করোনাভাইরাস মহামারির দুই বছরে লালমনিরহাট জেলার ২০ সিনেমা হলের সবগুলো ছিল বন্ধ। ওই হলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ‘আলোরুপা’ বন্ধ দেশে মহামারি শুরুর সময় ২০২০ সালের আগে থেকে।
এ অবস্থার প্রায় তিন বছর পর ঈদুল ফিতরের দিন মঙ্গলবার চালু হয়েছে হলটি। এদিন ‘বিদ্রোহী’ সিনেমা দেখতে এসেছিলেন অনেকে।
হলটিতে দুপুর ১২টায় প্রথম শো চালু হয়ে চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শো হয়। এর পরের দুটি শোর শিডিউল ছিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা এবং রাত ৯টা থেকে ১২টা।
প্রথম দিন হিসেবে দুপুর ১২টার শোতে দর্শক কম ছিল, তবে বিকেল ৩টার শোতে অনেক দর্শকই হয়।
সিনেমা দেখতে আসা মাহাতাব বলেন, ‘আসলে দীর্ঘদিন হলটি বন্ধ থাকার কারণে দেখার মতো কোনো সুযোগ না থাকলেও আজ যেহেতু সিনেমা হলটি চালু হলো, তাই দেখতে আসছি। ভালোই লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন হলে তেমন দর্শক নেই। দর্শক ভালো ছবি পাচ্ছে না। এ ছাড়া হলগুলোর পরিবেশও ভালো না। পরিবেশ ফেরাতে হলগুলো সংস্কার দরকার।
‘এখন দর্শকের বিনোদনের অন্য মাধ্যম খুলে গেছে। সেখান থেকে দর্শক ফিরিয়ে আনা কঠিন।’
এ বিষয়ে আলোরুপা হলের মালিক বেলাল উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘ ৩ বছর পর লস হলেও ‘বিদ্রোহী’ সিনেমাটি ঢাকাসহ সারা দেশে একযোগে চালু হয়। এ সিনেমাটি একটি নতুন সিনেমা। আমি চাই দর্শকরা হলমুখী হোক। আমরা বিনোদনের জন্য আলোরুপা সিনেমা হলটি চালু করেছি।
“আমাদের অনেক লস হয়েছে। তার পরেও আজ হলটি চালু করা হয়েছে শুধু দর্শকদের বিনোদনের জন্য।”
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আসেন সুস্থ বিনোদনের জন্য। আপনাদের ছেলে-মেয়েদের বিনোদন দরকার। এ করোনাকালে তো অনেক লস হয়েছে।
‘আমি দোয়া করি আর যেন এ মহামারি না আসে। মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য সারা দেশে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়েছে। এটিও বন্ধ ছিল। তারপরেও আজ চালু করা হয়েছে।’
হলে আগামী দিনগুলোতে দর্শক বাড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বেলাল বলেন, ‘আজ প্রথম শোতে তেমন লোক না হলেও বিকেলের শোতে মোটামুটি লোক হয়েছে। আশা করি আগামীকাল (বুধবার) আরও বাড়বে।’
আরও পড়ুন:প্লাস্টিক সার্জারির পর ভারতে এক টেলিভিশন অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে সোমবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
নিজেকে আরও বেশি সুন্দর করতে শরীরে ছুরি-কাঁচি চালান অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী। এই প্রক্রিয়ার নাম হলো প্লাস্টিক সার্জারি।
বেসরকারি একটি হাসপাতালে ‘ফ্যাট ফ্রি’ সার্জারির জন্য ভর্তি হয়ে মারা যাওয়া ২১ বছর বয়সী কন্নড় ভাষার ওই অভিনেত্রীর নাম চেতানা রাজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাবা-মাকে না জানিয়ে এক বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চেতানা। সকালে সার্জারির পর সন্ধ্যায় তার শরীরে পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ফুসফুসে পানি জমতে থাকে।
মেয়ের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের অবহেলাকে দায়ী করেছেন চেতানার বাবা-মা।
পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ ও সত্যম রায় চৌধুরী।
গণভবনে সোমবার বিকেলে সাক্ষাৎকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কলকাতার জীবন নিয়ে নির্মীয়মাণ তথ্যচিত্র ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, গৌতম ঘোষ ও সত্যম রায় চৌধুরীর সামনে তথ্যচিত্রটির রূপরেখা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। কলকাতায় ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও কষ্টের দিনগুলোর কথাও বর্ণনা করেন তারা।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা পাওয়া জাতির পিতার দুই কন্যার আলোচনায় উঠে আসে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও দর্শন।
রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখে জাদুঘরের প্রতিটি কোনায় ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা দেখেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন গৌতম ঘোষ ও সত্যম রায় চৌধুরী। সেখানে বিভিন্ন নিদর্শন দেখে বঙ্গবন্ধু আজও জীবন্ত বলে তাদের কাছে অনুভূত হয়েছে বলেও জানান তারা।
‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থ দুটিকে ‘মহান ইতিহাস’ বলেও তারা উল্লেখ করেন। জানান, বাঙালির মহান নেতার জীবন ও কর্মের ওপর ডকুমেন্টারি তৈরি করে তারা গর্বিত।
গৌতম ঘোষ ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে ৩০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছেন। তাতে কলকাতায় থাকাকালীন বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কাজ তুলে ধরা হচ্ছে।
৪ এপ্রিল কলকাতার মওলানা আজাদ কলেজের একটি শ্রেণীকক্ষে শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে তথ্যচিত্রটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন গৌতম ঘোষ। ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে বঙ্গবন্ধু যখন সেখানে পড়াশোনা করতেন তখন এর নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেছেন উপমহাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখনীকে উপজীব্য করে এটি তৈরি হচ্ছে। এতে গৌতম ঘোষের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনক্লস সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গৌতম ঘোষ। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
গৌতম ঘোষ জানান, তার তথ্যচিত্রটির নাম ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’। এতে বঙ্গবন্ধুর কলকাতা জীবনের কথা তুলে ধরা হবে।
তিনি বলেন, ‘এ রকম একটি দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে, যা খুবই কঠিন। আমরা জানি, বঙ্গবন্ধুর জীবনে কলকাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তার রাজনৈতিক জীবনে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে কলকাতা। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই থেকে এই তথ্যচিত্রের স্ক্রিপ্ট করা হয়েছে।’
গৌতম ঘোষ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কলকাতায় থাকার সময় তিনি “বঙ্গবন্ধু” ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাধারণ একজন ছাত্র। এরপর চিকিৎসার জন্য গেছেন। নানা সময় গেছেন। তাই তার সে সময়ের ছবি ও ভিডিও পাওয়া কঠিন। পাওয়া যাচ্ছে না। তবু তার সময়কে আমি ধরার চেষ্টা করছি।
‘আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এই সিনেমার জন্য ক্যামেরার সামনে কথা বলতে সানন্দে রাজি হয়েছেন। এটা বড় পাওয়া।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনী বা তার কার্যক্রম এত বিশাল যে তার সাহস ও স্বপ্ন তুলে ধরা কঠিন। তবে কিছু মানুষ এখনও আছেন, যারা এখনও বেঁচে আছেন। তারা ক্যামেরার সামনে এসেছেন।
‘বঙ্গবন্ধুর ওপর কাজ করতে গিয়ে একটা তথ্যভান্ডারে ঢুকে গেছি। এ থেকে ভবিষ্যতে অনেক কিছু করা সম্ভব।’
কাজটি করতে কেমন লাগছে– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ তথ্যচিত্রটি নির্মাণের সময় একটি আবেগ কাজ করেছে। যখন আমি ক্যামেরা চালিয়েছি, তখন মনে হয়েছে কলকাতায় বঙ্গবন্ধু ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু নির্মাণে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও শেখ হাসিনার লেখা বই সবচেয়ে অথেনটিক হিসেবে মনে করি। এ তথ্যচিত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কথা চিত্রায়িত করতে দিতে সম্মত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের ব্যাপ্তি এত বড় যে কলকাতার পর্বটি দেখলেই বোঝা যাবে তার সাহসিকতা।’
এ সময় উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এ ধরনের ছবি স্বাধীনতার পর তৈরি করলে ভালো হতো। ১৯৭৫ সালে এক অন্ধকার নেমে আসার কারণে এ বিষয়ে এগোনো যায়নি। ’৭৫ সালে যে ঘটনা ঘটল, তারপর তো আমরা নিজেদের ঘর সামলাতেই ব্যস্ত ছিলাম। তখন বঙ্গবন্ধুর নাম নিলেই বিপদ ছিল।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘কলকাতার পর্বটি বাদ দিলে বঙ্গবন্ধুর জীবন সম্পর্কে জানা অপূর্ণ থেকে যায়।
‘কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজে (তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজ) পড়া, বেকার হোস্টেলে থাকা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রাত কাটানো, পার্ক সার্কাসে ঘুরে বেড়ানো, ব্রিগেডের ময়দানে তার আগুন ঝরানো ভাষণ– এমন আরও অনেক কিছু বঙ্গবন্ধুর প্রিয় এই শহরের অলিগলি থেকে তুলে এনে ক্যামেরাবন্দি করছেন গৌতম ঘোষ। বঙ্গবন্ধুর জীবনে কলকাতা শহরের বড় ভূমিকা রয়েছে।’
তিনি জানান, কলকাতায় বঙ্গবন্ধু তথ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, কলকাতায় তার জীবন ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে। ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশ (ভারত চ্যাপ্টার) ও বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হচ্ছে এটি। গত এপ্রিলের প্রথম দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত মৌলানা আজাদ কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে এর শুটিং শুরু করেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র পরিচালক।
দীর্ঘ গবেষণায় তৈরি চিত্রনাট্যটির আলোকে তথ্যচিত্র নির্মাণের বিষয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান, চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ এবং ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশের সহসভাপতি সত্যম রায় চৌধুরী।
গত ১৯ মার্চ এই তথ্যচিত্র নির্মাণসংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে স্বাক্ষরিত হয়।
প্রায় ৩০ মিনিটের এই তথ্যচিত্রটি কলকাতা এবং বাংলাদেশে শুটিং শেষে আগামী জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়ন করেছেন এবং সে সময় তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি সে সময় সরকারি বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর রুমে আবাসিক ছাত্র ছিলেন, যেটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ হিসেবে সংরক্ষিত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, মেজর (অব.) শামসুল আরেফিন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:বছরের পর বছর যায়। গাড়ি কমে আর বাড়ে। আশ্বাসের পর আশ্বাস। তবুও গাড়িমুক্ত হয় না রাজধানীর মিরপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোলারটেক খেলার মাঠ।
এক যুগ ধরে মাঠের একাংশ জব্দ করা গাড়ি দিয়ে দখল করে রেখেছে দারুস সালাম থানা।
শুধু পুলিশ নয়, অবৈধভাবে সরকারি জমিতে গড়ে উঠেছে জিবি এইচ বি ক্লাব আর সূচনা সমবায় সমিতির অফিস। এর মধ্যে সূচনার নামে জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে কাউন্সিলর মুজিব সরোয়ার মাসুমের বিরুদ্ধে।
চার একর জায়গা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে বড় খেলার মাঠ এটি। স্থানীয়ভাবে এটি গোলারটেক মাঠ নামে পরিচিত। ২০০৮ সালের ২৩ আগস্ট মিরপুর থানার কিছু এলাকা নিয়ে দারুস সালাম থানা গঠন হয়।
শতাধিক জব্দকৃত গাড়ি দিয়ে গোলারটেক খেলার মাঠের এক অংশ দখল করে রেখেছে দারুস সালাম থানা। ছবি: নিউজবাংলা
স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা গঠনের দুই বছর পরই জব্দকৃত গাড়ি দিয়ে তারা মাঠ ভরতে শুরু করে। সে হিসাবে এক যুগের বেশি সময় ধরে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামসহ স্থানীয়রা এই মাঠ গাড়িমুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসার পর থানার পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়, তবে এর বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মামলার জব্দকৃত আলামত হিসেবে গাড়িগুলো ওখানেই রাখা হয়েছে। থানার নিজস্ব কোনো জায়গা নাই। জায়গা পেলেই গাড়িগুলো সরিয়ে ফেলা হবে।
তারা আরও জানান, বিকল্প জায়গা দেয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছেন তারা, কিন্তু জায়গা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা এ বিষয়ে জানেনই না।
ক্লাবের নামে জায়গা দখলের বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর জানান, সরকারের প্রয়োজন হলে তারা সবাই উঠে যাবে।
সম্প্রতি এই মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে রাখা হয়েছে জব্দকৃত যানবাহন। ১০টি ট্রাক, এক ডজনের মতো বাস। এ ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিনিবাস, প্রাইভেট কার, পিকআপ ভ্যান, লেগুনা, মোটরসাইকেল, রিকশা মিলিয়ে ৫০টির বেশি যানবাহন পড়ে আছে।
অন্য পাশে জিবি এইচ বি ক্লাব আর সূচনা সমবায় সমিতি অফিস। তার পাশে বিরাট অংশজুড়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্থায়ী ব্যাডমিন্টন কোর্ট তৈরি করে নেট দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। মাঠে খেলতে আসা মানুষজন সে জায়গাটি ব্যবহার করতে পারছেন না।
গোলারটেক খেলার মাঠের এক অংশ দারুস সালাম থানার দখলে। ছবি: নিউজবাংলা
রাসেল আহমেদ রাকিব নামের একজন বলেন, ‘ওই দিকে গাড়ি রাখায় কেউ খেলতে আসে না৷ পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এ রকম গাড়ি দেখছি। কারে বলব? বললে লাভ হবে কী?’
এক বছর ধরে গোলারটেক মাঠের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য মানিক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ির কোর্টে মামলা আছে। তাই এইখানে ফালাইয়া রাখছে। দারুস সালাম থানার গাড়ি এটা৷’
গোলারটেক মাঠে খেলতে আসা মোহাম্মাদপুর সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার মনন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিরপুর এলাকায় খেলার মাঠ কোথাও নেই। পুলিশ জনগণের বন্ধু, তারা যখন জায়গা দখল করে, জনগণ কোথায় যাবে? আমরা মাঠে খেলার জায়গা চাই।’
সেন্ট জোসেফ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া মারুফ হোসেন বলেন, ‘পাশে থানা হওয়ার কিছুদিন পর থেকে এই মাঠে একটা একটা করে গাড়ি ঢুকতেছে। এটা মাঠের জায়গা; থানার জায়গা না।
‘পাশেই সহকারী পুলিশ কমিশনার দারুস সালাম জোনের জায়গা আছে। সেইখানে গাড়ি রাখুক। আমাদের মাঠে কেন? রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ব্যাডমিন্টন কোর্ট বানায় তা নেট (জাল) দিয়ে দখল করছে। বাগবাড়ি, হরিরামপুর এলাকার প্রভাবশালীরা এটা করছে।’
সরকারি জমিতে ক্লাব বানানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এই ক্লাব থাকতে পারে। এরা খেলাধুলার আয়োজন করে।’
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর মুজিব সারোয়ার মাসুম নিউজবাংলাকে জানান, গাড়ি সরানোর ব্যাপারে তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন। মেয়র চেষ্টা করেছেন। পুলিশের যুগ্ম কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ডিসি ট্রাফিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা শুধু আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কাজ হয়নি।
তিনি বলেন, ‘মেয়র নিজে মাঠে আইসা তারপর কথা বলছে। তবুও মাঠ থেকে গাড়ি সরায় নাই।’
কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও মাঠ দখলের অভিযোগ
সূচনা সমবায় সমিতির নামে ব্যক্তিগত অফিস বানিয়ে মাঠের একাংশ দখলের অভিযোগ উঠেছে কাউন্সিলর মুজিব সারোয়ার মাসুমের বিরুদ্ধে। তিনি অবশ্য এ অভিযোগ মানতে নারাজ।
‘সূচনা সমবায় সমিতির নামে আপনার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের অভিযোগ রয়েছে?’
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মাঠ যখন পাবলিকের দখলে ছিল, তখনকার সমবায় সমিতি অফিস। ৩০ বছর আগে। তখন এখানে মাঠই ছিল না। এটা বস্তি ছিল।
‘বস্তি উচ্ছেদ করে মাঠ রক্ষায় সমিতি ও ক্লাবের অবদান আছে। সমবায় সমিতি ও ক্লাব মাঠের জায়গা দখল করে নাই; বরং মাঠ প্রতিষ্ঠা করছে। সরকারের যখন প্রয়োজন হবে, তখন এরা উঠে যাবে।’
পুলিশ বলছে দুই ধরনের কথা
দারুস সালাম থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, গোলারটেক মাঠের সব গাড়ি দারুস সালাম থানা রাখেনি। স্থানীয় কাউন্সিলরের গাড়িই বেশি।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গাড়িগুলো দারুস সালাম থানার নয়, মামলার আলামত। আলামত বিষয়টা কোর্টের ব্যাপার। আমরা কোর্টে চিঠিও দিয়েছি।
‘সিটি করপোরেশনের কাছে জায়গাও চেয়েছি। আদালতকে অবগত করার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কাছে জায়গাও চেয়েছি আলামতগুলো রাখতে। জায়গা পেলে গাড়িগুলো সরে যাবে। ১০ বছরেও সিটি করপোরেশন জায়গা না দিলে আমরা কী করব?’
সিটি করপোরেশন জানে না মাঠ দখল হয়েছে
মিরপুরে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের, তবে উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা জানেনই না তাদের মালিকানাধীন মাঠ দখল হয়েছে।
মাঠ দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় জোটটি।
আয়োজনে বাজেট বৃদ্ধির গুরুত্ব ও বাজেট ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেন জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য আব্দুস সামাদ।
সংস্কৃতিকে জাতির মনন বিকাশের সোপান বিবেচনা করে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে এক শতাংশ এ খাতে বরাদ্দ করার দাবি জানানো হয়।
এই বরাদ্দের এক বড় অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, সংগঠনের অনুদান, শিল্পীসম্মানী এবং বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে বলে জানান গোলাম কুদ্দুছ।
এ সময় অসচ্ছল শিল্পীদের মাসিক অনুদানের পরিমাণ বাস্তবতার নিরিখে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করা হয়।
কুদ্দুছ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলে আরও অধিক সংখ্যক শিল্পীকে অনুদানের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে।’
আয়োজনে লিখিত দাবি তুলে ধরেন গোলাম কুদ্দুছ।
দাবিগুলো হলো-
১. প্রত্যেক উপজেলায় ৫০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ। এর সাথে থাকবে মহড়া, প্রশিক্ষণের সুবিধা সম্বলিত কয়েকটি কক্ষ। উপজেলা সদরে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ একই সাথে নির্মাণ করতে হবে। একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে প্রতি বছর অন্তত ১০০টি উপজেলায় এ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হলে আগামী ৫ বছর মধ্যে দেশের সবকয়টি উপজেলায় সংস্কৃতি চর্চার নেটওয়ার্ক তৈরি হবে।
২. বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ স্মরণে রেখে প্রত্যেক জেলায় ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ স্মৃতিভবন’ নির্মাণ করা। এই ভবনে ৭০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন, মহড়া ও কর্মশালার কক্ষ, সেমিনার হল, পাঠাগার, ক্যান্টিন ও ৫ থেকে ১০ জন থাকার মতো কক্ষের ব্যবস্থা। ভবনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার পাশাপাশি ওই জেলার শিল্পী-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের মিলনকেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠবে। যত দ্রুত সম্ভব এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. ঢাকা মহানগরীসহ অন্যান্য মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন কোনো মিলনায়তন নেই। মহানগরগুলোতে প্রতি ৫ লাখ নাগরিকের জন্য একটি করে আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ করতে হবে।
৪. স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগে একটি যাত্রা প্যান্ডেল নির্মিত হয়নি। রাজধানীসহ প্রত্যেক জেলায় একটি করে স্থায়ী যাত্রা প্যান্ডেল নির্মিত হলে যাত্রার প্রসারের পাশাপাশি অশ্লীলতার প্রবণতা থেকেও মুক্ত হওয়া যাবে।
৫. প্রত্যেক জেলায় চারুকলা প্রদর্শনীর জন্য আর্ট গ্যালারি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর জন্য মিনি অডিটরিয়াম নির্মাণ করতে হবে।
৬. সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে প্রকৃত শিল্পীরা পুরোটা জীবন সংস্কৃতি চর্চায় নিজেদের নিবেদন করে আসছেন। বয়সকালে এসব শিল্পীদের অসচ্ছল বিবেচনায় যে ভাতা প্রদান করা হয় তা এতই নগণ্য যে, একেবারে নিরুপায় না হলে কেউ আবেদনই করেন না।
২০২১-২২ অর্থবছরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ১১৬ জন শিল্পীকে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬২ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ শিল্পীর অনুদানই মাসিক ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। জাতীয় পর্যায়ের কয়েকজন শিল্পী সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। এটি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৭. ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সারা দেশের ১ হাজার ৪৫০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ৭ কোটি ৪ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। সংগঠনের প্রদত্ত অনুদানের আর্থিক পরিমাণ ৩০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ক্রিয়াশীল প্রতিটি সংগঠনের বার্ষিক ব্যয় প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা। অনুদান প্রদানের সর্বনিম্ন পরিমাণ হওয়া উচিত সংগঠন প্রতি অন্তত এক লাখ টাকা। সারা দেশে আনুমানিক দশ সহস্রাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। যাচাই-বাছাই করে অন্তত পাঁচ হাজার সংগঠনকে অনুদানের আওতায় আনা হোক।
৮. জাতীয় ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে সারা বছরের কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও জাতীয় পর্যায়ে অবাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎসব আয়োজনকারী মূলধারার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা প্রদান। আমাদের প্রত্যাশা উপরোক্ত দুই খাতে অন্তত ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হোক।
৯. দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাশীঘ্র সম্ভব ‘সম্প্রীতির জন্য সংস্কৃতি’- মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলতে হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ দেয়া। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এ খাতে চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি।
১০. উপজেলা পর্যায়ে অবিলম্বে একজন করে শিল্পকলা অফিসার নিয়োগ অত্যাবশ্যক। সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিল্পীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ও চারুকলার স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
১১. বেতার-টেলিভিশনসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অনুষ্ঠানে শিল্পী, যন্ত্রী ও কারিগরীকর্মীদের যুগপোযোগী আর্থিক সন্মানী প্রদান করা বাঞ্চনীয়।
১২. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে স্থায়ী দপ্তর নির্মাণের জন্য মতিঝিলের ক্রীড়া পল্লির অনুরূপ জায়গা বরাদ্দ করতে হবে।
১৩. বহুমুখি শিক্ষার পরিবর্তে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু অত্যাবশ্যক। মুক্তিযুদ্ধ ও মানবসভ্যতার ইতিহাস, অসাম্প্রদায়িক বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক লেখা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রমে সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতি বছর সাংস্কৃতিক উৎসব ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. সরকারের বড় বড় সাংস্কৃতিক আয়োজনে জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন:দর্শক মাতাতে লাইভ কনসার্ট করতে গাইবান্ধা আসছেন তুমুল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেমস। দীর্ঘদিন পর তাকে শুনতে পাবে দর্শক।
শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে রোববার বিকেল ৫টায় কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব গাইবান্ধা’ (পুসাগ) এ আয়োজন করে।
পুসাগ পরিবার জানিয়েছে, ‘কনসার্ট স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ২০২২’ নামে তারা আয়োজনটি করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে গান গাইবেন ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস ও তার ব্যান্ড নগরবাউলের সদস্যরা। এ ছাড়া আরও কয়েকজন সংগীতশিল্পী ও অভিনয় শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা থাকছে অনুষ্ঠানটিতে।
সংগঠন পুসাগের সদস্যরা জানান, কনসার্ট থেকে পাওয়া অর্থের পুরোটাই ব্যয় করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায়-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার কল্যাণে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইবান্ধার শিক্ষার্থীদের সংগঠনের সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ জীম জানান, গাইবান্ধা জেলার এসএসসি-২০১০ ব্যাচের উদ্যোগে ২০২০ সালের ৮ আগস্ট দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে ওঠে পুসাগ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত জেলার হৃদয়বান মানুষদের সহযোগিতায় ১৯২টি কর্মসূচী সফলভাবে সম্পন্ন করেছে সংগঠনটি।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কল্যাণে মানবিক ও সামাজিক কাজ পরিচালনা করে আসছে পুসাগ। এই পরিবারের শিক্ষার্থীদের কল্যাণ তহবিল গঠনের উদ্দেশ্যে আমরা লাইভ কনসাটটি করার উদ্যাগ নিয়েছি।
‘অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যে আয় হবে, তার পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায়-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।’
হুসাইন মোহাম্মদ জীম জানান, কনসার্টটি উপভোগ করতে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। গ্যালারির টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২০০ টাকা, মাঠে স্ট্যান্ডিং টিকিট ৩০০ টাকা ও মাঠে চেয়ার টিকিটের মূল্য ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন:হলিউডের তারকা অভিনেতা উইল স্মিথ যে স্ত্রীর জন্য অস্কারের মঞ্চে উপস্থাপক ক্রিস রকের গালে চড় মেরেছিলেন, সেই স্ত্রীর সঙ্গেই এবার তার বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠেছে।
শুক্রবার এই গুঞ্জনের খবর ছেপেছে মার্কা। ধারণা করা হচ্ছে, বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে শিগগিরই স্ত্রী জ্যাডা পিঙ্কেটের সঙ্গে একটি আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন উইল।
অস্কারের মঞ্চে স্ত্রীকে কৌতুক করলে উপস্থাপক রকের গালে চড় মারার পর দুনিয়াজুড়ে আলোড়ন তুলে ঘটনাটি। এমন কাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে উইল স্মিথের পক্ষে-বিপক্ষে অসংখ্য মানুষ মতামত প্রকাশ করতে শুরু করেন। কড়া ব্যবস্থা নেয় অস্কারের আয়োজক কমিটিও। সিনেমা জগতের সবচেয়ে বড় ও সম্মানজনক এই অনুষ্ঠানে উইল স্মিথকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
তবে, ঘটনাটি এক মাস পেরিয়ে যেতে না যেতেই উইল স্মিথ ও জ্যাডা পিঙ্কেট দম্পতির বিচ্ছেদ গুঞ্জনটি এখন আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
মার্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি এই দম্পতির বিচ্ছেদের গুঞ্জন সত্যি হয়, তবে উইল স্মিথের সম্পদের একটি বড় অংশ পেতে যাচ্ছেন জ্যাডা পিঙ্কেট।
গুঞ্জন সম্পর্কে বলা হয়েছে, হিট ম্যাগাজিনে উইলের ‘চড়কাণ্ড’ নিয়ে পিঙ্কেটের শীতল প্রতিক্রিয়া এবং এক্ষেত্রে স্বামী উইলের প্রতি তার সমর্থনের অভাব বিচ্ছেদ জল্পনাকে উসকে দিয়েছে। তবে, দুই পক্ষ থেকেই বিচ্ছেদের বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। ব্যপারটি এখনও গুঞ্জনের পর্যায়ে থাকলেও, দিন যতো যাচ্ছে গুঞ্জন যেন ততই বাড়ছে।
হিট ম্যাগাজিনের একটি সূত্র মার্কাকে জানিয়েছে, উইল-জ্যাডা দম্পতির মধ্যে কয়েক বছর ধরেই ঝামেলা চলছে। ব্যপারটি বর্তমানে এমন অবস্থায় আছে যে, তাদের কথা-বার্তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।
বিচ্ছেদ হলে যেভাবে হবে সম্পদের ভাগাভাগি
উইল স্মিথ ও জ্যাডা পিঙ্কেট প্রায় ২৫ বছর ধরে সংসার করছেন। এই সংসারটি ভেঙে গেলে অবধারিতভাবে উইল স্মিথের সম্পদের অর্ধেক পাবেন জ্যাডা। বর্তমানে উইল স্মিথের প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে।
এই হিসেবে বিচ্ছেদ হলে জ্যাডা পিঙ্কেট প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার পেতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে জ্যাডা পিঙ্কেটেরও প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে।
তবে এই সবকিছুকেই এখনও সম্ভাব্য হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এটাও ধারণা করা হচ্ছে যে, স্মিথ এবং পিঙ্কেট হয়তো এমন একটি আইনি লড়াইয়ে লিপ্ত হবেন, যা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এবং ব্র্যাড পিটের চেয়েও বড় হতে পারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য