বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সঠিকভাবে নির্বাচন পরিচালনায় বিশ্বাসী বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান। তিনি বলেছেন, ‘একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পূর্বশর্ত।’
খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে শুক্রবার দুপুরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনসহ যেকোনো নাগরিক সেবায় জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক। তাই সঠিকভাবে তথ্য নিতে হবে।’
তথ্য সংগ্রহকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সঠিকভাবে তথ্য নিতে প্রমাণক হিসেবে পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এসএসসি সনদের সাহায্যে ব্যক্তির নামের বানান ও আনুষঙ্গিক তথ্য যাচাই করা যেতে পারে।’
ইভিএমকে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইভিএমের ব্যবহার যেকোনো পর্যায়ে দলমত নির্বিশেষে সব দলের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে।’
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি ড. মহিদ উদ্দিন, খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।
ময়মনসিংহ সদরে লাইলী আক্তার নামে এক নারীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মামলার ১ নম্বর আসামি খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও তার স্ত্রী ২ নম্বর আসামি নাসিমা আক্তার কনা।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘আগুনে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় লাইলী আক্তারকে। ঘটনাটি পিবিআই এর অ্যাডিশনাল আইজিপি জানতে পেরে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। পরে মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে আমাদের টিম। ইতোমধ্যে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সহযোগী ৪ ও ৭ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও মামলার ১ নম্বর আসামি কাজল ও তার স্ত্রী ২ নম্বর আসামি নাসিমা আক্তার কনা সুচতুরভাবে আত্মগোপনে ছিলেন।’
গৌতম কুমার জানান, ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে পিবিআই ময়মনসিংহের টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই হেডকোয়ার্টারের এলআইসি টিমের সহযোগীতায় মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। দুইজনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে গত ২৮ জুন রাতে নিহতের স্বামী আব্দুর রশিদ ৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই দিন রাতেই ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মো. জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আছমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খোকন মিয়া ওরফে কাজল, তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনা, গোলাম মোস্তফার ছেলে কামাল মিয়া, বাবুল, কামাল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা আক্তার বৃষ্টি, বাবুলের স্ত্রী রোমান।
মামলার বরাতে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন জানান, সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী খুকি আক্তারের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দুই পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না।
গত ২৬ জুন পালিয়ে যান সিরাজুল ও খুকি। এতে ক্ষিপ্ত হয় খুকির পরিবারের লোকজন। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে তারা ছেলের বাড়িতে এসে ছেলের মা লাইলীকে একা পেয়ে প্রথমে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে হাত-পা তার দিয়ে বেঁধে লাইলীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা লাইলীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গত ২৮ জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে লাইলীর মৃত্যু হয়।
ফারুক হোসেন বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার দুই আসামিকে এখনও আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আজ হস্তান্তর করা হলে আজই অথবা আগামীকাল ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হবে।’
এ ছাড়া মামলার বাকি আসামিরা বিভিন্ন জায়গায় পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে বলেও জানান পুলিশ পরিদর্শক।
আরও পড়ুন:পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুমিল্লার পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে হাটে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। বাজার জমে ওঠেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে।
ক্রেতারা বলছেন, কুমিল্লায় এবার যেসব গরু এসেছে, বেশিরভাগই বড় সাইজের। কিন্তু হাটে চাহিদা বেশি মাঝারি সাইজের গরুর। আর এসব গরুর দামও বেশি।
বুধবার সকাল থেকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভরাসার, বাবু বাজার, ফকিরবাজার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বান্নী, নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নেউরা হাট ঘুরে দেখা যায় প্রচুর গরু এসেছে। পছন্দের পশুটি কিনতে ঘুরে ঘুরে দেখছেন, বিক্রেতার সঙ্গে করছেন দরদাম।
নগরীর নেউরা পশুর হাটে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, হাটে বড় গরুর আধিক্য। এ হাটে ১৫টি গরু এনেছেন খামারি জুয়েল মিয়া। সবচেয়ে ছোট গরুটির দাম চাচ্ছেন আড়াই লাখ টাকা। তার কাছে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকার গরু রয়েছে।
আদর্শ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া এলাকার হাটে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু ভারতীয় গরু আছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা তাদের গরু নিয়ে এসেছেন।
নগরীর বেশ কয়েকটি পশুর হাট ঘুরেছেন ক্রেতা মাহফুজুল হক। ৮০ থেকে ৯০ হাজারের মধ্যে গরু খুঁজেছেন তিনি। বাজেটের মধ্যে গরু কিনতে না পেরে বাসায় চলে যান। নিউজবাংলাকে মাহফুজুল হক বলেন, ‘মাঝারি আকারের গরুর অনেক দাম। আজ মন মতো গরু পাইনি। বৃহস্পতিবার না হয় শুক্রবার বাজার দেখে গরু কিনব।’
বুড়িচং উপজেলার ফকিরবাজারে বিক্রেতা আজিজুল হক মাঝারি সাইজের একটি লাল গরুর দাম হাঁকেন ১ লাখ ৩০ হাজার। ক্রেতা জানে আলম গরুটির দাম বলেন ৯০ হাজার। বিক্রেতা একদাম ১ লাখ ১০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবেন। দর কষাকষি করে দামে না মেলায় একপর্যায়ে গরুটি কেনেননি।
বুধবার জানে আলমের মতো অনেক ক্রেতাকে গরু কিনতে না পেরে ফিরে যেতে দেখা যায়। তাদের আশা বৃহস্পতিববার বা শুক্রবার গরু কিনতে পারবেন।
মাঝারি সাইজের গরুর দাম বেশি চাওয়ার কথা বলছেন অন্যান্য হাঁটের ক্রেতারাও।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রামের মিরশ্বান্নী বাজারের গরু ব্যাপারি আবুল খায়ের বলেন, ‘ভুসি, খৈলসহ পশু খাবারের যে দাম বেড়েছে, তা গত দশ বছরে সর্বোচ্চ। এভাবে গরুর খাদ্যের দাম বাড়লে খামারিরা সামনে গরু পালনে নিরুৎসাহিত হবেন।’
নওগাঁর থেকে আসা ব্যবসায়ী আবদুর রশীদ বলেন, ‘গত বছর দাম কমায় বিক্রি করিনি। এক বছরে মাঝারি গরুগুলো এ বছর অনেক বড় হয়েছে। একটু দামের আশায় নগরীর চাঁনপুর গাউছিয়া পশুর হাটে ৩০টি গরু এনেছি।’
গরুর দেখভালের জন্য রশীদ ছাড়াও তার দুই ভাইসহ মোট ৬ জন এসেছেন এ হাটে। সব গরু সময়ের মধ্য বিক্রি হলে ভাল। না হলে ঈদের দিন পর্যন্ত থাকবেন এখানে।
টাঙ্গাইল থেকে আসা ব্যবসায়ী হারুণ অর রশীদ বলেন, গত বছর শেষের দিকে দাম কমে যাওয়ায় ২৫টি গরু অবিক্রীত থাকে। এই এক বছর ধরে গরুগুলোকে লালন পালন করেছেন। তার গরু দেড় লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন।
তবে দাম যেমনই হোক, জেলায় পর্যাপ্ত পশু আছে বলে জানিয়েছেন, কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা জেলায় গত বছর ৩৬৩টি হাটে ২ লাখ ২৮ হাজার ৬৪২ কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। সে বছর উদ্বৃত্ত পশুর ছিল ১১ হাজার ৬২৫টি। এ বছর পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ২ লাখ ৪৮ হাজার। তবে আমাদের হিসেব মতে এ বছর চাহিদা মিটিয়ে ১০ হাজার ৪৩২ কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।’
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে ‘মৃণাল হক সেলিব্রিটি গ্যালারি’র উদ্বোধন করা হয়েছে।
নগরীর উপশহরে বুধবার দুপুরে ফিতা কেটে এই গ্যালারির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
উদ্বোধনের পর গ্যালারির টিকিট কেটে বিশ্বের খ্যাতিমান মানুষের ভাস্কর্যগুলো পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র।
এ সময় মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘লন্ডনের বিখ্যাত ‘মাদাম তুসো’ জাদুঘরের আদলে রাজশাহীতে ভাস্কর মৃণাল হকের পরিবারের উদ্যোগে গড়ে তোলা এই সেলিব্রিটি গ্যালারি শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়স ও শ্রেণির মানুষকে আকৃষ্ট করবে। বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তারা জানতে পারবে। আগামীতে এটি শহরের কোথাও স্থানান্তর করা যায় কি না সেটাও ভেবে দেখা হবে।’’
উদ্বোধনের সময় কবিকুঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজাদ, গ্যালারির পরিচালক ও মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এ এস এম ওমর শরীফ রাজীব, গ্যালারির পরিচালক মনোয়ারুল হাসান প্রিন্স, ইনচার্জ কামরুল হাসান মিলন উপস্থিত ছিলেন।
প্রখ্যাত ভাস্কর মৃণাল হকের ৪০টি ভাস্কর্য নিয়ে লন্ডনের বিখ্যাত ‘মাদাম তুসো’র আদলে রাজশাহীতে ভাস্কর মৃণাল হকের পারিবারিক উদ্যোগে এই সেলিব্রিটি গ্যালারি গড়ে তোলা হয়েছে। মহানগরীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের ১৮৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের একটি দ্বিতল ভবনে এ গ্যালারির অবস্থান। গ্যালারির প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আর শিশুদের জন্য তা ফ্রি।
গ্যালারির দ্বিতীয় তলায় উঠতেই মাথার ওপর দেখা যাবে একটি স্পাইডার ম্যান। মনে হতে পারে, সেটি বুঝি এই লাফিয়ে পড়ল। ভাবনাটা ডালপালা মেলার আগেই প্রথম ঘরে দৃষ্টিতে আসবে প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্য।
আরেকটু সামনে এগোতেই মিলবে ছোট্ট একটি ঘর। আলো-আঁধারি এই ঘরের আবহটা অনেকটাই ভুতুড়ে। এখানকার ভাস্কর্যগুলোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতেই এই ঘরের আলো কিছুটা কম। ঘরজুড়ে নীল রং ছড়িয়ে আছে। আর ঘরের ভেতর আক্রমণের ভঙ্গিতে এলিয়েনের দল। পাশের ঘরটি তারকা জগতের মানুষদের জন্য।
এই ঘরে সাক্ষাৎ মেলে ফুটবল তারকা মেসির। তিনি বল পায়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তার পাশেই বলিউড কিং শাহরুখ খান। আছেন মিস্টার বিন, চার্লি চ্যাপলিন, নন্দিত গায়িকা সাকিরা, মাইকেল জ্যাকসনসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় মুখ।
তারকাদের সঙ্গ কাটতে না কাটতে দেখা যাবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টেবিলে বসে লিখছেন। তার ডান পাশে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বাম পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া আছেন ডোনাল ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদি, মহাত্মা গান্ধী, মাদার তেরেসা, চে গুয়েভারা, প্রিন্সেস ডায়ানা ও ক্ষুদিরাম বসু।
মৃণাল হক তার এসব কর্ম করেছেন নিখুঁতভাবে। চেষ্টা করেছেন জীবন্ত করে তুলতে। এ কারণে এখানকার বেশির ভাগ ভাস্করের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে প্রথম ধাক্কাতেই যে কেউ মনে করতে পারেন সত্যিই বুঝি গুণী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আপনি ছবি তুলেছেন।
সেলিব্রিটি গ্যালরির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রয়েছেন কামরুল হাসান মিলন। তিনি জানান, এখানে যেসব শিল্পকর্ম দেখছেন সেগুলো শিল্পী মৃণাল হকের। মূলত এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুটি কাজ হবে, প্রথমত শিল্পীর শিল্পকর্মের সঙ্গে মানুষের পরিচয় হবে। এর মাধ্যমে শিল্পীর কর্ম বেঁচে থাকবে। আবার এসব শিল্পকর্ম দেখে দর্শনার্থীরা পৃথিবীর গুণী মানুষদের সম্পর্কে জানবেন। এখানে যেসব ভাস্কর্য আছে, প্রতিটির সঙ্গে তাদের পরিচয় এবং কর্ম সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই সেলিব্রিটি গ্যালারিটি গত মে মাসে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
বাঙালির জীবন থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। তবে এসব মাছকে আবারও বাঙালির পাতে নিয়ে আসতে চান যশোরের আব্দুল মান্নান। পরীক্ষামূলকভাবে দেশীয় বিলুপ্ত প্রজাতির সরপুঁটি মাছ চাষ করে সফলতাও পেয়েছেন প্রথম বছরই। এ মাছটি এখন সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের আব্দুল মান্নান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করে চাকরির আশায় ঘুরছিলেন। কিন্তু চাকরি না পেয়ে ২০১৬ সালে নিজ গ্রাম দত্তকোনায় তিনটি পুকুরে কার্পজাতীয় মাছের চাষ শুরু করেন তিনি।
এর পর থেকে গত কয়েক বছরে মাছের আবাদ ও বিস্তারলাভে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন মান্নান। এবার ঝুঁকেছেন বিলুপ্তপ্রায় দেশি প্রজাতির মাছ মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে। সেই তাড়না থেকে দুই বছর আগে শুরু করেন বিলুপ্ত প্রজাতির সরপুঁটি মাছের চাষ।
পরীক্ষামূলকভাবে সরপুঁটি চাষ করে প্রথম বছরই সাফল্য পেয়েছেন মান্নান। এই মাছের বিপুল পরিমাণ রেণু পোনা উৎপাদন করছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে তার হ্যাচারি থেকে লক্ষাধিক সরপুঁটির পোনা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন যশোরের আশপাশের জেলা সাতক্ষীরা, নড়াইলসহ খুলনা বিভাগের মাছচাষিরা। পাশাপাশি তার খামারে বেড়ে ওঠা কার্পজাতীয় সব মাছের রেণু পোনাও পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পড়াশোনা শেষ করে নিজেদের তিনটি পুকুরে কার্পজাতীয় মাছ চাষ শুরু করি। মাছ চাষের পাশাপাশি পরিকল্পনা নিলাম মাছের পোনাও উৎপাদন করব।’
কিন্তু মান্নানের এই পরিকল্পনায় বাদ সাধল অর্থ। এ অবস্থায় পুকুর বাড়ানো ও মাছ চাষ বৃদ্ধি করতে ব্যাংক থেকে ৩৬ লাখ টাকা ঋণ নেন তিনি। ঋণের টাকায় কিছু পুকুর বাড়ানোর সঙ্গে রেণু পোনা উৎপাদনের জন্য গড়ে তোলেন হেলদি হ্যাচারি অ্যান্ড অ্যাগ্রোা লিমিটেড।
কয়েক বছর কার্পজাতীয় মাছের আবাদ ও বিস্তার লাভের পর দুই বছর আগে দেশীয় মাছ নিয়ে কাজ করার তাড়না জাগে মান্নানের। প্রাথমিকভাবে তিনি দেশীয় সরপুঁটি মাছ চাষের পরিকল্পনা করেন।
এ অবস্থায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নাটোরের চলনবিল এলাকায় সরপুঁটি মাছের চাষ হচ্ছে। পরে এক বন্ধুর মাধ্যমে সেখান থেকে সরপুঁটির সাত কেজি রেণু এনে পুকুরে চাষ শুরু করেন। পরে এই মাছের বংশবিস্তার এবং মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পোনা উৎপাদনেও হাত দেন। এরই ধারাবাহিতায় এখন প্রতি সপ্তাহে লক্ষাধিক সরপুঁটির পোনা বিক্রি করেন মান্নান। যার বাজার মূল্য ৭০ হাজার টাকার ওপর। এ ছাড়া সপ্তাহে লক্ষাধিক টাকার কার্পজাতীয় মাছের পোনাও বিক্রি হচ্ছে তার হ্যাচারি থেকে।
কার্প ও সরপুঁটি জাতের মাছ চাষে সফল হওয়ার পর চলতি বছর থেকে বিলুপ্তপ্রায় বোয়াল মাছের রেণু উৎপাদনও শুরু করেছেন মান্নান।
বর্তমানে তার ৩৫ বিঘার ঘের ও ১৬টি পুকুরে কার্প ও সরপুঁটির চাষ হচ্ছে। মান্নানের এই কর্মযজ্ঞে ৫০ জন সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। এ ছাড়া মনিরামপুরসহ আশপাশের তরুণ উদ্যোক্তারাও তার এই মাছের খামার দেখতে আসছেন। নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে মাছ চাষে মান্নানের পরামর্শ নিচ্ছেন তারা।
তবে কিছুটা আক্ষেপ করে মান্নান বলেন, ‘দেশব্যাপী আমিষের ঘাটতি পূরণে মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন খাতে গুরুত্ব দিলেও মৎস্য খাতে তাদের নজর কম। সরকারের মৎস্য বিভাগ যদি তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ এবং হ্যাচারি প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ করে, তাহলে আবারও মাছে-ভাতে বাঙালির দিন ফিরবে। বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, ‘সরপুঁটি আমাদের বিলুপ্ত প্রজাতির মাছগুলোর একটি। যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হেলদি হ্যাচারি রেণু পোনা উৎপাদন শুরু করেছে। আমরা এই পোনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জলাশয়ে অবমুক্ত করে চাষাবাদ করলে এর বিপুল উৎপাদন সম্ভব।’
বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ নিয়ে কাজ করা হেলদি হ্যাচারিকে জেলা মৎস্য বিভাগ যেকোনো সহায়তা দেবে বলেও জানান ফিরোজ আহাম্মেদ।
আরও পড়ুন:কয়েক দিন ধরে চলা লোডশেডিংয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনজীবনের কষ্ট চরমে উঠেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। হাসপাতালে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় লোডশেডিংয়ের সময় রোগীর স্বজনরা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শহরের শেয়ালা কলোনি মহল্লার আলেয়া বেগম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘দিনেও কারেন্ট টানছে, রাতেও কারেন্ট টানছে। রোগী লিয়্যা অ্যাসা সুস্থ করব কি, রোগী তো ঘ্যাল হয়্যা যাছে, কারেন্ট না থাকার কারতে বাচ্চা আরও বেশি হয়্যা যাছে, পাখা দিয়্যা বাতাস করতে করতে হামারঘে হাত-পায়ের শক্তি হারিয়া যাছে। কারেন্টে খুবই সমস্যা করছে।’
হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র গরমে কষ্টে আছেন রোগীরা। রোগীর স্বজনরা জানান, বিদ্যুৎ যখন চলে যাচ্ছে তখন হাতপাখাই তাদের ভরসা।
তাদের দাবি, হাসপাতালে রোগীদের কথা চিন্তা করে লোডশেডিংয়ের সমস্যা জেনারেটর বা অন্য কোনো উপায়ে ফ্যানগুলো চালানোর ব্যবস্থা করা, যাতে অন্তত রোগীদের কষ্ট কিছুটা কমে।
হাসপাতালে থাকা একটি জেনারেটর লোডশেডিংয়ের সময় চালানো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের দায়িত্বশীল কেউ কথা বলতেও চান না।
তবে জেনারেটর চালানোর যে খরচ, সেই বরাদ্দ না থাকায় সব সময় জেনারেটর চালানো হয় না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হারুনর রশিদ হারুন।
তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে রোগীরা কষ্ট পাচ্ছেন, কিন্তু হাসপাতালের জেনারেটর চালানোর জন্য তো বরাদ্দ দিতে হবে। সেটি দেয়া হলে জেনারেটর চালাতে সমস্যা নেই, কিন্তু এর জ্বালানি খরচ তো পেতে হবে।’
এমপি বলেন, ‘ওটিসহ জরুরি বিভাগে লোডশেডিংয়ের সময় যাতে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া যায়, সে বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া আছে। তবে গোটা হাসপাতালকে সাপোর্ট দিতে হলে জেনারেটর চালাতে হবে, সেটির তো বরাদ্দ লাগবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) এক কর্মকর্তা জানান, তারা চাহিদার অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছেন। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এমন কষ্ট মেনে নিতেই হবে গ্রাহকদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল আজিম বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় অর্ধেক পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই পরস্থিতির উন্নতি হবে।’
আরও পড়ুন:ওজন ৫৫ মণ, নাম কালা পাহাড়। ওজনের সঙ্গে নামের মিল রয়েছে। এবারের কোরবানি ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত করা হয়েছে গরুটিকে।
প্রতিদিন ধান, চাল, গম, ছোলা, কেওড়া, খেসারি, মসুর ডাল, কালিজিরাসহ ১৪ রকম খাবার দেয়া হয় তাকে।
৩ বছর ধরে সন্তানের মতো লালন-পলন করা গরুটি বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এর মালিক সৌমিক আহমেদ সাগর। একদিকে গোখাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও বিভিন্ন জেলায় বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও কাঙ্ক্ষিত দাম হয়নি এখনও।
শুধু তাই নয়, বড় গরু বাইরে নেয়া ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কালা পাহাড়ের মালিক।
যশোর সদরের মাহিদিয়া গ্রামের খামারি সাগর। ৩ বছর আগে যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া এলাকা থেকে ৬৫ হাজার টাকায় ফ্রিজিয়ান জাতের একটি বাছুর কেনেন। সেটিকেই লালন-পালন করে গড়ে তুলেছেন কালা পাহাড় হিসেবে। এটি ছাড়াও তার খামারে ৪২ মনের আরও একটি গরু রয়েছে। যার নাম দিয়েছেন ‘বিগ বস’।
কালা পাহাড়কে ৩০ আর বিগ বসকে ২৫ লাখে বিক্রি করতে চান তিনি। তবে কালা পাহাড়কেই মূলত এই ঈদে বিক্রির প্রধান টার্গেট তার।
মালিক সৌমিক আহমেদ সাগর বলেন, ‘বাছুরটি কিনে আনার পরপরই নাম রাখি কালা পাহাড়। চলতি বছরের ১৪ মে যশোরে পশু প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল যশোর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। সেখানে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন প্রাণী আনা হয়েছিল। আমার কালা পাহাড় সেখানে প্রথম হয়। আমাকে ক্রেস্ট ও সনদ দেয়া হয়েছে।
‘কালা পাহাড়ের ওজন হয়েছে ২ হাজার ২০০ কেজি তথা ৫৫ মণ। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাসহ খামারিরা এক বাক্যে স্বীকার করেন, এটিই খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় গরু।’
সাগর বলেন, ‘কোরবানি ঈদের জন্য প্রস্তুত করা কালা পাহাড়কে দেখতে অনেক লোকজন আসছেন। ঈদ চলে আসছে, কিন্তু এখনো কাঙ্ক্ষিত দামে কেউ গরুর দরদাম করেনি। এখন পর্যন্ত স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ১২ লাখ টাকা দাম পর্যন্ত উঠিয়েছেন। স্থানীয় কয়েকটি হাটে খোঁজ নিয়েছি। বড় গরুর তেমন বেচাকেনা নেই।
‘গোখাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম বেশি। বিভিন্ন স্থানে বন্যা হচ্ছে। কালা পাহাড়কে বিক্রি নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
সাগরের বড় ভাই আহসান হাবিব মন্টু বলেন, “৩ বছর ধরে গরুটি লালন-পালন করেছে সাগর। নিজের সন্তানের মতো পালন করেছে। বাড়ির কাজের চেয়ে এই গরুর পেছনে সময় দিয়েছে সে। শুধু কালা পাহাড় নয়, তার গোয়ালে আরও একটি একই জাতের গরু রয়েছে। সেটি তিনি মাস ছয়েক আগে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছে। ওই গরুটির নাম দিয়েছে ‘বিগ বস’।
“সেটির উচ্চতা কালা পাহাড়ের চেয়ে প্রায় তিন ইঞ্চি বেশি, ছয় ফিট। লম্বায় ১০ ফুটের বেশি। এটার ওজন ১ হাজার ৭০০ কেজির মতো। এটির দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা। এত বড় গরু আগে কেউ দেখেনি। তাই দূরদূরান্ত থেকে কালা পাহাড় ও বিগ বসকে দেখতে ভিড় করছেন মানুষ।’
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে তেলবাহী লরির ধাক্কায় মা ও বোনের মৃত্যুর পর ১৮ মাসের শিশুটিও মারা গেছে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান আসাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে বুধবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে লরির ধাক্কায় মারা যান শিশু সাইফুলের মা ৩০ বছর বয়সী ফাইমা বেগম ও বোন ১৩ বছরের বিউটি।
গুরুতর আহত হন বাবা ৪০ বছর বয়সী মোহাম্মদ হোসাইন ও ১৮ মাস বয়সী শিশু সাইফুল ইসলাম নাসরুল্লাহ।
আহত মোহাম্মদ হোসাইন জেলার বিরল উপজেলার তেঘরা দারুল হাদীস সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার পাঁচটিকরি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পরিবার নিয়ে তেঘরা গ্রামে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি।
হোসাইনের ভাই মোহাম্মদ হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুপুরে যখন আমরা ভাবি ও ভাতিজির মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলছিলাম, সে সময় শিশু সাইফুল মারা যায়। ভাই এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’
পরিদর্শক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘ঈদের ছুটি পাওয়ায় ভোরে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে পেছন থেকে তেলবাহী একটি লরি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।
‘এতে রাস্তায় পড়ে মা ও মেয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় মোহাম্মদ হোসাইন ও শিশু ছেলে সাইফুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুর মৃত্যু হয়।’
এই ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য