চাঁপাইনবাবগঞ্জে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে কোল সম্প্রদায়ের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী রেলপথের বড়পুকুরিয়া সোনাতলা এলাকায় সোমবার সকাল ৬টার পর এ ঘটনা ঘটে।
৩৩ বছর বয়সী মৃত চিত্ত মার্ডির বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের বিলবৈলঠা গ্রামে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল ৬টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন ছাড়ে বনলতা এক্সপ্রেস। ট্রেন ছাড়ার মিনিট দশেক পরই চিত্ত ট্রেনে কাটা পড়েন। স্থানীয়দের ধারণা, তিনি লাইন পার হচ্ছিলেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাপের কামড়ে প্রেস ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
৩০ বছর বয়সী শাহাদাত শেখ উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিংগলিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের জাফর শেখের ছেলে। তিনি কাশিয়ানী বাজারে আব্দুর রহিম অফসেট প্রেসের মালিক।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকন।
শাহাদতের চাচাতো ভাই শেখ তারিকুল ইসলাম সুমনের বরাতে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় শাহাদাতকে বিষধর সাপ কামড় দেয়। পরে রাতেই তাকে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে বিষমুক্তকরণের টিকা না থাকায় গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শাহাদাতের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রবাসীর বাড়ি থেকে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
কলারোয়া উপজেলার দিগাং গ্রাম থেকে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৬০ বছর বয়সী মৃত নিজাম উদ্দীনের বাড়ি উপজেলার গোয়ালপোতা এলাকায়। তিনি কাজিরহাট বাজারে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতেন।
তার ভাইয়ের দাবি, নিজামকে হত্যা করা হয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কম্বোডিয়া প্রবাসী আব্দুস সামাদের স্ত্রী তহমিনা বেগমের সঙ্গে নিজামের দীর্ঘদিন ধরে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার রাতে তিনি তহমিনার ঘরে গেলে তহমিনার ছেলে সুমন হোসেন চোর চোর বলে চিৎকার করে।
‘চিৎকার শুনে নিজাম ঘর থেকে বের হতে গেলে পড়ে যান। এরপর তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪০ বছর বয়সী তহমিনা বেগম, তার ২০ বছর বয়সী ছেলে সুমন হোসেন ও প্রতিবেশী আব্দুল মাজেদকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।’
এ ঘটনায় নিজামের ভাই মশিয়ার সরদার বলেন, ‘রাত ১টার দিকে দিগাং এলাকার মেম্বার আসাদ সরদার আমাকে ফোন দিয়ে ডাকে। গিয়ে দেখি আমার ভাই মারা গেছে। তার হাতে ও পায়ে ক্ষত আছে। আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আরও পড়ুন:আষাঢ়ের আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। রোদের উত্তাপে হাঁসফাঁস চারপাশ। এমন গরমেই দুষ্টু ছেলেমেয়ের দল হানা দেয় কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকার লালমাই পাহাড়ে। সেখানে গাছে গাছে ঝুলে আছে হলুদ চাপালিশ!
পাকা এই চাপালিশ ভেঙে অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে কোষগুলো নিয়ে শুকনো মরিচ পোড়ায় কিশোর-কিশোরীর দল। হাল্কা মিষ্টি আর টক স্বাদের চাপালিশে ঝাল মিশিয়ে মুখে পুরে নেয় তারা। তারপর ওঠে তৃপ্তির ঠেকুর। দুপুরে উদরপূর্তির জন্য এর চেয়ে ভালো আয়োজন কি হতে পারে?
চাপালিশ দেখতে কাঁঠালের মতোই। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। আর পাকলে হলুদ হয়ে ওঠে। আকারে ছোট এই ফলটির ভেতরে কাঁঠালের মতোই ছোট ছোট কোষ থাকে। কোষের ভেতরে থাকা এর বীচিগুলোও অনেকে আগুনে পুড়িয়ে খায়। কিছুটা চিনা বাদামের স্বাদ পাওয়া যায় এতে।
টক মিষ্টি স্বাদের এই চাপালিশকে স্থানীয়রা চামল বা চাম্বল নামেই চেনে। লালমাই পাহাড়ে শত বছর আগে প্রাকৃতিকভাবেই গড়ে উঠেছিল চাপালিশের বন। ঘন সবুজ পাতার আড়াল থেকে উঁকি মারা পাকা চাপালিশ যে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আষাঢ় মাসেই চাপালিশ পাকতে শুরু করে। ৯০-এর দশকে লালমাই পাহাড়ে যে পরিমাণ চাপালিশ গাছ ছিল, এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই।
কোটবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, পুরো লালমাই পাহাড়ে বর্তমানে অর্ধশতাধিক চাপালিশ গাছ আছে। এক সময় এই সংখ্যাটি ছিল হাজারেরও বেশি। কাঠের জন্য কিংবা জমি প্রশস্থ করতে গত কয়েক বছরে স্থানীয়রা বহু চাপালিশ গাছ কেটে ফেলেছে।
ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘পাশের সেনানিবাসের ভেতর বর্তমানে বেশকিছু চাপালিশ গাছ রয়েছে।’
কোটবাড়ি এলাকার বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিম পার্শ্বে হাতিগড়া এলাকায় চাপালিশ বিক্রি করেন চা দোকানীরা। দোকানের সামনে ঝুড়িতে রাখা থাকে ফলটি। কেউ আবার ক্রেতা আকর্ষণের জন্য এটিকে দোকানের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।
চা দোকানী খায়ের মিয়া বলেন, ‘প্রতিটা ২০ টাকা করে বেচি। আষাঢ়-শাওন মাসে কাঁঠালের সাথে চামলও পাকে। শহর থেকে আসা মানুষেরাও শখ করে কিনে নিয়ে যায়। একটা গাছে ২ থেকে ৩ মন চাপালিশ ধরে।’
খায়ের জানান, লালমাই পাহাড়ে একসময় এত পরিমাণ চাপালিশ হতো যে, এগুলো খেতে শত শত বানর এসে ভিড় জমাতো। চাপালিশ কমার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকাটিতে এখন বানরের সংখ্যাও কমে গেছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘চাপালিশ একটি বিপন্ন উদ্ভিদ। আবাসস্থল ধ্বংস এবং মাত্রাতিরিক্ত আহরণের জন্য চাপালিশের বিস্তৃতি নাই বললেই চলে। সরকারের উচিত পরিকল্পিত বনায়নের অংশ হিসেবে চাপালিশ বৃক্ষের আবাদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা। এর কাঠ যেমন মূল্যবান, তেমনি এর ফল বন্যপ্রাণী ও মানুষের খাবার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।’
মেহেরুন্নেসা মনে করেন, জলবায়ু সংকটে থাকা এই পৃথিবীকে আবাসযোগ্য রাখতে বৃক্ষনিধন দমনের পাশাপাশি ব্যাপক বনায়ন কর্মসূচী হাতে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে চাপালিশের চাষ একটি চমকে দেয়ার মতো বিষয় হতে পারে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, সারাদেশে যেসব এলাকায় চাপালিশ গাছ জন্মে, তার মধ্যে কুমিল্লার লালমাই পাহাড় অন্যতম। বিলুপ্তপ্রায় এই গাছটির কাঠ ও ফল মূল্যবান। পাখি ও বনের পশুর জন্যও চাপালিশ উন্নত খাবার। এই গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি আসবাব বছরের পর বছর টিকে থাকে। এই গাছ রক্ষায় বন বিভাগের জরুরী উদ্যোগ নেয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা কোটবাড়িতে উদ্ভিদ উদ্যান করেছি। সেখানে চাপালিশের বীজ থেকে চারা করে গাছের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যে কেউ চাইলে আমরা বীজ কিংবা চারা দিয়ে সহযোগীতা করবো।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারই ছিলেন পরিবারের সবচেয়ে বড় ভরসা। বাড়ির ছোট ছেলে হলেও সবাই নির্ভর করত তারই ওপর। সেই উৎপলকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল পুরো পরিবার।
উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার এঙ্গেলদানি গ্রামে। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। ৩৫ বছর বয়সী উৎপল প্রায় ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করতেন আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
কলেজের মাঠে গত শনিবার দুপুরে মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুর বিরুদ্ধে। পরদিন সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আহত উৎপল মারা যান।
উৎপলকে হারিয়ে পরিবারের অবস্থা সম্পর্কে তার বড় ভাই অসীম কুমার পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়ির অবস্থা এখন কী বলব? আমাদের ফ্যামিলিটাই শেষ। আমার মাকে নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে। সে তো ছেলের জন্য পাগল। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। উৎপল ছিল সবার ছোট ও আদুরে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। গ্রামে আমরা এখনও যৌথ পরিবারে থাকি। ওই আমাদের পরিবারটাকে নিয়ন্ত্রণ করত। আর্থিকভাবেও ওই দেখত। আমরা অন্য ভাইরা ছোটখাটো কাজ করি।
‘আমি সাভারে একটা ছোট দোকান করি। আরেক ভাই দর্জি। আর বাকি দুজন টেক্সটাইলে ছোট পোস্টে চাকরি করে।’
দুই বছর আগে বিয়ে করেছিলেন উৎপল। স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর-১-এ আনছার ক্যাম্পে থাকতেন।
তার ভাই বলেন, ‘উৎপলের এখনও কোনো সন্তান হয়নি। সে আর তার স্ত্রী মিরপুর-১-এ আনছার ক্যাম্পে থাকত। সেখান থেকেই আশুলিয়ার চিত্রশাইল গিয়ে ক্লাস নিতো।’
উৎপলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় রোববার জিতু ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন অসীম।
জিতু দশম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স ১৯ বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, এই তরুণ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখান থেকে ঝরে পড়ার পর হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, উৎপলকে পেটাতে পরিকল্পনা করেই স্টাম্প নিয়ে এসেছিলেন জিতু। এটি নিছক ঝোঁকের বসে ঘটিয়ে ফেলা কোনো অপরাধ নয়।
যেখানে শিক্ষককে পেটানো হয়েছে, সেই জায়গাটি কলেজের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতাধীন বলে জিতু ঘটনার আগে আগে মেইন সুইচ বন্ধ করেছেন, যেন কোনো কিছু ক্যামেরায় রেকর্ড না হয়।
সেখানে মেয়েদের যে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল, সেখানে স্টাম্প ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের। আর সেই শিক্ষককে পেটানো হয়েছে কাঠের স্টাম্প দিয়ে।
কলেজের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘জিতু ছাত্র হিসেবে খুবই দুর্বল প্রকৃতির। উচ্ছৃঙ্খলও। তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়েরও অভিযোগ ছিল।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন:চালুর পর থেকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধের ঘোষণা এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার এ ঘোষণা আসার পর বুধবার সকাল থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে অনেকটাই কম দেখা গেছে। ছোট যানবাহন ও বাসের সংখ্যাও ছিল খুবই কম।
এর আগে চালুর দিন পদ্মা সেতুতে বাইক দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে টোল প্লাজা এলাকায় সেতুর ওপরে টহল আরও কঠোর এবং জোরদার করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যানবাহন টোল প্লাজায় কোনো রকম অপেক্ষা ছাড়াই টোল দিয়ে সেতু পার হচ্ছে।
অন্যদিকে কিছুসংখ্যক মোটরসাইকেল টোল প্লাজার অদূরে থাকলেও তারা সেতুতে উঠতে না পারায় পিকআপ ভ্যানে করে পাড়ি দিচ্ছে পদ্মা।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ‘সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় এগুলো পিকআপ বা ট্রাকে করে পার করা হচ্ছে। যানবাহন চলাচল কম করছে এমনটি বলা যাবে। সাধারণ পরিবহন বাস, দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ সবই ভালো পরিমাণে চলাচল করছে।’
আরও পড়ুন:প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
বিকল ইঞ্জিন পরিবর্তন করলে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিক থেকে ট্রেন চলতে শুরু করে।
ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে ভাওয়াল এক্সপ্রেস ঢাকা যাচ্ছিল। সকাল ৬টার দিকে আওলীয়ানগর এলাকায় এর ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর রিলিফ ট্রেন গিয়ে বিকল ইঞ্জিন পরিবর্তন করলে আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পদ্মা সেতু চালুর প্রভাব পড়েছে পটুয়াখালী-ঢাকা নৌরুটে চলাচলরত লঞ্চগুলোতে। গত রোববার পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে দুদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পায়নি লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
যাত্রী ধরে রাখতে কমানো হয়েছে ভাড়া। এর পরও পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে রুটে লঞ্চের সংখ্যা কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ উপভোগ করতে অনেকেই সড়কপথ ব্যবহার করছে। তাই কয়েক দিন পর আবার আগের মতোই যাত্রী পাবে বলে আশা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের। লঞ্চের সুপারভাইজার, মাস্টার ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, আগের মতো যাত্রীদের চাপ নেই, নেই হই-হুল্লোড়ও। কিছুক্ষণ পরপর দু-একজন যাত্রী এলে স্টাফরা কম দামের টিকিটের হাঁকডাক দিয়ে তাদের লঞ্চে ওঠানোর চেষ্টা করছেন।
দুদিন আগেও যেখানে চারটি ডাবল ডেকারের দোতলা ও তিনতলা লঞ্চ ছিল, সেখানে মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মাত্র দুটি লঞ্চ চোখে পড়ে। এর মধ্যে একটি দোতলা, আরেকটি তিনতলা লঞ্চ।
তিন তলাবিশিষ্ট সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের পটুয়াখালী ঘাটের কেবিন ইনচার্জ মো. জাফর মিয়া জানান, তাদের লঞ্চে প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের জন্য সিঙ্গেল, ডাবল, ফ্যামিলি, ভিআইপিসহ মোট কেবিনের সংখ্যা ১২৯টি। এর মধ্যে বিকেল সোয়া ৫টার মধ্যে ৯২টি কেবিন বুকিং হয়েছে। বাকি কেবিন খালি। এ ছাড়া ওই সময় পর্যন্ত নিচতলা আর দোতলার ডেকে সাধারণ যাত্রী উঠেছেন সর্বমোট ২০০ থেকে ২৫০ জন।
জাফর মিয়া বলেন, ‘বছরের প্রায় সময়, এমনকি দুদিন আগেও আমাদের লঞ্চের কেবিন এক দিন আগেই প্রায় সব অগ্রিম বুকিং থাকে। সেখানে আজকে এই অবস্থা।
‘যাত্রীদের কথা ভেবে আমরা সাধারণ যাত্রীদের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করেছি মাত্র ৩০০ টাকা। আর কেবিন ভাড়া সিঙ্গেল ১ হাজার ২০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া ভিআইপি কেবিন (বাথরুম সংযুক্ত) ৫ হাজার টাকা সেটিও আগের চেয়ে কমিয়েছি।’
লঞ্চের ইনচার্জ মো. ইউনুস মিয়া জানান, গত সোমবারও তারা ঢাকা থেকে প্রায় ১০০ কেবিনে যাত্রী নিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া সদরঘাট আর ফতুল্লা ঘাট থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০-৩০০ যাত্রী ছিলেন ডেকে।
তিনি বলেন, ‘লঞ্চের এই কম যাত্রীর উপস্থিতি বেশিদিন থাকবে না। আশা করি আগের মতোই যাত্রী পাব আমরা। এখন হয়তো অনেকেই নতুন সেতু দেখতে গাড়িতে করে ঢাকা যাচ্ছে বা পটুয়াখালী আসছে।’
ঘাটে অপেক্ষমাণ আওলাদ-৭ লঞ্চের পটুয়াখালী ঘাটের ইনচার্জ আব্দুল আজিজ জানান, তার লঞ্চে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ৪৫টির মতো কেবিন বুকিং হয়েছে। নিচতলা আর দোতলার ডেকে সাধারণ যাত্রী উঠেছেন ১৫০ থেকে ২০০ জন।
লঞ্চের ভাড়া নিচ্ছেন সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা আর সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার টাকা। ডাবল কেবিন ভাড়া ২ হাজার টাকা।
আজিজ বলেন, ‘কোরবানি ঈদের আগেই আশা করি যাত্রীসংখ্যা আগের মতো পাব আমরা। কারণ ঢাকার অনেক যাত্রীই মালামাল নিয়ে বাসে আসতে পারবেন না।’
আওলাদ-৭ লঞ্চের ডেকের যাত্রী সোলায়মান মিয়া বলেন, ‘তিন দিন আগে ছুটিতে গ্রামের বাড়ি মৌকরণ এলাকায় আসছিলাম। এখন লঞ্চে যাচ্ছি, কারণ সঙ্গে দুটি বড় ব্যাগ। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৩০০ টাকায় লঞ্চে শুইয়ে শুইয়ে দুজন চলে যাব।
‘কিন্তু বাসে গেলে তো দুজনের জন্য দুটি টিকিট আবার ব্যাগের জন্যও টাকা দিতে হতো।’
লঞ্চের কেবিনের যাত্রী আবু মিয়া বলেন, ‘একবার ইচ্ছে ছিল বাসে যাই। কিন্তু চিন্তা করলাম ৬-৭ ঘণ্টা বাসে বসে থাকা কষ্টকর, এর চেয়ে বরং কেবিনে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যাই।’
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে দোতলা আর তিন তলাবিশিষ্ট মোট চারটি লঞ্চ চলাচল করত। এসব লঞ্চের কেবিনের চাহিদা ছিল সোনার হরিণের মতো। ডেকে ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি যাত্রী নিয়ে প্রতিনিয়তই আসা-যাওয়া করত লঞ্চগুলো।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য