ময়মনসিংহের পাগলায় অভিযান চালিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন ত্রিমোহনী ও বেলদিয়া এলাকা থেকে সোমবার মধ্যরাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পাগলা থানাধীন বেলদিয়া গ্রামের ৪২ বছরের মঞ্জুরুল ও সুতাচাপুর গ্রামের ৪৬ বছরের লিটন।
মঙ্গলবার সকালে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুজ্জামান খান বলেন, ‘আজ বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’
তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুজনের নামে পাগলা, ভালুকা থানা ছাড়াও গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া থানায় ডাকাতি, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ ও মাদকের মামলা রয়েছে। তাদের নামে ওয়ারেন্ট থাকায় তারা পলাতক ছিলেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজন এলাকার কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে পরিচিত। যেখানে সুযোগ পেত সেখানেই সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতি করত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নারীদের ধর্ষণও করেছে তারা।’
ওসি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, ওই দুজন বাড়িতে এসেছে। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না পেয়ে মঙ্গলবার রাতে সড়ক অবরোধ করেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলি এলাকার বাসিন্দারা।
এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থানীয় যুবক সাজ্জাদ আহমদ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ গিয়েছিল। টানা আড়াইঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকার পর সড়ক অবরোধে নামেন তারা। বিক্ষোভ চলাকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
দুদিন ধরেই ভ্যাপসা গরম সিলেটে। মঙ্গলবার তা আরও বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে দিনভর ছিল বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। রাতে লোডশেডিং আরও বাড়ে। রাতে সিলেটের বেশিরভাগ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। গরম আর লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্ভোগে পরতে হয় গ্রাহকদের। সেইসঙ্গে দীর্ঘ বন্যার দুর্ভোগ তো রয়েছেই।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় অর্ধেক সরবরাহও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে । রাতে ও গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। ফলে এ রকম সময়ে লোডশেডিংও বাড়ে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট নগর ও গ্রামাঞ্চলের অন্তত ১০ জন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা জানিয়েছেন, নগরে গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ও গ্রামে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বুরুঙ্গা এলাকার সুমন দেব বলেন, ‘মঙ্গলবার দিনের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ ছিল না। একবার গেলে দীর্ঘক্ষণ পর আসার আবার আসার কিছুক্ষণই পরপরই চলে যায়। আর রাতে তো বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎহীন ছিল।’
কদিন ধরেই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে বলে জানান নগরের টিলাগড় এলাকার গৃহিনী রুমানা আক্তার। তিনি বলেন, ‘তীব্র গরমের সময়, ঘুমানো বা খাওয়ার সময়, এ রকম সময়েই বিদ্যুৎ চলে যায়।’
চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ার কথা জানিয়ে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক সঞ্জীব কুমার রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। বিশেষত পিক আওয়ারে সরবরাহ সবচেয়ে কম মিলছে।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমাদের চাহিদা ছিল ৪২ মেগাওয়াট। পেয়েছি মাত্র ২০ মেগাওয়াট। ফলে লোডশেডিং বেড়েছে। কাল সকাল থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছিল। যা রাতেও অব্যাহত থাকে।
‘গরম বেশি হলে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। এতে লোডশেডিংও বাড়ে।’
চাহিদার ৬০ শতাংশ সরবরাহ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমাদের চাহিদা ছিল ১০৩ মেগাওয়াট। সরবরাহ পেয়েছি ৬০ মেগাওয়াটের মতো।’
মঙ্গলবার সরবরাহের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাল গরম বেশি ছিল। তাই ঘাটতিও বেশি ছিল। এতে লোডশেডিংও বেশি করতে হয়েছে।’
তবে বুধবার আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা কম বলে জানান তিনি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আওতাধীন গ্রাহকদের প্রতি চার ঘণ্টা পরপর এক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিডিবি সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম পাচ্ছি। বুধবার দুপুরে সিলেট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১২৩ মেগাওয়াট আর বিভাগে ৫৫০ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে সরবরাহ পেয়েছি জেলায় ১০০ মেগাওয়াট ও বিভাগে ৪২০ মেগাওয়াট।’
সব সময় দুটি করে ফিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৪/৫ ঘণ্টা পরপর প্রতিটি ফিডে এক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
তার হিসেবেই দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
আব্দুল কাদির বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেল সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাপ কম। এ কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও বন্ধ আছে। এতে প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এই ঘাটতির কারণেই লোডশেডিং হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:ঈদের আগে ও পরে ৭ দিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেলে চলাচল নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গাজীপুরে মানববন্ধন করেছেন একদল বাইকার।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বুধবার দুপুরে মাথায় হেলমেট পরে ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদর্শন করে মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক বাইকচালক।
এ সময় মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের জন্য বাস মালিকদের দোষারোপ করেন তারা। এছাড়া ঈদের আগে ও পরে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান বাইকচালকরা।
মানবন্ধনে অংশ নেয়া বাইকার আশিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিরাপত্তার ইস্যুতে আন্তমহাসড়কে বাইক চলাচল বন্ধ কার্যকরী সমাধান নয়। বরং মহাসড়কে আইনের প্রয়োগ করে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয়া হোক।’
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে লাখো মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী এবারের ঈদে তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে সমস্যার সম্মুখীন হবেন বলে মনে করেন তিনি।
বাইকার সবুজ হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই সঠিক আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে অনুমতি দেয়া হোক। তবে যারা আইন অমান্য করে হেলমেট, লাইসেন্স ও সেফটি গার্ড ব্যবহার করবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের নিকট স্বারকলিপি দেন মানববন্ধনে অংশ নেয়া বাইকচালকরা।
নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদের আগে তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরে তিন দিন অর্থাৎ মোট সাত দিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যাবে না। একই সঙ্গে মহাসড়কে রাইড শেয়ারিং করা যাবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরি।
৭ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এই নির্দেশনা।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করছেন বাইকাররা।
পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতির দাবিতে বুধবার দুপুরেও পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে টোল প্লাজার সামনে মানববন্ধন করেছে শরীয়তপুর বাইকারস নামের একটি সংগঠন।
মানববন্ধন থেকে ঈদের আগে পদ্মা সেতুসহ সব মহাসড়কে বাইক চলাচলের অনুমতির দাবি জানানো হয়।
বাইক নেয়া যাবে না নৌপথেও
মহাসড়কে বাইক চালানোর দাবিতে মানববন্ধন করলেও এরই মধ্যে দুই চাকার যানটি বহন নিষিদ্ধ হয়েছে নৌপথেও।
এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গেছে। আগামী ১১ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঈদের পর আরও পাঁচ দিন লঞ্চে বা ফেরিতে করে বাইক পরিবহন করা যাবে না।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল গত ১২ জুন। আর সেটি কার্যকর হয়েছে ২৪ দিন পর।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হত্যার ঘটনায় তোলপাড়, সেটির অধ্যক্ষ সাইফুল হাসানকে শোকজ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। অনুমতি ছাড়া নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদান করায় সাত কর্মদিবসের মধ্য সুষ্পষ্ট ব্যাখা চাওয়া হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৩০ জুন আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বরাবর কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে আমাকে কারণ দর্শানোর একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কলেজের এক শিক্ষক মোবাইলে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।’
কী বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্কুল শাখাটা বোর্ডের অনুমোদন না নিয়ে চালানো এটার বিষয়ে কীভাবে চালাচ্ছি সেটা জানতে চেয়েছেন। সাত কর্মদিবেসর মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এর আগে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে একটা তদন্ত টিম এসেছিলেন। তারাই প্রতিবেদন দিয়েছিলেন এই বিষয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে উৎপল স্যারকে হত্যার বিচার অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটা বড় চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সব স্কুলগুলো স্কুল উপজেলার অনুমতি নিয়ে এভাবেই চলে। দেখেন, আমরা এতদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি, উপবৃত্তি পাচ্ছি। তাহলে এতদিন তো শিক্ষা বোর্ড আমাদের বলে নাই যে আপনারা বন্ধ করেন।’
মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষকে আমরা শোকজ করেছি। ওনার নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতি কোথা থেকে কীভাবে পেয়েছেন এই বিষয়টার ব্যাখ্যা চেয়েছি আমরা।’
গত ২৫ জুন কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতুর বিরুদ্ধে।
পরদিন সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় উৎপলের। একই দিন নিহতের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার চার দিন পর ২৯ জুন জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিন রাতে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার হয় জিতু।
৫ দিনের রিমান্ড শেষে ৬ জুলাই আদালতে শিক্ষক উৎপলকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন জিতু।
এ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অনুমোদন ছাড়াই প্রাক প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ক্লাস নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়।
আরও পড়ুন:কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করায় গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জেলা কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দুপুরে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহীদ ময়েজউদ্দিন সড়ক ঘুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেষ হয়।
পরে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিলুপ্ত কমিটির কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর মোল্লা।
সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ হাসানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পরিমল চন্দ্র ঘোষ, কামরুল ইলাম, মোক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, জামালপুর ইউপি চেয়ামন্যান মো. খাইরুল আলম, যুবলীগ নেতা কাজী হারুণ-অর-রশিদ টিপু, বাদল হোসেন, রেজাউর রহমান আশরাফী খোকন, ছাত্রলীগ সাদমান সাকিব আলভী, এমআই লিকনসহ আরও অনেকে।
এ সময় বক্তারা গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক দাবি করে কঠোর সমালোচনা করেন। তারা জানান, কমিটি বিলুপ্ত করলেও জেলা ছাত্রলীগের নেতারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকির সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগের সব ইউনিট গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষাণা করে। পাশাপাশি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে অর্থ দাবির অভিযোগও করেন বিলুপ্ত কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতারা।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন। এ সংগঠনে একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কারো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। সাংগঠনিক নিয়মে আমরা কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করেছি। স্থানীয় সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকি আপার সাথেও কথা বলেছি। তবে তিনি চেয়েছেন এই কমিটি নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকুক। কিন্তু তিনি বিলুপ্ত বা গঠনের কোনো সিদ্ধান্ত দিলেও তা আমাদের সাংগঠনিক নিয়মবহির্ভূত। কাজেই সিদ্ধান্ত দিলেও তা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেন, ‘পারস্পারিক শ্রদ্ধা আর সম্মানের ভিত্তিতেই আমরা সাধরণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে আসছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গাজীপুর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ তো আর ভিন্ন কোনো গ্রহের বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কেউ না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রতৃপ্রতিম সংগঠন। তবে জেলা ছাত্রলীগ সেই পরিচয় দেয়নি। তারা কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার আগে আমার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ তো করেইনি, এমনকি কোনো সিদ্ধান্তেরও প্রয়োজন মনে করেনি।’
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তানভীর-ওয়াহিদ কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি আগামী ৩০ জুলাই গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি/সম্পাদক পদে আগ্রহীদের কাছ থেকে সিভি আহ্বান করা হয়।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের তারাকান্দায় আব্দুস সামাদ নামে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই ভাইসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক ৬ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক একেএম রওশন জাহান বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
আদালত পরিদর্শক প্রসূন কান্তি দাস নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিকেলে দুই ভাইসহ চার আসামিকে আদালতে তোলে সাত দিনের রিমান্ড চায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিচারক বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করে চারজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
গ্রেপ্তাররা হলেন উপজেলার দাদরা এলাকার ১৯ বছরের রবিন মিয়া, তার বড় ভাই ২৪ বছরের রোহান মিয়া, ওই উপজেলার হাটপাড়া গ্রামের ১৯ বছরের মুস্তাফিজুর রহমান নাঈম ও পুঙ্গুয়াই গ্রামের ২২ বছরের শাহীনুর ইসলাম।
জেলার ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
এর আগে নিহত সামাদের বাবা শাহজাহান মিয়া সোমবার বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
নিহত ১৪ বছরের সামাদ দাদরা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার রবিন মিয়া নিহত রিকশাচালক সামাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। এ সুবাদে প্রায়ই রবিনের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত সামাদ। এক সময় রবিনের ছোট বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সামাদের। বিষয়টি জানতে পারে রবিন। পরে তার বোনের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করেও ব্যর্থ হয়। পরে সামাদকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে রবিন ও তার ভাই রোহান।
‘পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে সামাদের অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘোরাফেরা করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নিয়ে যায় রবিন, রোহান ও নাঈম। সেখানে ঝোপের আড়ালে আগেই ওৎ পেতে ছিল শাহীনসহ আরও দুজন। সামাদকে সেখানে নেয়ার পর প্লাস্টিকের দড়ি ও জাল গলায় প্যাঁচিয়ে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে রাখে তারা।’
ওসি আরও বলেন, ‘সামাদের মরদেহ পাওয়ার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে জেলা ডিবি পুলিশের একাধিক টিম। জেলার ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের মামলার বরাতে বলেন, ‘সোমবার বিকেল ৩টার দিকে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হয় সামাদ। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও বাড়ি ফেরেনি। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজন স্থানীয় বাজারসহ স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পরে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সড়কে সামাদের রিকশাটি পাওয়া গেলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
‘মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সামাদের স্বজনরা ওই স্কুলটিতে অনুসন্ধান চালালে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা ভাঙা দেখতে পায়। ঢাকনা সরানোর পর ভেতরে পাওয়া যায় সামাদের মরদেহ।’
ওসি আরও বলেন, ‘থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।’
আরও পড়ুন:ঈদের আগে-পরে সাত দিন মোটর সাইকেলে করে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত নিষিদ্ধের পর এবার নৌপথে দুই চাকার যানটি বহন নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গেছে। আগামী ১১ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঈদের পর আরও পাঁচ দিন লঞ্চে বা ফেরিতে করে বাইক পরিবহন করা যাবে না।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল গত ১২ জুন। আর সেটি কার্যকর হয়েছে ২৪ দিন পর।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান।
গত ৩ জুলাই মহাসড়কে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বাইক চলাচল সাত দিনের জন্য নিষেধ করার কথা জানানো হয়। ৭ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা।
এই আদেশের কারণে ঈদে এবার বাইকে করে বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেল, যে সিদ্ধান্তটি বাইকারদেরকে তীব্রভাবে অসন্তুষ্ট করেছে।
গত ঈদে লাখো মানুষ বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরে। ফলে বিভিন্ন সড়কে আগে যে দীর্ঘ যানজট দেখা যেত সেটি ছিল না। গণপরিবহনেও ছিল না বাড়তি ভিড়। প্রতি বছর বাসের টিকিটের জন্য যাত্রীদের যে হাপিত্যেস দেখা দেয়, সেটিও দেখা যায়নি। ফলে মানুষের ঈদ যাত্রা ছিল নির্বিঘ্ন।
এরপরই পরিবহন মালিকরা মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে।
মহাসড়কে বাইক নিষিদ্ধের পেছনে দুই চাকার দ্রুতগামী এই যানের দুর্ঘটনাপ্রবণতাকে সামনে আনা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে সড়কে দুর্ঘটনায় যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে এককভাবে ৪০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি দায়ী বাইক। মহাসড়কে গতির লড়াইয়ে নেমে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারায় চালকরা। আর মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার খুবই বেশি।
তবে বাইক নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার ঈদ যাত্রায় আগের ভোগান্তি দেখা দেয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাইকাররা রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করেও সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরের দিনই সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। সেতু দিয়ে ঈদের আগে আর বাইক চলাচলের সুযোগ দেয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মাওয়া পর্যন্ত দিয়ে ফেরি দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে আবার বাইকে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল বাইকাররা। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে এই সুযোগও বন্ধ হয়ে গেল।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য