কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসেছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড।
গণভবনে শুক্রবার বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে বৈঠকটি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং।
বোর্ডের সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে আরও অংশ নিয়েছেন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, রাশিদুল হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও আবদুস সোবাহান গোলাপ।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র তুলেছেন। অন্যদিকে বিএনপি এ নির্বাচনের জন্য কোনো প্রার্থী ঘোষণা করবে কি না, এই অনিশ্চয়তার মধ্যে দলটির দুজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী যারা
জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ দলের গতবারের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। নৌকা প্রতীক পেলে তাকে এমপি পদ ছেড়ে ভোটে লড়তে হবে এবং তিনি তাতে প্রস্তুত বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান রুবেল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এবং মহানগর আওয়ামী লীগ যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু, আওয়ামী লীগের দপ্তর উপকমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শফিউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র ভট্টাচার্য্য, চট্টগ্রাম রাউজান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস কাজী ফারুক আহমেদ।
আগামী ১৫ জুনের এই ভোট বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রথম পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই হবে কি না, তা অনিশ্চিত এখনও। এর কারণ বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা আছে দলটির।
তবে বিএনপি ভোটে না এলেও সেখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পরোক্ষ লড়াই হবে এ কারণে যে ক্ষমতাসীনদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতারা স্বতন্ত্র পরিচয়ে হলেও ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও এভাবেই লড়াই হয়েছিল।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আগের দুটি নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সদর আসনটি ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীনরা দখল করতে পারলেও তিন বছর পর শহরের নির্বাচনে তাদের পরাজয় হয় ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হারে ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। অর্থাৎ পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে ২৪ হাজার।
আর টানা ১০ বছর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালনের আগে ২০০৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনেও জয় পেয়েছিলেন বিএনপি নেতা কাজী মনিরুল হক সাক্কুই। তার টানা প্রায় দেড় যুগের নগর পরিচালনায় সাফল্য-ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে আসছে। যেসব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি, সে জন্য এবার প্রশ্নের মুখেও পড়তে হবে তাকে।
সারা দেশে ক্ষমতাসীন হিসেবে আওয়ামী লীগকেই পূরণ না হওয়া নাগরিক সুযোগ-সুবিধার জন্য প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে। এদিক দিয়ে আওয়ামী লীগ বরং কুমিল্লায় নির্ভার থেকে ভোটে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখার পর এটিকে চমৎকার যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘মেশিনের ভালো-খারাপ নিয়ে কিছু বলব না, এ ব্যাপারে মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত জানতে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।’
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সিইসি এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও ইভিএম প্রকল্প এই সভার আয়োজন করে।
সিইসি বলেন, ‘বিরোধী দল থেকে যে মতামত এসেছে তা আমরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিইনি। আমরা কারও মতামতকেই উপেক্ষা করিনি। আমরা বেশকিছু মিটিং করেছি। আজও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসেছি। প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বসেছি।
‘এই মেশিনের (ইভিএম) ব্যাপারে প্রযুক্তিবিদদের বক্তব্যের পর এখনই কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। শুধু বলতে চাচ্ছি, এই মেশিনের বিষয়ে আরও কয়েকটি মিটিং করব। পলিটিক্যাল পার্টিকে ডাকা হবে।’
একজন টেকনিক্যাল ব্যক্তি মেশিন নিয়ে মূল্যায়ন করতে পারেন উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা সেই পার্সপেকটিভ থেকে টেকনিক্যাল পার্সনদের ডেকেছি। পলিটিক্যাল পার্টিগুলোকেও আমরা অনুরোধ করব তাদের যে টেকনিক্যাল টিম আছে কিংবা যদি থাকে তাদের দিয়ে এটি যাচাই করার জন্য।’
সিইসি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা বলেছেন যে ম্যানিপুলেশন করার সুযোগ নেই। আমার কিন্তু আস্থা রাখতে হবে ওইসব মানুষের ওপর, যারা এই জিনিসগুলো বোঝেন, যারা প্রোডাক্টগুলো তৈরি করেছেন। প্রযুক্তিবিদরা আশ্বস্ত হয়েছেন। আমরা আরও কয়েকটি বড় মিটিং করব।
‘পলিটিক্যাল পার্টিগুলো রাজনীতির মাঠে বলছে যে এটা মন্দ মেশিন, ভালো মেশিন না। আমরা লিখিতভাবে জানতে চাইব তারা কী কী সমস্যা পাচ্ছে। তাদেরকে বিষয়গুলো লিখিতভাবে জানাতে বলব। আমরা যেন সিস্টেমেটিক্যালি অ্যাড্রেস করার সুযোগ পাই।
‘আমাদের হয়তো লিমিটেশন আছে। কিন্তু চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করব, যেন সবার আস্থা অর্জন করতে পারি। ইভিএম ভালো না খারাপ তা নিয়ে এখনই কিছু বলব না। আপনাদের আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমারা ইভিএমে ৩০০ আসনে ভোট করব, না ১০০ আসনে করব, নাকি মোটেই করব না; ইভিএম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে যথাসময়ে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ইভিএম প্রদর্শন শেষে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা মেশিন খুলে দেখেছি। অত্যন্ত চমৎকার একটা মেশিন। আমার মনে হয় পৃথিবীর কম দেশেই এই মূল্যবান জিনিসটা আছে। অত্যন্ত সহজভাবে এটা চালানো সম্ভব।
‘রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব, আপনারা এই নতুন মেশিনটা ব্যবহার করুন। তাতে আপনাদেরই লাভ হবে। অন্য যেকোনো মেশিন থেকে এটা আধুনিক। এটি এমনভাবে করা যে ম্যানিপুলেট করার সুযোগ নেই।’
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এম কায়কোবাদ বলেন, ‘কোনো মেশিনকে শতভাগ বিশ্বাস করা যাবে না। তবে এখানে ইভিএমের প্রতিটি অংশ এমনভাবে কাস্টমাইজড করা হয়েছে যে একজন ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন করতে পারবে না। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট দক্ষ এবং তাদেরকে আমরা বিশ্বাস করতে পারি।
এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের যে কনফিডেন্স ও প্রাউড কমিটমেন্ট সেটা আমি নিশ্চিত হয়েছি। এটা খুবই ভালো একটি মেশিন তৈরি করা হয়েছে। আশা করি এটা ডিসপ্লে করা হবে এবং যে কেউ টেস্ট করতে পারবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর বিধান নির্বাচন কমিশনে রয়েছে এবং আশা করি তারা সেটা করবে।’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান (অব.), বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মতিন সাদ আবদুল্লাহ, ড. মো. মাহফুজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগ তাদের বিকৃত মস্তিষ্কের উদ্ভট আবিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় বিএনপি ও তার দোসরদের বুক জ্বালা করে।
বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ঢাকার নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে পদ্মা সেতু হবে না; এ সরকার কখনো তা করতে পারবে না। বাস্তবতা হলো, পদ্মা সেতু হয়ে গেছে; এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। তাই বিএনপি ও তার দোসরদের বুকে বড় জ্বালা। অথচ পদ্মার দুই পাড়সহ সারা দেশে জনগণের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি দেশের জনগণকে কী দেখাবে- এমন প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘তাদের দেখানোর কিছু নেই। বিএনপির শাসনামলে হাওয়া ভবনের দুর্নীতি, তারেক রহমানের দুর্নীতি আর তাদের নেত্রীর এতিমের টাকা আত্মসাতের দুর্নীতি ছাড়া জনগণকে দেখানোর মতো আর কিছু নেই।’
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভালো আচরণ করে মানুষকে খুশি করতে হবে। তা না হলে শেখ হাসিনার এতো সাফল্য, অর্জন ও উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে।
‘চট্টগ্রামে দলের কোন্দল আর দেখতে চাই না। দ্রুত চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন করতে হবে। দল থেকে দূষিত রক্ত বের করে দিয়ে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।’
২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বন জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানম, উপ-প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির সমাধিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী চেতনার ধারক ও বাহক ছিলেন। তার গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
‘বাংলাদেশে আজও সাম্প্রদায়িকতার শাখা-প্রশাখা আছে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উৎপাটন করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন:বিএনপিকে নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, সিটি নির্বাচন কোথাও অংশ নিতে চায় না। কারণ তারা জানে, নির্বাচনে এলে তাদের ভরাডুবি হবে। আমি চাই বিএনপি ভীতি কাটিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’
কুমিল্লায় বুধবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সময়ের সঙ্গে কুমিল্লায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কুমিল্লায় এখন উঁচু দালানকোঠা তৈরি হয়েছে। সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুমিল্লায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘নজরুলের সঙ্গে কুমিল্লার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। তিনি এখানে তার স্ত্রী নার্গিসকে নিয়ে কবিতা লেখেন।’
এর আগে বেলা ১১টায় বেলুন উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী নজরুল জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি), কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও খিলখিল কাজী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর।
এ ছাড়া স্মারক বক্তব্য দেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। আলোচনার পর অতিথিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু সংক্রান্ত ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেছেন, জনগণ একদিন এর বিচার করবে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন রিজভী।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি ছাত্রলীগকে দখলবাজ বানিয়েছেন, চাঁদাবাজ বানিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বারবার গণতন্ত্র উদ্ধারকারী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে নোংরা কথা বলেছেন, হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আপনি যে অপরাধ করেছেন, এর বিচার একদিন বাংলার জনগণ করবে।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার বক্তব্য বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারবেন, আপনার অপরাধ কী? আপনি হত্যার হুমকি দেন খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেবেন। এইটা জঘন্য হত্যার হুমকি।
‘ইলিয়াস আলী কই? চৌধুরী আলম কই? সাইফুল ইসলাম হিরু কই? এসব গুমের অপরাধ। ছাত্রনেতা জনিকে ক্রসফায়ার দেয়া হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুণ্ডাদেরও একটা নৈতিকতা থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যেভাবে ছাত্রীদের ওপর হামলা করেছে তা কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসীদের কাজ। ছাত্রলীগ মেয়েদের লাঞ্ছিত করে। ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে।’
সামনে বাংলাদেশ বিএনপির ব্যাপক আন্দোলন আসছে জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আগামী দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাপক আন্দোলন কর্মসূচি আসছে। এই জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সেই আন্দোলনে অবশ্যই জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সম্মুখ সারিতে উপস্থিত থাকবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
মহিলা দলের সহসভাপতি ইয়াসমিন আরা হকের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর মহিলা দলের নায়াবে ইউসুফসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ভোটার তালিকা হালনাগাদে সরকারি, বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
আদেশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ১৬ মে‘র স্মারকপত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ২০২২ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হল।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম তাদের এবং বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন নিবন্ধনের জন্য তাদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ১৪০টি উপজেলা বা থানার তথ্যসংগ্রহ করা হবে। অবশিষ্ট উপজেলা বা থানার সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার বা জেলা নির্বাচন অফিসাররা স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন।
ছাত্রলীগের হামলায় নেতাকর্মী জখমের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল ২৬ মে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। পরদিন সংগঠনটি একই কর্মসূচি পালন করবে জেলা ও মহানগরে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার রাতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রদলের নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৮০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। ক্যাম্পাসে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের সময় হকিস্টিক, রড, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘হামলায় ছাত্রদলের নেত্রী মানসুরা আলম, রেহেনা আক্তার শিরীন, শানজিদা ইয়াসমিন তুলি, সৈয়দা সুমাইয়া পারভীন, তন্বী মল্লিক রেহাই পাননি। তাদেরকে সড়কে ফেলে পেটানো হয়েছে। দুজন ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে শহীদুল্লাহ হলের ড্রেনে ফেলে নির্যাতন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আহত নেতাকর্মী ও চিকিৎসকদের হয়রানি করছে ছাত্রলীগের কর্মীরা।’
সংবাদ সম্মেলনে আহত নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন ছাত্রদলের নেতারা। এ তালিকায় কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক আকতার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম সোহেলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য