নেত্রকোণার দুর্গাপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের নাগপুর গ্রামে বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া মারুফ হাসান ওই এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের ছেলে। মারুফ সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে এ বছর এইচএসসি পাশ করেছিল।
পরিবারের বরাতে ওসি জানান, বুধবার দুপুরে মারুফ নিজ বাড়ির সামনে বিদ্যুৎচালিত ফ্যানের সাহায্যে ধান পরিষ্কারের কাজ করছিল। এ সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আহত হয় সে। উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান ওসি শিবিরুল।
আরও পড়ুন:বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে দেশ ধ্বংস করাই বিএনপির কাজ বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
শুক্রবার দুপুরে নওগাঁর সাপাহার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি ফুটবল খেলা বন্ধ করে দিয়েছিল, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করেছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে চালু করেছি। দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন হচ্ছে। বিএনপি উন্নয়ন দেখতে পায় না, তাদের কাজই হচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দেশকে ধ্বংস করা।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ছোট বেলায় পলিথিন দিয়ে বল বানিয়ে খেলেছি। কতো স্মৃতি এই ফুটবল খেলা নিয়ে। কালের বির্বতনে সেই পলিথিন দিয়ে বানানো ফুটবল খেলা আর নেই। এখন তো আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে ফুটবল তৈরি হয়ে থাকে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালুর পর ফুটবল খেলায় আবারও প্রাণ ফিরেছে।’
সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার কাছেই বাংলাদেশ নিরাপদ। তার দ্বারাই সম্ভব দেশের উন্নয়ন। আর দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি বা দলের দ্বারা এমন উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০০৮ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেখেছি দেশের কি অবস্থা করে রেখেছিল বিএনপি।
‘প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছিলেন, বর্তমানে সেই সুফল ভোগ করছে দেশের মানুষ। হাতে হাতে মেবাইল হয়েছে, ইন্টারনেট পেয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পেয়েছে। মানুষ এখন আর না খেয়ে থাকে না। কৃষকদের পর্যাপ্ত কৃষি উপকরণ দেয়া হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামসুল আলম শাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রেজা সারোয়ার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী ও থানার ওসি তারেকুর রহমান সরকার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অনূর্ধ ১৭ বালক এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে বিজয়ী অনূর্ধ ১৭ বালিকাদের হাতে পুরস্কর তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ ভেঙে সব রাজনৈতিক দলের মতামতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। এ ছাড়া নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না বলেও সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, মদের বিধিমালা বাতিল, পাঠ্য পুস্তকের সিলেবাসে ধর্মীয় শিক্ষার সংকোচন বন্ধসহ ইসলামিক আদর্শে রাষ্ট্রগঠনে ১৫ দফা দাবি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে এমন দাবি করেন চরমোনাই পীর।
শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে চরমোনাই পীর আরও দাবি করেন, পরবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েনসহ জাতীয় নির্বাচনের দিন সশস্ত্র বাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
সমাবেশে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার নেতাকর্মী দলে দলে অংশ নেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই কানায় কানায় ভরে ওঠে সমাবেশস্থল।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি চরমোনাই পীর ছাড়াও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এ সময় বক্তারা সরকারের নানা সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে মেগা প্রকল্পের নামে ক্ষমতাসীনরা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। ১১৬ জন আলেম ওলামাকে বিতর্কিত করে ইসলামকেই হেয় করছে।
এ ছাড়া পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামি শিক্ষা বাদ দিতেও সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
বক্তারা জানান, সমাবেশে যোগদানের জন্য পিরোজপুর জেলা শাখার আওতাধীন উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও ইউনিট শাখা থেকে প্রায় ১০৮টি পরিবহন বাস রিজার্ভের কথা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা বাস মালিক সমিতি হঠাৎ সব রিজার্ভ করা গাড়ি বাতিল করে নেতাকর্মীদের বায়না টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে বাস মালিক সমিতি দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে প্রশাসনের ওপর আর প্রশাসন দোষ চাপাচ্ছে বাস মালিক সমিতির ওপর।
সমাবেশে যোগদানে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের আরও নানাভাবে বাধা দেয়া হয়েছে দাবি করে বক্তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বক্তাদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান অন্যতম।
আরও পড়ুন:বরিশালে শুরু হয়েছে বাড়িতে গিয়ে নতুন ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম। শুক্রবার শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে আগামী ৯ জুন পর্যন্ত।
জেলায় এবার ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৯ জন নতুন ভোটারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভোগান্তি ছাড়া ভোটার তথ্য হালনাগাদ করতে পেরে খুশি নতুন ভোটাররা।
বরিশাল নগরীর সিএন্ডবি রোড এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহরিয়ার খান ও নাজমা হোসেনের সন্তান তানজিলা খান রিদি জানান, ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় শুধু নতুন ভোটার হতে পেরে তারা খুশি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে নিজের তথ্য দিয়ে নতুন ভোটার ফরম পূরণ করেছেন।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘২০০৭ সালের আগে জন্ম নেয়া যে কেউ এই ভোটার হালনাগাদে তালিকাভুক্ত হতে পারবেন। ২১৮ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ৪৮ জন সুপারভাইজারের সমন্বয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা এলাকায় এ কাজ করা হবে।
‘এ কার্যক্রম চলার সময়ে নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ, মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ ও ভোটার স্থানান্তরের কাজ চলবে। বরিশাল জেলায় এবার ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৯ জন নতুন ভোটারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তির মুখে এবার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সেটি পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, যারা এই মেশিনগুলো পরীক্ষা করবেন, তাদের তালিকা করা হয়েছে। জুনের মধ্যে সেই বিশেষজ্ঞ দল আসবে।
মানিকগঞ্জে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে অন্তত ১০০ আসনে ইভিএমে ভোট নিতে চায় নির্বাচন কমিশন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য গণমাধ্যমে এসেছে যে আগামী নির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে।
এক দশক ধরেই বাংলাদেশে ব্যালটের ভোটের বদলে যন্ত্রের ভোটের প্রচলন করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। তবে এই যন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর আপত্তি আছে। তাদের দাবি, এই যন্ত্র দিয়ে দূর থেকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যন্ত্রগুলো পরীক্ষা করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে একাধিকবার আহ্বানও জানানো হয়েছে। তবে কেউ সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি।
এবার বিশেষজ্ঞ দলকে নিয়ে ইভিএম পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম বিষয়ে যারা অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ আমরা দ্রুত তাদের আমন্ত্রণ জানাব। ইতোমধ্যে আমাদের তালিকাও হয়ে গেছে। আগামী জুনের মধ্যে ইভিএম পরীক্ষার বিশেষজ্ঞ টিম আসবে।’
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে কত আসনে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন। আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে, সেগুলো দিয়ে ১০০ থেকে ১২০ কেন্দ্রে ভোট নিতে পারব। এর চেয়ে বেশি নেয়া সম্ভব না।
‘কিছু রাজনৈতিক দলের ইভিএম নিয়ে আস্থা-অনাস্থা ও আপত্তি আছে। তাই ৩০০ আসনে আমরা ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে পারি না।’
তিনি দাবি করেন, ইভিএম ব্যবহার করে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তার কোনোটি নিয়ে আপত্তি ওঠেনি। বরং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নিতে তাদের কাছে আবেদন এসেছে।
তবে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তার জোটের আপত্তি কেবল ইভিএম নিয়ে নয়। তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার চায়, পাশাপাশি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বদলে নতুন নির্বাচন কমিশনও চায়।
বিএনপি ও সমমনাদের এই অবস্থানের কারণে ২০১৪ সালের পর আবার আগামী নির্বাচনের অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সব দলকে ভোটে আনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কোনো উদ্যোগ থাকা সম্ভব নয় বলে মনে করেন কমিশনার মো. আলমগীর। বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসা বা না নিয়ে আসা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে এগুলো সংশ্লিষ্ট। নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করা। সে প্রস্তুতি আমরা নেব।’
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রশাসক গোলাম মহীউদ্দীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বরিশালে বিয়েবাড়িতে ঢুকে কনেকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে বরের প্রেমিকার বিরুদ্ধে।
প্রেমিকার উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছেন বর। আর প্রেমিকা দাবি করা তরুণীর কাণ্ডে কনের পরিবার বিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শহরতলির চরআবদানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে গ্রামের ১৮ বছরের এক মেয়ের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয় পাশের মহাবাজ এলাকার মৃদুলের সঙ্গে। সকাল থেকে কনের বাড়িতে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। জুমার নামাজের পর বিয়ে সম্পন্নের প্রস্তুতি চলছিল।
জুমার আগ মুহূর্তে মৃদুলের বাড়ির পাশের এক তরুণী তার বোন ও মাকে নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন। ওই তরুণী নিজেকে মৃদুলের প্রেমিকা দাবি করে কনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
একপর্যায়ে স্থানীয় মুরব্বিরা প্রেমিকা দাবি করা তরুণীর অভিযোগ শুনে এবং কনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে বাতিল করে দেন।
স্থানীয় মারুফ হোসেন জানান, প্রেমিকা দাবি করা ওই তরুণী বিয়ের আসরে মৃদুলের সঙ্গে তার সাড়ে সাত বছরের প্রেমের নানা ঘটনা-প্রমাণসহ তুলে ধরেন। এর মধ্যেই কনের বাড়িতে বর সেজে আসা মৃদুল পালিয়ে যান।
কনের বাবা জানান, মেয়েকে মৃদুলের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত বরপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বরপক্ষের লোকজন না খেয়েই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, ‘এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন কনের বাবা। মৃদুলের প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই মেয়ের পরিবার থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।’
একে তো মরা ছাগল জবাই, তার ওপর ওই ছাগলের মাংসে গরুর রক্ত মিশিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার এক কসাই। কিন্তু তার এই প্রতারণা ধরা পড়ে যায় স্থানীয়দের কাছে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে বসেই এমন প্রতারণা করছিলেন ৪০ বছর বয়সী কসাই নজরুল ইসলাম ইদু। তিনি উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের ধনিবস্তী মহাজনঘাট গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে। প্রতারণা ধরা পড়ার পর স্থানীয়রা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম ডন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, সকালে উপজেলা পরিষদের ভেতরে মরা ছাগল জবাই করার পর ওই ছাগলের গায়ে গরুর রক্ত মেখে মাংস বিক্রির সময় স্থানীয়রা দেখে ফেলে। এ সময় মরা ছাগল ও কসাইকে আটক করে উপস্থিত লোকজন থানায় খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে কসাইকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়, আর ছাগলটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি।
তিন বছর পর হওয়ার কথা ছিল যে সম্মেলন, সেটি হতে যাচ্ছে ২৫ বছর পর। তাও যে প্রক্রিয়া মেনে এগোনোর কথা, তার কিছুই হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি পক্ষ গঠনতন্ত্র না মেনে নিজেদের মতো করে কাউন্সিলর বানিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নেতৃত্বে আসতে চাইছে।
কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ ভীষণ ক্ষুব্ধ।
শুক্রবার উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আড়াই দশক পর সম্মেলন ঘিরে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কথা, সেটির বদলে বিরাজ করছে হতাশা।
অভিযোগ করা হয়, সম্মেলন ঘিরে বর্ধিত সভার মাধ্যমে কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেটি না করে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ইচ্ছামতো কাউন্সিলর বানিয়েছেন। সবার নাম আবার প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে ইউনিয়নভিক্তিক কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেখানে সেই নেতার পছন্দসই লোকদের করা হয়েছে কাউন্সিলর। জানেন না বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আগামী ২৫ মে সম্মেলন সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিদ্দিক হোসাইন এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জোবায়ের।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলার সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। সে সময় কেবল সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নিতে যাওয়া হয়নি।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শরীফ আহমেদ সাদী নেতৃত্ব করে গেছেন।
এই কমিটি প্রথমত ২০০৩ সালে এবং পরে ২০১৪ সালে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সম্মেলন ও কাউন্সিল করেছিল। এসব সম্মেলনে ১১টি ইউনিয়নে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং কোনো কোনো ইউনিয়নে সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।
১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সনের করা ইউনিয়ন কমিটিগুলোকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটিগুলো যে কাউন্সিলর তালিকা করছে সেই তালিকা বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ মে হয়তো সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন হতে পারে, কিন্তু কাউন্সিল অধিবেশন করা গঠনতান্ত্রিক বিধানে সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর এক বছর আগে থেকে তার আত্মীয় এক নেতা এই অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিত্ত-বৈভব ও সম্পদ অর্জনের রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সদরের গোছানো এই মাঠ তিনি তছনছ করে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খানকেও কাউন্সিলার রাখা হয়নি। ইউনিয়নে বসবাসকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, সহযোগী সংগঠনগুলোর জেলা-উপজেলা নেতাদেরও নাম নেই। ইউনিয়নের সাবেক গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতারও নাম রাখা হয়নি। ওয়ার্ড কমিটিসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অধিকাংশের নাম নেই।
অন্যদিকে ইউনিয়ন কমিটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির এবং কমিটির পদবিধারী নেতাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এমনকি কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানেন না তাদের ইউনিয়নের কী তালিকা করা হয়েছে এবং তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এসব ঘটনায় সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুকে দায়ী করছেন সংবাদ সম্মেলনে আসা নেতারা। বলা হয়, ‘বস্তুপেঁচা, গণবিচ্ছিন্ন, কর্মী ও সমর্থক বিচ্ছিন্ন সর্বোপরী সাধারণ জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য জরাজীর্ণ নেতৃত্বই প্রতিষ্ঠিত হবে। যদি তা-ই হয় তাহলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐ বিশেষ নেতার পকেটবন্দি নেতৃত্ব পাবে। ফলশ্রুতিতে দার্শনিক রাজনীতিবিদ, আমাদের বিপুল শ্রদ্ধার আসনে থাকা বিউটি অব পলিটিক্সখ্যাত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি অবমাননা হবে।’
এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো করা সম্ভব হয়নি।’ কী ধরনের প্রতিকূলতা ছিল? জানতে চাইলে সুদত্তর দেননি।
তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলার কমিটি করা হবে। এ মাসেই চারটি উপজেলায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৫ মে সদর উপজেলা, ২৬ তারিখে হোসেনপুর উপজেলা, ৩০ তারিখে ইটনা এবং ৩১ তারিখে অষ্টগ্রাম উপজেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল, দানাপাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিবাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম, মারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাল মিয়া, মহিনন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক তৌহিদ, কর্শা কড়িয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাকুল, মাইজকাপন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য