যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, লেখক ও অমর একুশে গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তাকে সেখানে দেখতে গিয়েছিলেন প্রবাসী বিপ্লব বহ্নি রায় চৌধুরী। শুক্রবার (২০ মে) হাসপাতাল থেকে লন্ডনের নিজ বাসায় ফেরার আশাও প্রকাশ করেছিলেন গাফ্ফার চৌধুরী। তবে বাসায় আর ফেরা হয়নি তার।
গাফ্ফার চৌধুরীর স্মৃতিচারণা করে বৃহস্পতিবার রাতে নিউজবাংলাকে এসব কথা জানিয়েছেন বিপ্লব। তিনি লন্ডনের রোমফোর্ডের গিদেয়াপার্কে থাকেন পরিবার নিয়ে। আর বাংলাদেশে তার বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জের শ্যামপুরে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর ছেলে।
বিপ্লব বলেন, “১৩ মে স্থানীয় সময় বেলা ২টায় বার্নেট হাসপাতালে যাই আমি। হাসপাতালের জুনিপার ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বেডের কাছে গিয়ে প্রথমে কাকাকে (আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী) দেখতে পাইনি। প্রথমে ভাবছিলাম কাকা হয়তো কোথাও গিয়েছেন বা কোথাও নিয়ে গেছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরেও তাকে না পেয়ে হাসপাতালের স্টাফদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানলাম বেডের চাদর মুড়ি দিয়ে কাকা শুয়ে আছেন। আমি ডাকতেই চাদরটা মুখ থেকে সরিয়ে তাকালেন তিনি। আমাকে দেখে খুশি হয়ে বলেছিলেন ‘তুমি এসেছো’।”
গাফ্ফার চৌধুরীর মেয়ে বিনীতা চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিনি খুব ভেঙে পড়েছিলেন বলে জানান বিপ্লব। বলেন, ‘কাকাকে দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন ঝর্ণা নামে এক নারী। তিনি চলে যাওয়ার পর বিনীতা দিদিই তাকে দেখাশোনা করতেন। ক্যানসারে এপ্রিল মাসে মারা যান বিনীতা দিদি। দিদি মারা যাওয়ার পর কাকা পুরোপুরি ভেঙে পড়েন। দিদিকে হারানোর শোকে খুবই মানসিক কষ্টে ছিলেন তিনি। সেদিন অনেক কথাই বলছিলেন তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গে। কিন্তু দিদির কথা বলছিলেন বারবার।’
বিপ্লব বলেন, “আমার পরিবারের সবার খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন কাকা। আমার বাবা-কাকাদের কথা বলেছিলেন। আমার মা কেমন আছেন, বাড়িতে কে কে আছেন- জিজ্ঞাস করছিলেন। তিনি গত বছর বলেছিলেন আমি যখন বরিশালে যাব তখন তিনিও আমার সঙ্গে যাবেন। আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হলো না।
“আমার পরিবারের খোঁজ নেয়া শেষে আমাকে কাকা বললেন, ‘শুক্রবার আমি বাসায় ফিরব, তুমি রোববার বাসায় এসো। আমাকে তো হাসপাতাল থেকে ছাড়ছে না। শরীরটা এখন আগের চেয়ে ভালো। আমার মেয়েটা আর বাসায় নেই। আমি গিয়ে কী করব একা বাসায়। তুমি বাসায় এসো, অনেক কথা আছে’।”
বিপ্লব বলেন, ‘আমার স্ত্রী-মেয়েকে নিয়েও যেতে বলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, একটু সময় নিয়ে আমার বাবাকে নিয়ে একটা কলাম লিখবেন। কিন্তু শুক্রবার আর ফেরা হলো না তার। রোববার আর দেখাও হলো না আমাদের।
‘হাসপাতালে দেখা করার জন্য আমার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে ১০/১৫ মিনিট বেশি হয়ে যাওয়ায় স্টাফরা বারবার এসে রিমাইন্ডার দিচ্ছিলেন। কাকার সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে হাসপাতালের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও একটি ছবি তুলেছিলাম। কাকার কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসি।’
বিপ্লব বলেন, ‘২০২১ সালের ২১ মার্চ বিকেলে গাফ্ফার কাকার বাসায় গিয়েছিলাম। তখন আমি একটি কবিতার বই লেখার ইচ্ছার কথা বলি কাকাকে। তখন কাকা আমাকে উৎসাহ দিয়ে আমার বইয়ের জন্য মুখবন্ধ অংশটুকু লিখে দিয়েছিলেন। সেদিনের পর কাকার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকবার দেখা করেছিলাম। শেষবার যখন হাসপাতালে গিয়েছিলাম তাকে দেখতে, ফেরার আগে তিনি বইয়ের কথা জিজ্ঞাস করেছিলেন। বলেছিলাম কাজ চলছে কাকা, প্রকাশ পেলে আপনাকেই প্রথম কপি দেব।
‘রোববারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম মেয়ে-বউ সবাইকে নিয়ে কাকার বাসায় যাব। কিন্তু অপেক্ষার ইতি টানতে হলো তিন দিন আগেই।’
লন্ডনে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী মারা যান।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে তার জন্মস্থান বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ায় শুক্রবার মসজিদে দোয়া মোনাজাত ও মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বন্যার ধাক্কায় টালামাটাল হয়ে পড়েছে সিলেটের স্বাস্থ্যসেবা খাত। বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্তত ২৪টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছিল। এতে ওই হাসপাতালগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অবকাঠামো আর আসবাবপত্রেরও।
যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় ওসমানী হাসপাতালেও বন্ধ রয়েছে রোগ নির্ণয়ের কয়েকটি পরীক্ষা ও কিছু সেবা। উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর অবস্থা আরও করুণ।
মস্তিষ্কে রক্ষক্ষরণজনিত কারণে রোববার ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা লায়েক আহমদ। চিকিৎসকরা তাকে সিটি স্ক্যান করানোর কথা বললেও ওসমানী হাসপাতালে তিনি পরীক্ষাটি করাতে পারেননি।
রোববার দুপুরে লায়েকের ভাই সায়েক আহমদ বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে বন্যার পানি ঢুকে সিটি স্ক্যান যন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনতে বলা হয়েছে। কিন্তু রোগীর যে অবস্থা তাতে তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়াও কষ্টকর।’
গত ১৫ জুন সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। আর ১৮ জুন সিলেট বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্যকেন্দ্র এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়ে। নিচ তলায় হাঁটু পানি জমে যায়। এতে হাসপাতালটির সিটি স্ক্যান, এমআরআই, রেডিওথেরাপি যন্ত্র ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, জেরারেটরসহ বেশকিছু আসবাবপত্রও নষ্ট হয়েছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বন্যায় হাসপাতালের নিচতলা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিচতলায় থাকা এমআরআই, সিটি স্ক্যান ও রেডিওথেরাপি মেশিন জলমগ্ন ছিল।’
পরিচালক জানান, রেডিওথেরাপি যন্ত্রটি চালুর চেষ্টা চললেও এমআরআই, সিটি স্ক্যান যন্ত্র আবার চালু করা সম্ভব হবে কি-না তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। এগুলো নষ্ট থাকায় রোগীরা বাইরে থেকে এসব পরীক্ষা করিয়ে আনছেন।
হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স, পরিচালকের গাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করতে আরও সময় লাগবে।
শুধু ওসমানী হাসপাতালই নয়, স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে- সিলেট বিভাগের ৪০টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে অন্তত ২৪টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবগুলো কমপ্লেক্সেই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া ৮৫টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৩১টি এবং ৯২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৪১৪টি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সিলেটের জৈন্তাপুর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ বাদে বাকি ১০ উপজেলার সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ এই জেলার সবকটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছিল। এখনও এই জেলার অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বন্যা কবলিত সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর (ইপিআই) ফ্রিজ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, এক্স-রে মেশিন, এমএসআর সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। জলমগ্ন এসব যন্ত্র কার্যক্ষম কি না, পানি না সরায় তা এখনো যাচাই করা যাচ্ছে না। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে আরো সময় লাগবে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলায় ১০ ফুট পানি ছিল। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। অনেক আসবাব ভেসে গেছে। ফলে পানি কমতে শুরু করলেও সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
ক্ষয়ক্ষতির প্রসঙ্গে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘চলমান বন্যা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। অবকাঠামো, আসবাবপত্রের পাশপাশি অনেক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে গেছে।’
হিমাংশু জানান, পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। পানিবাহিত রোগের প্রকোপও বেড়েছে। বন্যায় যন্ত্রপাতি, অবকাঠামো ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ সামলাতে সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পরিদর্শনে সোমবার সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে আসবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু চালুর দিনে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের স্বাভাবিক ভিড় দেখা যায়নি। অনেকে পদ্মা সেতু দেখতে সড়কপথে রওনা দিয়েছেন বলে ধারণা করছেন লঞ্চসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোর যোগাযোগে এতদিন ব্যবহার হয়ে আসা প্রধান মাধ্যম সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে রোববার রাত ৮টায় গিয়ে যাত্রীদের কোলাহল দেখা যায়নি। অন্যান্য দিন এমন সময়ে ডেকে যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ থাকলেও লঞ্চ অনেকখানি ফাঁকাই দেখা যায়। কেবিনেরও বেশির ভাগ ভাড়া হয়নি।
টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা বলছেন, অধিকাংশ লঞ্চেই আশানুরূপ যাত্রী নেই। ডেকের ধারণক্ষমতার অর্ধেক ও পূর্ণ হচ্ছে না। সামনের দিনগুলোতে কী হবে, লঞ্চ কী করে চলবে আর তাদের চাকরিইবা থাকবে কি না এই নিয়ে শঙ্কা জেগেছে এরই মধ্যে। তবে কেউ কেউ বলছেন, বরিশালের মানুষ নৌপথে শুয়ে-বসে যাত্রা করে অভ্যস্ত। তারা সড়কপথে খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া যাবে না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কিছুদিন এমন মন্দা থাকতে পারে লঞ্চে।
পারাবত লঞ্চের সুপারভাইজার মো. শাহজালাল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা লঞ্চে যাওয়ার তারা লঞ্চেই যাবে। প্রথম দিন হয়তো সেতু দেখতে গিয়েছে। সেতুর উদ্বোধন হবে তাই অনেক লঞ্চ ও বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে আসতে পারেনি।’
‘লঞ্চে ৩৫০-৪০০ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকলেও আজ দেড় শতাধিক যাত্রী হয়েছে। ঢাকা থেকে সর্বশেষ ট্রিপেও আমরা তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলাম।’
রেডসন-৫, এমভি কুয়াকাটা-১ ও ২-এর সুপারভাইজার রফিকুল ইসলাম রাজু নিউজবাংলাকে জানান, ‘রমজানের ঈদের পর থেকেই যাত্রী কম। ইদানীং তো আরও কম। সেতু হয়েছে এখন যাত্রী কমই থাকবে।’
পটুয়াখালীগামী পূবালী-৫ লঞ্চের মালিক আলী আজগর বলেন, ‘আজ লঞ্চে যাত্রী নেই বললেই চলে। ডেক একদম ফাঁকা। কেবিন তো ভাড়াই হয়নি। ঘাটে লঞ্চ নেই তাই এই অবস্থা। লঞ্চ বেশি হলে যাত্রীসংকটে ভুগতে হতে পারে।’
এমভি পারাবত-১৮ লঞ্চের মালিক ও সমিতির মহাসচিব শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘যাত্রীর চাপ কমা-বাড়ার ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এটা ঈদের সময় বলা যাবে। সেতু চলাচলের আজ প্রথম দিন। অনেকে শখের বসেও হয়তো দেখতে গেছেন।’
লঞ্চে যাতায়াতের সুবিধাগুলো উল্লেখ করে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ পথে খাবার ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা শুধু লঞ্চেই রয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে বাসগুলো সরাসরি গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবে। এ ক্ষেত্রে যেকোনো সময় খাবার বা পানি পাওয়া সম্ভব না। লঞ্চে যাত্রীরা এ সুবিধা পাবেন।’
সড়কপথে ভাড়া বেশি পড়বে বলেও যাত্রীরা লঞ্চ বেছে নেবেন বলে বিশ্বাস করেন এই লঞ্চ মালিক। বলেন, ‘লঞ্চ ভাড়া ৩৫০ টাকা আর সেখানে বাস ভাড়া পাঁচ শতাধিক৷ এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে লঞ্চেই যাত্রীরা দক্ষিণাঞ্চলে যাবেন।’
সুন্দরবন লঞ্চের মালিক ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু হয়েছে এখন সবাই দৌড়ে হয়তো চলে যাবেন। কিন্তু সুবিধা-অসুবিধা চিন্তা করে যাত্রীরা লঞ্চেই ফিরে আসবেন। কেননা লঞ্চে সড়কপথের চেয়ে সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি।’
যাত্রী কম থাকলেও লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়াই নেয়া হচ্ছে। ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ভাড়া ডেকে ৩৫০, ৩৭০; এমনকি কোনো কোনো লঞ্চে ৪০০ টাকাও রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:আগামী ২৭ জুলাইয়ের ভোটকে ঘিরে একটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ২৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পরে দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রার্থী তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কোথায় কারা প্রার্থী
ঝিনাইদহ শৈলকূপায় চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন এম আব্দুল হাকিম আহমেদ।
দুটিটি পৌরসভার মধ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মেয়র পদে হাবিবুর রহমান, ক্ষেতলালে সিরাজুল ইসলাম বুলুকে মেয়র পদে প্রার্থী করা হয়েছে।
ইউনিয়নের ভোটে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁওয়ে মতিউর রহমান, বাচোরে জীতেন্দ্র নাথ বর্মন, নন্দুয়ারে আব্দুল বারীর হাতে নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে রেজাউল করিম নান্নু, রামনাথপুরে শাহ্ মো. মোফাজ্জল হোসেন, পীরগঞ্জে নূরুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হোসেন আলী বাগছীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নে ইব্রাহিম ফারুক, টাঙ্গাইল সদরের কাতুলী ইউনিয়নে ইকবাল হোসেন, মাহমুদনগরে সাহাদৎ হোসেন, কাকুয়ায় বদিউজ্জামান ফারুকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে খুরশীদ আলম (মাসুম), মেঘচামীতে হাসান আলী খাঁন, আড়পাড়ায় আরমান হোসেন (বাবু) কে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
মুন্সীগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নে শাহ নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন নৌকা।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়ায় হাফিজুল ইসলাম জুয়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা (উত্তর) ইউনিয়নে আবুল খায়ের, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইলে আবু মুছা মজুমদার, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁওয়ে সৈয়দ মনজুর হোসেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরীতে হাসান মাকসুদ, চরআবদুল্যাহে কামাল উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর সদরের দিঘলী ইউনিয়নে সালাউদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন নৌকা।
রাঙ্গামাটি লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নে রকি চাকমাকে মার্কা তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে কুলিক নদী থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
রোববার বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে কুলিক নদীর রাজবাড়ী ঘাট এলাকায় মরদেহটি ভাসছিল।
রানীশংকৈল থানার ওসি জাহিদ ইকবাল নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
মরদেহের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি জানান, বিকেলে নদীতে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় জেলেরা। তারা মরদেহটি ভাসতে দেখে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানান।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নদী থেকে মহদের উদ্ধার করে পুলিশে হস্তান্তর করেন।
ওসি বলেন, ‘আমরা মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-টরন্টো রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হচ্ছে ২৭ জুলাই। টরন্টো ফ্লাইটে ভ্রমণে ইচ্ছুকরা এখন থেকেই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশ-বিদেশে অবস্থিত বিমানের যে কোনো সেলস্ সেন্টার, বিমান অনুমোদিত যে কোনো ট্রাভেল এজেন্সি, বিমানের বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট www.biman-airlines.com ও কল সেন্টার ০১৯৯০৯৯৭৯৯৭ থেকে এ রুটের টিকিট কেনা এবং আনুষঙ্গিক সেবাগুলো গ্রহণ করা যাবে।
তবে কানাডা থেকে আপাতত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কেনা যাবে না। বিষয়টি এখনও অ্যাকটিভেশন পর্যায়ে রয়েছে।
বিমান বলছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা-টরন্টো রুটে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হবে। ঢাকা থেকে প্রতি বুধবার ও রোববার বিমানের ফ্লাইট টরন্টোর উদ্দেশে যাত্রা করবে। একই দিন টরন্টো থেকে ফিরতি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। রুটটিতে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বিমানের বহরে থাকা বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।
ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় ফ্লাইটটি তুরস্কের ইস্তানবুলে এক ঘণ্টার জন্য টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং করবে। তবে ফিরতি ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকায় অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে বিমান।
বাংলাদেশ থেকে ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী যাত্রার জন্য ভাড়া ঠিক করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার ৫১০ টাকা। আর রিটার্ন টিকিটের ভাড়া ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭০ টাকা।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ১ লাখ ২৭ হাজার ৩০০ টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৫ টাকা।
আর বিজনেস ক্লাসের ক্লাসে ভ্রমণে একমুখী ভাড়া শুরু হবে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ টাকা এবং রিটার্ন টিকিটের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০২ টাকা।
টরন্টো থেকে যারা ঢাকায় আসবেন তাদের জন্য ইকোনমি ক্লাসে একমুখী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯০ কানাডিয়ান ডলার আর রিটার্ন টিকিটের দাম ১ হাজার ২৩৩ কানাডিয়ান ডলার।
প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ১ হাজার ২৩০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ কানাডিয়ান ডলার। আর বিজনেস ক্লাসের ক্ষেত্রে একমুখী ভাড়া ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কানাডিয়ান ডলার এবং রিটার্ন টিকিটের দাম ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৭৮ কানাডিয়ান ডলার।
আরও পড়ুন:মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৯ জুন দিন ঠিক করেন। এ মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
এদিন কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সাক্ষীরা হলেন সিআইডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক আব্দুল মমিন, জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া দিদারুল আলম নামে আরও একজন সাক্ষ্য দেন।
এর আগে গত ১৫ জুন জি কে শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন র্যাবের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম।
বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে কর্মরত সারওয়ার আলম আদালতে জানান, তার নেতৃত্বে জি কে শামীমের অফিস ও বাসায় অভিযান হয়। তখন নগদ টাকা, অস্ত্র, বিদেশি মুদ্রা, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র ও কিছু চেক বই জব্দ করা হয়।
আলোচিত এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন দেলোয়ার হোসেন, মোরাদ হোসেন, সামসাদ হোসেন, আনিছুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, কামাল হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। তারা জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত।
জি কে শামীমকে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আটক করে র্যাব। এ সময় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার হয়। এ ব্যাপারে র্যাব বাদী হয়ে মানি লন্ডারিং, মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় চার্জশিট জমা দেন। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটক ভিডিও বানানো মো. বাইজীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হচ্ছে।
আইনটির যে ধারায় তার নামে মামলা হবে বলে জানানো হয়েছে, সে ধারায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মনে করছে, সেতুর ওপরের রেলিংয়ের ইস্পাতের পাতের সংযোগস্থলের নাট খোলা নিছক খেয়ালের ছলে হয়নি; এটা পরিকল্পিত।
সংস্থাটির এক কর্মকর্তা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেছেন, বাইজীদের এই কাজের পেছনে নাশকতার চেষ্টা থাকতে পারে।
পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর দিন রোববার রেলিংয়ের নাট খোলার ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে সন্ধ্যায় সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হন সেই যুবক। পরে জানা যায়, তিনি বাইজীদ তালহা নামে পরিচিত, তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম মো. বাইজীদ।
সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাইজীদ তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পদ্মা সেতুর নাট খুলেছিলেন সেতুর ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে। এমন অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় এ মামলা প্রক্রিয়াধীন। থানা কর্তৃপক্ষই বাদী হবে।’
কী আছে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায়
বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় ‘অন্তর্ঘাতমূলক’ (স্যাবোটাজ) কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা ও শাস্তির উল্লেখ রয়েছে।
এই আইনের ১৫ (খ) ধারায় বলা হয়, কোনো রেলপথ, রোপওয়ে, রাস্তা, খাল, সেতু, কালভার্ট, বন্দর, ডকইয়ার্ড, লাইটহাউজ, বিমানবন্দর, টেলিগ্রাফ বা টেলিফোনের লাইন অথবা টেলিভিশন বা বেতার স্থাপনার দক্ষতা বিনষ্ট বা ক্ষতিসাধনের মতো কাজ করা যাবে না।
এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ ছাড়া যাবজ্জীবন বা ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে।
বাইজীদকে জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেল
বাইজীদকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডির প্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছি, সে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই কাজ করেছে। আমরা বিস্তারিত আগামীকাল (সোমবার) সংবাদ সম্মেলনে জানাব।’
জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বাইজীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও পরীক্ষা করা সিআইডি জানিয়েছে, তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের সময়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন।
সিআইডি আরও জানায়, বাইজীদের মোবাইল ফোন থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই তারা দেখা গেছে, নিছক হেয়ালি নয়, পরিকল্পিতভাবে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলেছেন এ যুবক।
কী ছিল আলোচিত ভিডিওতে
পুলিশ জানায়, শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক মানুষ উঠে পড়েন মূল সেতুতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এরই ফাঁকে আলোচিত ভিডিওটি করেন বাইজীদ।
৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন, তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দ্যাহো।’
নাট হাতে নিয়ে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের...পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
ওই সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য