সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সুরমার পানি উপচে সোমবার সকাল থেকে সিলেট নগরেও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। দুপুর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেটে বৃষ্টি কমলেও ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পানি বাড়ছে সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জেও।
সিলেটের তিন নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুরমার পানি ঢুকে সকালে নগরের উপশহর, সোবহানিঘাট, কালীঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এসব এলাকার বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায়ও পানি ঢুকে পড়ে।
নগরের কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাশ টুকু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে এসে দেখি দোকানের সামনে পানি এসে গেছে। দুপুর গড়ানোর আগেই দোকানের ভেতর পানি ঢুকে পড়ে। এখন পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত দ্রুত পানি বাড়তে আমি আগে কখনও দেখিনি।’
নগরের সোবহানিঘাট এলাকার বাসিন্দা দেবজ্যোতি দাস বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাসার ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। আমাদের পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।’
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোমবার সকালে ‘ইউএনও গোয়ানঘাট’ ফেসবুক পেজ থেকে এলাকাবাসীকে সতর্ক করে লেখেন- ‘প্রিয় গোয়াইনঘাটবাসী, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বৃষ্টি বাড়বে। সকলকে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ করা হলো।
‘ইতোমধ্যে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে, এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। ত্রাণের সাথে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হচ্ছে, পানি পানে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।
‘এ সময়ে বজ্রপাত, পানির স্রোতে নৌকাডুবি, বাঁধভাঙা, গাছ উপড়ে যাওয়া, সাপেকাটাসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আপনাদের সাথে সাথে নিম্নোক্ত নাম্বারে জানানোর অনুরোধ করা হলো-
০১৭৩০৩৩১০৩৬, ইউএনও, গোয়াইনঘাট
০১৩২০১১৭৯৬৯, অফিসার ইনচার্জ, গোয়াইনঘাট থানা
০১৭৪৭০৯৭৬৫০, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, গোয়াইনঘাট
০১৭৩০৩২৪৭৫৫, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোয়াইনঘাট এবং সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
পাউবো জানায়, সোমবার সকাল ৯টার দিকে সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার চেয়ে পানি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ সেন্টিমিটার।
সুরমার পানি গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট পয়েন্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার। সোমবার সকালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে সোমবার সকালে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টেও বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ পয়েন্টে পানির সীমা ছিল ৬ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার; সোমবার সকাল ৯টায় পানির সীমা হয় ৬ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার।
পানি বেড়েছে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও। এখানে সোমবার সকাল ৬টায় পানির সীমা ছিল ৮ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার; সকাল ৯টায় পানির সীমা দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার।
গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি গতকালের চেয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। গতকাল ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, সিলেটে কাল থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমেছে। তবে উজানে বৃষ্টি হচ্ছে, এ কারণে ঢল নামছে। ফলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির দিকে আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। এরই মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় সহায়তা পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও পাঠানো হবে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নরসিংদী সদরে সেপটিক ট্যাংকে কাজ করার সময় দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা মাধবদীর নুরালাপুর ইউনিয়নে সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুজ্জামান।
তিনি জানান, গদাইরচর আছিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংকে শ্রমিকরা কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরেকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়েছেন। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মৃত শ্রমিকদের পরিচয় নিশ্চিত করেননি ওসি।
দিনাজপুর শহরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রী আহতের ঘটনায় ২ ঘণ্টা ধরে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক আটকে রাখেন সহপাঠীরা।
এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যালের সামনে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম হুমায়রা ফেরদৌস প্রমি। তিনি ২৯তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসাধীন।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম মওলা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, দুপুরে কলেজের ফটকের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাইকের ধাক্কায় আহত হন প্রমি। তখনই অন্য শিক্ষার্থীরা বাইকচালক মোমিনুল ইসলামকে আটক করে। প্রমিকে হাসপাতালে পাঠানোর পর শিক্ষার্থীরা কলেজ ও হাসপাতালের সামনের স্পিডব্রেকারের দাবিতে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন।
পরে কলেজের অধ্যক্ষ মোমেনুল হক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কামরুল হাসান সরকার ও দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। ২ ঘণ্টা পর তারা সড়ক ছেড়ে চলে যান।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কামরুল হাসান সরকার বলেন, ‘সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক কলেজ কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। কলেজের সামনে দুটি ও হাসপাতালের সামনে দুটি নতুন স্পিডব্রেকার নির্মাণ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছি। পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।’
আরও পড়ুন:নৌকা থেকে পড়ে ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীতে ডুবে যাওয়া দেড় বছরের শিশু হাসানের মরদেহ মিলেছে।
পৌর এলাকার নেছারাবাদ মহিলা মাদ্রাসার সামনে বাসন্ডার তীরে সোমবার দুপুরে মরদেহটি ভেসে উঠলে স্থানীয়রা তা উদ্ধার করে।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিশুর বাবা মামুন সরদার বলেন, ‘রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় নদীতে পেতে রাখা জাল তুলছিলাম। নৌকায় আমার স্ত্রী সুমী বেগম ও একমাত্র ছেলে হাসান ছিল। আমার সঙ্গে স্ত্রীও নৌকায় জাল তুলছিল। তখন খেলতে খেলতে হঠাৎ বাচ্চাটা পানিতে পড়ে যায়।’
তিনি জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে গিয়ে ছেলের মরদেহ পায়।
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের পৌর এলাকার ঝালমুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সন্ধ্যায় এবং সোমবার দুপুরে কুলিয়ারচর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও ও বেপারীপাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় বেশকিছু বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫/৬ জন আহত হয়েছেন।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রোববার সন্ধ্যায় ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. অলিউল্লাহ ও বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের লোকজনের মধ্যে ঝালমুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আজকে (সোমবার) দুপুরে আবারও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুলিয়ারচর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. অলিউল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে একটি দোকানে আমার ছেলে আলভী ও ভাতিজা জনি ঝালমুড়ি খেতে যায়। এ সময় বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের ভাতিজা হাবিব, মামাতো ভাই সুজনসহ বেশসহ কয়েকজন একই দোকানে ঝালমুড়ি খেতে আসে। পরে এসে তারা আগে খেতে চাইলে এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়।
‘এক পর্যায়ে তারা আমার ছেলে এবং ভাতিজা ওপর হামলা করে। স্থানীয়রা এসে তাদের ধাওয়া দেয়। চলে যাওয়ার পথে আমার বড় ভাই জালালের দোকানে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে তারা।’
তিনি আরও বলেন, হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে কোনো বিরোধ নাই। তাহলে কী নিয়ে ঝামেলা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তার লোকজন এলাকায় মাদক কারবার পরিচালনা করে আর আমরা সেগুলোর প্রতিবাদ করি। এ নিয়ে আমাদের প্রতি তাদের ক্ষোভ রয়েছে।’
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘তার লোকজনের সঙ্গে আমার লোকজনের কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। সংঘর্ষ হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে।
‘রোববার রাতে ঝালমুড়ি ও ফুচকার দোকানদার আল-আমিনের দোকানে বেশ কয়েকটি মেয়ে ফুচকা খেতে আসে। এ সময় সাবেক কাউন্সিলর অলিউল্লাহর ছেলে আর ভাতিজা এসে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করে। দোকানদার বিষয়টিতে প্রতিবাদ করলে তার তাকে মারধর করে। এতে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে ধাওয়া দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
পদ্মা সেতুর নাট খুলে টিকটক করা যুবক বাইজীদকে সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সালেহুজ্জামান সোমবার বিকেলে তাকে রিমান্ডে পাঠান।
আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর দিন রোববার রেলিংয়ের নাট খোলার ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে সন্ধ্যায় সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হন এক যুবক। পরে জানা যায়, তিনি বায়েজিদ তালহা নামে পরিচিত, তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম মো. বাইজীদ। তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।
আইনটির যে ধারায় তার নামে মামলা হয়েছে, সে ধারায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মনে করছে, সেতুর ওপরের রেলিংয়ের ইস্পাতের পাতের সংযোগস্থলের নাট খোলা নিছক খেয়ালের ছলে হয়নি; এটা পরিকল্পিত।
কী আছে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায়
বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় ‘অন্তর্ঘাতমূলক’ (স্যাবোটাজ) কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা ও শাস্তির উল্লেখ রয়েছে।
এই আইনের ১৫(খ) ধারায় বলা হয়, কোনো রেলপথ, রোপওয়ে, রাস্তা, খাল, সেতু, কালভার্ট, বন্দর, ডকইয়ার্ড, লাইটহাউস, বিমানবন্দর, টেলিগ্রাফ বা টেলিফোনের লাইন অথবা টেলিভিশন বা বেতার স্থাপনার দক্ষতা বিনষ্ট বা ক্ষতিসাধনের মতো কাজ করা যাবে না।
এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ ছাড়া যাবজ্জীবন বা ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুতে নাট খোলা বাইজীদ পটুয়াখালীর, করতেন ছাত্রদল
বাইজীদ তালহার বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলীখালী গ্রামে। একসময়ের ছাত্রদলকর্মী বাইজীদ বর্তমানে ঢাকায় ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও পটুয়াখালী বিএনপিসংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, বাইজীদ অতীতে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের সময়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি।
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল-হেলাল নয়ন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাইজীদ আগে পটুয়াখালীতে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তিনি অনেক দিন ধরে এলাকায় নেই। এখন ঢাকায় রাজনীতি করেন কি না তা জানি না। ব্যক্তির অন্যায় অপরাধ দল কখনই দায় নেবে না।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নদীর সিএন্ডবি ঘাট এলাকা থেকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
মৃত মাসুদ রানা রাজশাহী মহানগরের তেরখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রোনিকস বিভাগে পড়তেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে মাসুদ রানা তার দুই বন্ধুকে নিয়ে নদীর সিএন্ডবি ঘাটে গোসল করতে নামে। রাকিব হোসেন ও আবু তালিব নামে দুই শিক্ষার্থী সাঁতার কেটে নদী থেকে উঠতে পারলেও মাসুদ রানা উঠে না আসায় ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ফরিদ উদ্দিন জানান, রাজশাহী থেকে আসা ডুবরি দলের চেষ্টায় কিছুক্ষণ আগে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
পাড়ি দেয়ার সময় পদ্মা সেতুতে গাড়ি পার্কিং, হাঁটাহাঁটি কিংবা ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না অতি উৎসাহীরা। একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়েই চলছেন তারা।
সেতুটির নাট-বোল্ট খুলে এক যুবকের গ্রেপ্তারের পর এবার সেতুতে অবৈধভাবে পার্কিং করার অপরাধে এক প্রাইভেট কারচালককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে সোমবার দুপুরে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল কবীর।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে পাঁচ যুবক একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে পদ্মা সেতুতে ঘুরতে আসেন। মাওয়া টোলপ্লাজায় টোল আদায় করে সেতুতে ওঠেন তারা।
মাঝ সেতুতে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করে তারা সেলফি তুলছিলেন। অবৈধভাবে পার্কিং করার দায়ে চালককে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে সতর্ক করে দেয়া হয়।’
শনিবার সেতুর নামফলক উন্মোচনের আগেই সেতুতে কী কী করা যাবে না- সে বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। যদিও সেতু উদ্বোধনের পর সে নির্দেশনা মানতে প্রবল অনীহা দেখা যায় মানুষের।
এদিন উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর পরই বিপুলসংখ্যক মানুষ উঠে পড়েন মূল সেতুতে। তাদের নামাতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
ঘোষণা অনুযায়ী রোববার ভোরে সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পরও একই চিত্র দেখা যায়। যে যার মতো করে সেতুতে হাঁটাহাঁটি করছেন; তুলছেন ছবি। কেউ আবার এক ধাপ এগিয়ে সেতুর রেলিংয়ে বসে দিচ্ছেন পোজ।
সবকিছু ছাপিয়ে সেতুর ওপর সবচে অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্ম দেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলীখালী গ্রামের যুবক বাইজীদ তালহা।
সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। এরই ফাঁকে আলোচিত ভিডিওটি করেন বাইজীদ।
৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।'
নাট হাতে নিয়ে জবাবে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের... পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
ভিডিওটি বাইজীদের টিকটক অ্যাকাউন্টে আপলোড করার পর ফেসবুকেও সেটি ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় বাইজীদকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে রোববার সন্ধ্যার দিকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। তার বিরুদ্ধে বিশেষ নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য