একদাম, ১০০! ১০০!
এভাবেই হাঁকডাক দিয়ে শার্ট বিক্রি চলছে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত পৌনে ৯টা ছুঁই ছুঁই। ১০/১২ জন ক্রেতা ঘিরে ধরেছেন ফুটপাতের সেই দোকানটিকে।
শুধু হকার্স মার্কেটের ফুটপাতেই নয়, নিউমার্কেটসহ আশপাশের সব মার্কেটেই এমন উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে চাঁদরাতে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করছেন ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা এভাবে থাকলে তাদের সুবিধার্থে সকাল পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
পুরো ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেলেও চাঁদরাতে রাজধানীর প্রায় সব মার্কেটেই ক্রেতারা ভিড় করছেন। রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট এলাকায় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
মূলত যারা ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছাড়েননি এবং মাসজুড়ে ব্যস্ত ছিলেন তারাই এখন কেনাকাটা সারছেন। পরিবার পরিজন নিয়েও মার্কেটে এসেছেন অনেকে।
পুরান ঢাকার নয়া বাজার থেকে মার্কেটে এসেছেন আসলাম উদ্দিন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আগেই কিনছি। তবে জুতা কিনা বাকি আছিল। এখন আইসা জুতা নিলাম।’
শেষ মুহূর্তের বিক্রির বিষয়ে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের সানন্দা ফ্যাশন হাউজের বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘বিক্রি ভালোই হইছে। খারাপ হয় নাই। তয় গ্যাঞ্জামটা না হইলে আরও ভালো হইত। ঈদের ছুটি বড় হওয়ায় অনেকে আগেই এলাকায় চইলা গেছে।’
চাঁদরাতে কেনাকাটার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- শপিং মলের চেয়ে বরং ফুটপাতগুলোতে ক্রেতা সমাগম বেশি হচ্ছে। মিরপুর ১০ নাম্বার থেকে মিরপুর- ২ নাম্বারের দিকে রাস্তার দুই পাশে শত শত বিক্রেতা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। হাজার হাজার ক্রেতার সমাগমে গমগম করছে যেন পুরো এলাকাটি।
নূরজাহান মার্কেটের জি এস ফ্যাশনের বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘বেচা-বিক্রি ভালোই। ভাবছিলাম এত হইবো না। তবে মানুষ আইছে মার্কেটে। জিনিসপত্র নিছে ভালোই।’
রাজধানীর গাউছিউয়ায় বাটা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার ইলিয়াস জানান, তার প্রত্যাশার শত ভাগই পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিক্রি যা হইছে ভালো আলহামদুলিল্লাহ! রাত বাড়লে ক্রেতা আরও বাড়বে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে সকাল পর্যন্ত দোকান খোলা রাখবো।’
এদিকে, শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা জমে উঠলেও নিউ মার্কেটের দোকানদাররা কয়েকদিন আগের ঝামেলার কথা এখনও ভুলতে পারছেন না। তাদের মতে, ওই ঝামেলা না হলে এবার আরও অনেক ব্যবসা হতো।
নিউ মার্কেটে ফুটপাতের দোকানদার নিরব রাজ ঢাকা কলেজের ঝামেলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এক ঝামেলায় সব শেষ।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর-২ এলাকার মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সের সাতটি দোকান থেকে অনুমোদনবিহীন ২১৩টি মোবাইলসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন টিম ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যারে যৌথ অভিযানে এসব জব্দ করা হয়।
অভিযানে মোবাইল ল্যাব থেকে ৩৪টি, মোবাইল অ্যান্ড গেজেট থেকে ৩১টি, টেক ফ্যাক্টরি থেকে ৯টি, গ্যাজেট ভিলা-৬৩৯ থেকে ৩৩টি, গ্যাজেট ভিলা-৬৬২ থেকে ৩১টি, গ্যাজেট ভিলা-৬৭১ থেকে ৩৩টি এবং কোরাস থেকে ৪২টি বিভিন্ন মডেলের হ্যান্ডসেট জব্দ করা হয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বিটিআরসি জানায়, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদনবিহীন মোবাইলের ব্যবসা করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১, (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে মঙ্গলবার থেকে ১০ দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
সকালে গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কসংলগ্ন এলাকায় ১০ দিনব্যাপী বিশেষ মশা নিধন অভিযান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সেলিম রেজা বলেন, ‘মেয়রের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো ভবনে, নির্মাণাধীন বাড়িতে, সরকারি-বেসরকারি বা আধাসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠানে এমনকি সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। লার্ভা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এরই মধ্যে উত্তর ঢাকায় এডিসের হটস্পট চিহ্নিত করে কাজ শুরু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সেলিম রেজা নগরবাসীকে অনুরোধ করে বলেন, ‘নিজ নিজ বসতবাড়িতে জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে এডিসের উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে, সবাই মিলে সচেতন হলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
ডিএনসিসির পুরো এলাকা ৪০০ বর্গগজ আয়তনে বিভক্ত করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ৯৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক তালিকাবদ্ধ করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় তিনি অন্যান্য কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবন ঘুরে দেখেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অন্য কর্মকতারা।
এ ছাড়া অঞ্চল-১-এর আওতাধীন ১নং ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর নং ৪, ৬, ৮ এবং ওয়ার্ড ১৭-এর নিকুঞ্জ-১, ২ ও জামতলা, টানপাড়া এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাড়ে কিউলেক্স মশকবিরোধী অভিযান ও এডিসবিরোধী অভিযানে পাঁচ স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৬-এর ৫১ নং ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর-১১ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান করেন। দুই স্থানে মালিকবিহীন পরিত্যক্ত টায়ারে দুটি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। সেগুলো ধ্বংস করে দুই মামলায় ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ১১ মে সকালে রাজধানীর উত্তরায় এডিস ও ডেঙ্গুবিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক পথসভায় অংশ নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ১০ দিনের মশা (ডেঙ্গু ও এডিস) নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। ১৭ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
আরও পড়ুন:গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দুই কন্যাকে নিয়ে জাপান যেতে আপিলে আবেদন করেছেন জাপানি মা এরিকো নাকানো।
মঙ্গলবার তার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী শিশির মনির।
তিনি জানান, দুই মেয়েকে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুই মেয়ের বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদন করেন মা এরিকো। সেই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী সোমবার তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
গত ১৫ ডিসেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ দুই শিশুকে মায়ের কাছে দেয়ার নির্দেশ দেয়। তবে দিনের বেলা বাবা দেখা করতে পারবেন।
গত বছরের ১৯ আগস্ট বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বামী ইমরান শরীফের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই কন্যাসন্তানকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি মা এরিকো। রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২১ নভেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট।
রায়ে দুই মেয়েকে বাবার কাছে রেখে মা বছরে তিনবার ১০ দিন করে দেখা করতে পারবেন। আর এ জন্য মায়ের সব খরচ বাবাকে বহন করতে হবে। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেন মা। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ দুই শিশুকে মায়ের কাছে রাখার আদেশ দেয়।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান শরীফ ইমরান জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।
এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিল।
গত বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিয়ে বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এরপর ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেন। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রাজধানীর সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজে বঙ্গবন্ধু ‘সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ’-এর জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বীয় জ্ঞানের চেয়ে ব্যহারিক শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক শিক্ষার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।’
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সঙ্গে কাজ করার মানসিকতাই তৈরি হয়নি। আমরা তত্ত্বীয় জ্ঞানের ওপর এত বেশি জোর দিচ্ছি যে, বাস্তবে কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে কৃষি কাজসহ কায়িক পরিশ্রমের কাজ হচ্ছে অশিক্ষিত লোকের কাজ। যেহেতু সে শিক্ষিত হয়ে গেছে সেহেতু সে এসব কাজ করবে না।
‘কিন্তু শিক্ষার্থীরা লদ্ধ জ্ঞানকে ব্যবহার করার মাধ্যমে উদ্ভাবন করতে পারে। তাই শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ থাকলো, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ব্যবহারে উপযুক্ত করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত ও বিজ্ঞানমনস্ক করার আহ্বান জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কূপমণ্ডুকতা, জড়তা, অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াশীলতার মধ্যে ডুবে থাকে এবং কুসংস্কার, ধর্মীয় অপব্যখ্যা, নারী-পুরুষের মধ্যে অসমতার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ চলে যায় সৃজনশীল চর্চার অভাবে।
‘সে কারণে শিক্ষকদের আমি অনুরোধ করব, জাতির পিতা যে দক্ষতা নির্ভর জনগোষ্ঠী করতে চেয়েছিলেন, শিক্ষার্থীদের সেই বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দক্ষতা নির্ভর জনগোষ্ঠী গেড়ে তুলতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
আরও পড়ুন:
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় মৌলভীবাজারের আব্দুল আজিজ হাবলুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারমান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন বিচারপতির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করে দেয়।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রাখে ট্রাইব্যুনাল।
আব্দুল আজিজ ছাড়া বাকি দুই আসামি হলেন আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মতিন। এর মধ্যে আব্দুল মতিন পলাতক।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি।
পরে সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। পরে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। মামলাটি রায়ের জন্য তালিকায় এলে আগামী ১৯ মে বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেয় আদালত।’
তিনি বলেন, ‘এ আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগে শুনানি হয়েছে। আমরা সবগুলো অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে যুক্তি দিয়েছি। ১৯৭১ সালে আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মতিন দুই ভাই মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে তারা রাজাকারে নাম লেখান।
‘এর স্বপক্ষে আমরা প্রমাণ জমা দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের মামলাও রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা তাদের অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে আমার মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রসিকিউশনের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং আমার মক্কেলেরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেক্টর কমান্ডারসহ আতাউল গনি ওসমানির দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট আছে। সুতরাং এ মামলায় আমরা খালাস পাবো এমনটিই প্রত্যাশা করছি।
২০১৮ সালের ১৫ মে এ মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর করোনা কারণে দীর্ঘদিন ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর সড়ক ধরে যারা নিয়মিত চলাচল করেন, তারা পরিচিত সোবহানবাগ জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের সঙ্গে। মসজিদের একটি অংশ রাস্তার ওপরে হওয়ায় এখানে মিরপুর রোড সংকুচিত হয়ে গেছে।
বহু বছরের এ চিত্র এবার বদলে যাচ্ছে। রাস্তার জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এর বদলে পুরাতন তিনতলা মসজিদটি ভেঙে নতুন ১০ তলাবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে পুরাতন ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের কাজ শুরু করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে নির্মাণের জন্য সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আগের মসজিদের আয়তনের সমপরিমাণ জায়গা নিয়ে বেষ্টনী দেয়া আছে পুরো প্রকল্প এলাকা। এর ভেতরে চলছে নতুন ভবন নির্মাণের কর্মযজ্ঞ।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের নতুন অস্থায়ী তিনতলা ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
প্রকল্প এলাকার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাইলিংয়ের জন্য বড় বড় যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। নিজেদের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা।
এখানে কথা হয় প্রকল্পের প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি অস্থায়ী ভবন করে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়েছে গত বছরের শেষের দিকে। এরপর পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন সবেমাত্র ১০ তলা ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। পুরো ভবন নির্মাণে দুই বছরের মতো সময় লাগবে।
প্রকল্প এলাকা থেকে মূল সড়কের জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে নতুন মসজিদ করা হচ্ছে। আমরা কাজের সুবিধার্থে এখনই ১৩ ফুট জায়গা ছাড়িনি। কাজ কিছুটা গুছিয়ে তারপর রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয়া হবে।’
প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আরো জানান, নকশা অনুযায়ী ১০ তলা এই মসজিদে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। এতে জেনারেটর, লিফট, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, সোলার প্যানেল সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, এয়ারকুলার, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাসহ আরো অনেক ব্যবস্থাপনা থাকবে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
১৯৩৭ সালে প্রায় ৩৫ শতাংশ জমির ওপর সোবহানবাগ মসজিদ ও পাশে পারিবারিক কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সোবহান। ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মারা গেলে আবদুস সোবহানকে এই কবরস্থানেই দাফন করা হয়। তিনতলা এই মসজিদে এক সঙ্গে ৬০০ থেকে ৭০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। এখন নতুন ভবন হলে সেখানে অন্তত ৪ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন।
প্রকল্পের ঠিক পাশেই মসজিদের অস্থায়ী ভবন করে দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তিনতলা একটি ভবনে চলছে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম। এখানে প্রায় ৭০ জন মাদ্রাসা ছাত্রের থাকা-খাওয়া-পড়াশোনার পাশাপাশি সাধারণ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দীন নিউজবাংলাকে জানান, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মসজিদ কমিটিকে একটি চিঠি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার মসজিদটিকে আরও বড় করতে চায়। তবে রাস্তার জন্য কিছুটা জায়গা ছাড়ার অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। তখন মসজিদ কমিটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
মো. আলাউদ্দীন আরো বলেন, ‘মসজিদটি ৮৩ বছর আগে নির্মিত। তখন তো মিরপুর সড়ক এত চওড়া ছিল না। আর মানুষের সংখ্যাও কম ছিল। তখন মসজিদটি তিনতলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বেড়েছে। মুসল্লিদেরও চাপ বেড়েছে। একসময় বাড়তি চাপের কারণে রাস্তায় দাঁড়িয়েই মানুষ নামাজ পড়া শুরু করে, এতে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়।
'অন্যদিকে মসজিদের ভিত্তি পুরাতন ও দুর্বল থাকায় এটি আর ওপরের দিকে বাড়ানো সম্ভবও হচ্ছিল না। সব কিছু বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে মসজিদ কমিটি রাজি হয়। কারণ মসজিদ তো মানুষের জন্যই, আবার রাস্তাও মানুষের জন্য। তাহলে মানুষে মানুষে অসুবিধা তৈরির দরকার কী?’
কলেজ ড্রেস পরে অযথা ঘোরাঘুরি না করা, কলেজ বাসে যাতায়াতের সময় ইভটিজিংসহ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা কলেজ প্রশাসন।
নির্দেশনায় শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজ করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
সোমবার ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এ. টি. এম. মইনুল হোসেনের সই করা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জানানো যাচ্ছে যে, তাদের ক্লাস শুরুর আগে, ক্লাস চলাকালীন এবং ছুটির পরে সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজ সংলগ্ন এলাকা, নিউ মার্কেট এবং নীলক্ষেত এলাকায় কলেজ ড্রেস পরিহিত অবস্থায় অযথা ঘোরাঘুরি বা আড্ডা দেয়া সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ করা হলো।
তাছাড়া কলেজ বাসে যাতায়াতের সময় ইভটিজিংসহ যে কোনো বিশৃঙ্খলা করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কোনো শিক্ষার্থী নিয়মবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর ব্যবস্থা নিলে তার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী থাকবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য