১৩ বছর পলাতক থাকার পর হত্যা ও চুরি মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আদালতের মাধ্যমে রোববার দুপুরে আসামি মাসুদ রানা ওরফে ভোলাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউপির হরিপুর (বেড়িবাঁধ) থেকে শনিবার রাত ১১ টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দীন।
তিনি জানান, ২০০৩ সালে মাসুদ রানা ওরফে ভোলার বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা ও চুরি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যার মামলায় ওই বছরেই গ্রেপ্তার হয়ে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি জেলে ছিলেন। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে তিনি জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে যান।
ওসি বলেন, মাসুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়।
বন্যার ধাক্কায় টালামাটাল হয়ে পড়েছে সিলেটের স্বাস্থ্যসেবা খাত। বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্তত ২৪টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছিল। এতে ওই হাসপাতালগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অবকাঠামো আর আসবাবপত্রেরও।
যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় ওসমানী হাসপাতালেও বন্ধ রয়েছে রোগ নির্ণয়ের কয়েকটি পরীক্ষা ও কিছু সেবা। উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর অবস্থা আরও করুণ।
মস্তিষ্কে রক্ষক্ষরণজনিত কারণে রোববার ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা লায়েক আহমদ। চিকিৎসকরা তাকে সিটি স্ক্যান করানোর কথা বললেও ওসমানী হাসপাতালে তিনি পরীক্ষাটি করাতে পারেননি।
রোববার দুপুরে লায়েকের ভাই সায়েক আহমদ বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে বন্যার পানি ঢুকে সিটি স্ক্যান যন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনতে বলা হয়েছে। কিন্তু রোগীর যে অবস্থা তাতে তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়াও কষ্টকর।’
গত ১৫ জুন সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। আর ১৮ জুন সিলেট বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্যকেন্দ্র এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়ে। নিচ তলায় হাঁটু পানি জমে যায়। এতে হাসপাতালটির সিটি স্ক্যান, এমআরআই, রেডিওথেরাপি যন্ত্র ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, জেরারেটরসহ বেশকিছু আসবাবপত্রও নষ্ট হয়েছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বন্যায় হাসপাতালের নিচতলা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিচতলায় থাকা এমআরআই, সিটি স্ক্যান ও রেডিওথেরাপি মেশিন জলমগ্ন ছিল।’
পরিচালক জানান, রেডিওথেরাপি যন্ত্রটি চালুর চেষ্টা চললেও এমআরআই, সিটি স্ক্যান যন্ত্র আবার চালু করা সম্ভব হবে কি-না তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। এগুলো নষ্ট থাকায় রোগীরা বাইরে থেকে এসব পরীক্ষা করিয়ে আনছেন।
হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স, পরিচালকের গাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করতে আরও সময় লাগবে।
শুধু ওসমানী হাসপাতালই নয়, স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে- সিলেট বিভাগের ৪০টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে অন্তত ২৪টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবগুলো কমপ্লেক্সেই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া ৮৫টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৩১টি এবং ৯২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৪১৪টি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সিলেটের জৈন্তাপুর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ বাদে বাকি ১০ উপজেলার সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ এই জেলার সবকটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছিল। এখনও এই জেলার অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বন্যা কবলিত সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর (ইপিআই) ফ্রিজ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, এক্স-রে মেশিন, এমএসআর সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। জলমগ্ন এসব যন্ত্র কার্যক্ষম কি না, পানি না সরায় তা এখনো যাচাই করা যাচ্ছে না। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে আরো সময় লাগবে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলায় ১০ ফুট পানি ছিল। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। অনেক আসবাব ভেসে গেছে। ফলে পানি কমতে শুরু করলেও সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
ক্ষয়ক্ষতির প্রসঙ্গে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘চলমান বন্যা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। অবকাঠামো, আসবাবপত্রের পাশপাশি অনেক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে গেছে।’
হিমাংশু জানান, পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। পানিবাহিত রোগের প্রকোপও বেড়েছে। বন্যায় যন্ত্রপাতি, অবকাঠামো ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ সামলাতে সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পরিদর্শনে সোমবার সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে আসবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।
আরও পড়ুন:আগামী ২৭ জুলাইয়ের ভোটকে ঘিরে একটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ২৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পরে দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রার্থী তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কোথায় কারা প্রার্থী
ঝিনাইদহ শৈলকূপায় চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন এম আব্দুল হাকিম আহমেদ।
দুটিটি পৌরসভার মধ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মেয়র পদে হাবিবুর রহমান, ক্ষেতলালে সিরাজুল ইসলাম বুলুকে মেয়র পদে প্রার্থী করা হয়েছে।
ইউনিয়নের ভোটে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁওয়ে মতিউর রহমান, বাচোরে জীতেন্দ্র নাথ বর্মন, নন্দুয়ারে আব্দুল বারীর হাতে নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে রেজাউল করিম নান্নু, রামনাথপুরে শাহ্ মো. মোফাজ্জল হোসেন, পীরগঞ্জে নূরুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হোসেন আলী বাগছীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নে ইব্রাহিম ফারুক, টাঙ্গাইল সদরের কাতুলী ইউনিয়নে ইকবাল হোসেন, মাহমুদনগরে সাহাদৎ হোসেন, কাকুয়ায় বদিউজ্জামান ফারুকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে খুরশীদ আলম (মাসুম), মেঘচামীতে হাসান আলী খাঁন, আড়পাড়ায় আরমান হোসেন (বাবু) কে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
মুন্সীগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নে শাহ নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন নৌকা।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়ায় হাফিজুল ইসলাম জুয়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা (উত্তর) ইউনিয়নে আবুল খায়ের, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইলে আবু মুছা মজুমদার, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁওয়ে সৈয়দ মনজুর হোসেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরীতে হাসান মাকসুদ, চরআবদুল্যাহে কামাল উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর সদরের দিঘলী ইউনিয়নে সালাউদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন নৌকা।
রাঙ্গামাটি লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নে রকি চাকমাকে মার্কা তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে কুলিক নদী থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
রোববার বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে কুলিক নদীর রাজবাড়ী ঘাট এলাকায় মরদেহটি ভাসছিল।
রানীশংকৈল থানার ওসি জাহিদ ইকবাল নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
মরদেহের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি জানান, বিকেলে নদীতে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় জেলেরা। তারা মরদেহটি ভাসতে দেখে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানান।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নদী থেকে মহদের উদ্ধার করে পুলিশে হস্তান্তর করেন।
ওসি বলেন, ‘আমরা মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:ফেনীর দাগনভূঞায় স্কুলের পেছন থেকে শিশু শিক্ষার্থীর লতায় প্যাঁচানো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আনোয়ার হোসেন স্বপন নামে ওই ব্যক্তি রোববার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা।
আনোয়ারের বাড়ি উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য স্কুল থেকে বের হয় নেয়াজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্রীটি। সেখান থেকে তাকে জঙ্গলের দিকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন স্বপন। শিশুটি সবাইকে এ ঘটনা বলে দেবে জানালে তাকে গাছের লতার সঙ্গে প্যাঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, স্বপনকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোনে বিভিন্ন পর্ন ভিডিও পাওয়া গেছে। তাকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুন:স্থানীয় বাস মালিক সমিতির রুট পারমিট না থাকায় পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যেতে পারছে না সাতক্ষীরার বেশির ভাগ বাস।
পরিবহন মালিকরা বলছেন, বিআরটিএর অনুমোদন পেলেও স্থানীয় মালিক সমিতিগুলোর অনুমোদন না থাকায় পদ্মা সেতু রুটে গাড়ি নামানো যাচ্ছে না।
সাতক্ষীরার এক পরিবহন মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সরকার যখন একটা গাড়ির লাইসেন্স দেয়, তখন সব সড়কে চালানোর অনুমতি থাকে। তবে সড়কে চলতে গেলে জেলার পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে খুশি করতে হয়। এটা না করলে তারা নানা রকম বাধাবিপত্তি দেন।’
তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যেতে গেলে গোপালগঞ্জ জেলার মালিক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ম্যানেজ করতে হয়। তাদের কিছু দিতে হয়। সেটা আমরা এখনও করতে পারিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আলোচনা করে আমরা এই রুটে পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করব। সেই প্রক্রিয়া চলছে।’
সাতক্ষীরা লাইনের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আমাদের গাড়ি ১ জুলাই থেকে গোপালগঞ্জ-মাওয়া রুট দিয়ে চলাচল করবে। গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
একে ট্রাভেলসের ম্যানেজার কাজল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সব গাড়ি ১ জুলাই থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করবে। কিছু গাড়ি দৌলতদিয়া-আরিচা রুট দিয়েও চলাচল করবে।’
রুট পারমিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদেরকে সব রুটে চলাচলের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। তবে গোপালগঞ্জ-মাওয়া রুট দিয়ে চলতে গেলে ওইসব রুটের পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে আবেদন করে আলাদা করে পারমিশন নিতে হবে।’
এসপি গোল্ডেন লাইনের ম্যানেজার মিলন কুমার রায় বলেন, ‘আমাদের গাড়ি ১ জুলাই থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এখনও সব গাড়ি দৌলতদিয়া-আরিচা ফেরিঘাট হয়ে ঢাকা যাচ্ছে। তবে যেসব যাত্রী গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, সাইনবোর্ডসহ তার আশপাশে যাবে, তারা পদ্মা সেতু হয়ে যাবে না। কারণ, তাদের ওপাশ দিয়ে ঢাকা পৌঁছাতে অনেক ঘুরতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সোহাগ পরিবহন, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ও ইমাদ পরিবহন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যাচ্ছে। বাকি পরিবহনগুলো কবে নাগাদ পদ্মা সেতু হয়ে যাবে তা জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি তাহমিদ চয়নকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গোপালগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামিল সরোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাস নিয়ে কেউ পদ্মা সেতু হয়ে যেতে গেলে এসে আলোচনা করুক, আবেদন করুক, আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। কেউ আলোচনা না করে পরিবহন এ সড়কে চালাতে পারবেন না, এটা নিয়ম।
‘কোনো পরিবহন মালিক এ সড়কে গাড়ি নামাতে চাইলে তাকে আসতে বলুন। শুধু এখানে নয়, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর জেলার মালিক সমিতি থেকেও তাকে অনুমতি নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে চলাচলের জন্য বিআরটিএ অনুমতি দেয়। আমরা অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের জন্য অনুমতি দিয়ে থাকি। যেসব পরিবহন মালিক এরই মধ্যে অনুমতি নিয়েছেন, সেসব পরিবহন চলাচল করছে।’
ভোমরা স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়ী নেতারা।
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম খান নিউজ বাংলাকে জানান, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ট্রাক পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চৌকিঘাটা গ্রামের মালিগ্রাম-চৌকিঘাটা সড়কের একটি কালভার্টের মাঝ বরাবর ভেঙে গর্ত হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ।
গর্তটির কারণে প্রতিদিনই গ্রামের স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ হাটে বেচাকেনার জন্য শস্য পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীর।
স্থানীয় মেম্বার মোশারফ হোসেন জানান, ১০/১১ দিন আগে মাটিভর্তি একটি ট্রাক কালভার্টটি অতিক্রম করার সময় এর কিছু অংশের কংক্রিট ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এর ফলে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মোশারফ আরও জানান, কালভার্টটির ওপারে চৌকিঘাটা, সাউতিকান্দা, হিরালদী, ঘারুয়া, চানপুট্টি, পূর্ব সদরদী, খামিনার বাগ, গঙ্গাধরদীসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ বসবাস করেন। প্রতিদিন এসব গ্রামের হাজারও মানুষ কালভার্টটি পাড়ি দেন।
এ ছাড়া সড়কটি আধা পাকা ইটের সলিং হওয়ায় বৃষ্টি-বাদলের দিনে তা ভোগান্তির কারণ হয় সাধারণ মানুষের।
স্থানীয় কৃষক এনায়েত বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা প্রতি শনি ও রোববার পাট, ধান, গম, কালিজিরা, ভুট্টা ইত্যাদি ফসল বিক্রি করতে এই রাস্তা দিয়ে মালীগ্রাম হাটে যাই। এই ফসলই আমাদের সব। ফসল বিক্রি করতে না পারলে আমরা না খেয়ে মরব।’
সুলতান খা নামে বয়স্ক এক ব্যক্তি বলেন, ‘ঘারুয়া বাজারে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদসহ সব কাজেই এই রাস্তাটা ব্যবহার করি। এ ছাড়া মাঠের ফসল আনা নেয়ার জন্য এই রাস্তাটা আমাদের অনেক দরকার। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের কালভার্টটা ঠিক করে দেন।’
এই বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সাদিকুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত আবেদন করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর মুন্সী বলেন, ‘আমি ওই কালভার্টটি ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি জানতাম না। আমি খোঁজ নিয়ে ভাঙা অংশ ঠিক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে নিয়ে টিকটক ভিডিও করা যুবক বাইজীদ তালহার বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলীখালী গ্রামে। টিকটকে তিনি বায়েজীদ তালহা নামে পরিচিত হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম মো. বাইজীদ।
একসময়ের ছাত্রদলকর্মী বাইজীদ বর্তমানে ঢাকায় ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও পটুয়াখালী বিএনপিসংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, বাইজীদ অতীতে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের সময়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি।
পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একাধিক নেতা এসব তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন। বাইজীদ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন মোহনের নিকটাত্মীয় বলেও দাবি করছেন তারা।
তবে মোহনের দাবি, বাইজীদ তার আত্মীয় নন। তিনি (বাইজীদ) জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের অনুসারী ছিলেন। বিপ্লব এখন যুবদল করেন।
জেলা ছাত্রদলের এক জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় মোহনের সঙ্গেও বাইজীদ রাজনীতি করেছেন। তবে তার কোনো সংগঠনিক পদ ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাইজীদ ঢাকায় চলে যান। সেখানে তিনি এখন ব্যবসায় জড়িত।
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল-হেলাল নয়ন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাইজীদ আগে পটুয়াখালীতে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যখন বিপ্লব গাজী ভাই ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তবে তিনি অনেকদিন ধরে এলাকায় নাই। এখন ঢাকায় রাজনীতি করেন কিনা তা জানি না। ব্যক্তির অন্যায় অপরাধ দল কখনই দায় নেবে না।’
বাইজীদকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে রোববার সন্ধ্যার দিকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
সিআইডির সাইবার ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ নিউজবাংলাকে বাইজীদকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আটকের পর তাকে সিআইডি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখানে একাধিক ইউনিটের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে কথা বলছেন।’
একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, বাইজীদের বাড়ি পটুয়াখালী হলেও তিনি ঢাকার শান্তিনগরে থাকেন। পদ্মা সেতুতে নাট খোলার বিষয়টি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বাইজীদ পদ্মা সেতুতে ওই টিকটক ভিডিও বানানোর পর নিজের টিকটক প্রোফাইলে পোস্ট করেন। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে তিনি ভিডিওটি মুছে ফেলেন। একই সঙ্গে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল ডিঅ্যাকটিভেট করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
পরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে তাকে শান্তিনগরের বাসা থেকে আটক করে সিআইডি।
শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক মানুষ উঠে পড়েন মূল সেতুতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। এরই ফাঁকে আলোচিত ভিডিওটি করেন বাইজীদ।
৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।'
নাট হাতে নিয়ে জবাবে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের... পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
এ সময় পাশ থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’
ভিডিওটি বাইজীদের টিকটক অ্যাকাউন্টে আপলোড করার পর ফেসবুকেও সেটি ভাইরাল হয়। তবে রোববার বিকেলে এই অ্যাকাউন্টে ‘প্রাইভেট’ করা অবস্থায় দেখা গেছে।
সাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর পদ্মা সেতুতে রোববার দিনভর গণপরিবহন ছাড়া অন্য প্রায় সব গাড়িকে সেতুতে থামাতে দেখা যায়। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাহাঁটির পাশাপাশি তুলেছেন ছবি।
মাইক্রোবাস ভাড়া করে পরিবার নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে আসেন তোফাজ্জল হোসেন। গাড়িটি দাঁড় করিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে পরিবারের ১৪ সদস্য সেতু ঘুরে দেখেন; তোলেন দলবদ্ধ ছবি।
নিউজবাংলাকে তোফাজ্জল বলেন, ‘যেদিন সেতু উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়েছে, আমরা সেদিনই ঠিক করেছি প্রথম দিনই সেতু দেখতে আসব। এ জন্য আমার মা, খালা, ফুপুসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। সারা দিন ঘুরে আবার কুমিল্লা ফিরে যাব।’
নিয়ম ভাঙার প্রসঙ্গ টানলে তিনি বলেন, ‘দেখেন আমরা তো কত অনিয়মই করি। এতদিনের ইচ্ছা স্বপ্নের সেতুতে এসে দাঁড়াব। নিজের স্বপ্নপূরণে একটু অনিয়ম করা দোষের কিছু না।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য