ডিভাইস-নির্ভর হয়ে ঢাকা শহরে ফ্ল্যাটে বসবাসরত শিশুরা দিনে দিনে ‘ফার্মের মুরগি’ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য তাদের মাঠে খেলার সুযোগ করে দিতে মা-বাবা, অভিভাবকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিটি এলাকায় খেলার মাঠ থাকা ‘একান্তভাবে প্রয়োজন’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই মাঠ করে দেয়া হচ্ছে।
ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার সকালে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮৫ সংগঠক ও ক্রীড়াবিদের মাঝে ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হলো, ঢাকা শহরে খেলাধুলার জায়গা সবচেয়ে কম। ইতোমধ্যে আমরা কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছি, প্রতিটি এলাকায় যেন খেলার মাঠ থাকে। আমাদের শিশুরা এখন তো সবাই ফ্ল্যাটে বাস করে, ফ্ল্যাটে বাস করে করে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে।
‘এখন তো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড এগুলো ব্যবহার করে সারাক্ষণ ওর মধ্যে পড়ে থাকা, এটা আসলে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে সুস্থতার লক্ষণ নয়। সে জন্যই বাবা-মা, যারা গার্ডিয়ান, অভিভাবক, তাদের আমি অনুরোধ করব কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলেমেয়েরা যাতে হাত-পা ছোঁড়ে খেলতে পারে, সেটা আপনাদের উদ্যোগ নেয়া উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক এলাকায় খেলার মাঠ থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি, খেলার মাঠ করে দিচ্ছি।’
প্রতিটি উপজেলায় খেলার মাঠ
দেশের প্রতিটি উপজেলায় ছোটো পরিসরে খেলার মাঠ নির্মাণে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নির্মাণকাজে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে সতর্ক করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে প্রতিটি উপজেলায় খেলার মাঠ, সেই খেলার মাঠগুলো খুব বড় স্টেডিয়াম না, ছোটো করে, মিনি স্টেডিয়াম আমি নাম দিয়েছি। কাজেই সেটার নির্মাণকাজ চলছে। এটা সময় নিচ্ছে। আমি মনে করি, এটা আরও দ্রুত শেষ করা দরকার। এ পর্যন্ত ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।’
আরও ১৭১টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তবে আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যথেষ্ট সময় নেয়া হচ্ছে, যাতে আর সময় নেয়া না হয়, সেটা দেখতে হবে।’
প্রতি জেলায় জেলায় স্টেডিয়ামগুলোকে শুধু ক্রিকেটের জন্য নির্দিষ্ট না করে, সব খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামগুলো সব খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ক্রিকেটের জন্য পিচ তৈরি থাকবে, সেটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘স্টেডিয়ামগুলো যদি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, শুধু ক্রিকেট নয় সব ধরনের খেলাধুলা, স্পোর্টস সেখানে চলবে, নইলে ওটা পড়ে থাকে, নইলে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। সেটা যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে খেলাধুলার দিকে আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি আগ্রহী হবে।’
খেলাধুলাকে এক ধরনের শরীরচর্চা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতে শারীরিক, মানসিকভাবেও আমাদের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট উন্নত হবে।’
মাঠে নামতে হবে জয়ের মানসিকতা নিয়ে
প্রতিটি খেলায় জয়ের মানসিকতা নিয়ে ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামতে খেলোয়াড়দের প্রতি পরামর্শ রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়, সংগঠক, যারা আনুষঙ্গিক থাকেন, প্রত্যেকেই যদি মনে মনে সব সময় এই চিন্তাটা করেন যে আমরা যুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কখনো পরাজিত হব না, পরাজয় মেনে নেব না।
‘আমাদের জয়ী হতেই হবে। এই আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে যদি মাঠে থাকা যায় যেকোনো খেলায়, যেকোনো ইসে আমরা জয়ী হতে পারি। কাজেই আমাদের মাঝে সেই আত্মবিশ্বাসটা সব সময় থাকতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান।’
২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া ক্ষেত্রে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের কথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।
ক্রীড়া খাতে দেশের নারীরাও পিছিয়ে নেই বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পোর্টস মিনিস্টারকে বলতে পারি, ফুটবল-ক্রিকেট সব ক্ষেত্রে নারীরা, কিন্তু অনেক পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। তাদের একটু বেশি করে সুযোগ দিতে হবে এবং আরো উৎসাহিত করতে হবে।’
বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য আলাদা মাঠ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, তাদের প্রশিক্ষণের জন্য সংসদ ভবনের পাশে যে মাঠ, সেটা আমরা নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা সেখানে খেলাধুলা করবে। সেখানে তাদের জন্য একটা অ্যাকাডেমি আমরা তৈরি করে দিচ্ছি।’
তাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কারণ তারাই সব থেকে বেশি সম্মান আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে। তারা তাদের যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে।’
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ২১৬টি স্বর্ণ, ১০৯টি রৌপ্য ও ৮৪টি ব্রোঞ্জ পদক দেশের জন্য জিতেছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।
প্রধানমন্ত্রীর মতে, ‘তারা কিন্তু তাদের পারদর্শিতা আরও বেশি দেখাচ্ছে। আমাদের যারা সুস্থ, তারা যা পারছেন না, এরা কিন্তু আরও বেশি পারে। এটাই আমার ধারণা, আমি দেখতে পাচ্ছি।’
রক্ষা করতে হবে গ্রামীণ খেলা
দেশীয় ও গ্রামীণ জনপদের খেলাগুলোকে সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতেও তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অনেক খেলা আছে। গ্রামীণ খেলাগুলো কিছুটা চালু করা হয়েছে। সেগুলো সচল করতে হবে। যেগুলো খুব বেশি খরচ লাগে না, তারা নিজেরা খেলবে।
‘স্কুল প্রতিযোগিতা, আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা- এই প্রতিযোগিতাগুলো যাতে ব্যাপকভাবে চলে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছি। যা যা প্রয়োজন সব করে দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশীয় খেলাগুলো ডাংগুলি থেকে শুরু করে সাত ছাড়া থেকে শুরু করে হাডুডু- সব খেলাই তো আমাদের দেশে ছিল। স্কুলে স্কুলে খেলা হতো। সেই খেলাগুলো এবং আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা এগুলো করতে হবে।’
আহত ও অসচ্ছ্বল ক্রীড়াবিদের পাশে সরকার
বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী আইন ২০১৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা অসচ্ছল বা কেউ খেলতে গিয়ে আহত হন বা অসুস্থ হন তাদের যেভাবেই হোক আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি এবং যতক্ষণ আমি আছি সেটা দিয়ে যাব। কিন্তু একটা প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার ব্যবস্থায় ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা করতে চাই।’
আরও পড়ুন:অন্যান্য খেলার সঙ্গে দেশীয় খেলাধুলাকে সমান গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘খেলাধুলায় আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন আরও বেশি আগ্রহী হয়ে অংশগ্রহণ করে, সমানভাবে সুযোগ পায়। কারণ দেশীয় খেলাগুলোর মধ্য দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের আরও মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি হবে।’
রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শনিবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান এসব কথা বলেন।
খেলাধুলা ও শরীর চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই সরকারে এসেছি চেষ্টা করেছি খেলাধুলার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েদের আরও বেশি অনুরাগী করতে। খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগায় এবং দেশপ্রেম শেখায়, আনুগত্য শেখায়। সে সঙ্গে তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীর চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। এই খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সারা বিশ্বের কাছে দেশক পরিচিত করতে পারি।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ক্ষুদে ফুটবল খেলোয়াড় যারা আজকে এখান থেকে শুরু করেছে, একদিন তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি সম্মান বয়ে আনবে।
খেলাধুলার প্রসারে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা সারা বছর ধরে যেন খেলাধুলা করতে পারে সে জন্য বর্তমান সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে।’
প্রধানমন্ত্রী এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যকার ফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধ উপভোগ করেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়।
পৃথক ম্যাচে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে রংপুরের মিঠাপুকুর তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
প্রধানমন্ত্রী দুই টুর্নামেন্টের বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহমেদ।
আরও পড়ুন:পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের আলোচিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও নিগার সুলতানা জ্যোতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারা বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।
নতুন বছরের আগের দিন শনিবার রাতে ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘শুভ নববর্ষ! আশা করি আমাদের সবার জীবনে এই নতুন বছর অঢেল সুখ, শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসবে।’
নিজ ভেরিফায়েড পেজে ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ লেখা একটি পোস্টার শেয়ার করে ওপেনার তামিম ইকবাল এক বাক্যে লিখেন, ‘সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।’
এ দুই তারকা ছাড়াও অনেকেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ সকলকে।’
নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ লিখেন, ‘আনন্দ, উন্নতি ও শুভকামনার বার্তা নিয়ে নতুন বছরের সূচনায় ভরে উঠুক সকলের জীবন। সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ ১৪৩১।’
জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ।’
আরও পড়ুন:দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের তারকা ক্রিকেটাররা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ঈদের আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে দেশবাসী তথা ভক্তদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাকিব-তামিম-জ্যোতিরা।
নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব লিখেছেন, ‘আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে ঈদ মোবারক। এই আনন্দের দিন আপনার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অফুরন্ত রহমত নিয়ে আসুক।’
শুভেচ্ছা জানিয়েছে দেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ফেসবুকে তামিম লিখেছেন, ‘ঈদ মোবারক! সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।’
ফেসবুকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ লিখেছেন, ‘ঈদ মোবারক। এই বিশেষ দিনটি ভালবাসা, আনন্দ এবং আশীর্বাদে ভরে উঠুক।’
দলের অন্য সেরা পেসারদের একজন তাসকিন আহমেদ লিখেছেন, ‘এই শুভ দিনে, আল্লাহর রহমত আপনার পথকে আলোকিত করুক এবং আপনার প্রতিটি পদক্ষেপে সুখ বয়ে আনুক। ঈদ মোবারক।’
স্পিন অলরাউন্ডার মিরাজ লিখেছেন, ‘ঈদের এই শুভ দিনে আমার সকল শুভাকাঙ্খীদের আন্তরিকভাবে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। আসুন সকল ভেদাভেদ, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেই সবার মাঝে, ঈদ মোবারক।’
নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি লিখেছেন, ‘ঈদ-উল-ফিতরের এই বরকতময় উপলক্ষে আল্লাহর রহমতে আপনার জীবন আনন্দ, শান্তি এবং সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক। ঈদ মোবারক!’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্জাইচিগুলোর একটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচায় এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখা যায় তারকার ছড়াছড়ি, তেমনই কোটি কোটি টাকার জুয়া বাণিজ্য চলে আইপিএল চলাকালে।
তেমনই আইপিএলে বাজি ধরে বারবার হেরে কোটি রুপির বেশি ঋণী হয়ে পড়েছিলেন ভারতের কর্ণাটকের দর্শন বাবু নামের এক ইঞ্জিনিয়ার। তবে টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় পাওনাদারদের ক্রমাগত হয়রানিতে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুয়ার নেশায় টাকা ধার করতে করতে ঋণের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় দর্শনের। তার পরও ধার করে বাজি ধরতে থাকেন তিনি।
দেড় কোটি টাকা ধার নেয়ার পর পাওনাদাররা তার বাড়িতে এসে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিকে শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকৌশলীকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী রঞ্জিতাকে হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আর পাওনাদারদের হয়রানি সহ্য করতে না পেরেই রঞ্জিতা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় রঞ্জিতার বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
চিত্রদুর্গের বাসিন্দা দর্শন সেচ দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের দাবি, দর্শন মাঝেমধ্যেই অনলাইনে জুয়া খেলতেন। সেই নেশার কারণে ধারের বোঝা বাড়ছিল তার।
যদিও দর্শনের শ্বশুরের পাল্টা দাবি, তার জামাই নির্দোষ। তাকে এই জুয়া খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাধ্য করা হয়েছিল টাকা ধার নিতেও। যাদের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন, তারাই এই কাজ করিয়েছিলেন তার জামাইকে দিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য দর্শনকে লোভ দেখানো হয়। তারপর তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, দর্শনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি রঞ্জিতা লিখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সুইসাইড নোটে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জিতা।
তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে শিবু, গিরিশ এবং ভেঙ্কটেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যেই এ নিয়ে কথা বলতে ফেসবুক লাইভে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। ঘোষণা অনুযায়ী তিনি তার কথা রেখেছেন।
লাইভে তামিম জানান, মূলত মোবাইল আর্থিক লেনদেনের প্রতিষ্ঠান নগদের একটি বিজ্ঞাপনের প্রচারণায় ফোনালাপ ফাঁসের অভিনয় করেন তারা। লাইভে তামিম-মিরাজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওই ফোনালাপ প্রচারিত হয় টিভি চ্যানেলে। পরে এটি ভাইরাল হয় ফেসবুকে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তামিম ও মিরাজকে কথা বলতে শোনা যায়। এতে তামিম মুশফিকের কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা জানান মিরাজকে।
সেই ফোনালাপ প্রচার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন।
অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি খোলাসা করলেন তামিম। জানালেন, নগদের ক্যাম্পেইনের প্রচারণার জন্য তারা এই নাটক করেছেন।
লাইভে তামিম জানান, ঈদ উপলক্ষে নগদের একটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। যেখানে ২৪ জন গ্রাহককে জমি উপহার দেয়া হবে। সেই ক্যাম্পেইনে জয়ের জন্য দুই বা তিনজন করে দল গঠন করে লেনদেন করতে হবে, যে দলে মুশফিককে রেখেছিলেন তামিম। তবে মুশফিক বের হয়ে গেছেন। মূলত এসব ঘিরেই ছিল এই ফোনালাপ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য