জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতটি রাজনৈতিক দল মিলে হচ্ছে নতুন জোট। এতে রয়েছে জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলন।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও নেতারা এই জোটকে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ বলছেন। আর এই জোট গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভাঙনের সুর বাজছে বাম গণতান্ত্রিক জোটে।
বাম জোটের অন্যতম দুই শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন যোগ দিচ্ছে নতুন জোটে। সে ক্ষেত্রে দল দুটির একসঙ্গে দুই জোটে থাকার সুযোগ নেই- এমনটাই বলছেন বাম জোটের অন্য শরিক দলের নেতারা।
তারা বলছেন, আগামীতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনকে ছাড়াই চলবে বাম জোট।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা যেতে চাচ্ছে বা অন্য একটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে তাদের নিয়ে আমরা বসব। তাদের কথা শুনব। আমরা এটা বলছি, একসঙ্গে তো দুটো জোটে থাকা যায় না।
‘এ বিষয়টি আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা ফয়সালা করব। সামনে আমাদের (বাম জোটের) একটা বৈঠক আছে তখন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
বাম জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বাম জোট তাদের মতো এগিয়ে যাবে, এখানে একসঙ্গে দুই জোটে কেউ থাকতে পারবে না।’
তবে নতুন জোটে যাওয়ার পরিকল্পনা জানালেও বাম জোট ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারছেন না বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের বর্তমান বাস্তবতায় আমরা বিশেষ করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচনকালীন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা একটা জাতীয় মঞ্চ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।
‘সেটা নিয়ে একটা আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো ঘোষণা দিইনি। কিছু প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা হয়েছে, কিছুটা বোঝাপড়া তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। বিএনপি বা বিএনপিকেন্দ্রিক যে মেরুকরণ, বলতে পারেন ইসলামি দলগুলোর বাইরে বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গের যৌথ জাতীয় একটা প্ল্যাটফর্ম- এটারই অংশ হচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ।’
এই জোট গঠনের পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগটা আকস্মিক নয়, অনেক দিন ধরেই চলছে। লেখক মুস্তাক মারা যাওয়ার পরে আমরা একটা নাগরিক পদযাত্রা করেছিলাম, তার পর থেকেই অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা চলছে। ২৩ তারিখে আমাদের সাতটা দলের (গণতন্ত্র মঞ্চের অন্তর্ভুক্ত) পরবর্তী সভা আছে, সেখানেই হয়তো এটার নামকরণ বা আমরা কীভাবে আত্মপ্রকাশ করব সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।’
সে ক্ষেত্রে বাম জোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন কি না জানতে সাইফুল হক বলেন, ‘বাম জোটের শুরু থেকেই তো আমরা, আমাদেরকে কেন্দ্র করেই… বাম জোটকে আমরা বলেছি ওদের সঙ্গে (গণতন্ত্র মঞ্চ) জোট বা জোটের শরিক দলগুলো অংশ নিতে পারে। আমরা তাদেরকে জানিয়েছি এটি বাম জোটের বা অন্য কোনো জোটের প্যারালাল কোনো জোট না।
‘যেহেতু এটা একটা ন্যাশনাল মঞ্চ ফলে এখানে লেফট, প্রগেসিভ, ডেমোক্রেটিক দল ও সংগঠন আসতে পারে। আর এটা (গণতন্ত্র মঞ্চ) ভবিষ্যতে রাজনৈতিক জোট হিসেবে কখনও ডেভেলপ করলে আমরা নিশ্চয় একসঙ্গে দুটো জোট প্র্যাকটিস করব না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জোটের অন্যান্য শরিক দলগুলোর ভূমিকা, অ্যাটিটিউড সেটা দেখে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব। সামনে বাম জোটের একটা বৈঠক ডাকা হয়েছে, অনুমান করছি সেখানে এটা নিয়েও আলোচনা হবে।’
অন্যদিকে বাম জোটকে টিকিয়ে রেখেই আরেকটি বৃহত্তর রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে তোলার পক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাম জোটভুক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে আমরা বহুদিন ধরেই প্রস্তাব রেখে যাচ্ছি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে আমাদের যথাসম্ভব বৃহত্তর ঐক্য করা দরকার।
‘সেই বৃহত্তর ঐক্যের ক্ষেত্রে আমাদের ভিত্তিটা হচ্ছে, যারা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা অর্থাৎ স্থায়ীভাবে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের এবং সংবিধানের সংস্কারসহ একটা স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি বিষয়ে একমত হবে, তাদের সঙ্গে আরেকটু বৃহত্তর মঞ্চ গড়ে তোলা দরকার। বিএনপিসহ যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য লড়াই করছে, তাদের সঙ্গেও আমাদের যুগপৎ ধারায় কাজ করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, বাম জোটকে টিকিয়ে রেখেই ভোটাধিকার এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কর্মসূচির বিষয়ে যারা একমত হবেন, তাদের সঙ্গে আমাদের আরেকটি বৃহত্তর রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমরা বাম জোটের সব সংগঠনকেই একসঙ্গে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার জন্য কথা বলছি। এ আলোচনা এখনও চলছে বাম জোটের মধ্যে।’
বাম জোটের বাকি সংগঠনগুলো কেবল বাম ঐক্যের মধ্যেই থাকতে চায় উল্লেখ করে সাকি বলেন, ‘আমরা বলেছি কেবল বাম ঐক্যই ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের জন্য যথেষ্ট কৌশল নয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে রণকৌশল হচ্ছে যথাসম্ভব বৃহত্তর ঐক্য করা। সে ক্ষেত্রে আমরা একটা ভিত্তি হিসেবে বলেছি, যারা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কর্মসূচিতে একমত তাদের নিয়ে একটা মঞ্চ করা যেতে পারে।
‘সাতটি দলের সঙ্গে বৈঠক আমাদের প্রাথমিক আলোচনার সূত্রপাত। এ ধরনের বৃহত্তর একটা মঞ্চ গড়ে তোলা যায় কি না সেই লক্ষ্যে এই আলোচনা। আমরা তাদের (বাম জোট) প্রস্তাব দিয়েছি বিবেচনা করার জন্য। আবার তাদের দিক থেকেও আমাদের দিকে প্রস্তাব এসেছে। পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
বৈঠকে ফলপ্রসূ না হলে গণসংহতি আন্দোলন বাম জোটে থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি, ‘এটা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা আগে আলোচনায় বসি, তারপর দেখা যাক কী দাঁড়াচ্ছে। আর আমাদের দলেও আলোচনার বিষয় আছে। সামনে আমাদের জাতীয় পরিষদের বৈঠক আছে, সেখানে চূড়ান্ত আলোচনা করে আমাদের দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
৯টি দল নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বাম জোট। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন বাদেও এই জোটে আছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাসদ- মার্কসবাদী, ওয়ার্কার্স পার্টি- মার্কসবাদী ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে এমভি ডিডিএস মেরিনা জাহাজটি ১১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সিদ্ধচাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। সোমবার (২৪ মার্চ) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা, উন্মুক্ত দরপত্রের আওতায় (প্যাকেজ-২) ভারত থেকে সাড়ে ১১ হাজার টন সিদ্ধ চাল নিয়ে এমভি ডিডিএস মেরিনা জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।
উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ৯টি প্যাকেজে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৯ মেট্রিক টন চাল ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (৮ মার্চ) ভারত থেকে আমদানি করা ৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল নিয়ে এমভি পিএইচইউ থানহ ৩৬ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।
বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে।
বর্তমানে তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।
ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘তাকে রিং পরানো হয়েছে নিশ্চিত। প্রথমে মাঠে খেলার সময় তার বুকে ব্যথা ওঠে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। তাকে যখন হেলিকপ্টারে তোলা হচ্ছিল, তখন আবার বুকে ব্যথা শুরু হয়।
‘হঠাৎ করেই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকসহ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের প্রধান দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদমাধ্যমকে জানান, তামিমের দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। এ মুহূর্তে তিনি সেখানেই ভর্তি।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এ ক্রিকেটারকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদসহ তিনজনের নামে ১০ কোটি টাকার মানহানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিনের আদালতে রবিবার এ মামলা করা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে আগামী ২৮ এপ্রিল আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম ও আসাদুজ্জামান আসাদ।
বাদী তার অভিযোগে বলেন, ‘আমি ক্লিন একটা জীবনযাপন করেছি। আসামিরা আমার ইমেজ, সম্মান, মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্ভট একটা পোস্ট দিয়েছে ফেসবুকে।
‘তারা বলেছে, আমি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এরশাদের পক্ষে কবিতা লিখেছি, যেটা আদৌ আমার লেখা না। দেখলেই বোঝা যায়, এ ধরনের থার্ড ক্লাস কবিতা আমি আদৌ লিখি না।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ মার্চ আসামি মাহবুব মোর্শেদ তার ফেসবুক আইডিতে একটি মনগড়া কবিতা পোস্ট করেন। সেটি আমার লেখা কবিতা বলে পোস্টে করেন।’
পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের এই কবি কীভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে অবমাননা করেছেন, তা পড়ে দেখার অনুরোধ জানাই। মন থেকে এত ঘৃণা পোষণ করার পরও এমন কবিরা বিএনপির সুবিধাভোগী হয়ে থাকতে চান।’
আসামি খাইরুল আলম গত ১৬ জানুয়ারি তার ফেসবুক আইডি থেকে একই কবিতা পোস্ট করেন এবং লিখেন, ‘শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখা কবিতাটি তিনি (আবদুল হাই শিকদার) এরশাদকে উপহার দিয়েছিলেন।’
আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধেও ফেসবুকে একই কবিতা নিয়ে পোস্ট করার অভিযোগ করা হয়।
বাদী বলেন, এসব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, অসত্য, কাল্পনিক, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর কবিতা এবং পোস্টের মাধ্যমে তার ১০ কোটি টাকার সম্মানহানি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
সীমান্তবর্তী নাফ নদে অভিযানে গিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৩ জন সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বিজিবি ।
বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার রাতে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, গত দুই দিন ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবনির্ভর এ অপপ্রচারে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত এই তথ্যটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
‘প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ২২ মার্চ ভোররাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভাব্য পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদের উদ্ধার ও সার্চ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
গণমাধ্যমে বর্তমানে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো শিগগিরই কার্যকর করা হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের কাছ থেকে প্রাপ্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনই বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো অনতিবিলম্বে কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রতিবেদন হস্তান্তরকালে প্রধান উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।’
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে পোস্টে বলা হয়, ‘সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে যেগুলো এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করে ফেলতে চাই। সে জন্য আমি চাইব সংস্কার কমিশন আশু করণীয় বা দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যায় এমন সুপারিশগুলো দ্রুত আলাদাভাবে আমাদের কাছে পেশ করুক।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদের নেতৃত্বাধীন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এ কাজকে অমূল্য হিসেবে অভিহিত করে এ প্রতিবেদন যেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য মানুষ পড়তে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো একটি নির্দিষ্ট স্যাটেলাইট ব্যবহারে বাধ্য বলে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখা যায় না। কমিশনের পক্ষ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যাতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা এবং আগ্রহী বিদেশিরা দেখতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার।’
কমিশনপ্রধান কামাল আহমেদসহ অন্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার হাতে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি শামসুল হক জাহিদ, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্স (অ্যাটকো) প্রতিনিধি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক সাংবাদিক জিমি আমির, ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য