
খুলনা শহরে সব থেকে বেশি দিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে গ্রেনেড বাবুর গ্রুপ। ওই গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন রনি চৌধুরী। তিনি নগরীর সামশুর রহমান রোডের বাসিন্দা। বর্তমানে তার নামে মামলা রয়েছে ১৩টি। আর তার গ্রুপে অস্ত্রধারী সদস্য রয়েছেন ৬ জন। তাদের নামে মোট মামলা রয়েছে ৩৩টি।
গ্রেনেড বাবু গ্রুপের অন্যতম সদস্য শাহিদুর রহমান শাওন ওরফে টেঙ্কি শাওন। তিনি নগরীর বড় বয়রা বাজার এলাকার বাসিন্দা। তার নামে সর্বশেষ হত্যা মামলা হয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরে।
এ ছাড়া ওই গ্রুপের অস্ত্রধারী সদস্য মো. শাকিল, মো. সাব্বির শেখ, আসাদুজ্জামান রাজু ওরফে বিল রাজু ও বিকুলের নামে তিনটি করে মামলা রয়েছে।
২০১০ সালে হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়া থেকে গ্রেনেড বাবুর সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু হয়। মাদক বিক্রির আধিপত্য ধরে রাখার জন্য ওই বছরের ১০ জুন সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর হোসেন কচি নামের এক মাদক কারবারিকে তিনি হত্যা করেন। এ বিষয়ে পরেরদিন কচির বাবা ইলিয়াজ বাদী হয়ে গ্রেনেড বাবুর নাম উল্লেখ করে ৬ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর একই বছরের ২ নভেম্বর গ্রেনেড বাবু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরে ওই হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
চলতি বছরের ২৮ মার্চ ওই মামলায় গ্রেনেড বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আদালতের নথি থেকে পাওয়া গেছে, মাদকের টাকার ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে কচির সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। যার কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছিল।
সর্বশেষ গ্রেনেড বাবু গ্রুপের সদস্যরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে চলতি বছরের ৫ অক্টোবর। ওইদিন সন্ধ্যায় ইমন শেখ নামের এক যুবককে তারা গুলি করে হত্যা করে। যদিও ওই মামলায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, তবে হত্যাকাণ্ডের প্রধান শুটারকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রেনেড বাবু বর্তমানে ভারতে পলাতক রয়েছেন। তবে তার অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা খুলনাতে সক্রিয় রয়েছে।
তিন গ্রুপের সংঘর্ষ আধিপত্য নিয়ে
কেএমপির বিশেষ শাখার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরো খুলনা শহরে অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করে এই তিনটি গ্রুপ। আর এলাকাভিত্তিক মাদক বিক্রির আধিপত্য ধরে রাখতে তারা বার বার হত্যাকাণ্ডের মতো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।
গত ৫ অক্টোবর নগরীরতে ইমন শেখ হত্যাকাণ্ডটিও ঘটেছিল মাদক বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ওই সময়ে ইমনের বাবা সানোয়ার শেখ জানিয়েছিলেন, ইয়াবা বিক্রির সিন্ডিকেটের সদস্যরা তার ছেলেকে হত্যা করেছে।
পুলিশের সূত্র থেকে জানা গেছে, ইমনের বাড়ি ছিল নগরীর গোবরচাকা এলাকায়। এক বছর আগে তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে তিনি মাদক বিক্রি শুরু করেন। তবে ওই এলাকায় আগে থেকেই মাদক বিক্রির সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করত গ্রেনেড বাবু গ্রুপের অনুসারী সৌরভ। তার সঙ্গে কালা তুহিন, চিংড়ি পলাশ, ব্লাক রাজুসহ কয়েকজন মিলে গৌবরচাকা এলাকায় মাদক সরবরাহ করত। তবে ইমন শেখ ও তার সঙ্গীরা অন্য কোনো গ্রুপের কাছ থেকে ইয়াবা এনে গৌবরচাকা এলাকায় বিক্রি শুরু করেছিল। যার ফলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে গ্রেনেড বাবু গ্রুপের সদস্য শাহিদুর রহমান শাওন ওরফে টেঙ্কি শাওনের উপরে একাধিক বার গুলি ছুড়েছে নূর আজিমের গ্রুপের সদস্যরা। মূলত জমির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে শাওনের বাবা, দাদা ও চাচাসহ একই পরিবারের সাত সদস্য প্রতিপক্ষের হাতে বিভিন্ন সময়ে খুন হন। তাদের হাত থেকে রেহায় পেতে গ্রেনেড বাবু গ্রুপে যুক্ত হয় শাওন।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত চার বার শাওনকে হত্যা চেষ্টা করেছে নূর আজিম গ্রুপ। সর্বশেষ গত ১৯ মে তার ওপর নগরীর বয়রা এলাকায় গুলি ছোড়া হয়েছিল।
এ ছাড়া গত বছরের ৬ অক্টোবর পলাশ নামের এক যুবককে লবনচরা এলাকায় হত্যা করা হয়েছিল মাদক বিক্রির এলাকার দখল নিয়ে। পলাশ আশিকের গ্রুপের হয়ে লবনচরার ভুতের আড্ডা পার্ক এলাকায় মাদক বিক্রি করত। ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য নূর আজিম গ্রুপের সদস্যরা তাকে হত্যা করেছিল।
নির্বাচনে রাজনৈতিক ব্যবহারের আশঙ্কা
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনার সম্পাদক আইনজীবী কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে, তারা তো সুবিধাবাদী। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের পক্ষে কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। আর আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রমনা না। তারা বিভিন্ন সময়ে নিজের পক্ষে ভোট নেয়ার জন্য এই অশুভ শক্তিগুলিকে কাজে লাগায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে পুলিশকে সচেতনতার সঙ্গে ভূমিকা পালন করতে হবে। তা না হলে এই গ্রুপগুলো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার ভূমিকা পালন করবে। কারণ এদের কোনো দল নেই, যারা তাদের হায়ার করবে, তাদের পক্ষে কাজ করবে।’
কেএমপির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ মূলত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এদের সঙ্গে এখনও কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
‘এদের নামে যতগুলো মামলা আছে, তাতে রাজনৈতিকভাবে যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি। তবু জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেন অরাজকতা করতে না পারে, সে লক্ষ্যে পুলিশ কাজ করছে।’
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ দিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম শনিবার জানান, নিবন্ধিত ২৯টি রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৭৪৭ জন।
ইসি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে সবচেয়ে বেশি ৩০৪টি মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থীরা। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া জাতীয় পার্টিরও ৩০৪ জন জমা দেন মনোনয়নপত্র।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুটি মনোনয়নপত্র জমা দেয় হারিকেন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি তথা জেপি (বাইসাইকেল) ২০, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয়, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি তথা ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ছয়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল তথা জাসদ (মশাল) ৯১, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৪, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ১৪২, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭, বাংলাদেশ মুসলিম লিগ তথা বিএমএল (পাঞ্জা) পাঁচ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট তথা বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬, তৃণমূল বিএনপি (সোনালি আঁশ) ১৫১, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (নোঙ্গর) ৪৯ ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (একতারা) ৮২টি মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর নাগাদ। আপিল নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর।
১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা চলবে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শনিবার সকালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার এ ভূমিকম্প টেরই পাননি অনেকে।
এ ধরনের কম্পনের পর একটি আলোচনা ঘুরেফিরে আসে। সেটি হলো বড় কোনো ভূমিকম্পের কবলে দেশ পড়তে যাচ্ছে কি না।
ভূমিকম্প নিয়ে গবেষকদের পূর্বাভাসও আলোচনায় আসে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঢাকায় গত ৫ মের ভূমিকম্পের পর ডাচ ভূতত্ত্ববিদ ফ্র্যাংক হুগারবিটসের একটি পূর্বাভাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সোলার সিস্টেম জিওমেট্রি সার্ভে (এসএসজিইওএস) নামের সংস্থার ইউটিউব চ্যানেলে ২ মে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন এ ভূতত্ত্ববিদ, যেখানে তিনি ভারতের আসাম, বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে চলতি বছর বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা বলেছেন। ৫ মে তার সেই ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে গিয়ে অনেকে বাংলাদেশে ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানিয়ে আসেন।
এর আগে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক-সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের সময়ও ভূতত্ত্ববিদ হুগারবিটস আলোচনায় এসেছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, তিনি ‘সঠিক’ পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
হুগারবিটসের পোস্ট করা ভিডিও দেখে কারও কারও মধ্যে জিজ্ঞাসা দেখা দিতে পারে যে, ভূমিকম্প আগে থেকে আঁচ করা যায় কি না। এর স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ভাষ্য, ইউএসজিএস কিংবা অন্য কোনো সংস্থার বিজ্ঞানীরা কখনও বড় ভূমিকম্প নিয়ে পূর্বাভাস দেননি।
ইউএসজিএসের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, নির্দিষ্ট কয়েক বছরের মধ্যে কোনো এলাকায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে হিসাব-নিকাশ করতে পারেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নামী প্রতিষ্ঠান ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ক্যালটেক) মতে, ঠিক কখন এবং কোথায় ভূমিকম্প হবে, সেটা আগে থেকে ধারণা করা সম্ভব নয়। ভূমিকম্প কতটা ব্যাপক হবে, তা নিয়েও পূর্বাভাস দেয়া যায় না।
এ বিষয়ে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ মেহেদী হাসান আনসারী নিউজবাংলাকে বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে আগে থেকে অনুমান করা যায় না।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ‘মাথাব্যথার কারণ’ হয়ে উঠেছেন দলটির মনোনয়নবঞ্চিতরা। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এসব নেতা। ব্যতিক্রম কেবল তিন মন্ত্রীর আসনসহ চারটি। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন।
সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতরা। সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন একজন। তবে তিন মন্ত্রী এমএ মান্নান, ইমরান আহমদ ও শাহাবুদ্দিন আহমদের আসনে দলের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।
সিলেট বিভাগের চার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগের মধ্যে কেবল সিলেট-৪, সুনামগঞ্জ-৩, মৌলভীবাজার-১ ও হবিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। এ আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যথাক্রমে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাবুদ্দিন আহমদ এবং হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু জাহির।
এবার দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পরই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার লক্ষ্যে মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই নির্দেশনা পেয়ে ক্ষমতাসীন দলটির মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার হিড়িক পড়ে।
দেশের প্রায় প্রতিটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এসব ডামি প্রার্থীই ‘যন্ত্রণার কারণ’ হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকটা স্বস্তিতে আছেন মান্নান, ইমরান ও শাহাবুদ্দিন। তাদের আসনে নেই কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে দলের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে না ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে। এ আসনে মন্ত্রীসহ সাত প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। বাকি ছয়জন হলেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী তৌফিক আলী মিনার, গণফ্রন্টের মকবুল হোসেন, জাকের পার্টির নজরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান খালেদ।
এই আসনে এমএ মান্নান ছাড়াও চারজন আওয়ামী লীগের পক্ষ তেকে চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তারা হলেন- কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খায়রুল কবীর রুমেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম। তবে তাদের কেউ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু বলেন, ‘জগন্নাথপুরের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করবে। এখানে কেউ দলের বিরুদ্ধে যাবে না।’
মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনেও আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। এ আসনে নৌকার প্রার্থী শাহাব উদ্দিন আহমদ। এর আগে টানা দুবারসহ তিনবারের সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।
এ আসনে ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, কুলাউড়া থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে তাদের কেউই ডামি প্রার্থী হতে আগ্রহী হননি।
এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘এই দুই উপজেলার মানুষ নানাভাবে অনুরোধ করেছে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে। কিন্তু নৌকার বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার মনমানসিকতা নেই। দলীয় প্রার্থীর জয়ের জন্য কাজ করব।’
রফিকুল ইসলাম সুন্দর বলেন, ‘নৌকা পেলে নির্বাচন করার প্রস্তুতি ছিল। নেত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য, পরিবেশমন্ত্রীকে নৌকা দিয়েছেন। দলীয় পদধারী বা আওয়ামী লীগের সমর্থক কেউ এ আসনে ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নেই।’
এ আসনে শাহাবুদ্দিন ছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ধর্মভিত্তিক সংগঠন আল ইসলাহ নেতা কাজী ময়নুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ (ভান্ডারি)।
সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর-কোম্পানীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ আসনে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আরও সাতজন। তবে তারা কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। ইমরানকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তারা।
এখানে আওয়ামী লীগের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. ফজলুল হক, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাপ মিয়া, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া হেলাল, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম রোমেন এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজাহান চৌধুরী।
এ বিষয়ে শ্রমিক লীগ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম রোমেন বলেন, ‘আমরা কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হব না। দলের প্রার্থীর বিজয়ে কাজ করব।’
সিলেট বিভাগের তিন মন্ত্রী ‘ডামির যন্ত্রণা’ থেকে রেহাই পেলেও সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে পড়তে হচ্ছে ডামির চ্যালেঞ্জে। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
আরও পড়ুন:সকাল-সন্ধ্যা হিমেল হাওয়া এসে লাগলেও গা গরম রাখার পোশাকের কাটতি বাড়েনি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে।
সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার উপজেলার কয়েকটি বাজারের বিভিন্ন দোকানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
উপজেলার ভানুগাছ, শমশেরনগর ও পতনঊষার বাজারের দোকানগুলোতে দেখা যায়, শীতের পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন কাপড় ব্যবসায়ীরা, তবে বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না।
বিক্রি জমজমাট হওয়ার প্রত্যাশায় আছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য, শীতের শুরুতে গরম কাপড় কেনার প্রবণতা এবার কম। তাই চাহিদা নেই বললেই চলে। ঘুরতে এসে কেউ কেউ কিনছেন ছোটদের শীত কাপড়।
বড় ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত শীতের কাপড় বিক্রির বাজার জমে ওঠে অক্টোবরের শেষে ও নভেম্বর মাসে, তবে এবার এখনও ব্যবসা জমেনি।
ফুটপাতের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের গরম কাপড়ের ব্যবসা মূলত হয় নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। এ মাসে ভালো বেচাবিক্রির আশা করছেন তারা।
খুচরা বিক্রেতারা আরও জানান, শীত বাড়েনি বলে গরম কাপড়ের বিক্রি বাড়েনি। এ ছাড়া স্বাভাবিক বিক্রি কম হওয়ার পেছনে হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রভাবও রয়েছে।
কেন বিক্রি কম জানতে চাইলে কমলগঞ্জের পতনঊষার বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের সিজনে প্রতিদিন বিক্রি করতাম ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সারা দিনে এখন বিক্রি হয় এক থেকে দুই হাজার টাকা। আবার সব দিন এ রকম বিক্রিও হয় না।
‘হরতাল-অবরোধের কারণে বেচাকেনা অনেক কম। দোকান ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।’
ভানুগাছ বাজারের মা মনি বস্ত্রালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো. সোলাইমান বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে বেচাকেনা কম হচ্ছে। দূরদুরান্ত থেকে এই এলাকায় মানুষ ঘুরতে এসে এসব পোশাক কিনে নেন, কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে মানুষ তেমন আসছেন না। এ কারণে আমাদের বিক্রিও বাড়ছে না।
‘গ্রামগঞ্জের মানুষ কতই আর কেনাকাটা করবে। আমাদের পণ্য বিক্রির বেশির ভাগ ক্রেতা দূরদুরান্তের মানুষরাই।’
তিনি জানান, স্থানীয়ভাবে যেসব ক্রেতা আসছেন, তারা শিশুদের জন্য কিছু কাপড় কিনে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার দরদাম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকছেন।
আরও পড়ুন:ভালোবাসার টানে এক হয়ে গেল দুই দেশের কয়েক হাজার মাইলের দূরত্ব। সূদুর ইউরোপ থেকে ৫ বছরের প্রণয়কে বিয়েতে রূপ দিতে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন সাইপ্রাসের এক তরুণী। সাতসমুদ্র পাড়ি দিয়ে অবশেষে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন সাভারের যুবক শামীম আহমেদের সঙ্গে। এরই মধ্যে শ্বশুড়বাড়ি, আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশীদের মন জয় করে নিয়েছেন ভিনদেশী এই নারী। পরদেশী বউ পেয়ে দারুণ খুশি শামীমের পরিবারও।
শুক্রবার সাভারের আশুলিয়ার গাজীরচট আয়নাল মার্কেট এলাকায় মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শামীমের স্ত্রীকে ঘিরে চলছে উৎসব। আত্মীয়স্বজন আর পাড়াপ্রতিবেশীরা ছুটে আসছেন ভিনদেশী বউকে একবার দেখতে। সাইপ্রাসের নাগরিক আন্থি তেলেবান্থুও সবাইকে আপন করে নিয়েছেন।
গত ২৭ নভেম্বর আশুলিয়ায় শামীমের বাড়িতে আসেন আন্থি তেলেবান্থু। ৩০ নভেম্বর ঢাকা জজকোর্টে বাংলাদেশের আইন অনুসারে বিয়ে করেন আন্থি ও শামীম।
আন্থির সঙ্গে পরিচয় ও প্রণয়ের বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, ‘স্টুন্ডেন্ট ভিসায় ২০১৫ সালে আমি সাইপ্রাস চলে যাই। সেখানকার সিডিএ কলেজে ভর্তি হওয়ার পর লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম চাকরি নেই। একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সুবাদে আন্থির সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। একসময় আমরা দুইজনকে পছন্দ করা শুরু করি। পরে তা প্রণয়ে রূপ নেয়।
‘সাইপ্রাসের লিমাসোল শহরে আন্থির বাসায় আমার যাওয়া-আসা শুরু হয়। ওর পরিবারের সঙ্গেও আমার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে আমি দেশে ফিরে আসি। তারপরও আমাদের দুজনের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ ছিল। সে আমার পরিবারের সঙ্গেও ভিডিও কলে কথা বলত।’
তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই সে বাংলাদেশে আমার বাড়িতে আসার জন্য উদগ্রীব ছিল। এরপর গত ২৭ নভেম্বর সে সত্যি সত্যিই বাংলাদেশে চলে আসে। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমরা দুজন গতকাল ঢাকা জজকোর্টে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরিবারের সঙ্গে আন্থি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। আট-দশটা বাঙালি বউদের মতোই সবার সঙ্গে মিশতেছে। তার বাঙালি বউ হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাইকে মাতিয়ে রাখছে সে।’
নিউজবাংলাকে নববধূ আন্থি তেলেবান্থু বলেন, ‘আমরা দুজন একসঙ্গে কাজ করেছি। তারপর বন্ধু হয়েছি এবং আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে একজন ভালো চরিত্রের মানুষ হিসেবেই জানি। সে অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে পছন্দ করে। এসব থেকেই আস্তে আস্তে আমি তার প্রেমে পড়ে যাই। আমার পরিবার শামীমকে অনেক পছন্দ করে। তারাও আমাদের এই সম্পর্ক মেনে নিয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ।’
শামীমের চাচা ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশী মেয়ে হলেও ওর সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে। গত তিন দিন ধরে যখনই সে আমার সামনে এসেছে ঘোমটা পরে এসেছে, বাঙ্গালি মেয়েদের মতো। সে আমাদের মতোই শাকসবজি, তরকারি খাচ্ছে। আমার পূত্রবধূকে নিয়ে কোনো সমস্যা পরিবারে নাই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য