ঐতিহাসিক ১০ মে। ১৯৭৯ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচারের দাবি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন তার কন্যা শেখ রেহানা।
সুইডেনের স্টকহোমে সর্ব ইউরোপীয় বাকশালের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে প্রথমবারের মতো হত্যার বিচার চান তিনি।
ওই সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল, তবে সে সময় তার পক্ষে ভারত থেকে সুইডেনে গিয়ে সম্মেলনে যোগ দেয়া সম্ভব ছিল না।
এমন বাস্তবতায় সর্ব ইউরোপীয় নেতারা লন্ডনে অবস্থানরত শেখ রেহানাকে তার বড় বোনের প্রতিনিধিত্ব করার অনুরোধ করেন। দিল্লি থেকে ফোনে বোনকে সম্মেলনে যেতে বলেন শেখ হাসিনাও।
অনুষ্ঠানে কী বলতে হবে, সে বিষয়ে টেলিফোনে শেখ রেহানাকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার বাণী পড়ে শোনান শেখ রেহানা। বড় বোনের পক্ষে বক্তব্যও দেন তিনি। সেটি ছিল রাজনৈতিক সমাবেশে শেখ রেহানার প্রথম বক্তব্য।
সেদিন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, সংস্থাটির হিউম্যান রাইটস কমিশনের চেয়ারম্যান, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রধানের কাছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচারের প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অনুরোধ জানিয়েছিলেন শেখ রেহানা।
পঁচাত্তরের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ রেহানা বক্তব্য দেন। সে সময় অনুষ্ঠানস্থলে হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। হলভর্তি প্রবাসী বাঙালি, বিদেশি রাজনীতিক, পার্লামেন্ট সদস্য ও সাংবাদিকরা নীরবে তার বক্তব্য শোনেন।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে-বিদেশে যখন এ নিয়ে প্রতিবাদ নেই বললেই চলে, ঠিক সে সময়ে শেখ রেহানা বিচারের দাবি নিয়ে আসেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক উত্থান-পতন ও নানা ঘটনাবলীর পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা দেশের প্রচলিত আইনে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাবার হত্যাকারীদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯৭ সালের ১২ মার্চ বিচারকাজ শুরু হয়।
১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারক কাজী গোলাম রসুল ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে জাতির পিতা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর ওই মামলার আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনের ফাঁসির সাজা কার্যকর হয়েছে। বাকি আছেন আরও পাঁচজন। তারা হলেন আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও এবিএমএইচ নূর চৌধুরী। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় আছেন।
অন্যদিকে আব্দুর রশীদ, ডালিম ও মোসলেম উদ্দিন কোথায় আছেন, তা অজানা। তাদের বিষয়ে তথ্য দিলে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান হাউস অফ কমন্স আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (আইএমএলডি) আইনের বিল এস-২১৪ পাস করেছে।
এই বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে কানাডা এখন থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করবে। খবর ইউএনবির
শুক্রবার কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশি কানাডিয়ান এবং বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার সমর্থকদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশন ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এবং পরে জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালামের অবদানের স্বীকৃতি দেয়।
মিশন বলেছে, ‘কানাডার পার্লামেন্টে বিল এস-২১৪ পাশ করার উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমিনুল ইসলামের অবদানকেও আমরা স্বীকৃতি দিই।’
বিলটির আলোচনা ও পাশের সময় হাউস অফ কমন্সে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কেন হার্ডি এমপি বিলটি হাউসে উত্থাপন করেছিলেন এবং এসময় সিনেটর মবিনা এস জাফর উপস্থিত ছিলেন। মবিনা এস জাফর এর আগে কানাডিয়ান সিনেটে বিলটি পাশের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশ মিশন বলেছে, ‘বিল এস-২১৪ পাশ করা ভাষাগত বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি কানাডার প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে। বিলটি স্বীকৃতি দেয় যে ভাষা একজন ব্যক্তির পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অপরিহার্য দিক এবং ভাষাগত বৈচিত্র্যকে উদযাপন করা, প্রচার করা এবং সংরক্ষণ করা উচিত।’
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমেরিকাসহ ১২টি দেশের বিবৃতির সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। ভারতের দিকে তাকান, সেখানে কয়েকদিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে। সেখানে কি বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিবৃতি দিয়েছে ? দেয়া হয়নি। কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি-সামর্থ্য বেশি, সেজন্য সেখানে সেই সাহস দেখাতে পারেনি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরে দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত। এর ওপর গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার আমাদের যে সংস্কৃতি সেটিকে আরও গভীরে প্রোথিত করা নির্ভর করে। একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে। স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ নিশ্চয় সেটিকে সমর্থন করে না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা যে সমীচীন নয় সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করেছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি যে তারা (বিএনপি) জনগণের কাছে যায় না। তারা বিদেশি কূটনীতিকদের ধারে গিয়ে পদলেহন করে। আমি আশা করেছিলাম, তারা দুস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে। সেটি না করে তারা ফাইভ স্টার হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেকের অনেক বেশি। কারণ আমরা গিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরি একটু কিছু বলার জন্য। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সফর আলী উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন।
জাতিসংঘের সদরদপ্তরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে প্রবাসী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ বিন মোমেন প্রবাসীদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবনের পাশাপাশি আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পণ্যের অন্যতম ভোক্তা হিসেবে প্রবাসীরা রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল তৈরিতে অবদান রাখে এবং নিজ দেশে তাদের পরিবার ও পরিচালিত ব্যবসায় অর্থ পাঠিয়ে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন।’
দেশের আট বিভাগে বর্ষণের আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, কোথাও কোথাও হতে পারে শিলা বৃষ্টি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সীমান্তবর্তী বাংলাদেশে রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, শনিবার ঢাকায় সূর্যোদয় ৫টা ৫১ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় টাঙ্গাইলে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড কর হয় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে।
আরও পড়ুন:সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রথম আলোর প্রতিবেদককে মধ্যরাতে বাসা তুলে নিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের এবং পত্রিকাটির সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।
একইসঙ্গে দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুবুল আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি তুলেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক সিরাজুস সালেকিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশকে কেন্দ্র করে প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়। এর প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। পরবর্তীতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়।
১৪ মার্চ দৈনিক যুগান্তরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুবুল আলম লাবলুর বিরুদ্ধে বুধবার সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে মামলা করেন সরকার দলীয় অঙ্গ সংগঠনের এক নেতা।
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আরএফইডি সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের লক্ষ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব আইনের জেরে সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি তাদের পেশাগত নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।’
দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত দু-তিনটির খবর জানি, আরও মামলা হচ্ছে বলে আমরা শুনছি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিআইডি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি মামলা বিভিন্ন স্থানে হয়েছে সেসব মামলার ভিত্তিতে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত দুই-তিনটির খবর জানি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি গতকাল স্পষ্ট করে বলেছি, একটা সংবাদের ভিত্তিতে দুই একটা মামলা হচ্ছে বলে আমি শুনেছি। কিন্তু মামলাগুলো কোথায় কখন হচ্ছে, সেটার বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে এখন পর্যন্ত নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি এখন বলতে চাই, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য ৭১ টিভি ও প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বা মিডিয়ায় আসছে, সেগুলো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি তাকে নিয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়েও দিয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি মামলা বিভিন্ন স্থানে হয়েছে, সেসব মামলার ভিত্তিতে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
যদি কেউ ভুল করে থাকে সেটি মামলা হবে, বিচারের আওতায় আসবে, কিন্তু যে পদ্ধতির ভেতর দিয়ে শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হলো সেজন্য গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে আমরা ভয়ে থাকব কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ভয়ে থাকবেন কেন? আপনিতো কোনো দিন মিথ্যা তথ্য দেননি, বিভ্রান্তিকর নিউজ দেননি, কোনো দিন অসত্যকে সত্য করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করেননি। তাহলে আপনি ভয়ে থাকবেন কেন। আপনি নির্ভয়ে চলবেন।’
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন ফেরিতে সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার নৌ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথে স্টিমার, লঞ্চসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আয়োজিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে বলা হয়, সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করতে পারবে। ঈদের আগের পাঁচ দিন এবং ঈদের পরের পাঁচ দিন সার্বক্ষণিক (দিন এবং রাত) সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া রাতের বেলায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বৈঠকে জানান, পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে মোটরসাইকেল পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এপ্রিলে আবহাওয়া খারাপ থাকে; কালবৈশাখীর হওয়ার শঙ্কা থাকে। সে সময় সবাইকে আবহাওয়া বার্তা মেনে চলতে হবে। ঢাকা সদরঘাট এলাকায় যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ও নৌ-পুলিশ আরও সতর্কতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এ ছাড়া সদরঘাট এলাকায় ছোট ছোট নৌযানে করে লঞ্চে যাতে যাত্রী ওঠানামা করতে না পারে, সে জন্য কঠোর নজরদারি করতে হবে। নদীবন্দরগুলোতে যাত্রী সেবার জন্য যেসব ওয়াশরুমের সুবিধা আছে, সেগুলোর সংখ্যা ও সেবার মান বাড়াতে হবে। পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া, আরিচা, কাজিরহাট, হরিনা, আলুবাজার ফেরিরুটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার মতো উপকূলীয় অঞ্চলে যাত্রী পারাপারে সি-ট্রাক চালু থাকবে। ফিটনেসবিহীন নৌযান যাতে চলাচল করতে না পারে, সে জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রীসাধারণের সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে যাতায়াতের লক্ষ্যে ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় গার্মেন্টস ও নিটওয়্যার সেক্টরের নিয়োজিত কর্মীদের এলাকাভিত্তিক পর্যায়ক্রমে ছুটি প্রদানের জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নৌ-সেবাটা নিতে পারে, সে বিষয়ে আমরা আন্তরিক। পদ্মা সেতু আমাদের অনুভূতির জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। অনেকে মনে করেছিল পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষরা আর লঞ্চ ব্যবহার করবে না। এটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নৌপথে আগ্রহ কমে যায়নি বরং আগ্রহ বেড়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নৌ-সেবা নিতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। সেবা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য