মানিকগঞ্জের ঘিওরে গ্রেপ্তার আসামি তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জবানবন্দি শেষে রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক জান্নাতুল রাফিন সুলতানা আসাদুজ্জামান রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার ভোররাতে ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া এলাকায় বসতঘর থেকে ৩৫ বছর বয়সী লাভলী আক্তার এবং তার দুই মেয়ে ১৬ বছর বয়সী মেয়ে ছোঁয়া আক্তার ও ১২ বছর বয়সী কথা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশ থেকে প্যারামেডিক রুবেলকে আটক করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে রুবেলের শ্বশুর শাহাজুদ্দিন তার নামে হত্যা মামলা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের কাছে রুবেল হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর তাকে আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
নুরজাহান লাবনী আরও জানান, রুবেল জানিয়েছেন, তিনি ঋণের কারণে মানুষের চাপ ও পরিবারের লোকজনের অপমানের কারণে তার স্ত্রী ও মেয়েরা ঘুমানোর সময় জবাই করেছেন। তারপর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন:চাকরিচ্যূত ১৭৬ কর্মীকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পরিশোধের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোক্তা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আদালতের বাইরে বসেই দুই পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। এরপর তারা আদালতে বিষয়টি জানালে আদালত মামলাটি প্রত্যাহার ঘোষণা করে।
সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চ মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দেয়।
আদেশে আদালত বলে, ‘বাস্তবতার প্রেক্ষিতে দেখা যায়, উভয়পক্ষ বন্ধুত্বপূর্ণভাবে আদালতের বাইরে সমস্যাটি সমাধান করে ফেলেছে। এ অবস্থায় এটি মামলা হিসেবে ধরে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। সুতরাং মামলাটি ডিসমিস করা হলো।’
আদালতের প্রত্যাহারের আবেদন করেন ১৭৬ জনের পক্ষে আইনজীবী ইউসুফ আলী। আর গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।
আদেশের পরে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষের আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের দীর্ঘমেয়াদি একটা বিরোধ ছিল। এই বিরোধের প্রেক্ষিতে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মামলা করেন তারা। সবশেষ তারা গ্রামীণ টেলিকম অবসায়ন চেয়ে কোম্পানি কোর্টে একটা মামলা করে।
‘পরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যে কোর্টের বাইরে একটা সেটেলমন্টে হয়েছে। ফলে তাদের দাবি করা টাকার একটা অংশ তাদের দেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আজকে তারা সব মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
টাকার পরিমাণ কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।’
গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ চলে আসছিল।
একপর্যায়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে প্রতিষ্ঠানটির ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ ছাড়া কোম্পানি আইনে একাধিক মামলা করে।
এ ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ কর্মী। পরে আরও অনেকেই যুক্ত হন সেখানে। ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলবও করেছিল হাইকোর্ট। শেষপর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে ১৭৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী কোম্পানি কোর্টে আবেদনও করেন।
সব শেষ দুইপক্ষই কোর্টের বাইরে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়। আর প্রতিষ্ঠানটি ৪০০ কোটি টাকা দিতে রাজি হওয়ায় মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালে প্রথম মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৪ কর্মী। পরে বকেয়া পাওনা চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ৯৩টি মামলা করেন তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীরা।
ঢাকার শ্রম আদালতে সব মিলে ১০৭টি মামলা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ১৪ কর্মী আরও ১৪টি মামলা করেন পাওনা টাকার জন্য।
২০২০ সালে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে গ্রামীণ টেলিকম ৯৯ জনকে চাকরিচ্যুতি করে। এটি নিয়েও পরে আদালত পর্যন্ত গড়ান চাকরিচূত কর্মীরা।
আরও পড়ুন:ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে মাস্ক কেনা সংক্রান্ত জালিয়াতির মামলায় প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার আসামির করা জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক।
মামলার অন্য আসামি ডেলটা লাইফের ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামরুল হক, ইভিপি এম হাফিজুর রহমান খানের বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। সমন জারি হলেও তারা আদালতে হাজির হননি।
মাস্ক কেনায় দুর্নীতি অভিযোগ এনে মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক এবং অডিট কমিটির সদস্য জেয়াদ রহমান মামলাটি করেন। শুনানি শেষে আদালত তা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে পাঠায়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রমজান আলী সরদার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামারুল হকের অনুমোদনে ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্ক ১ কোটি ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। প্রতিটির মূল্য ধরা হয় ৫০ টাকা। যা ওই সময়ের বাজারমূল্য অপেক্ষা অনেক বেশি।
ফেসবুকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লাজিম মিডিয়াকে কার্যাদেশ দিয়ে ৫০ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করা হয়। ক্রয় আদেশের ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্কের মধ্যে বিভিন্ন জোনাল অফিসে ১৯ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়। বাকি ১ লাখ ৯৬ হাজার মাস্কের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
ডেলটা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির নিউ পারচেজ অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড গেমেন্ট-এর বিধি অনুযায়ী ৮ লাখ টাকার ওপরে কোনো কিছু কিনতে হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। জাতীয় পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করতে হয়।
কিন্তু সাবেক প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা এর কোনোটিই না করে নিকটাত্মীয়কে কাজটা পাইয়ে দেন। এতে কোম্পানির পলিসিহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি হলেও তারা নিজেরা লাভবান হন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
পিবিআইয়ের তদন্তেও ঘটনার সত্যতা উঠে আসে। আদালত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে।
আরও পড়ুন:দেশের সাধারণ মানুষ ওয়াকিটকি বহনকারী ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে। আর এই জনমানসিকতাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীরা। তারা ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে।
দেশে একটি চক্র অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সেট মজুত ও বিক্রি করে আসছে। তাদের ক্রেতা মূলত অপরাধ জগতের সদস্যরা। অবৈধ কারবারিরা এভাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। আবার এসব ওয়াকিটকি ব্যবহার করে একের পর এক অপরাধ সংঘটনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
অবশেষে ওয়াকিটকি সেট অবৈধভাবে বিক্রি চক্রের হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রোববার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন অলেফিল ট্রেড করপোরেশনের মালিক ও চক্রের হোতা আব্দুল্লাহ আল সাব্বির এবং তার সহযোগী আল-মামুন। এ সময় ১৬৮টি ওয়াকিটকি সেট, ওয়াকিটকি সেটের ৩৫টি ব্যাটারি, ৩২টি চার্জার, ৬৩টি এন্টেনা, ৬টি মাউথ স্পিকার ও ছয়টি ব্যাক ক্লিপ জব্দ করা হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, র্যাব-৩ ও বিটিআরসির যৌথ অভিযানে অবৈধ ওয়াকিটকি সেট বিক্রি চক্রের হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি চক্র অধিক মুনাফার আশায় দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে অপরাধীদের কাছে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট বিক্রি করে আসছে। অথচ বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
গ্রেপ্তার দুজন অলেফিল ট্রেড করপোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অবৈধভাবে বেতারযন্ত্র ওয়াকিটকি সেট মজুত করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে আসছিল। তারা উদ্ধারকৃত ওয়াকিটকি সেটগুলোর ব্যবহারসংক্রান্ত লাইসেন্স ও কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এসব ওয়াকিটকি সেটের ফ্রিকোয়েন্সি ২৪৫-২৪৬ মেগাহার্টজ। এসব ওয়াকিটকি ব্যবহার করে রিপিটার ছাড়া আধ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব।
এ ছাড়া বহুতল ভবনের মধ্যে উপরতলা থেকে নিচতলায় যোগাযোগ করা সম্ভব। এসব ওয়াকিটকির মূল্য পাঁচ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক বলেন, ‘আসামি আল সাব্বির ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সামগ্রী মজুত রেখে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার অপরজন আল মামুন দুই বছর ধরে সাব্বিরের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। এ পর্যন্ত তারা দুই হাজার ওয়াকিটকি সেট বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন।
দেশের নিরাপত্তা হুমকির উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ওয়াকিটকি বহনকারী কাউকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবেই গণ্য করে। এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধীরা ভুয়া ডিবি, র্যাব, ডিজিএফআই ও এনএসআই সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে।
‘এতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অন্যদিকে প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করতে গেলে জনসাধারণ তাদের ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভেবে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া ওয়াকিটকির মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপরাধ সংগঠন করলে পরবর্তীতে অপরাধী শনাক্তকরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে, যা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে এক যুবককে হত্যার দায়ে তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আরেক ধারায় তাদের ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক বেগম সালমা খাতুন সোমবার দুপুরে এই রায় দেন।
তাতে বলা হয়, দণ্ড পাওয়া তিন আসামির মেয়েকে ওই যুবক উত্ত্যক্ত করতেন। এ কারণে তিন বাবা পরিকল্পিতভাবে মেয়েদের উত্ত্যক্তকারীকে হত্যার পর মরদেহ গুম করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী ওয়াজ করনী লকেট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন এনায়েতপুর থানার খুকনী কান্দিপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম খলিফা, আব্দুর রহমান ও খুশি আলম ওরফে সাইফুল ইসলাম। দুই আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও পলাতক রয়েছেন আব্দুর রহমান।
নিহত যুবকের নাম ইয়াকুব মোল্লা। তার বাড়ি এনায়েতপুরের রুপনাই গাছপাড়া গ্রামে।
তিনি খুকনী কান্দিপাড়া গ্রামের তিন তরুণীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। এতে ক্ষিপ্ত ছিলেন ওই তিন মেয়ের বাবা আব্দুর রহিম, আব্দুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম। তারা পরিকল্পনা করে ২০২০ সালের ৫ থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে কোনো এক দিন ইয়াকুবকে বাইরে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। মরদেহ গুম করার জন্য এনায়েতপুর থানার খুকনী ইসলামপুরের একটি সরিষা ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রাখেন।
এ ঘটনায় ইয়াকুবের বাবা ইয়াসিন মোল্লা অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে গ্রেপ্তার হন আব্দুর রহমান। তার স্বীকারোক্তিতে গ্রেপ্তার হন সাইফুল ইসলাম। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক আব্দুর রহমান।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার তারিখ পিছিয়ে ৫ জুলাই ঠিক করেছে আদালত।
ঢাকা মহানগর হাকিম তরিকুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ঠিক করেন।
সোমবার মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন ঠিক ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ প্রতিবেদন দিতে পারেনি।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
গত ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনির কাঁচা বাজারসংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাহজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু। এ সময় তার মাইক্রোবাসের পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
মামলার পর ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
এরপর আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ ও আরফান উল্লাহ দামাল।
আরও পড়ুন:অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। পরে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছে চেম্বার আদালত।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আগামী ৩০ মে আপিল বিভাগে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
জামিন বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন সম্রাট।
চেম্বার আদালতে সম্রাটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
১৮ মে হাইকোর্ট সম্রাটের জামিন বাতিল করে সাত দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে আদেশটি স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন সম্রাট।
গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দেয় ঢাকার বিশেষ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান।
সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগে মামলা হয়। মামলা করে দুদকও। সব মামলাতেই তিনি জামিনে ছিলেন।
দুদকের মামলা থেকে জানা গেছে, ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলা করেন।
২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন দুদকের ওই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মুদি দোকানি হুমায়ুন কবির হত্যা মামলায় ৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দিনাজপুরের একটি বিচারিক আদালত।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান মন্ডল সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই রায় দেন।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল।
তিনি জানান, মৃত্যুদণ্ড পাওয়ারা হলেন শরিফুল ইসলাম, আতর আলী ও রেজাউল করিম। যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন গোলাম রব্বানী, একরামুল হক, সাঈদ আলী ও জাহাঙ্গীর আলম।
যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার অন্য একটি ধারায় সাজা পাওয়া ৭ জনকেই ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল আরও জানান, ২০০৯ সালের ২০ আগস্ট রাতে হুমায়ুন কবির গড়পিংলাই গ্রাম থেকে ব্যক্তিগত কাজে জয়নগর বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। পথমধ্যে এমআইবি নামের ইটভাটার সামনে আসামিরা তার গতিরোধ করেন। পরে ভাটার ভেতর নিয়ে তাকে হত্যা করে মরদেহ ইটের স্তুপের নিচে ফেলে রাখে।
পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এর একদিন পর নিহতের বড় ভাই তৌহিউল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ জনের নামে একটি মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। মামলায় মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য