যাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনে পাবনার ঈশ্বরদীতে কর্মরত টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত দেয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎগতিতে।
অন্যদিকে রাজশাহী স্টেশনে যাত্রীকে প্রকাশ্যে মারধর করার ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মী মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে চার মাসেও চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি রেলওয়ে।
শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা আর তাকে সাময়িক বরখাস্তের পেছনে যে আসলে যাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার নয়, মন্ত্রীর স্ত্রীর ফোন কাজ করেছে, সেটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
অথচ এখানে যারা অভিযোগ করেছেন, তারাই আইন ভেঙেছেন। তারা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর দূর সম্পর্কের ভাগ্নে, যারা টিকিট না কেটে ট্রেনে উঠে জরিমানার মুখে পড়েন।
পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে ফাঁস হলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, তার স্ত্রী তাকে না জানিয়ে যে কাজ করেছেন, তাতে তিনি বিব্রত। আর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তুলে নেয়ার পর শফিকুল আবার কাজ শুরু করেছেন।
অন্যদিকে রাজশাহী স্টেশনে চার মাস পেরিয়ে গেলেও মো. রুবেল নামের যাত্রীকে প্রকাশ্যে মারধর করার ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মীকে চূড়ান্ত শাস্তি না দেয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তিনি সাময়িক বরখাস্ত আছেন।
যা ঘটেছিল
ঘটনাটি গত ৪ জানুয়ারির। রুবেল শাহযালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত। ঢাকা থেকে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেন বেলা সোয়া ১২টার দিকে।
রুবেল জানান, স্টেশন থেকে বের হওয়ার পথেই তিনি রেলকর্মীর মারধরের শিকার হন। রুবেলের টিকিটের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের বানানে কিছুটা অমিল থাকায় তর্কাতর্কির জেরে তাকে মারধর করেন রাজশাহী স্টেশনের টিকিট কালেক্টর মেহেদী হাসান রাসেল।
রুবেল জানান, তার আইডি কার্ডে নামের বানান ‘আরইউবিইএল’। কিন্তু রেলওয়ের টিকিটের জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের সময় ভুলবশত নামের বানানে ‘আরইউবিএএল’ ওঠে।
এ নিয়ে রেলকর্মী রাসেলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে তাকে স্টেশনের একটি ঘরে নিয়ে মারধর করেন রাসেল।
রুবেলকে ধাক্কাধাক্কি ও চড়-থাপ্পড় মারার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ঘটনার পরদিন। ২ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে একাধিকবার রুবেলকে মারধর করতে দেখা গেছে।
কথোপকথনে শোনা যায়, রাসেল পুরো সময় ধরেই চিৎকার করছেন। কথোপকথনে শোনা যায়, রেলকর্মী রাসেল বলছেন, ‘এই আইডি কার্ড, এই আইডি কার?’
রুবেল বলেন, ‘আমার আইডি।’
রাসেল চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘চিল্লাচ্ছিস ক্যান। এই চিল্লাচ্ছিস ক্যান?’
এরপরই রুবেলকে তিনি থাপ্পড় মারেন।
রুবেল বলে ওঠেন, ‘আমাকে মারলেন কেন আপনি? আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ডাক দেন। আপনি আমাকে মারলেন কেন?’
উপস্থিত অন্যদের রুবেল বলেন, ‘উনি আমাকে মারলেন।
আমার আইডি কার্ড, সবই ঠিক আছে। আপনারা গায়ে হাত তুললেন কেন বলেন?’
রাসেল বলেন, ‘তুই অত চিল্লালি কীসের জন্য। এই চিল্লালি কেন?’
এই বলেই আবার দুটি ঘুষি মারেন রাসেল। তিনি বারবার বলতে থাকেন, ‘তুই চিল্লালি কীসের জন্য?’
এ সময় অন্য রেলকর্মীরা রাসেলকে মারধর করা থেকে আটকানোর চেষ্টা করেন।
রুবেল বলেন, ‘আমাদের স্টাফ আছে এখানে।’
রাসেল চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘তোর বাপ থাক। তোর চাকরি করি আমি?’
এই বলে অশ্লীল গালি দেন তিনি। বলেন, ‘চাঁপাইয়া কোথাকার। চাঁপাইয়ের কোন বাপ আছে ডাক। তুই তোর স্বভাবের জন্য মার খাইছিস।’
এরপরও তিনি চিৎকার করতে থাকেন।
লিখিত অভিযোগ
এ ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন রুবেল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জানুয়ারি পশ্চিম রেলওয়ের ডেপুটি সিসিএম গৌতম কুমার কুন্ডুকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন।
রুবেল নিউজবাংলাকে জানান, তদন্ত কমিটি তার সঙ্গে কথা বলেছিল সে সময়। তবে এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই। তার অভিযোগের বিষয়ে কোনো অগ্রগতির খবর জানেনও না।
তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে রাসেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক চূড়ান্ত কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানানো হয়নি।
রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি চাই যিনি প্রকাশ্যে মারধর করেছেন তার বড় শাস্তি হোক। সেটা জানতে পারলে আমি স্বস্তি পাব।’
তদন্ত কমিটির প্রধান গৌতম কুমার কুন্ডু জানান, তদন্ত শেষে তিনি সুপারিশসহ প্রতিবেদন মহাব্যবস্থাপক বরাবরে জমা দিয়েছেন প্রায় দুই মাস আগে।
রিপোর্টে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সবটা মনে নাই। তবে রাসেলের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়াসহ আরও একাধিক সুপারিশ ছিল।
প্রতিবেদনটি পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক গ্রহণের পর বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠিয়েছেন বলে জানেন গৌতম কুমার কুন্ডু।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাসেলকে ঘটনার পরপরই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এটি একটি শাস্তি। এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী বিভাগীয় শাস্তির জন্য এটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই চূড়ান্ত বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা হবে।’
আরও পড়ুন:আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে প্রদত্ত ‘নো অর্ডার’ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট থেকে বিভিন্ন মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হয়ে থাকে। বিষয়টির প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময়ে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
“ফলে ‘নো অর্ডার’-এর প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট হতে কোনো মামলায় ‘নো অর্ডার’ মর্মে আদেশ প্রচারিত হলে আবেদনকারীর প্রার্থিত প্রতিকার মঞ্জুর করা হয়নি এবং চেম্বার কোর্ট বিতর্কিত আদেশ বা রায়ের বিষয়ে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই আবেদনটি নিষ্পত্তি করেছেন মর্মে গণ্য করতে হবে।”
জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে থাকা ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুদকের আলাদা দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
মির্জা আজমের নামে ১৮টি ও স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া তাদের ১৯ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অষ্টম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে আগামীকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে বিষয় করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং দেশবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন-সমাবেশে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি, টহল জোরদার এবং গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘ঈদ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে অভিযান বৃদ্ধি করা হবে।’
ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
ঢাকা জেলার আদালত পরিদর্শক আকতার হোসেন বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন মো. সজিব, মো. রাকিব ও শাওন ওরফে ভ্যালকা শাওন। এ ছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় তাদের তিনজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
এদিকে আলী আকবর ও মো. রিয়াজ নামে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা তিন আসামি রাকিব, রিয়াজ ও শাওনকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে দণ্ডিত রাকিব এবং শাওনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডিত সজিব পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ জুন কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আঁটিবাজার এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছিল। ডিউটি চলাকালে সকাল পৌনে ৮টার দিকে জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে সংবাদ পায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে পুকুরের পানিতে একজনের লাশ পানিতে ভাসছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় পুলিশ মামলা করে তদন্ত শুরু করে। প্রথমে ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার সাক্ষী হিসেবে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, এটা তার বান্ধবী মারিয়ার লাশ।
স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করে। শাওন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। সেখানে জানান, তিনি, মো. রাকিব, মো. সজিব, মো. আলী আকবর মিলে ভিকটিম মারিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের পানিতে ফেলে রাখেন। পরে রাকিব এবং সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও একই কথা বলে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক অলক কুমার দে। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘ঈদ-উল-ফিতরের প্রাক্কালে দেশব্যাপী সার্বিক আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে বি।; গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পের মালিকপক্ষ তথা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশ একত্রে বসে ঈদের পূর্বেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি, বোনাস ইত্যাদি পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণ মানুষের ঈদ উপলক্ষে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করতে হবে। মার্কেটগুলোতে বিশেষ রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
‘এ ছাড়াও ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ নিশ্চিতকল্পে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, লঞ্চ/ফেরি ঘাটসমূহে অনিয়ম ও অবৈধ সিরিয়াল প্রদানের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করা, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা এবং পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বলা হয়, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং ফ্লাইওভারসহ টোল প্লাজাগুলোতে যানজট নিরসনে ইটিসিসহ (ইলেট্রিক টোল কালেকশন) দ্রুত টোল আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যানজট নিরসনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চিহ্নিত ১৫৫ স্পটে আইপি/সিসি ক্যামেরা স্থাপনপূর্বক ঈদুল ফিতরের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময় মনিটরিং জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করা যেতে পারে।
‘যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ঈদের পূর্বের সাত দিন ও পরের সাত দিন সুনির্দিষ্ট পূর্ব তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী সড়কের উপরে মোটরযান তথা যানবাহন থামানো যাবে না। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী বা যাত্রীবাহী যানবাহন ব্যতীত স্থলবন্দর ও নৌবন্দরসহ যেকোনো জায়গা থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ও লম্বা যানবাহনগুলোকে ঈদের পূর্বের তিন দিন এবং পরের তিন দিন যেন মহাসড়কে চলাচল করতে না পারে বা নৌরুটে ফেরি পারাপার করতে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঈদের আগে পাঁচ দিন ও পরের পাঁচ দিন নদীতে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও নৌপথে আকস্মিক দুর্ঘটনায় উদ্ধারকার্য পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম, রেসকিউ বোট, ডুবুরি, অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদিসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোস্ট গার্ডের সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।
‘দুর্ঘটনা কবলিত অথবা রাস্তা/সেতুতে কোনো গাড়ি নষ্ট হলে দ্রুত দুর্ঘটনা কবলিত/অকেজো গাড়ি অপসারণ/রেকারিং করে পার্শ্ববর্তী খালি জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে। যমুনা ও পদ্মা সেতুসহ যানজটপ্রবণ এলাকায় প্রয়োজনীয়সংখ্যক রেকারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
এ ছাড়াও ঈদের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অধিদপ্তর এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কন্ট্রোলরুম স্থাপন করতে হবে। সব কন্ট্রোল রুমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের (০১৩২০০০১২২৩) সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বয় জোরদার করতে হবে।
আরও পড়ুন:চেক ডিজঅনার মামলায় ক্রিকেটার ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাকিব আল হাসানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার রিপন মিয়া বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে শাহিবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চেক ডিজঅনার মামলায় সাকিব আল হাসানসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর তিনজন হলেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের এমডি গাজী শাহাগীর হোসাইন এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকা বেগম।
আদালত ১৫ ডিসেম্বর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৯ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনি পরে এ মামলায় জামিন নেন।
আজ গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। বাদীপক্ষ সাকিবের সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, সাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তার বিপরীতে দুটি চেক ইস্যু করে সাকিবের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। দুই চেকে টাকার পরিমাণ প্রায় চার কোটি ১৫ লাখ।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওবায়দুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সোমবার সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা আরও দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত।
আজ তাকে কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক পলকের জামিন আবেদন নাকচ করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার আরও দুই মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ওবায়দুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলককে গ্রেফতার করে ডিবি। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকেন্দ্রিক একাধিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। একাধিক মামলায় তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য