বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানতে চেয়েছেন, জাতিকে শেখ হাসিনা আর কত দেবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে শনিবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ আরও অনেক প্রকল্প হচ্ছে। আর কত দেবেন? একটা জাতিকে তিনি আর কী দেবেন?’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘১৯৭৫-এর পর থেকে এখন পর্যন্ত গত ৪৭ বছরে সবচেয়ে সৎ এবং সাহসী নেতা, দক্ষ প্রশাসক আর সফল কূটনৈতিক হলেন শেখ হাসিনা। ১৩ বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশ মিলিয়ে দেখেন। শেখ হাসিনা এই দেশে ছিলেন বলেই বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর স্বপ্ন আজ সত্যে পরিণত হয়েছে। জুন মাসের চন্দ্রদীপ পূর্ণিমা রাতে পদ্মা সেতু থেকে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষ পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পাবে। আমরা আগামীকাল নেত্রীকে সামারি পাঠাব। তিনি যে সময় নির্ধারণ করে দেবেন, আমরা সে সময় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করব।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ ভালো থাকলে মির্জা ফখরুলের মন খারাপ হয়। পদ্মা সেতু হয়ে গেছে, কর্ণফুলী টানেলও হয়ে গেছে। মেট্রোরেল হয়ে যাচ্ছে। বিএনপির জ্বালা! এ এক মধুর জ্বালা।
‘শেখ হাসিনা সব করে ফেলল। আমরা কিছুই পারলাম না। নির্বাচন আসছে। কী দেখিয়ে ভোট চাইবেন? নেতাটা কে? পলাতক, দণ্ডিত তারেক রহমান? প্রধানমন্ত্রী কে হবে? দণ্ডিত ব্যক্তি?’
বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, `যতদিন শেখ হাসিনা নেতৃত্বে থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা নয়, বাংলাদেশকে তুলনা করা হবে আমেরিকা, ইউরোপের সঙ্গে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক তার বক্তব্যে বিএনপির নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল অনেক বেশি কথা বলেন, যেগুলোর কোনো যুক্তি নেই।’
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রেক্ষাপট এবং তৎকালীন সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
পদ্মা সেতুর নামকরণ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু কীভাবে নির্মিত হয়েছে সেটা আমরা জানি। এই সেতুর জন্য জননেতা ওবায়দুল কাদেরসহ অন্য নেতারা ‘শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু’ নাম প্রস্তাব করেছেন।”
সামাদ বলেন, ‘আমি উসকানি দিতে চাই না, উৎসাহিত করছি। পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধুকন্যার নামে হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগেরও দায়িত্ব আছে। আমি শুধু এইটুকু বললাম। বাকি কী করবেন সেটা আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন:আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি একেবারে সমানে সমান।
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়া ২৮টি দলের মধ্যে ১৪টি দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে, বাকি ১৪টি দল মনে করে এই যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়।
অবশ্য এই ২৮টি দলের বাইরে আরও ১১টি দল রয়েছে, যারা দৃশ্যত ভোটে ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে। কিন্তু তারা নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়নি। তাদের সবার মত এলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।
দেশে ব্যালটে ভোটের পাশাপাশি ইভিএমের ব্যবহার চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও এর ব্যবহার নিয়ে ভাবছে নির্বাচন কমিশন। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আর বিষয়টি নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর মতামত নিয়েছে তারা।
মোট তিন দফায় ৩৯টি দলের সবগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে আওয়ামী লীগ ও সমমনারা সবাই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। বিএনপি ও সমমনারা সংলাপ বর্জন করেছে। কোনো বলয়ে নেই, এমন দলগুলোর অনেকেই ইভিএম ব্যবহার না করতে বলেছে।
বিতর্ক কী নিয়ে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও সমমনারা এই যন্ত্রের বিরোধিতা করে আসছে শুরু থেকেই। তাদের দাবি, এই যন্ত্র দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
যদিও ইভিএম ব্যবহার হয়েছে, এমন ভোটে এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি বিরোধীরা। বরং ইভিএমে ভোটার নিজে উপস্থিত না হলে ভোট দেয়া সম্ভব নয়। এখানে যে সমস্যাটি দেখা দিয়েছে সেটি হলো আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর অন্য কেউ গোপন বুথে গিয়ে বাটন চেপে দিয়েছে।
এভাবে গোপন বুথে থেকে অন্যের ভোট যারা দিয়ে দেয়, তাদের একজন নির্বাচন কমিশনার নাম দিয়েছেন ‘গোপন বুথে ডাকাত’। এই ডাকাত ঠেকাতে কেন্দ্রের ভেতর ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও বসানো হয়েছে।
তবে কমিশনের এসব উদ্যোগেও ইভিএম নিয়ে অবস্থান পাল্টায়নি এর বিরোধীরা।
নির্বাচন কমিশনের সংলাপ কী নিয়ে
বর্তমান কমিশন ক্ষমতায় আসার পর গত ১৫ জুন প্রথমবার যে ভোটের পরীক্ষা দেয় তাতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এবং শতাধিক ইউনিয়নে ব্যবহার করা হয় ইভিএম। এর মধ্যে হাতিয়ার দুটি ইউনিয়ন ছাড়া বাকি সব এলাকায় ভোট হয় শান্তিপূর্ণ। ইভিএম নিয়ে অন্য কোথাও কোনো কারচুপির অভিযোগ ওঠেনি, তবে আঙুলের ছাপ দিয়ে পরিচয় শনাক্তে অনেক ভোটারকে গলদঘর্ম হতে হয়েছে। ভোটগ্রহণে ধীরগতিও দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকায়।
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয় বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসতে। তবে বেশির ভাগ দলই যন্ত্রটি যাচাইয়ে টেকনিক্যাল পার্সন বা প্রযুক্তিবিদ নিয়ে আসেনি।
প্রথম দফায় অংশ নেয়া ১০টি দলের কেউ টেকনিক্যাল পার্সন আনেনি। দ্বিতীয় দফায় উপস্থিত আটটি দলের মধ্যে চারটি রাজনৈতিক দল নিয়ে আসে বিশেষজ্ঞদের। তৃতীয় দফায় ১০টি দলের মধ্যে কেবল জাকের পার্টি টেকনিক্যাল পার্সন নিয়ে উপস্থিত হয়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২৮টি দলের মধ্যে ৫টি প্রযুক্তিবিদ নিয়ে ইসির ডাকে সাড়া দেয়।
সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তার সিদ্ধান্ত জানাননি। বলেছেন, সব দলের মতামত তারা লিপিবদ্ধ করেছেন। এরপর তারা নিজেদের সামর্থ্য পর্যালোচনা করবেন। তার পর হবে সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আলমগীর নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ১০০ আসনে ইভিএমে ভোট করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের হাতে ১ লাখ ৫৪ হাজার যন্ত্র রয়েছে। এসব যন্ত্র দিয়ে ১০০ আসনের বেশি ভোট করা যাবে না।
ইভিএমের পক্ষে যারা
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনেই ইভিএম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। তার জোটের শরিক জাসদসহ কয়েকটি দল ইভিএমের পক্ষে বললেও এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে যন্ত্রটি ব্যবহার করে জনমত গঠনের পরামর্শ দিয়েছে।
অন্য যে দলগুলো ইভিএমের পক্ষে বলেছে, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শরিক দলই বেশি। এগুলো হলো: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল-এমএল, গণতন্ত্রী পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), বিকল্প ধারা।
এর বাইরে জাকের পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশও ইভিএমের পক্ষে বলেছে। এরা আওয়ামী লীগের শরিক না হলেও দলটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলে।
বিএনপির জোট থেকে বের হয়ে আসা ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপিও ইভিএমের পক্ষে বলেছে।
ইভিএমবিরোধী যারা
যেসব দল ইভিএমের বিরোধিতা করেছে, তাদের মধ্যে কেবল একটি দলের জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে। সেটি হলো জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
অন্য দলগুলো হলো মুসলিম লীগ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক অন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ কংগ্রেস, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, ইসলামিক ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ফ্রন্ট, গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাপ ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
যেসব দলের ইসির সভা বর্জন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি তার জোটের শরিক দলগুলো এই সংলাপে আসেইনি।
দলগুলো হলো এলডিপি, কল্যাণ পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।
২০ দল থেকে বের হয়ে যাওয়া আন্দালিব রহমান পার্থের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপিও সংলাপে অংশ নেয়নি।
গত নির্বাচনের আগে করা বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্ট থেকে বের হয়ে আসা আবদুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ কমিশনের সংলাপ বর্জন করে।
বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখা চরমোনাইয়ের পিরের ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদও আলোচনায় আসেনি।
ইসির হাতে কত ইভিএম
বর্তমানে ইসির কাছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বুথ থাকতে পারে আড়াই লাখের মতো। সব দলের অংশগ্রহণে এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩, কক্ষ ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৭, ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩ জন।
দশম সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোট হয়েছে অর্ধেকের মতো আসনে। বাকিগুলোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হওয়ায় সেখানে কেন্দ্রসংখ্যা ছিল কম।
সব দলের অংশগ্রহণে গত সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ছিল ৪০ হাজার ১৮৩টি। আর বুথ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি, ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। এখন ভোটার ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। বছরে বাড়ে গড়ে ১৫ লাখের মতো। সেই হিসাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটার হতে পারে সাড়ে ১১ কোটির বেশি। ফলে ওই নির্বাচনে কেন্দ্র আর বুথের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।
প্রতিটি বুথে গড়ে ১.৫টি করে ইভিএম থাকে। অর্থাৎ প্রতি ১০টি ইভিএমের বিপরীতে পাঁচটি থাকে ব্যাকআপ হিসেবে। এই হিসেবে কমিশনের কাছে যে দেড় লাখ ইভিএম আছে, সেগুলো আসলে এক লাখ বুথে ব্যবহার করা যাবে। আগামী নির্বাচনে বুথ হতে পারে ২ লাখ ৪০ হাজার। সব বুথে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে কমিশনের হাতে থাকতে হতো ৩ লাখ ৬০ হাজার ইভিএম।
আরও পড়ুন:সারা দেশে ছাত্রলীগ কিশোর-তরুণদের পড়াশোনা থেকে বিচ্যুত করে বখাটে বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের বানানো এই বখাটে শিক্ষার্থীরাই শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করছে, প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বুধবার বিকেলে মানববন্ধনে তিনি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে হেনস্তার প্রতিবাদ এবং সাভারে কলেজশিক্ষক উৎপল কুমার বিশ্বাসের হত্যাকারীর বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
মানববন্ধনে আসিফ বলেন, ‘ছাত্রলীগই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে। এই ছাত্রলীগই কুয়েটে একজন শিক্ষককে মানসিক নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিয়েছে।
‘আমি নিশ্চিত, সাভারের শিক্ষক হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলে, সেখানেও ক্ষমতাসীন দল কিংবা তাদের ছাত্রসংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে।’
কলেজশিক্ষক উৎপল কুমারের হত্যার বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আখতার হোসেন। বলেন, ‘আজ দেশে সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু, হিন্দু কিংবা মুসলিম কেউই নিরাপদে নেই।
‘বাংলাদেশে কেবল ভালো আছে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টভোগীরা। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু বিভাজন করা যাবে না।’
আখতার বলেন, ‘একজন হিন্দু ভাই নিপীড়িত হলে আমি একজন মুসলিম ভাই হিসেবে তার প্রতিবাদ জানাব। একজন মুসলিম ভাই নিপীড়িত হলে আমার একজন হিন্দু ভাই তার প্রতিবাদ জানাবে। আর এভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, ‘নড়াইলে ক্লাস থেকে তুলে নিয়ে একজন শিক্ষককে হেনস্তা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস থেকে তুলে নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের একজন কর্মীকে ছাত্রলীগের হামলা সবই এক সূত্রে গাঁথা।
‘ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে দেশের মানুষকে বিভাজিত করে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে সংসদে পেয়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বুধবার তিনি রওশন এরশাদের খোঁজ নেন।
বিকেল ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ অধিবেশনে প্রবেশ করেন। অধিবেশনে ঢুকে রওশন এরশাদকে দেখতে পান তিনি। নিজের সিটে গিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যান বিরোধীদলীয় নেতার কাছে। তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন, শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ গত বছরের ৫ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা শেষে সাত মাস পর সোমবার দেশে ফেরেন তিনি।
এর আগে ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) টানা ৮৪ দিন ভর্তি ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা।
দুই নেতার কথোপকথনের সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ নূর ই আলম।
রওশন এরশাদ তার জন্য নির্ধারিত আসনে বসে কথা বলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেটের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও বিরোধীদলীয় নেতা সংসদে যোগ দেয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুধু যোগদানই নয়, বাজেট আলোচনায়ও অংশ নিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলো পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ায় অনেকে অনেক কথা বলেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। পদ্মা সেতু হবে না বলেও অনেকে মন্তব্য করেছিলেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় নিয়ে বুধবার বিরোধীদলীয় নেতা এসব কথা বলেন।
বাজেট অধিবেশনে তিনি আজকেই প্রথমবারের মতো যোগ দেন। গত বছরের ৫ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান তিনি। চিকিৎসা শেষে গত সোমবার ৭ মাস পর দেশে ফেরেন তিনি।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিলে বিদ্রুপ করেছেন অনেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ়তা, সাহস, বিচক্ষণতা আর দূরদর্শীতা দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। চুনকালি পড়েছে সমালোচকদের মুখে।’
বিরোধীদলীয় নেতা পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। বলেন, ‘দেশের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। পদ্মা সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি দেশের সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে, এত সমস্যা মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।’
এই সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক লাইফলাইনরূপে কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য, আঞ্চলিক বাণিজ্য, দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগ, শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা, কৃষি সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।’
প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন দেশের সাবেক এই ফাস্ট লেডি। তিনি বলেন, ‘আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যবৃদ্ধিজনিত বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান, বেসরকারি বিনিয়োগ অব্যাহত রেখে কর্মসৃজন, আমদানি সহনীয় পর্যায়ে রেখে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ স্থিতিশীল রাখা, ব্যাংক ঋণের সুদের হার বর্তমান হারে রাখা, করের আওতা বৃদ্ধি করে রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানো ও বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনা এ চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম।’
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর কৌশল নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ এ নীতি নির্ধারক বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য টেকসই গণতন্ত্রের প্রয়োজন। সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, ও সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক হবে। এটাই গণতন্ত্রের মূলনীতি। আমাদের সবাইকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়া শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম ভুট্টোকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দেশটির রাজধানী সিউলে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দক্ষিণ কোরিয়া আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম হাছান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে দুই জন সদস্য নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করেন। সেই অবৈধ কমিটির নামে ব্যানার টানিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সভা করেন। সেই আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এসব কারণে রফিকুলকে আওয়ামী লীগের দক্ষিণ কোরিয়া শাখা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞতিতে জানানো হয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে যারা ষড়যন্ত্র কিংবা বিরোধিতা করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার পক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বিরোধিতা করেছে। ড. ইউনূস হোক আর তার সাঙ্গপাঙ্গ হোক। তাদের বিচার করা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।’
রাজধানীর সিরডাপে বুধবার এক গোলটেবিল আলোচনায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
‘পদ্মা সেতু: সম্প্রীতির পথে সাফল্যের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সম্প্রীতির বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা দেশের উন্নয়নের বিরোধিতা করেছে অথবা অসত্য তথ্য সরবরাহ করেছে, বাংলাদেশের দণ্ডবিধির প্রচলিত আইন অনুযায়ী তারা অপরাধী।’
‘আজকে তাদের ছেড়ে দিলে অনেকে মনে করবে এসব করলে তো কিছুই হয় না। আমি একজন আইন পেশার মানুষ হিসেবে মনে করি তারা দেশের প্রচলিত আইন, দণ্ডবিধি, বিশেষ ক্ষমতা আইনে তারা অপরাধী।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমার তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, এটি তার হৃদয়ের বিশালতা।
মন্ত্রী বলেন, ‘এখনও যারা মিথ্যাচার করছেন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ দরকার।’
‘যারা উন্নয়নের বিরুদ্ধে কথা বলে, তারা প্রেস ক্লাব কিংবা সিরডাপে এসে সভা-সেমিনারে অনেক বড় বড় ভাষণ দেয়। আজকে পেপারে দেখলাম, পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্র পদ্মা সেতু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের অনুসারী যারা বাংলাদেশে আছেন, তারা প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতুর জন্য এখনও অভিনন্দন জানাতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। অবৈধ পথে যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন বন্ধ করতে চেয়েছে তাদের মুখে চপেটাঘাত। সারা দেশের যেখানেই যাবেন শেখ হাসিনার কৃতিত্ব খুঁজে পাবেন।’
আলোচনায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে ষড়যন্ত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একা ছিলেন না বলে জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ড. ইউনূস তিনি কি একাই ষড়যন্ত্র করেছিলেন? তার সঙ্গে কি এদেশের সংবাদপত্র ছিল না? সংবাদপত্রের সম্পাদক কয়েকজন ছিল না তার সাথে? তারাও তার (ড. ইউনূস) সাথে ছিল তো। তারাও ষড়যন্ত্র করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ছিল তার সঙ্গে। তার নেতৃত্বে গুলশানে, একটি জনপ্রিয় পত্রিকার সম্পাদক, ড. ইউনূস, তার প্রতিনিধি সভা করেছে পদ্মা সেতুর লোন কী করে বাতিল করা যায় বিশ্বব্যাংককে দিয়ে। অনেক প্রচারমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।’
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অসীম সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান।
বিএনপির ওপর সরকার নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে দলের নেতারা যে অভিযোগ করে আসছেন, তাকে কল্পিত বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের ব্যর্থতা ও হতাশা ঢাকতে সরকারের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিবের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বিরোধী দল দমনে সরকার হিংস্র রূপ ধারণ করেছে– ফখরুলের এমন অভিযোগ নিয়ে কাদের বলেন, ‘তার এমন অভিযোগের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি চিরাচরিত মিথ্যাচারের অপরাজনীতি থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি।’
তিনি বলেন, “বিএনপি মহাসচিবের উপস্থিতিতে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতারা বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে '৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বক্তৃতা প্রদান করেছে। এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ফৌজদারি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার পরও বিএনপি নেতাদের দমনে হিংস্র আচরণ তো দূরের কথা, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।’’
বিএনপি নেতারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে এবং তাদের দেশবিরোধী ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কারণে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
দেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘দেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বলেন, বিরোধী মতের ওপর দমন-পীড়ন হচ্ছে, বিএনপি মহাসচিবকে এই দ্বিচারিতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বিএনপি মহাসচিব রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে এসব সন্ত্রাসীকে রক্ষা করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন।
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা আজ সন্ত্রাসের কথা বলেন। বলেন, বিরোধী দল দমনের কথা। অথচ বিরোধী দল দমন-পীড়ন ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক সন্ত্রাস সৃষ্টির মধ্য দিয়েই ইতিহাসের কুখ্যাত স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছিল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য