ঈদের খুশি ভাগ করে নিতে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ এবার দিনটি উদযাপন করেছে ঢাকার উত্তরখানের আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের সঙ্গে।
আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে আছেন শতাধিক দুস্থ, অসহায় ও ভাসমান নারী। এ আশ্রমে তারা পাচ্ছেন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসাসেবা।
জন্মলগ্ন থেকেই লেটস টক মেন্টাল হেলথ মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। আর এ লক্ষ্য সামনে রেখেই এবার সংগঠনটি ‘ইম্পট্যান্স অফ মেন্টাল ওয়েলনেস অফ সিনিয়রস’ ব্যানারে স্বজনহীন মানুষদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, বর্তমানে মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মানুষের বয়স ষাটের ওপরে, যা ২০৩০ সাল নাগাদ আরও ১১ শতাংশ বাড়বে। এদের বেশির ভাগ বসবাস করছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। প্রবীণদের অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নন। পাশাপাশি একাকিত্ব আর অসহায়ত্বের কারণে অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যই হুমকির মুখে।
মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অনেক দিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’। এর আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করেছে সংগঠনটি। দেশের বাইরে ভারতে স্পেশাল চাইল্ডদের নিয়ে একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাও করেছে এ সংগঠন।
‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’-এর পক্ষ থেকে আপন নিবাসের ১১০ জন প্রবীণ বাসিন্দাকে ঈদের দিন বিভিন্ন ধরনের উপাদেয় খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়। এ সময় নিবাসের বাসিন্দাদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও বিভিন্ন প্রচার চালান সংগঠনের সদস্যরা।
আয়োজনে প্রাণচঞ্চল ছিলেন বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দারা। হাসিমুখে তারা লেটস টক মেন্টাল হেলথের সদস্যদের আপন করে নেন। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম আর মিষ্টিমুখের মাধ্যমে তারা ঈদের উৎসব একে অপরের সঙ্গে ভাগ করেন।
আয়োজনে লেটস টক মেন্টাল হেলথের সভাপতি আনুশা চৌধুরী বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষ সচেতন নন। আর সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ সমস্যা আরও প্রকট। তাই স্বল্প পরিসরে আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারা যায় আমরা সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’
ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:এ বছর হজ কর্মসূচি সুচারুভাবে পালন করতে সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ অফিস ও দেশটির জেদ্দা-মক্কা-মদিনায় দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক সহযোগিতার জন্য ১৫ সদস্যের হজ কারিগরি দল গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে সাত সদস্যের দলটি ৩১ মে থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সৌদি আরবে দায়িত্ব পালন করবে। ৮ সদস্যের দলটি দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সৌদি আরবে দায়িত্ব পালন করবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
কারিগরি দলে সিস্টেম এনালিস্ট, প্রোগ্রামার, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকরা রয়েছেন।
হজ কারিগরি দলের সদস্যরা বিমানের ফ্লাইট প্রাপ্তি সাপেক্ষে সৌদি আরব যাবেন এবং বাংলাদেশে ফিরবেন এবং ওই সময়ে তাদের চাকরিকাল ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বলে গণ্য হবে।
তারা সৌদি আরবে গিয়ে জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলরের (হজ) কাছে যোগদানপত্র জমা দিবেন এবং বাংলাদেশে ফিরে আসার সময় প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।
হজ কারিগরি দলের কোনো সদস্য তার দায়িত্ব পালনকালে কোনোভাবেই স্বামী/স্ত্রী/সন্তান/আত্মীয়কে সঙ্গে নিতে ও রাখতে পারবেন না। এ সফর সরকারি সফর হিসেবে গণ্য হবে এবং বিদেশে অবস্থানকালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলাদেশের স্থানীয় মুদ্রায় নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে যথারীতি বেতন ও ভাতাদি পাবেন। তবে ওই দলের কোনো সদস্যই সর্বোচ্চ ৪২ দিনের বেশি দৈনিক ভাতা পাবেন।
হজ কারিগরি দলের সদস্যরা হজ প্রশাসনিক দলের দলনেতা বা মৌসুমি হজ অফিসারদের নির্দেশনা মতে দায়িত্ব পালন করবেন। এ দলের সদস্যদের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়ে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এবং ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’ প্রযোজ্য হবে এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ অসদাচরণের কারণে এসব আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে জাতীয়, নির্বাহীসহ দুটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গত ২৭ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর মধ্যে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের প্রধানকে।
২৪ সদস্যের এই কমিটির অন্য সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব।
সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবে এই কমিটি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো সময় সভা আহ্বান করতে পারবে। সভাপতি কমিটির সব সভায় সভাপতিত্ব করবেন। তবে প্রয়োজনে তার থেকে মনোনীত কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করতে পারবেন।
এ ছাড়া ৩১ সদস্যবিশিষ্ট হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকে। আর মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের প্রধানকে করা হয়েছে সদস্য সচিব।
আরও পড়ুন:সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও চার দিন বেড়েছে।
ধর্ম মন্ত্রনালয় বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে হজ যাত্রীদের নিবন্ধনের সময় ২২ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে।
আগের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বুধবারই ছিল নিবন্ধনের শেষ দিন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী শনিবার হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা নিবন্ধনের অর্থ গ্রহণ করবে।
করোনার কারণে গত ২ বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর প্রায় ১০ লাখ মুসল্লিকে হজের সুযোগ দিচ্ছে সৌদি সরকার। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যাবেন প্রায় ৫৭ হাজার।
আগামী ৩১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরুর কথা রয়েছে।
এর আগে গত ১১ মে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। প্রথম প্যাকেজে খরচ ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ এবং দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ পড়বে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা।
এক দিন পর ১২ মে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পবিত্র হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা খরচ হবে।
আরও পড়ুন:হজ ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে আগামী শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিন হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা-উপশাখা খোলা থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ সাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন পূর্ণ দিবস হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা বা উপশাখা খোলা রাখতে হবে।‘
এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রাজধানীর মিরপুর সড়ক ধরে যারা নিয়মিত চলাচল করেন, তারা পরিচিত সোবহানবাগ জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের সঙ্গে। মসজিদের একটি অংশ রাস্তার ওপরে হওয়ায় এখানে মিরপুর রোড সংকুচিত হয়ে গেছে।
বহু বছরের এ চিত্র এবার বদলে যাচ্ছে। রাস্তার জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এর বদলে পুরাতন তিনতলা মসজিদটি ভেঙে নতুন ১০ তলাবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে পুরাতন ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের কাজ শুরু করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে নির্মাণের জন্য সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আগের মসজিদের আয়তনের সমপরিমাণ জায়গা নিয়ে বেষ্টনী দেয়া আছে পুরো প্রকল্প এলাকা। এর ভেতরে চলছে নতুন ভবন নির্মাণের কর্মযজ্ঞ।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের নতুন অস্থায়ী তিনতলা ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
প্রকল্প এলাকার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাইলিংয়ের জন্য বড় বড় যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। নিজেদের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা।
এখানে কথা হয় প্রকল্পের প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি অস্থায়ী ভবন করে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়েছে গত বছরের শেষের দিকে। এরপর পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন সবেমাত্র ১০ তলা ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। পুরো ভবন নির্মাণে দুই বছরের মতো সময় লাগবে।
প্রকল্প এলাকা থেকে মূল সড়কের জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে নতুন মসজিদ করা হচ্ছে। আমরা কাজের সুবিধার্থে এখনই ১৩ ফুট জায়গা ছাড়িনি। কাজ কিছুটা গুছিয়ে তারপর রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয়া হবে।’
প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আরো জানান, নকশা অনুযায়ী ১০ তলা এই মসজিদে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। এতে জেনারেটর, লিফট, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, সোলার প্যানেল সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, এয়ারকুলার, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাসহ আরো অনেক ব্যবস্থাপনা থাকবে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
১৯৩৭ সালে প্রায় ৩৫ শতাংশ জমির ওপর সোবহানবাগ মসজিদ ও পাশে পারিবারিক কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সোবহান। ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মারা গেলে আবদুস সোবহানকে এই কবরস্থানেই দাফন করা হয়। তিনতলা এই মসজিদে এক সঙ্গে ৬০০ থেকে ৭০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। এখন নতুন ভবন হলে সেখানে অন্তত ৪ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন।
প্রকল্পের ঠিক পাশেই মসজিদের অস্থায়ী ভবন করে দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তিনতলা একটি ভবনে চলছে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম। এখানে প্রায় ৭০ জন মাদ্রাসা ছাত্রের থাকা-খাওয়া-পড়াশোনার পাশাপাশি সাধারণ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দীন নিউজবাংলাকে জানান, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মসজিদ কমিটিকে একটি চিঠি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার মসজিদটিকে আরও বড় করতে চায়। তবে রাস্তার জন্য কিছুটা জায়গা ছাড়ার অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। তখন মসজিদ কমিটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
মো. আলাউদ্দীন আরো বলেন, ‘মসজিদটি ৮৩ বছর আগে নির্মিত। তখন তো মিরপুর সড়ক এত চওড়া ছিল না। আর মানুষের সংখ্যাও কম ছিল। তখন মসজিদটি তিনতলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বেড়েছে। মুসল্লিদেরও চাপ বেড়েছে। একসময় বাড়তি চাপের কারণে রাস্তায় দাঁড়িয়েই মানুষ নামাজ পড়া শুরু করে, এতে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়।
'অন্যদিকে মসজিদের ভিত্তি পুরাতন ও দুর্বল থাকায় এটি আর ওপরের দিকে বাড়ানো সম্ভবও হচ্ছিল না। সব কিছু বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে মসজিদ কমিটি রাজি হয়। কারণ মসজিদ তো মানুষের জন্যই, আবার রাস্তাও মানুষের জন্য। তাহলে মানুষে মানুষে অসুবিধা তৈরির দরকার কী?’
চলতি বছর যারা হজে যাবেন তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি সরকারের নীতি অনুযায়ী ২০২২ সালের হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। পাসপোর্টে হজযাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ) সঠিকভাবে উল্লেখ রয়েছে কিনা তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজে যাবেন তাদের জন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনাধীন বিদ্যমান নিবন্ধিত হজযাত্রীদের নিবন্ধন পয়েন্ট বা কেন্দ্রের মাধ্যমে (পাসপোর্ট চেঞ্জ অপশন ব্যবহার করে) পাসপোর্ট পরিবর্তনের আবেদন করে তথ্য হালনাগাদ করতে হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদেরও স্ব স্ব এজেন্সির মাধ্যমে (পাসপোর্ট চেঞ্জ অপশন ব্যবহার করে) ন্যূনতম ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি মেয়াদসংবলিত পাসপোর্টের তথ্য হালনাগাদের আবেদন করতে হবে। সময়-স্বল্পতার কারণে এজেন্সিভিত্তিক হজযাত্রীর সংখ্যা নির্ধারণের সুবিধার্থে পাসপোর্টের মেয়াদ জটিলতার কারণে হজযাত্রীর প্যাকেজ স্থানান্তর বা নিবন্ধন স্থানান্তর কার্যক্রম ব্যাহত হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর ভিসাযুক্ত পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম নম্বর, মক্কা বা মদিনার আবাসনের ঠিকানাসংবলিত প্রিন্টেড স্টিকার সংযুক্ত করতে হবে। প্রিন্টেড স্টিকার সংযুক্ত করা সম্ভব না হলে কমপক্ষে হাতে লেখা তথ্য সংযুক্ত করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীদের জেদ্দা বা মদিনা বিমানবন্দর থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট এজেন্সির হজ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি বাতিল করে দিতে পারে।
কোভিডের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫৭ হাজার মুসল্লিকে হজে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে সৌদি সরকার। আগামী ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরুর কথা রয়েছে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপানায় হজে যাবেন প্রায় চার হাজার মুসল্লি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন প্রায় ৫৩ হাজার। এবার যারা হজ করতে যাবেন তাদের পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় খরচ করতে হবে ১ লাখ টাকারও বেশি। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথম প্যাকেজে খরচ হবে মোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। এটি ২০২০ সালের তুলনায় ১ লাখ ২ হাজার ৩৪০ টাকা বেশি। আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ হবে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। এটি ২০২০ সালের তুলনায় ১ লাখ ২ হাজার ১৫০ টাকা বেশি।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে খরচ হবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশের (হাব) ঘোষণা করা এই প্যাকেজের বাইরে কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার সরকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।
এ বছর ঢাকা থেকে যেসব হজযাত্রী সৌদি আরবে যাবেন তাদের সৌদি প্রান্তের শতভাগ ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন:রাঙ্গামাটিতে নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা।
বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
এরপর জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি থেকে রাজবন বিহার পর্যন্ত গৌতম বুদ্ধের ধাতু প্রদক্ষিণ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়। শোভাযাত্রা শেষে রাজবন বিহারে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়।
প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বিশ্বে শান্তি ও মঙ্গল প্রার্থনায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করেন। ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কারদান, হাজার বাতিদান, টাকা দান, ফানুসবাতি উৎসর্গ ও দান।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে নানা এলাকা থেকে রাজবন বিহারে আসেন হাজারও পুণ্যার্থী। বুদ্ধের মাথায় পানি ঢেলে তারা সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের পায়ে শ্রদ্ধা জানান।
জল্পনা চাকমা নামের এক পুণ্যার্থী বলেন, ‘বুদ্ধের তিন স্মৃতিবিজড়িত এই দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে পরিবার ও নিজের মঙ্গল প্রার্থনার উদ্দেশ্যে বিহারে এসেছি।’
গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ উপলক্ষে প্রতি বছর বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি উদযাপন করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। রোববার সারা দেশে বুদ্ধপূর্ণিমার উৎসব হলেও রাজবন বিহারে হচ্ছে এক দিন পর।
রাজবন বিহারের বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েকজন ভিক্ষু জানান, রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত থাকে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি। রোববার বুদ্ধপূর্ণিমা উদযাপন করলে তা বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে পড়ে না। তাই সোমবার সব আয়োজন করা হয়েছে।
এই আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নিখিল কুমার চাকমা ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান ও পঞ্চশীল পাঠ করেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খীসা।
আরও পড়ুন:করোনায় দুই বছর কিছুটা অনাড়ম্বরভাবে পালিত হলেও এবার সাড়ম্বরেই পালিত হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা।
রোববার রাজধানীর অন্যান্য বৌদ্ধ মন্দিরের মতো মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মন্দিরেও ছিল নানারকম আয়োজন। পরিবার-পরিজন নিয়ে বৌদ্ধ বিহারে এসে আনন্দ প্রকাশ করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।
এতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এমপি।
তিনি বলেন, ‘একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ বসবাসের বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
ফরিদুল হক খান বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম। সব ধর্মেই বলা আছে শান্তি ও সম্পৃতির কথা। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও একটি ধর্ম নিরপেক্ষ শান্তি-সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে সকল বৌদ্ধমন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের বাইরেও বৌদ্ধমন্দিরে প্রধানমন্ত্রী সহায়তা প্রদান করেছেন।’
বৌদ্ধ ভিক্ষু সুনিন্দ মিত্র বলেন, ‘মনের শুদ্ধি লাভ করাটাই আজকের দিনের প্রার্থনা। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক– গৌতম বুদ্ধের এই বাণী মাথায় রেখে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই একমাত্র লক্ষ্য।’
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথেরর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত সুদর্শন দীপাল সুরেশ সিনিভিরন্তে। বোদ্ধ ধর্মের ভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য