চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফরম পূরণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকে ১৬ মে পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারবেন।
রোববার রাতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসএসসি পরীক্ষা-২০২২ এর ফরম পূরণের বর্ধিত সময়কাল ৯ থেকে ১৬ মে এবং অনলাইনে ফি জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৭ মে।
এর আগে ১৩ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ চলে। আর ফি জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৫ এপ্রিল।
রেজিস্ট্রেশন ফি
বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ১ হাজার ৬১৫ টাকা। আর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার ৪৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে। নবম ও দশম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থীর বেতন সর্বমোট ২৪ মাসের বেশি নেয়া যাবে না। রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয়ের এক থেকে চারটি বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এ জন্য ব্যাবহারিক ছাড়া ৩৫০ টাকা আর ব্যাবহারিকসহ ৪০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যান্য তথ্য
২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাস অনুযায়ী, প্রণীত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার্থীরা (নিয়মিত ও অনিয়মিত) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার অ্যাডুকেশন বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জিপিএ উন্নয়ন
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নৈর্বাচনিক সব বিষয়ে অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং জিপিএ-৫ এর কম পেয়েছে এমন পরীক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকলে ২০২২ সালের পরীক্ষায় জিপিএ উন্নয়নের জন্য অংশগ্রহণ করতে পারবে। তাদের সব বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ পরীক্ষায় জিপিএ উন্নয়ন হলে তা গ্রহণ করা হবে। অন্যথায় আগের ফল বহাল থাকবে।
বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীর জন্য করণীয়
আগের বছরের বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের শাস্তির মেয়াদ শেষ হয়ে থাকলে এবং রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকলে তারা ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিতে পারবে। তাদের সব বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
পরীক্ষা কবে?
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ আগামী ১৯ জুন নির্ধারণ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এই পরীক্ষা চলবে ৬ জুলাই পর্যন্ত। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১৩ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত। পরীক্ষার্থীরা ২০ মিনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার পর রচনামূলক পরীক্ষার জন্য সময় পাবেন ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এই দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।
মানবণ্টন যেভাবে
এসএসসিতে ইংরেজি প্রথম পত্রে ৫০ নম্বর, দ্বিতীয় পত্রে ৫০ নম্বর আর ব্যাবহারিক আছে, এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে রচনামূলকে ৩০ নম্বর আর এমসিকিউতে ১৫ নম্বর থাকবে।
এ ছাড়া যেসব বিষয়ে ব্যাবহারিক শিক্ষা নেই, সেসব বিষয়ে ৫৫ নম্বরের (রচনামূলক ৪০, এমসিকিউ ১৫) পরীক্ষা হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাকাডেমিক ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন এবিএম তৌকির তানভীর নামে এক ছাত্র। আর কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছাত্র আবিদ বিন আজাদের ঝুলন্ত মরদেহ।
সোমবার দুপুরে ও বিকেলে এ দুটি ঘটনা ঘটে। দুই ছাত্রের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
মৃত তৌকির তানভীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আর মৃত আবিদ বিন আজাদ পড়তেন কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষে।
ড্যাফোডিলের পরিচালক (স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স) সৈয়দ মিজানুর রহমান জানান, অ্যাকাডেমিক ভবন-১ থেকে সোমবার দুপুর ১টা ৪০ এর দিকে নিচে পড়ে যান তানভীর। তবে ঠিক কোন ফ্লোর থেকে পড়েছেন তা নিশ্চিত নন কেউ। কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ দেখছে বলে জানিয়েছে।
সাভার মডেল থানার ওসি কাজী মঈনুল ইসলাম জানান, ওই ভবন থেকে পড়ে যাওয়ার পর তানভীর গুরুতর আহত হন। তাকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই ব্রাদার্স হাউজ নামে একটি ছাত্রাবাস থেকে সোমবার বিকেলে উদ্ধার করা হয় আবিদের ঝুলন্ত দেহ।
বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান আবিদের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়।
রুমমেটদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবিদ বন্ধুদের সঙ্গে সকালে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে রুমেই ছিলেন। বিকেলে তার এত রুমমেট ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়াশব্দ পায়নি। জানালার ফাঁকা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে সবাইকে জানায়।
‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে রুমের দরজা ভেঙে আবিদের মরদেহ উদ্ধার করে। আবিদের কোনো সমস্যার কথা জানতো না রুমমেটরা। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো, তাতে আমরাও হতবাক।’
আরও পড়ুন:উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিটিসি, সমতুল্য ও প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। যা চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
সোমবার ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিটিসির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হবে ২৪ মে, যা চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে e-SIF ফরম পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন শেষ করতে হবে।
আরও বলা হয়, এ ছাড়া সমতূল্য ও প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ২৩ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বোর্ড রেজিস্ট্রেশন শেষ করবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কলেজ বিটিসির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন শেষ করতে না পারলে পরে সৃষ্ট কোনো জটিলতায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না বলেও অফিস আদেশে বলা হয়।
বিশ্বব্যাপী ভেড়ার মাংস জনপ্রিয় হলেও এক ধরণের গন্ধের কারণে দেশে এ মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম।
তাই দীর্ঘদিন ধরে দেশের গবেষকরা চেষ্টা করছিলেন গন্ধমুক্ত ভেড়ার সাংস উৎপাদনের।
দুই দশক পর গন্ধহীন ভেড়ার মাংস উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একজন গবেষক।
ওই গবেষকের নাম ড. মোহাম্মদ আল মামুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক। ২০০৪ সালে জাপানের ইয়াতো ইউনিভার্সিটিতে প্লানটেইন ঘাসের উপর গবেষণা শুরু করেন। গবেষণায় সাফল্যের জন্য তিনি সেখানে প্রেসিডেন্ট ও ডিন আওয়ার্ড পেয়েছেন।
বাকৃবি সূত্রে জানা যায়, বিশ্বে শতকরা ২২ ভাগ প্রোটিনের চাহিদা মেটায় ভেড়ার মাংস। কিন্তু অস্বাভাবিক গন্ধ ছাড়াও ঘন শক্তপেশী ও অধিক চর্বিযুক্ত হওয়ায় দেশের বেশিরভাগ মানুষই পছন্দ করেন না ভেড়ার মাংস।
তাই ভেড়ার খাদ্যতালিকায় ওষুধিগুণ সম্পন্ন প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতা ব্যবহার করে ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাংসের গুণগত মান উন্নত করা হয়েছে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, ওষুধি ঘাসের উপাদান মাংসের স্বাদ ও গন্ধের পরিবর্তন এনেছে। এ ছাড়া প্লানটেইন ও রসুনের পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভেড়ার বৃদ্ধি, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মাংসের গুণগত মানের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘গবেষণা চলাকালীন ভেড়ার খাবারে অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতা ব্যবহার করার ফলে ভেড়ার ২০ থেকে ২৬ শতাংশ শারীরিক বৃদ্ধি, ৫ থেকে ৭ শতাংশ মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৭ শতাংশ রক্তের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়া এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ চর্বি ও পেলভিক চর্বি যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ৫৬ শতাংশ কমে গিয়েছে।
‘উপাদান দুটি ব্যবহারের ফলে ভেড়ার মাংসে ১৫ শতাংশ কোলেস্টরল কমিয়ে দিয়েছে এবং ৩০ শতাংশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘাসসমূহ ব্যবহারে ভেড়া থেকে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ কম মিথেন নির্গত হয় যা পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রাখী চৌধুরী বলেন, ‘মূলত ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা করে এ সাফল্য পাওয়া যায়। এর ফলে ভেড়ার মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। এতে খামারিরা লাভবান হবেন ও তাদের সংখ্যা বাড়বে।’
আরও পড়ুন:বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ‘টুস’ করে ফেলে দেয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ‘হত্যার হুমকিস্বরূপ’ এবং ‘কুরুচিপূর্ণ’ দাবি করে বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল। বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রধানমন্ত্রীকে ভাষা শালীন করার আহ্বানসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করে দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রয়া দেখিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার সন্ধ্যায় ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিবাদে টিএসসিতে জড়ো হন একদল ছাত্রলীগ কর্মী।
সেখানে তারা আগে থেকেই অবস্থান করা ছাত্রদল কর্মী আতিক মোর্শেদকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মীরা হল থেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্পসহ লাঠি নিয়ে ক্যাম্পাসে শোডাউন দেয়।
এ সময় তারা ‘ছাত্রদলের গুণ্ডারা, হুশিয়ার,সাবধান, একটা একটা ছাত্রদল ধর, ধরে ধরে জবাই কর, হই হই রই রই, ছাত্রদল গেলি কই’সহ নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
সকালের সমাবেশে শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক জুয়েল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্যই আপনি ওয়ান ইলেভেনে বাংলার মাটিতে ফিরে এসে রাজনীতি করতে পেরেছেন। সেই দেশনেত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করতে আপনার বিবেকে নিশ্চয়ই লাগবে না। কারণ আপনি বিবেক বিবর্জিত একজন মানুষ। কত রক্ত চাই আপনার? ছাত্রদল রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আমাদের আবেগ, আমাদের আদর্শিক মা বেগম জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করার চেষ্টা করবেন না।’
আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ নেতাকর্মীদের চ্যালেঞ্জ করে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের যদি রাজনৈতিক সক্ষমতা থাকে তাহলে প্রশাসন ভাইদের নিরপেক্ষ রেখে একবার যুদ্ধের মাঠে আসুন। সেই যুদ্ধের প্রস্তুতি ছাত্রদলের রয়েছে। সেই যুদ্ধ হবে গণমানুষের পক্ষের যুদ্ধ।’
সন্ধ্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মানছুরা আলম বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে আমরা কয়েকজন টিএসসিতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। বাকি লোকজনও আশেপাশে ছিলে। এ সময় ছাত্রদল কর্মী আতিক মোর্শেদকে একা পেয়ে জসিম উদ্দিন ও মুহসিন হলের কর্মীরা তার উপর অতর্কিত হামলা করে।
‘পরে আমি তাকে বাঁচাতে যাই। এ সময় আতিককে তারা কিল, ঘুষি এবং হেলমেট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে আমরা সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে পালিয়ে আসি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আতিক মোর্শেদকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করার জন্য জরুরি বিভাগে আসছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমাদের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমানের নেতৃত্বে জসিম উদ্দীন হল এবং মুহসিন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্ট্যাম্প, রড এবং হেলমেট দিয়ে আমাদের কয়েকজনের উপর আঘাত করে। এদের মধ্যে আতিক মোর্শেদের আঘাত গুরুতর।’
আর কারা আহত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি পরে জানানো হবে বলে জানান।
ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যলয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরণের অনিরাপত্তা বোধ রয়েছে যে, তাদের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ অব্যাহত থাকবে কি না।’
তিনি বলেন, ‘যে ভাষায় ছাত্রদল রাজনীতি করে আমরা মনে করি এটি তাদের এইট পাশ প্রধানমন্ত্রী এবং ইন্টারমিডিয়েট পাশ না করা বর্তমান কো-ভাইস চেয়ারম্যানের উপযুক্ত বক্তব্যই তাদের অশ্লীল অশ্রাব্য বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ করে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই।’
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশে (সিইউবি) অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ‘কিকঅফ’ জিতেছেন সঞ্জয় পাল, মাধব চন্দ্র কর্মকার ও সোলায়মান শাদিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (সিএসই) ও সিইউবি কম্পিউটার সোসাইটি (সিইউবিসিএস) এই মেগা ইভেন্টের আয়োজন করে।
রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মিলনায়তনে শনিবার দুপুরে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কিকঅফ-এর উদ্বোধন করেন সিইউবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক।
কয়েকটি কম্পিউটার ল্যাবে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় মোট ৪৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রতিযোগিতায় প্রধান বিচারক ছিলেন দেশের শীর্ষ প্রোগ্রামারদের অন্যতম তনিমা হোসেন।
প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে শীর্ষ তিনজনকে বেছে নেন বিচারক। তারা হলেন সঞ্জয় পাল, মাধব চন্দ্র কর্মকার ও মো. সোলায়মান শাদিন। তাদের নগদ অর্থ পুরস্কার দেয়া হয়। আর শীর্ষ ১০ জনকে দেয়া হয় বিশেষ প্রশংসাপত্র।
অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগীদের অনুপ্রেরণা জোগান। এ ছাড়া বক্তব্য দেন টফ প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক বিচারক মাহমুদ রেদওয়ান, সিইউবির স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন এবং সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আক্তার হোসেন।
এদিন বিকেলে ছিল সমাপনী আয়োজন। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিইউবির অধ্যাপক এ এস এম সিরাজুল হক ও সিইউবিএসের কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং (সিপি) হাব টিমের প্রধান প্রান্ত পাল।
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরাও তুলে ধরেন তাদের অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অনেক নতুন জিনিস শিখতে পেরেছেন বলেও উল্লেখ করেন তারা।
আরও পড়ুন:সাভার নিউ মার্কেট শপিং সেন্টারের একটি দোকানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েরর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগে দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার বিকেলে নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘দুপুরে ওই দুজনকে আদালতে তোলা হয়েছে।’
সাভার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে শনিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রাত ১০টার দিকে যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন ওই দুই শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সাভারের রাজাশন এলাকার ২৭ বছরের মো. শাহীন ও দেওগাঁ এলাকার ২৪ বছরের সাইফুল ইসলাম। তারা দুজনই সাভার নিউ মার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী।
এজাহারে বলা হয়, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুই বান্ধবী নিউ মার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। তৃতীয় তলায় কাপড় দেখতে ম্যাস্ট্রো নামে একটি দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে ওই দুজন তাদের দোকানের কাপড় দেখতে অনুরোধ করেন। এ সময় ওই দুই ছাত্রী ভেতরে ঢুকে টি-শার্ট দেখা শুরু করলে অভিযুক্তরা দোকানের শাটার বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় তারা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে অভিযুক্তরা শাটার খুলে দিতে বাধ্য হন।
ওই দুই শিক্ষার্থী জানান, দোকানের একটি শাটার আগে থেকেই বন্ধ ছিল। চিৎকার করে অভিযুক্তদের কাছে শাটার বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তারা মজা করেছেন বলে জানান। পরে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সাভার থানায় মামলা করা হয়।
ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্তদের রাতেই গ্রেপ্তার করে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে।’
আরও পড়ুন:তদন্তে র্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. আল-আমিন, গণিত বিভাগের মো. সোহেল রানা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. বারিউল হক মুবিন। তাদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী।
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের ৭৮তম বিশেষ সভায় ওই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সশরীরে সহ বোর্ডের সদস্যদের অনেকেই ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অ্যান্ড হেলথ সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩২০ নম্বর কক্ষ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আলম। জ্ঞান হারানোর পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করা হয় এবং এক থেকে দেড় ঘণ্টা হাসপাতালে না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে যবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ঘটনার দিন রাতে সাব্বিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় এবং পরদিন সকালে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই হলে ফিরিয়ে আনা হয়। শুধু তা-ই নয়, এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেয়া হয়।
সাব্বিরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হুমকি প্রদান এবং আলামত লুকানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ড থেকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
এ ছাড়া ওই কক্ষে উপস্থিত অন্য ১০-১৫ জন ছাত্র সাব্বিরকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের আরও ১০ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে র্যাগিংয়ে জড়িত থাকবে না উল্লেখ করে অভিভাবকের সম্মতিসহ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মুচলেকা না দিলে ওই শিক্ষার্থীদেরও এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
এই শিক্ষার্থীরা হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাবুব হাসান রকি, রসায়ন বিভাগের শেখ জুবায়ের, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বি, কেমিকৌশল বিভাগের মো. পারভেজ মিয়া ও মো. এস বি সানাউল্লাহ সাকিব, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. মোহাইমিনুল হক, মো. খালিদুজ্জামান সৌরভ, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাফিউর রহমান অপূর্ব, কেমিকৌশল বিভাগের মো. সালমান মোল্ল্যা এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. সাইমুন নাইস। তাদের মধ্যে প্রথম তিনজন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এবং বাকি সাতজন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য