২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ল্যাংড়া মামুন ওরফে মুফতি মামুনসহ চার আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পটুয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আমলি আদালত-১-এর বিচারক আশিকুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের রিমান্ডে পাঠান।
মামুন ছাড়াও অন্য যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন পিচ্চি রানা, জসীম উদ্দিন ও আশিকুর রহমান।
এর আগে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের বুধবার রাতে পটুয়াখালী কারাগারে আনা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি জানান, পুরো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। প্রত্যেক আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। তাদের একসঙ্গে নাকি আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, সেটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠিক করবেন।
আদালতের ইন্সপেক্টর শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আশা করি কিছু তথ্য-উপাত্ত বের হয়ে আসবে।’
তিনি জানান, রিমান্ড শুনানির সময় তিনিসহ সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত (সদর থানা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রিমান্ড শুনানির আবেদনের কাগজপত্র দেখিয়ে পটুয়াখালী কারাগার থেকে পুলিশি পাহারায় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে পুনরায় তাদের একই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নেয়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী উজ্জল বসু জানান, অপহরণ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, ল্যাংড়া মামুন একাই নাকি অন্য কোনো প্রভাবশালী তাকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছে- এ রকম নানা প্রশ্নের উত্তর পেতে এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই পুলিশ প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, এর আগে এ ঘটনায় পটুয়াখালী ও বরগুনার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার সদ্য বহিষ্কৃত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজসহ ছয়জনকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। তাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর থানায় আনা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আগামীকাল জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বলা যাবে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে কি না।
২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে গত ১১ এপ্রিল রাতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে গলাচিপা থেকে অপহরণ করা হয়। পরদিন রাতে শহরের এসপি কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে শিবু ও তার গাড়ির চালক মিরাজকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ওই দিন রাতেই শিবুর ছেলে বাদী হয়ে সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পরের দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজসহ মোট ছয়জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
পরের দিন ১৪ তারিখ পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় সেই ছয়জনকে ব্যবসায়ী শিবু দাস অপহরণ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করলেও পারভেজ, শামিম আর সুমনের বিষয়ে ‘যৌক্তিক কোনো কারণ’ উল্লেখ করতে পারেনি পুলিশ। এ সময় ওই তিনজন আসামি সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘আমরা নির্দোষ, আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে, আপনারা বিষয়টি দেখেন। আমরা এই শহরের সন্তান, আমরা এত বড় অন্যায় করতে পারি না। আমরা রাজনীতি করি।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পরই ওই তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
এরপর ঢাকা থেকে জসীম ওরফে বিআরটিসি জসিী নামে একজন আসামিকে আটক করার পর তিনি ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর দুদিন পর ঢাকার ডিবি পুলিশ এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ল্যাংড়া মামুনসহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে চার হাজার পিস ইয়াবাসহ। এর আগে একই আদালত ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসের জবানবন্দি ১৬৪ ধরায় রেকর্ড করা হয়।
আরও পড়ুন:পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করে ৫টি বিয়ের অভিযোগে শাকিল হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‘পুলিশ’ পরিচয় দিলেও পেশায় তিনি নিরাপত্তা প্রহরী (সিকিউরিটি গার্ড)।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার মনিপুর কাঠালতলা এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
এ সময় তার বাসা থেকে পুলিশের ১টি পরিচয়পত্র, ১টি ক্যাপ, ১ জোড়া জুতা, ১টি ওয়ারলেস সেট ও ১টি ৫০ টাকা সমমূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাকিল একজন প্রতারক। তার নাম শাকিল হলেও তিনি সবাইকে পরিচয় দেন রানা নামে।
‘একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করলেও তিনি নিজেকে পরিচয় দেন পুলিশের এএসআই হিসেবে। মানুষ যাতে বিশ্বাস করে, তাই ওই নামে তিনি আইডি কার্ড ও পুলিশের ক্যাপ বানিয়েছেন, পুলিশের জুতা ও ওয়াকিটকিও কিনেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভুয়া পরিচয়েই তিনি বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ের নামে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। কিছুদিন থাকার পর পালিয়ে যান।’
এভাবে তিনি ৫টি বিয়ে করেছেন বলে জানান ওসি মহসীন।
ওসি বলেন, ‘রাজধানীর বাড্ডা এলাকার এক মেয়েকে একইভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তিনি মিরপুর নিয়ে যান। বিয়ে করবেন বলে ৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেন। এরপর নিজেই নিজের বিয়ে পড়েন।
‘বিয়ের কিছুদিন পরই তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয় মেয়েটির কাছে। এরপর তিনি পুলিশের কাছে বিষয়টি জানালে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে প্রতারণার কথা স্বীকার করেন শাকিল।’
তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী মেয়েটি ধর্ষণের মামলা করেছেন বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্তকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে মোবাইল ফোনে দুই দফা কল করে অজ্ঞাত ব্যক্তি ওই হুমকি দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত নিজেই বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছি। আজ সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট ও ৮টা ৪৮ মিনিটের দিকে দুটো কল আসে। একটি +৫৭২৫৮২৪৭৮, অপরটি +৮৮০১৯৪২২০৬০৩১ নম্বর থেকে। কল করে আমাকে যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করবে, জবাই করবে এসব কথা বলেছে৷’
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাবিক হাসান বলেন, ‘প্রতীক দত্তকে মোবাইল ফোনে হুমকির ঘটনায় ঢাকার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার নিরাপত্তা ও হুমকির বিষয়ে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।’
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পরকীয়ার জেরে স্বামী হারুন-অর-রশিদকে শ্বাসরোধে হত্যার মামলায় স্ত্রী সর্জিনা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মতিন এ দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমাইল হোসেন জানান, ২০০৮ সালের ২৫ জুলাই ঝিনাইদহের শৈলকুপার উপজেলার উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের হারুন-অর-রশিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার স্ত্রী সর্জিনা খাতুন ও তার প্রেমিক লিটন হোসেন। এ ঘটনায় হারুন-অর-রশিদের ভাই ইব্রাহিম বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় সর্জিনা খাতুন ও লিটন হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন।তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর সর্জিনা খাতুন ও লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলায় স্ত্রী সর্জিনা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। মামলার অপর আসামি লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
র্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে কাউন্সিলর মিজান-রাজীবসহ অন্য যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সবই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইন মেনে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাহিনীটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ২০১৯ সালে র্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই কাউন্সিলরের সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক দুই কাউন্সিলরের সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে র্যাবের মন্তব্য কী জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘সাবেক দুই কাউন্সিলরের যে অভিযোগ, তা সংক্ষুব্ধ হয়ে যে কেউ করতে পারেন। তবে আমাদের ক্যাসিনো অভিযান দেশবাসী দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত দেশগঠনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে একটি শ্রেণী দুর্নীতির মাধ্যমে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করছে, এমন অভিযোগে আমাদের অভিযান ছিল। শুধু দুজনের বিরুদ্ধে অভিযান না, আমরা ওই সময় আরও অভিযান করেছি, কিন্তু কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৯ সালে আমরা অভিযান চালিয়েছি। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে, এত দিনে র্যাব সদরদপ্তর, আদালত বা পুলিশ সদরদপ্তরে অভিযোগ জানাতে পারতেন। কিন্তু এত দিন পর তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করছেন! এটা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হিসেবে করতে পারেন।’
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা তদন্তাধীন। আর আদালত বলতে পারবেন, কারা দোষী ছিলেন, কারা ছিলেন না। অভিযান আমরা পরিচালনা করেছি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং আইন মেনে।’
রোববার ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করেন সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ও তারেকুজ্জামান রাজীব।
তাতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের নামে তাদের ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু তুলে পরিবহন বন্ধে অভিযান চালিয়েছে নৌ পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে বালুবাহী ৫০টি বাল্কহেড জব্দ এবং শতাধিক শ্রমিককে আটক করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন চাঁদপুর নৌ পুলিশের সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
নৌ পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান জানান, বেশ কিছুদিন ধরে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা থেকে বালু তুলে বাল্কহেডে করে পরিবহন করা হচ্ছে।
নৌ পুলিশ এর আগেও কয়েকবার অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। চলতি বছর ১৫৫টি বালুবাহী বাল্কহেড আটক করা হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় আবারও অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে আটক ব্যক্তি ও বাল্কহেড বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, রাতে চুরি করে বালু তুলে যাতে পরিবহন করে অন্য কোথাও বিক্রি করতে না পরে সে জন্য নৌ পুলিশের পাঁচটি দল ভোররাত থেকে অভিযানে অংশ নেয়।
তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলা এবং অনিবন্ধিত বাল্কহেডের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’
অভিযানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর নৌ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. তোফাজ্জেল হোসেন, চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক (মোহনপুর) মো. মনিরুজ্জামান।
আরও পড়ুন:জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ছিল। সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী ৬ জুলাই অভিযোগ গঠন শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করে এবং সম্রাটের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার আবেদন মঞ্জুর করে।
সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জমি দখলে বাধা দেয়ায় এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে হত্যার মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই রায়ে চারজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম বুধবার বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন মো. জাবেদ ও হাবিজ আহমদ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্টু মিয়া। বেকসুর খালাস পান নুরুল আলম মেম্বার, হোসনে আরা, তারা বানু এবং পেয়ার আহমদ। তাদের মধ্যে পেয়ার আহমদ কর্ণফুলীর উত্তর চরলক্ষ্যার বাকিরা একই থানার খোয়াজনগর এলাকার বাসিন্দা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৫ নভেম্বর সকালে কর্ণফুলীর খোয়াজনগরে মো. আব্দুস সবুরের দখলীয় জমিতে সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে আসামিরা অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করেন। এসময় মো. আব্দুস সবুর ও তার ভাই আব্দুল করিম তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাবেদ ও হাবিজ আহমদ আব্দুস সবুরকে ছুরিকাঘাত ও আব্দুল করিমকে মারধর করেন। অন্যরা তাদের সহযোগিতা করেন।
পরবর্তীতে আব্দুস সবুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খুরশীদা বেগম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে কর্ণফুলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজহারনামীয় ১০ আসামি হলেন মো. জাবেদ, হাবিজ আহমদ, নুরুল আলম মেম্বার, ছবির আহমদ, ফরিদ আহমদ, মো. আবছার, মিন্টু মিয়া, হোসনে আরা, তারা বানু এবং পেয়ার আহমদ।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি এম. সিরাজুল মোস্তফা মাহমুদ জানান, মামলার পর পুলিশ ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মো. আবছারকে বাদ দিয়ে বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরমধ্যে ফরিদ আহমদের মৃত্যু হলে তাকে বাদ দিয়ে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল বাকি ৮ আসামির বিচার শুরু হয়৷ বিচার শুরুর পর ছবির আহমদের মৃত্যু হলে তাকেও মামলার কার্যক্রম থেকে বাদ দেয়া হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার আদালত রায় ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য