ডিভাইস-নির্ভর হয়ে ঢাকা শহরে ফ্ল্যাটে বসবাসরত শিশুরা দিনে দিনে ‘ফার্মের মুরগি’ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য তাদের মাঠে খেলার সুযোগ করে দিতে মা-বাবা, অভিভাবকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিটি এলাকায় খেলার মাঠ থাকা ‘একান্তভাবে প্রয়োজন’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই মাঠ করে দেয়া হচ্ছে।
ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার সকালে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮৫ সংগঠক ও ক্রীড়াবিদের মাঝে ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হলো, ঢাকা শহরে খেলাধুলার জায়গা সবচেয়ে কম। ইতোমধ্যে আমরা কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছি, প্রতিটি এলাকায় যেন খেলার মাঠ থাকে। আমাদের শিশুরা এখন তো সবাই ফ্ল্যাটে বাস করে, ফ্ল্যাটে বাস করে করে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে।
‘এখন তো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড এগুলো ব্যবহার করে সারাক্ষণ ওর মধ্যে পড়ে থাকা, এটা আসলে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে সুস্থতার লক্ষণ নয়। সে জন্যই বাবা-মা, যারা গার্ডিয়ান, অভিভাবক, তাদের আমি অনুরোধ করব কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলেমেয়েরা যাতে হাত-পা ছোঁড়ে খেলতে পারে, সেটা আপনাদের উদ্যোগ নেয়া উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক এলাকায় খেলার মাঠ থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি, খেলার মাঠ করে দিচ্ছি।’
প্রতিটি উপজেলায় খেলার মাঠ
দেশের প্রতিটি উপজেলায় ছোটো পরিসরে খেলার মাঠ নির্মাণে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নির্মাণকাজে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে সতর্ক করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে প্রতিটি উপজেলায় খেলার মাঠ, সেই খেলার মাঠগুলো খুব বড় স্টেডিয়াম না, ছোটো করে, মিনি স্টেডিয়াম আমি নাম দিয়েছি। কাজেই সেটার নির্মাণকাজ চলছে। এটা সময় নিচ্ছে। আমি মনে করি, এটা আরও দ্রুত শেষ করা দরকার। এ পর্যন্ত ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।’
আরও ১৭১টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তবে আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যথেষ্ট সময় নেয়া হচ্ছে, যাতে আর সময় নেয়া না হয়, সেটা দেখতে হবে।’
প্রতি জেলায় জেলায় স্টেডিয়ামগুলোকে শুধু ক্রিকেটের জন্য নির্দিষ্ট না করে, সব খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামগুলো সব খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ক্রিকেটের জন্য পিচ তৈরি থাকবে, সেটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘স্টেডিয়ামগুলো যদি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, শুধু ক্রিকেট নয় সব ধরনের খেলাধুলা, স্পোর্টস সেখানে চলবে, নইলে ওটা পড়ে থাকে, নইলে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। সেটা যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে খেলাধুলার দিকে আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি আগ্রহী হবে।’
খেলাধুলাকে এক ধরনের শরীরচর্চা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতে শারীরিক, মানসিকভাবেও আমাদের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট উন্নত হবে।’
মাঠে নামতে হবে জয়ের মানসিকতা নিয়ে
প্রতিটি খেলায় জয়ের মানসিকতা নিয়ে ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামতে খেলোয়াড়দের প্রতি পরামর্শ রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়, সংগঠক, যারা আনুষঙ্গিক থাকেন, প্রত্যেকেই যদি মনে মনে সব সময় এই চিন্তাটা করেন যে আমরা যুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কখনো পরাজিত হব না, পরাজয় মেনে নেব না।
‘আমাদের জয়ী হতেই হবে। এই আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে যদি মাঠে থাকা যায় যেকোনো খেলায়, যেকোনো ইসে আমরা জয়ী হতে পারি। কাজেই আমাদের মাঝে সেই আত্মবিশ্বাসটা সব সময় থাকতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান।’
২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া ক্ষেত্রে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের কথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।
ক্রীড়া খাতে দেশের নারীরাও পিছিয়ে নেই বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পোর্টস মিনিস্টারকে বলতে পারি, ফুটবল-ক্রিকেট সব ক্ষেত্রে নারীরা, কিন্তু অনেক পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। তাদের একটু বেশি করে সুযোগ দিতে হবে এবং আরো উৎসাহিত করতে হবে।’
বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য আলাদা মাঠ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, তাদের প্রশিক্ষণের জন্য সংসদ ভবনের পাশে যে মাঠ, সেটা আমরা নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা সেখানে খেলাধুলা করবে। সেখানে তাদের জন্য একটা অ্যাকাডেমি আমরা তৈরি করে দিচ্ছি।’
তাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কারণ তারাই সব থেকে বেশি সম্মান আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে। তারা তাদের যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে।’
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ২১৬টি স্বর্ণ, ১০৯টি রৌপ্য ও ৮৪টি ব্রোঞ্জ পদক দেশের জন্য জিতেছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।
প্রধানমন্ত্রীর মতে, ‘তারা কিন্তু তাদের পারদর্শিতা আরও বেশি দেখাচ্ছে। আমাদের যারা সুস্থ, তারা যা পারছেন না, এরা কিন্তু আরও বেশি পারে। এটাই আমার ধারণা, আমি দেখতে পাচ্ছি।’
রক্ষা করতে হবে গ্রামীণ খেলা
দেশীয় ও গ্রামীণ জনপদের খেলাগুলোকে সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতেও তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অনেক খেলা আছে। গ্রামীণ খেলাগুলো কিছুটা চালু করা হয়েছে। সেগুলো সচল করতে হবে। যেগুলো খুব বেশি খরচ লাগে না, তারা নিজেরা খেলবে।
‘স্কুল প্রতিযোগিতা, আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা- এই প্রতিযোগিতাগুলো যাতে ব্যাপকভাবে চলে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছি। যা যা প্রয়োজন সব করে দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশীয় খেলাগুলো ডাংগুলি থেকে শুরু করে সাত ছাড়া থেকে শুরু করে হাডুডু- সব খেলাই তো আমাদের দেশে ছিল। স্কুলে স্কুলে খেলা হতো। সেই খেলাগুলো এবং আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা এগুলো করতে হবে।’
আহত ও অসচ্ছ্বল ক্রীড়াবিদের পাশে সরকার
বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী আইন ২০১৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা অসচ্ছল বা কেউ খেলতে গিয়ে আহত হন বা অসুস্থ হন তাদের যেভাবেই হোক আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি এবং যতক্ষণ আমি আছি সেটা দিয়ে যাব। কিন্তু একটা প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার ব্যবস্থায় ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা করতে চাই।’
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য