২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ল্যাংড়া মামুন ওরফে মুফতি মামুনসহ চার আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পটুয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আমলি আদালত-১-এর বিচারক আশিকুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের রিমান্ডে পাঠান।
মামুন ছাড়াও অন্য যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন পিচ্চি রানা, জসীম উদ্দিন ও আশিকুর রহমান।
এর আগে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের বুধবার রাতে পটুয়াখালী কারাগারে আনা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান।
তিনি জানান, পুরো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। প্রত্যেক আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। তাদের একসঙ্গে নাকি আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, সেটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠিক করবেন।
আদালতের ইন্সপেক্টর শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আশা করি কিছু তথ্য-উপাত্ত বের হয়ে আসবে।’
তিনি জানান, রিমান্ড শুনানির সময় তিনিসহ সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত (সদর থানা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রিমান্ড শুনানির আবেদনের কাগজপত্র দেখিয়ে পটুয়াখালী কারাগার থেকে পুলিশি পাহারায় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে পুনরায় তাদের একই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নেয়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী উজ্জল বসু জানান, অপহরণ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, ল্যাংড়া মামুন একাই নাকি অন্য কোনো প্রভাবশালী তাকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছে- এ রকম নানা প্রশ্নের উত্তর পেতে এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই পুলিশ প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, এর আগে এ ঘটনায় পটুয়াখালী ও বরগুনার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার সদ্য বহিষ্কৃত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজসহ ছয়জনকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। তাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর থানায় আনা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আগামীকাল জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বলা যাবে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে কি না।
২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে গত ১১ এপ্রিল রাতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে গলাচিপা থেকে অপহরণ করা হয়। পরদিন রাতে শহরের এসপি কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে শিবু ও তার গাড়ির চালক মিরাজকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ওই দিন রাতেই শিবুর ছেলে বাদী হয়ে সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পরের দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান পারভেজসহ মোট ছয়জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
পরের দিন ১৪ তারিখ পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় সেই ছয়জনকে ব্যবসায়ী শিবু দাস অপহরণ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করলেও পারভেজ, শামিম আর সুমনের বিষয়ে ‘যৌক্তিক কোনো কারণ’ উল্লেখ করতে পারেনি পুলিশ। এ সময় ওই তিনজন আসামি সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘আমরা নির্দোষ, আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে, আপনারা বিষয়টি দেখেন। আমরা এই শহরের সন্তান, আমরা এত বড় অন্যায় করতে পারি না। আমরা রাজনীতি করি।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পরই ওই তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
এরপর ঢাকা থেকে জসীম ওরফে বিআরটিসি জসিী নামে একজন আসামিকে আটক করার পর তিনি ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর দুদিন পর ঢাকার ডিবি পুলিশ এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ল্যাংড়া মামুনসহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে চার হাজার পিস ইয়াবাসহ। এর আগে একই আদালত ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসের জবানবন্দি ১৬৪ ধরায় রেকর্ড করা হয়।
আরও পড়ুন:অপরাধ করলে কারো জন্যই ছাড় নয় বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বলেছেন, ‘যার নাম ভাঙিয়েই অপরাধ করুক না কেন প্রকৃত অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার দুপুরে লায়নস ক্লাবের ২৭ তম বার্ষিক সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে র্যাবের প্রতিনিধি যেটা বলেছেন, তাদের যখন ধরেছে তারা নাকি আমার কথা বলেছে। আমি র্যাবকে বলেছি, কারো জন্যই ছাড় নয়। যে অপরাধ করবে তাকেই ধরুন। তারই সাজার ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে অস্ত্রসহ একজনকে ধরেছে। সে উপযুক্ত শাস্তি পাবে। যেখানেই যারা এগুলো করছে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আরও যারা করছে তাদেরও ধরা হবে। যার নামেই চাঁদাবাজি করুক না কেন অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতা ও তাকে র্যাবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটির আরেক নেতাকে আটক করা হয়।
রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে বুধবার রাতে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব প্রথমে আটক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে। পরে তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে আটক করা হয় মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহাম্মেদকে।
দেলোয়ার ও জোবায়েরের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের পাঁচ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. শাহীদুল ইসলাম ওই আদেশ দেন।
বদলি হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- টিএক্সআর বায়তুল ইসলাম, আইডব্লিউ অফিসের জাফর মিয়া, তোতা মিয়া, সহকারী স্টেশন মাস্টার আশিক আহম্মেদ ও সহকারী স্টেশন মাস্টার জাকির হোসেন।
এর আগে গত ১৬ মে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে খুলনা রেলওয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার।
অভিযোগ ওঠা ওই পাঁচজনকে বদলি করার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার দায়ে স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. শাহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন বলেন, ‘স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার রেল প্রশাসনকে না জানিয়ে পুলিশে সাধারণ ডায়েরি করেছেন যা রেলওয়ে আইনের পরিপন্থী। কেন তিনি ওই কাজ করলেন সেজন্য তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এর আগেও ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য ছিল। এ কারণে তাদের বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হয়েছে। স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়ার পর ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হবে।’
১৬ মে করা সাধারণ ডায়েরিতে খুলনা স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার উল্লেখ করেন, খুলনা আইডব্লিউ অফিস স্টাফ, দুইজন সহকারী স্টেশন মাস্টারসহ ৫ জন কর্মকর্তা ও আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি সরাসরি টিকিট কালোবাজারীর সঙ্গে জড়িত। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নামে ভুয়া টিকিটের চাহিদা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন।
টিকিট না পেলে বহিরাগতদের ডেকে এনে সংঘবদ্ধ হয়ে মাস্টারকে হেনস্থা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তাদের টিকিটের চাহিদা এতোটাই বেড়েছে যে টিকিট না পেলে স্টেশন ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারধর করার মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর পাঁয়তারা করছেন।
প্রকৃত পক্ষে রেলের কোনো ভিআইপি টিকিট সংরক্ষিত নেই। কিন্তু ওই পাঁচজন সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ওই কাজে লিপ্ত রয়েছেন বলে তিনি সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফেঅনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
খুলনা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খবির আহমেদ বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরিটি তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ছেলের ইটের আঘাতে বাবাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শহরের চর মিলপাড়ায় সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মিলপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শাহিন আলম বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
পরিবারের সদস্যদের বরাতে তিনি বলেন, ‘বাবু শেখ ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে এসে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। তার তিন ছেলের মধ্যে মেজ ছেলে মো. রমিজ। সকালে বাবার কাছে টাকা চাইলে তার বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
‘এ সময় ছেলে রমিজের সঙ্গে তার বাবা বাবু শেখের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রমিজ ইট দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে বাবু শেখকে নেয়া হলে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।’
এএসআই শাহীন আলম আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে রমিজ পলাতক। মরদেহের দাফন শেষে বাবু শেখের স্ত্রী মামলা করবেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:ভারতে আটক হওয়ার পর প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) নাম নতুন করে আলোচনায় চলে এসেছে। একই সঙ্গে জোরেশোরে প্রশ্ন উঠেছে, জালিয়াতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের হোতা পি কে হালদারের পেছনে কারা। বলা হচ্ছে, পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলে তার পেছনের রাঘববোয়ালদের সন্ধান মিলবে।
২০১৯ সাল থেকে পি কে হালদারের অর্থ কেলেঙ্কারি অনুসন্ধানের দায়িত্বে থাকা এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুরুতেই এই তদন্ত থামানোর জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর ওরফে এস কে সুর ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম।’
অন্যদিকে পি কে হালদার-সংশ্লিষ্ট তদন্তে আটক প্রায় সবাই আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এস কে সুর ও শাহ আলমের নাম বলেন। অনেকেই এদেরকে পি কে হালদারের গডফাদার হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আটক রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেন, ‘পি কে হালদারের নির্দেশেই তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন। অর্থ লোপাটের তথ্য ধামাচাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক এক ডেপুটি গভর্নরকে দুই লাখ টাকা করে মাসোহারা দিতেন পি কে।’
পি কে হালদার-সংশ্লিষ্ট তদন্তে আটক প্রায় সবাই আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে পি কে হালদারের গডফাদার হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর ওরফে এস কে সুরের নাম বলেন। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট টিমকে ম্যানেজ করতে লাখ লাখ টাকা ঢেলেছেন পি কে হালদার- এমনটাও দাবি করা হয়েছে জবানবন্দিতে। তবে আরও বড় কোনো শক্তি পি কে হালদারের পেছনে আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ।
সারা দেশ যখন ক্যাসিনোকাণ্ডে তোলপাড়, ঠিক তখনই সামনে আসে একটি নাম, প্রশান্ত কুমার হালদার। সংক্ষেপে তাকে ডাকা শুরু হয় পি কে হালদার। ঢাকা শহরের ক্লাব ও অভিজাত এলাকায় যখন ক্যাসিনোবিরোধী ধারাবাহিক অভিযানে গলদঘর্ম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ঠিক তখনই পি কের বোমা ফাটায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১৯ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের রেশ না কাটতেই ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা ঠুকে দেয় দুদক। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোল।
একে একে বের হতে থাকে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে পি কে হালদারের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটের ঘটনা। প্রকাশ হতে থাকে তার সহযোগীদের নামও। অভিযোগ আছে, দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই আর্থিক কেলেঙ্কারির পেছনে রয়েছে রাঘববোয়ালদের প্রচ্ছন্ন সহায়তা।
এই রাঘববোয়ালদের এখনো সামনে আনেনি দুদকসহ আইন প্রয়োগকারী অন্যান্য সংস্থা। যদিও বিভিন্ন সময়ে জানা গেছে, পি কের এই জালিয়াতির সঙ্গে ৭০ থেকে ৮০ জনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬২ জনকে দুদক শনাক্ত করেছে বলে জানা গেছে। তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে ডাকাও হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য মতে, পি কে হালদার পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্বে থেকেই প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লুট করেছেন।
পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের নামে এখন পর্যন্ত ৩৯টি মামলা করেছে দুদক। দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও গুলশান আনোয়ারের নেতৃত্বে করা টিম অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব মামলা করেন।
এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী, শংখ বেপারী, রাশেদুল হক, অবন্তিকা বড়াল ও নাহিদা রুনাইসহ ১০ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ১ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের সম্পদ অবরুদ্ধ ও জব্দ করা হয়েছে।
আদালতের মাধ্যমে ৮৩ জনের বিদেশযাত্রায় দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। একই ইস্যুতে ৩৩ ব্যক্তির সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৮৩ জনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে রেখেছে দুদক।
পিকের বান্ধবীরা
আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের ৮০ জন বান্ধবী থাকা নিয়ে একসময় তুমুল আলোচনা ছিল। তবে দুদকের তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের তথ্য মিলেছে। তারা হলেন অবন্তিকা বড়াল, শিমু রায়, নাহিদা রুনাই, পূর্ণিমা রানি, সুপ্তি চৌধুরী, শাহনাজ বেগম, হালি আকতার, সুস্মিতা, সামিয়া বেগম, অনিন্দিতা মৃধা, আতশী, পাপিয়া, শুভ্রা রানি, লামিয়া ও সাজিয়া রহমান।
এই বান্ধবীদের নামে ৮৬৭ কোটি পাচার করেছেন পি কে। কেবল তাই নয়, এসব বান্ধবীকে কোটি কোটি টাকার উপহার, গয়না ও ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন এই জালিয়াত।
এদের মধ্যে অবন্তিকা বড়ালকে ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকায় ধানমন্ডির ১০/এ সড়কে ৩৯ নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট কিনে দেন পি কে। যদিও অবন্তিকা আয়কর নথিতে তা গোপন রাখেন। গোপন রাখেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা নগদ ১০ কোটি টাকার তথ্যও। বর্তমানে তিনি আটক রয়েছেন।
শিমু রায়ের ব্যাংক হিসাবে ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন পি কে। ময়মনসিংহের আলোচিত কুমির খামারের নামে এই টাকা নিয়েছিলেন তিনি।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইন্যান্সের বাণিজ্য বিভাগের প্রধান নাহিদা রুনাইয়ের নামে কয়েক কোটি টাকা রেখেছিলেন পিকে, যা বিভিন্ন কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক থেকে তুলে নেয়া হয়।
পূর্ণিমা রানির ব্যাংক হিসাবে ১০০ কোটি টাকা দেন পি কে। এই টাকা একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে দেয়া লোন হিসেবে দেখানো হয়। হালি আক্তারকে কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে দেন ৭০ কোটি টাকা। অবনিতার কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় ৮৪ কোটি টাকা।
সুপ্তি চৌধুরীকেও কোটি কোটি টাকা দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। যদিও তদন্ত শুরুর গন্ধ পেয়ে কানাডায় চলে যান পি কের এই বান্ধবী। কানাডায় তার আশ্রয়েই পি কে ছিলেন বলে প্রমাণ মিলেছে দুদকের তদন্তে।
বান্ধবী শাহনাজকে ৬০ কোটি টাকা দেন পি কে। আবার সুস্মিতা ও সামিয়া বেগমের কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে দেন ৬২ কোটি টাকা করে মোট ১২৪ কোটি টাকা।
অনিন্দিতা মৃধাকে উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল নামে ঠিকানাহীন প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় ৭০ কোটি টাকা।
একই কায়দায় আতশি বেগমকে দেন ৮০ কোটি টাকা।
পাপিয়াকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালক দেখান পি কে। এই পরিচয়ে এফএএস থেকে তাকে ১২০ কোটি টাকা ঋণ তুলে দেন তিনি। কাগুজে প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে শুভ্রা রানীকে দেয়া হয় ৮০ কোটি টাকা। একই কায়দায় সুস্মিতাকে দেয়া হয় ৭০ কোটি টাকা।
লামিয়া নামে একজন পার্টি এক্সপার্ট বান্ধবীও ছিল পি কের। তাকে নিয়ে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের পার্টিতে যেতেন পি কে। তার ব্যাংক হিসাবেও মিলেছে বিপুল টাকা। দুদককে দেয়া জবানবন্দিতে লামিয়া বলেছেন তার অতীত জীবনের সেই অধ্যায়।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাজিয়া রহমান নামে এক নারীও এসব পার্টিতে লামিয়ার সঙ্গী হতেন। তার হিসাবেও রয়েছে পি কের জালিয়াতির অর্থ। পি কে হালদার তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে বান্ধবীসহ ঘনিষ্ঠদের নামে সরিয়ে নেন বলে নিশ্চিত হয়েছে দুদক।
পি কের সহযোগী কারা
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় পি কের পরিবারের সদস্য, সহকর্মী, বন্ধুবান্ধবী, সহযোগী, ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে নাম এসেছে প্রায় ১০০ জনের। এদের সবাইকে পিকের অর্থ লুটপাটের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত ও আসামি করেছে দুদক।
অর্থ লুটপাটে পি কে হালদারের সহযোগী হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুস্মিতা সাহা ও এমডি মৈত্রেয়ী রানী বেপারী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক মো. আবুল শাহজাহান, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মাহফুজা রহমান বেবী, সোমা ঘোষ, ডা. উদ্ভব মল্লিক, অরুণ কুমার কুণ্ডু, প্রদীপ কুমার নন্দী, এফএএস ফাইন্যান্সের স্বতন্ত্র পরিচালক বীরেন্দ্র কুমার সোম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল শাহরিয়ার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল হক গাঙ্গী, সিনিয়র অফিসার মৌসুমী পাল, ম্যানেজার আহসান রাকিব, প্রাক্তন সিনিয়র অফিসার তাসনিয়া তাহসিন রোজালিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর ইমাদুল হক, প্রাক্তন ডিপি মনিরুজ্জামান আকন্দ, সাবেক এসভিপি জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া এবং সাবেক এসইভিপি ও সিএডির প্রধান প্রাণ গৌরাঙ্গ দে।
সহযোগীদের মধ্যে আরও রয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাসুদের ব্যানার্জি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের পরিচালক নওশেরুল ইসলাম, অঞ্জন কুমার রায়, মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, আর বি এন্টারপ্রাইজের মালিক রতন কুমার বিশ্বাস, আর্থ-স্কোপ লিমিটেডের এমডি প্রশান্ত দেউরি, পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, নিউট্রিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার মিস্ত্রি, ওয়াকামা লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুব্রত দাস, পরিচালক সুভ্রা রাণী ঘোষ ও তোফাজ্জল হোসেন, কোলাসিন লিমিটেডের এমডি উত্তম কুমার মিস্ত্রি, চেয়ারম্যান অতশী মৃধা, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজের মালিক গোপাল চন্দ্র গাঙ্গুলী, দ্রিনান অ্যাপারেলসের এমডি মোহাম্মদ আবু রাজিব মারুফ, কণিকা এন্টারপ্রাইজের মালিক রাম প্রসাদ রায় ও ইমেক্রো’র মালিক ইমাম হোসেন।
এ ছাড়া রয়েছেন দিয়া শিপিং লিমিটেডের পরিচালক শিব প্রসাদ ব্যানার্জি, পাপিয়া ব্যানার্জি এবং এফ এ এসের চেয়ারম্যান এমএ হাফিজ। এরা সবাই দুদকের করা মামলার আসামি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় বসতবাড়ির আঙিনায় গাঁজার চাষ করায় এক নারীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হবে।
এর আগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকের এক অভিযানে কবিরহাট উপজেলার পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামের ঘাট মাঝিগো বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন, ৩২ বছরের কোহিনুর বেগমের বাড়ি কবিরহাট উপজেলার পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামে। তিনি কামাল হোসেনের স্ত্রী। আরেকজন হলেন ৩৫ বছরের এনামুল হক। তার বাড়ি ফতেজঙ্গপুর গ্রামে।
অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামের কামাল হোসেন পালিয়ে গেছেন বলে জানায় পুলিশ।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদ পেয়ে কামালের বাড়িতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তার বসতঘর থেকে ১ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও ঘরের সামনের আঙিনা থেকে ২ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার আনুমানিক ৫ কেজি ওজনের ৮টি গাঁজার গাছ উদ্ধার করা হয়।’
আরও পড়ুন:ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে দরপত্র জমা দেয়ার সময় আটক করা হয়েছে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই)। তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তরের পাশাপাশি অভিযোগ দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে।
অভিযুক্ত পুলিশের নাম কামরুল হাসান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আটক করা হয়।
নগর ভবনের কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির মালিকানাধীন ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২, ব্লক-এ, ব্লক-বি, ব্লক-সি এর বেইজমেন্টগুলোতে কার পার্কিংয়ের দরপত্র দাখিলের তারিখ ছিল।
এএসআই কামরুল এ সময় দরপত্র জমা দিতে যান। উপস্থিত অন্যদের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনার পর তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিএমপি সদর দপ্তরে চিঠি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ। কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে ‘টেন্ডার ফেলে’ আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার এসআই দীপক বালা নিউজবাংলাকে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে দুপুরের পরে আমাদের কাছে কামরুলক হাসানকে হস্তান্তর করা হয়। সিনিয়র স্যাররা বিষয়টি দেখছেন। তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে শুনেছি।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে বিষয়ে আমি জানি না।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ সদস্যের কবজি বিচ্ছিন্নের ঘটনায় প্রধান আসামি কবির আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গেলে গোলাগুলিতে কবির গুলিবিদ্ধ হন বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
তিনি বলেন, ‘লোহাগড়ার গহীন পাহাড়ে র্যাবের অভিযানে গুলিবিদ্ধ হন কবির আহমদ। পরে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
এর আগে গত রোববার রাতে বান্দরবন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কবিরের স্ত্রী রানু বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত রোববার সকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কবির আহমদ, তার স্ত্রী ও মাকে আসামি করে মামলা হয়।’
গত রোববার সকাল ১০টার দিকে লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নের আধারমানিক এলাকায় আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হামলার শিকার হন পুলিশ। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ জনি খান ও মো. শাহাদাত ছাড়াও মামলার বাদী আবুল হাশেম আহত হন। আসামি কবির আহমদের ধারালো দায়ের কোপে কনস্টেবল জনি খানের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তিনি ঢাকার আল মানার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য