করোনাভাইরাস মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় দুই বছর পর প্রাণভরে ঈদ উদযাপন করেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। বিধিনিষেধ না থাকায় নির্বিঘ্নে চলাচল করছেন সাধারণ মানুষ। এতে অনেক সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।
ঈদের পর দিন বুধবার দেশের ৮ জেলায় ১৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
নিহতের এসব খবর জানিয়েছেন নিউজবাংলার প্রতিনিধিরা।
রংপুর
রংপুরের পাগলাপীর এলাকায় মাহিন্দ্রাকে (থ্রি হুইলার) মাইক্রোবাসের ধাক্কায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে দুই নারী রয়েছেন।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রংপুর সদর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আলী বলেন, ‘রংপুর থেকে মাইক্রোবাস তারাগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। অপরদিক থেকে যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রা আসছিল। মহাসড়কের শলেয়াশা বাজার এলাকায় ইউটার্ন নেয়ার সময় এ দুর্ঘটনা হয়। এতে পাঁচজন মারা যান।’
কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ার খোকসায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় দুই ভাই নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় অটোরিকশার আরও দুই নারী যাত্রী আহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের পাইকপাড়ায় বুধবার বেলা পৌনে ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, ঈদ উপলক্ষে ওই দুই ভাই অটোরিকশায় করে মামাবাড়ি কুমারখালী যাচ্ছিলেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে পাইকপাড়ায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী একটি পিকআপ অটোরিকশায় সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ফিরোজ ও সামিরুল সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত অন্যদের খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পিকআপটি জব্দ করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বাস উল্টে দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড় কমলদহ এলাকায় বুধবার সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রামের কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, স্বাধীন বাংলা নামের একটি বাস চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে যাচ্ছিল। সড়ক ফাঁকা থাকার কারণে বেপরোয়া গতির বাসটি মিরসরাইয়ের বড় কমলদহ এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
স্থানীয়রা কয়েকজনকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক ওই দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পাঁচজনের বেশি আহত হয়েছেন। তাদের একজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
কক্সবাজার
ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার পথে চকরিয়ায় বাস উল্টে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ যাত্রী।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া কলেজের সামনে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে উল্টে যায়।
চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসটি কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চকরিয়া কলেজের সামনের সড়কের বাঁক ঘুরতেই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পাশের খাদে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই শারমিন নিহত হন। গুরুতর আহত ১০ যাত্রীকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে ছিটকে রাস্তায় পড়ে তানিম নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নুরুর দোকান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তানজিম পরিবহন নামের একটি বাস ময়মনসিংহের দিকে আসছিল। বেলা ১১টার দিকে বাসটি উপজেলার নুরুর দোকান এলাকায় আসামাত্রই চাকা ফেটে বিকট শব্দ হয়। এতে বাসের জানালা দিয়ে শিশু তানিম ছিটকে সড়কে পড়লে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।’
পঞ্চগড়
ঈদের ছুটিতে বাইরে করে ঘুরতে গিয়ে লাশ হলো তিন কিশোর, যারা সম্পর্কে কাজিন।
হেলমেট ছাড়া এই বাইকে তিন কিশোর চড়ার পর বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে গাছে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সবাই।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, তিন বন্ধু মহারাজার দিঘীতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। মডেলহাট বাজার থেকে মজারাজা দিঘীতে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
এতে তারা পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ছিটকে পড়ে৷ পরে স্থানীয়রা তাদের দ্রুত উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
যশোর
মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন।
যশোরের চৌগাছার ইলিশমারী ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মদদুইনপুর এলাতার মাঝামাঝি জায়গায় বুধবার বিকেল ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণরা হলেন শাহিনুর রহমান ও সাগর হোসেন। তাদের বয়স যথাক্রমে ২২ ও ১৮ বছর।
স্থানীয়রা জানান, তারা অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না।
উপজেলার নারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান বলেন, ‘শাহিনুর ও সাগর চৌগাছা-বিদ্যাধরপুর সড়ক ধরে মোটরসাইকেলে হাজরাখানা গ্রাম থেকে মহেশপুরের বিদ্যাধরপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে চৌগাছার ইলিশমারী ঈদগাহপাড়া ও মহেশপুরের মদনপুর মোড়ে বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা দিলে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক উত্তম কুমার বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘মরদেহ দুটি উদ্ধার করে সুরাহতল প্রতিবেদন করা করেছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
মাদারীপুর
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মোল্লাকান্দি এলাকায় বাসের চাপায় একটি বিদ্যুৎচালিত ভ্যানের চালকসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী ‘আমানত শাহ’ বাস খাদে পড়ে আহত হন আরও অন্তত ৬ জন।
বুধবার রাত ৮টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন রাজৈর থানার ওসি আলগমীর হোসেন।
নিহতরা হলেন, রাজৈর উপজেলার নড়ারকান্দি গ্রামের ৩৫ বছরের আমির শেখ, দুর্গাবর্দি গ্রামের ২৩ বছরের শান্ত তপাদার ও আমগ্রাম ইউনিয়নের তেলিকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক ৪০ বছর বয়সী নূরনবী।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, রাত ৮টার দিকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী আমান শাহ বাসের সঙ্গে ভ্যানটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালক নূরনবী মারা যান। আর ভ্যানের যাত্রীদের মধ্যে শান্ত তপাদার ও আমির শেখকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর মারা যান।
এ সময় যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে ওই বাসেরও ৬ যাত্রী আহত হন। তাদেরকেও হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর বিক্ষুদ্ধরা বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেছে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য