সরকারি প্রকল্পে মেয়াদ আর বরাদ্দ বাড়ানো নিয়ে সমালোচনার মধ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাদ্দের চেয়ে কম টাকায় কাজ করে বাকি টাকা ফিরিয়ে দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
কক্সবাজারে সরকারের মহাপরিকল্পনাকে ঘিরে ২০১৬ সালের যাত্রা শুরু করে সংস্থাটি। শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কার্যালয় ছিল না। চুক্তিভিত্তিক জনবল দিয়ে কাজ করানো হতো।
কর্তৃপক্ষের জন্য ১০ তলা স্থায়ী অফিস ভবন নির্মাণের জন্য সরকার ১১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কাজ শেষে বেঁচে যাওয়া ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা সরকারকে ফেরত দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
আগামী ১৮ মে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত ভবনটি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় প্রতিষ্ঠানটির অফিস ভবন নির্মাণের জন্য ১ দশমিক ২১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়। ১১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দে ওই বছরের ৬ মে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই। এর মধ্যে ২০২০ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও ২ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়। যা ২০২১ সালে এসে শেষ হয়।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানান, ভবনটির বেজমেন্ট গ্রাউন্ড ফ্লোর ২২ হাজার ২৫ স্কয়ার ফিট, গ্রাউন্ড ফ্লোর ১৬ হাজার স্কয়ার ফিট, প্রথম ফ্লোর ২০ হাজার ৮৮২ স্কয়ার ফিট, দ্বিতীয় ফ্লোর ১৬ হাজার ৭৭ স্কয়ার ফিট, তৃতীয় ফ্লোর ১৯ হাজার ৫৩১ স্কয়ার ফিটসহ মোট ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮১ স্কয়ার ফিট।
এর মধ্যে রয়েছে মাল্টিপারপাস হল, ওয়াটার হারভেস্টিং, সোলার সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, রেস্ট হাউস, ওয়াইজোন, রেস্টুরেন্ট সিসি ক্যামেরাসহ সব ধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা।
২০১৬ সালের ৬ জুলাই কক্সবাজারকে একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জাতীয় সংসদ কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল-২০১৫ পাস হয়। ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে ফোরকান আহমদকে নিয়োগ করে সরকার। এরপর ১৪ আগস্ট তিনি যোগদান করেন।
ফোরকান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভবনটি নির্মাণের সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি হয়েছেন। এতে নির্মাণ কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। কাজের গুণগতমান এবং সব কর্মকর্তা আমাদের নজরদারিতে ছিল, এ কারণে অনিয়ম ঘটেনি, টাকাও সাশ্রয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভিত্তিপ্রস্তর করে নিজেই উদ্বোধন করবেন, এটিই আমার বড় প্রাপ্তি।’
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টাকা ফেরত দেয়াটা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। তবে সড়ক প্রকল্পগুলোতে আরও সুপরিকল্পিত কাজ করা উচিত। যেমন প্রধান সড়ক প্রকল্প। সেখানে হয়তো পয়ঃনিষ্কানের ব্যবস্থা তেমন নেই। হয়তো একই কাজ আবার করতে হতে পারে। সে হিসেবে আরও অর্থ বাড়বে। ভবন নির্মাণের মতো এখানেও যদি পরিকল্পনা থাকে তাহলে সরকারের টাকা অপচয় হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভবনের চেয়ে নগর উন্নয়ন নিয়ে ভাবা উচিত। আশা রাখছি, প্রতিষ্ঠানটির নতুন মাস্টারপ্ল্যানে এসব বাস্তবায়ন হবে।’
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের মুখপাত্র এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন নির্মাণ শেষ হয়েছে। এখন কর্মকর্তা আরামে থাকবেন, কিন্তু সড়ক উন্নয়নের নামে প্রধান সড়কটি এখন ছোট খালে পরিণত। শুধু নিজেদের চিন্তা না করে জনগণের চিন্তাটা আগে করা উচিত ছিল।’
কী করতে যাচ্ছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান, সমুদ্রসৈকতের ৭০ দশমিক ৬ একর জায়গাকে সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করে সেটিকেই মহাপরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, যার গেজেটও হয়ে গেছে।
বিশাল এই সৈকতকে ছোট ছোট এলাকায় ভাগ করে আধুনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আর বাঁকখালী নদীর চারপাশ হাতিরঝিলের আদলে তৈরি করা হবে। গড়ে তোলা হবে নতুন আধুনিক শহর। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা যাতে আনন্দময় সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য উন্নত দেশের সৈকত এলাকায় যে যে সুবিধা আছে, তার সবই কক্সবাজারে রাখা হবে।
তবে জনবলের সংকট নিয়ে আক্ষেপও করছেন তিনি। বলেন, ‘যেখানে আড়াই শতাধিক জনবল দরকার সেখানে বর্তমানে আছে অর্ধ-শতাধিক।’
কক্সবাজারের পরিকল্পিত উন্নয়নে নতুন করে আবারও ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি । এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৪ কোটি টাকা, যা চূড়ান্ত করতে সময় লাগবে দুই বছর।
২০১৩ সালেও কক্সবাজারের উন্নয়নে আরও একটি ‘মাস্টারপ্ল্যান’ করা হয়েছিল। যা সরকার অনুমোদনও দিয়েছে। শহর ও সমুদ্রসৈকতের কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এলাকা ঘিরে এই মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছিল নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরও।
তবে ২০১৩ সালে অনুমোদিত মাস্টারপ্ল্যানটি বাস্তবসম্মত নয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘যারা প্ল্যান তৈরি করেছেন, তারা কেউ মাঠ পর্যায়ে কাজ করেননি। সম্ভবত ঢাকায় বসে প্ল্যান করা হয়েছে। ফলে প্ল্যানে একটি ১০ ফুটের রাস্তা ১০০ ফুট করার পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে, যা করা সম্ভব নয়। ফলে নতুন করে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে হচ্ছে।’
আবার শেলটেক নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চেষ্টা করে তৈরি করে কক্সবাজার পর্যটন এলাকার প্ল্যানটি। এটি বাস্তবতার নিরিখে অনেক গরমিল দেখা গেছে।
পৌরসভার টেকপাড়ার উকিলপাড়া এলাকাটি একটি আবাসিক এলাকা হলেও মাস্টারপ্ল্যানে একে দেখানো হয়েছে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে। আবার শহরের পাহাড়তলির কচ্ছপিয়া পুকুরের পূর্ব এলাকাকে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা বলে মাস্টারপ্ল্যানে উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে একটি আবাসিক এলাকা।
কক্সবাজার সদর উপজেলার লাগোয়া উত্তর পাশের এলাকাটি আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে। সেটিকেও মাস্টারপ্ল্যানে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের সংযোগস্থল লিংক রোড এলাকাটি একটি বাণিজ্যিক এলাকা হলেও সেটিকে মাস্টারপ্ল্যানে উল্লেখ করা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা হিসেবে। এসব কারণে নতুন করে মাস্টারপ্ল্যান করা জরুরি বলে মনে করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
আগের প্ল্যান ঢাকায় বসে করার কারণে বাস্তবসম্মত না হওয়ার কথা উল্লেখ করে ফোরকান আহমদ বলেন, ‘বাস্তবসম্মত এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মহাপরিকল্পনাটি করা হচ্ছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় যুক্ত থাকবে। কোথায় আবাসিক এলাকা, কোথায় হাসপাতাল, মাকের্ট, কৃষি জমি, উন্মুক্ত স্থান, রাস্তা কত বড় হবে তা পরিষ্কারভাবে করা হবে।’
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য