ঈদ মানে আনন্দ, খুশি, ঈদ মানে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোর শুভক্ষণ। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অনেককে এই উৎসব উদযাপন করতে হয় সড়কে দাঁড়িয়েই।
পুরো এক মাস রোজা শেষে সবাই যখন ঘরে ফিরতে ব্যস্ত, তখনও রাস্তায় থাকতে হয় তাদের। ইফতার করতে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়েই। ঈদের দিনও সময় যায় একইভাবে। এক ঈদে দায়িত্ব পালন করলে আরেক ঈদে ছুটি কাটানোর সুযোগ মেলে।
তারা বলছেন, সবাই একসঙ্গে ছুটিতে গেলে মানুষের নিরাপত্তা দেবে কে? খারাপ লাগলেও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাদেরই।
ঈদের দিন মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার পরিজন ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করছেন পুলিশ সদস্যরা।
রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যালে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক কনস্টেবল আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘৩০ বছর চাকরিতে, কোনো রমজানের ঈদ বাড়িতে করতে পারি নাই। ছুটি পাওয়া যায় না। একসময় খারাপ লাগত। এখন আর তেমন খারাপ লাগে না।
‘রাস্তায় দাঁড়িয়েই ইফতার করেছি অনেক দিন। আজকে সকাল থেকে ডিউটি, রাস্তায় আছি। মাঝে পাশের মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে এসেছি।’
কাজেই ঈদ আনন্দ খুঁজছেন পুলিশের এই সদস্য। বলেন, ‘আমি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করি। সবাই ছুটিতে গেলে রাস্তায় আর গাড়ি চলতে পারবে না। কারও না কারও থাকা লাগবেই।
‘আমার মতো অসংখ্য মানুষ দায়িত্বের খাতিরে পরিবার ছাড়া ঈদ করে। আমিও তাই করছি। অন্যদের কথা ভাবলে কষ্ট কমে আসে। আর অনেক বছরে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।’
কনস্টেবল আবু বকর সিদ্দিকের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। দুই ছেলে, স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা গ্রামেই থাকেন। তিনি রাজধানীর চকবাজারে মেসে থাকেন। ঈদের দিন সকালে সেমাই, খিচুরি আর ডিম ভাাজি খেয়ে সকালে ডিউটি এসেছেন সিদ্দিক।
কারওয়ান বাজার সিগন্যালে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মো. মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাকরিটাই এমন। শুরুতে মানিয়ে নিতে সমস্যা হতো, পরিবারের সদস্যরাও বুঝতে চাইত না। এখন সব সয়ে গেছে। মন খারাপ হলেও কিছু করার নেই। দায়িত্বের খাতিরে সব মেনে নিতে হয়।’
মোস্তফা বলেন, ‘এই রমজানে যারা সকালে ডিউটি করেছে, তাদেরকে ফজরের নামাজ পড়েই বের হয়ে আসতে হয়েছে। ফিরেছে দুইটার পর। আর দুপুরের ডিউটিতে যারা আসে তাদের রাত ১০টা পর্যন্ত। ফলে ডিউটি থাকলে রাস্তাতেই ইফতার করতে হয়।
‘বক্সে ইফতারের আয়োজন হয়। কিন্তু সবাই একসঙ্গে ইফতার করা যায় না। কারণ রাস্তায় কাউকে না কাউকে থাকতে হয়। ঈদেও একই অবস্থা। আমি ডিউটি করছি, অন্য আরেকজন নামাজ পড়ে আসছে। উনি আসার পর আমি যাই।’
হাতিরঝিলে দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে ঈদ বা আনন্দের সময় কাটাতে সবারই ভালো লাগে। একান্ত বাধ্য না হলে কেউ দূরে থাকতে চায় না। আমরাও চাই না। কিন্তু ছুটি না পেলে তো যাওয়া সম্ভব না। আর একসঙ্গে সবাই ছুটিও পাবে না।
‘কাউকে না কাউকে আমার মতো ডিউটি করতে হয়। আমি ডিউটি করছি বলে আরেকজন ছুটি কাটাতে পারছে। পরেরবার হয়তো আমি ছুটিতে যেতে পারব। এভাবে আমাদের চলতে হয়।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) ফারুক হোসেন বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়। ফাঁকা নগরীর বাড়তি নিরাপত্তার জন্য আমাদের ৫০০টি মোবাইল টিম আছে।
‘ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে আমরা তৎপর আছি। পুলিশ মাঠে আছে বলে সাধারণ জনগণ নিরাপদে ঈদ করতে পারছে। এতেই আমাদের আনন্দ।’
আরও পড়ুন:ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির আলোচিত ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পর মানবপাচার দলের প্রধান মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এসএম শাকিল হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে সালথা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া এসএম শাকিল হোসাইন উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের মৃত নওফেল মাতুব্বরের ছেলে। বর্তমানে তিনি সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মুকুল ঠাকুর নামক এক ব্যক্তির মেয়েকে।
শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সালথা থানার ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় ভিকটিম শাকিলকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শাকিলের বাবা টিটুল মিয়া প্রথমে মামলা করতে চাননি। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।’
ওসি বলেন, ‘মামলার পর শুক্রবার সকালে আসামি শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মামলার প্রধান আসামি মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল অনেক তথ্য দিয়েছেন।’
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ‘লিবিয়ায় শাকিলের ওপর নির্মম নির্যাতন ও মুক্তিপণের বিষয়টি প্রথম থেকেই আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি ভিকটিমকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে একটু হাসি ফোটাতে লেখাপড়া বাদ দিয়ে চার মাস আগে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামের এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হন শাকিল মিয়া। কিন্তু দালালরা তাকে ইতালির বদলে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে আটকে রেখে দালালরা আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একইসঙ্গে শাকিলের ওপর চলতে থাকে নির্মম নির্যাতন।
আরও পড়ুন:নীলফামারী সদরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদরের সোনারায় ইউনিয়নের আরাজি কুখাপাড়া বাবুরহাট গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শোভা রাণী রায় নামের ওই নারীর স্বামী দীপু রায়কে পুলিশ আটক করেছে।
প্রাণ হারানো শোভা রানী রায় সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মহববত বাজিতপাড়া এলাকার হরিপদ রায়ের মেয়ে। তার স্বামী দীপুর বাড়ি দিনাজপুরের চিরির বন্দরের ফেরসাডাঙ্গা এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে শোভার স্বামীর মৃত্যু হয়। শোভা ও দীপু উভয়েই নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করতেন। ইপিজেডে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুলিশ আরও জানায়, দীপু রায় তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে গত ৪ মার্চ শোভা রায়কে বিয়ে করেন। ঘটনার আগে নীলফামারী সদরের নারায়ণ মাস্টারের ভাড়া বাসায় প্রথম স্ত্রী নমিতা রাণী রায় দীপুর খোঁজ নিতে এলে প্রথম বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন শোভা। এর পর থেকে এ নিয়ে দীপুর সঙ্গে তার বিবাদ সৃষ্টি হয়।
নীলফামারী সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীপু রায় বাসায় এসে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। তখন পাশের জানালা দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শোভাকে দেখতে পান। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা দীপুকে ধরে পুলিশে খবর দিলে বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যক্তিকে আটকের পাশাপাশি মরদেহটি উদ্ধার করেন।
ওসি আরও জানান, দীপুর প্রথম বিয়ের বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে শোভা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী দীপুকে আটক করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে শোভার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশর এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মন্তব্য