ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনে ঈদযাত্রা। ওই দিন থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
অগ্রিম টিকিটের ভিত্তিতে ঈদযাত্রার ট্রেনগুলো ছেড়ে গেছে রোববার পর্যন্ত। চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ হচ্ছে মঙ্গলবার। তাই সোমবারের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় রোববার রাত ৮টা থেকে।
এ সুযোগে ট্রেনের টিকিট কেটে বাড়ির পানে ছুটছেন হাজারো মানুষ।
সকালে কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কম। যাত্রার আগ মুহূর্তেও টিকিট পেয়েছেন যাত্রীরা।
ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল না ট্রেনগুলোতে; সময়মতোই ছেড়ে গেছে স্টেশন।
যাত্রী কম এবং সকালের দিকে আবহাওয়া শীতল থাকায় বেশ উৎফুল্ল মেজাজেই গন্তব্যে রওনা করতে পেরেছেন যাত্রীরা। তাদের একজন গাইবান্ধার তারেক।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ কর্মী রোববার পর্যন্ত ছুটি পাননি। ধরেই নিয়েছিলেন ঈদ হবে ঢাকায়, কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ এক দিন পিছিয়েছে। এতে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পান তিনি।
রংপুর এক্সপ্রেসের এই যাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ এখানেই করতে হবে, এমনটাই ধরে নিয়েছিলাম। রোববার কাজও শেষ হলো। আর চাঁদও দেখা যায়নি, যার কারণে সোমবার থেকে ছুটি পেয়ে গেলাম।
‘যেতে চাইছিলাম না, কিন্তু যেহেতু ছুটি পেলাম, তাই আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার দিকে খবর দেখে রেলস্টেশনে এসেছিলাম। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাই।’
ধূমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রী হেলাল যাবেন পাবনায়। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই কয়দিন তো ট্রেনের টিকিট পাওয়াই মুশকিল ছিল, তবে আজ ঈদ না হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যার দিকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
‘এই সুযোগে আমি টিকিট কাটতে স্টেশনে গিয়েছিলাম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে রাত ১১টার দিকে টিকিট পেয়েছি; বাড়িতে যাচ্ছি। কী যে শান্তি লাগছে ভাই, বলে বোঝাতে পারব না।’
রংপুরের আরেক যাত্রী মুজাহিদ হাসান। আন নূর তাহফিজুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসার এ পরিচালক বলেন, ‘টিকিট বিক্রি হচ্ছে জানতে পেরে রাতে স্টেশনে আসি। ১১টার পরে হলেও টিকিট পেয়েছিলাম বলে আজকে যেতে পারছি। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম যে এখানেই ঈদ করতে হবে।
‘কারণ এই হুড়াহুড়ি করে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ট্রেনে চেপে বাড়ি যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। টিকিট পাওয়ায় যাচ্ছি।’
আনসারে চাকরি করেন রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটার রইস উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি যেতে পারছি না, তবে ছেলেমেয়েদের বাড়িতে ঈদ করতে পাঠাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে টিকিট কেটেছি লাইনে দাঁড়িয়ে। এর আগে মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি যে ঈদের অগ্রিম টিকিট পেতে ব্যাপক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়েছে মানুষকে, তবে গতকাল রাতে টিকিট পেতে সে রকম ঝামেলা সহ্য করতে হয়নি।
‘কিছুক্ষণ অবশ্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে, তবে টিকিট পেয়েছিলাম। তাই আজকে স্টেশনে এসেছি ওদের বিদায় দিতে।’
দেওয়ানগঞ্জগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী আলামিন ইসলাম ও মামা আজিজুল ইসলাম কাজ করেন নারায়ণগঞ্জে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন জামালপুর।
তারা জানান, সোমবার সকালে এসে সহজেই টিকিট পেয়ে গেছেন, সিটও পেয়েছেন।
এর আগে শনি-রোববার সকালে ও ইফতারের পরে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে মানুষের ভিড় বেশি দেখা গেছে। টিকিট না পাওয়ায় স্ট্যান্ডিং টিকিটে যাত্রা করেছেন হাজারো মানুষ। কোনো কোনো ট্রেনে পা ফেলার জায়গা ছিল না।
বিনা টিকিটে যেন কেউ যেন ভ্রমণ করতে না পারে তার জন্য তৎপর ছিলেন রেলওয়ের কর্মীরা। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুহূর্তে ছিল তাদের চেকপোস্ট।
যাদের টিকিট ছিল না, তাদের ‘ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকের বাড়তি ভাড়ার টিকিট’ দিয়ে ভ্রমণ নিশ্চিত করা হয়।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে শুধু আন্তনগর ট্রেনের আসনই ২৭ হাজারের বেশি।
ঈদ শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হয় রোববার। ফিরতি টিকিটের জন্য গতকাল এবং আজও খুব বেশি লাইন দেখা যায়নি কাউন্টারে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে স্টেশন থেকে যাত্রা, সেই স্টেশন থেকেই দেয়া হবে ফিরতি টিকিট।
এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
গত ২৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ওই দিন ২৭ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিলে ২৮ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিলে ২৯ এপ্রিল, ২৬ এপ্রিলে ৩০ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিলে দেয়া হয় ১ মের টিকিট।
সে সময় টিকিট পেতে একরকম যুদ্ধ করতে দেখা গেছে প্রত্যাশীদের।
আরও পড়ুন:সিলেট সদরে ঝড়ের কবলে পড়ে বিলে ডু্বে যাওয়া নৌকার আরেক আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
জালালাবাদ থানার লালপুর গ্রামের লোকজন মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে মরদেহ দেখে জানালে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে।
মৃত ব্যক্তির নাম রেজাখ আলী, তার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার রায়েরগাঁও গ্রামে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা ডুবে নিখোঁজ আছকন্দর আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আছকন্দরের বাড়ি একই উপজেলার পুটামারা গ্রামে।
জালালাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ ইসহাকের বরাত দিয়ে ওসি জানান, বন্যায় সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রোববার রাতে নৌকায় করে খারইল বিলের ওপর দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আছকন্দর, রেজাখসহ কয়েকজন। ঝড়ের কবলে পড়ে বিলের মাঝামাঝি জায়গায় নৌকাটি ডুবে যায়। অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন ওই দুজন।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে চলন্ত বাসে অস্ত্র ধরে ডাকাতির অভিযোগে আটক ব্যক্তির চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পিটুনি দেয়া ওই ব্যক্তির নাম, পরিচয় জানা যায়নি।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসলামুজ্জামান নিউজবাংলাকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার রাতে নবীনগর এলাকায় পিটুনিতে গুরুতর আহত ওই ব্যক্তিকে আটক করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। সেখানে মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
এসআই বলেন, ‘চলন্ত বাসে ডাকাতির অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল। তার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ডাকাতির সময় বাসের দুই থেকে তিনজন যাত্রী আহত হওয়ার কথা শুনলেও আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পাইনি।’
নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলা ইমরান খান নামের এক যুবক বলেন, ‘রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় সেনা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন এক নারীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলা দেয়া হয়। অন্য যাত্রীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করছিল।
‘মার্কেটের সামনে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক এসআই ওই নারীকে ফেলে দিতে দেখে দৌড়ে গিয়ে বাসে ওঠেন।’
হেলাল উদ্দিন নামের ওই এসআই বলেন, ‘ডাকাতির কথা শুনে কোনো কিছু চিন্তা না করে আমি যাত্রীদের বাঁচাতে যাই। আমার কাছে কোনো অস্ত্র বা লাঠি কিছুই ছিল না। বাসে তিনজন অস্ত্রধারী ছিল। তাদের মধ্যে একজনকে জাপটে ধরে ইঞ্জিনের ওপর ফেললে বাকি দুজন পালিয়ে যায়।
‘এরপর বাসের ও বাইরের লোকজন ওই ডাকাতকে পিটুনি দেয়। আমি একা তাদের থামাতে পারিনি। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা ওই ব্যক্তিকে আটক করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ছুরিটাও পুলিশ উদ্ধার করেছে। তবে সাভার পরিবহনের বাসটা সুযোগ বুঝে পালিয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:বিয়ের দাবিতে বরগুনায় প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়া জামালপুরের সেই তরুণীকে জামিন দিয়েছে আদালত।
বরগুনা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে তরুণীকে জামিন দেন। আগের দিন আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু।
তিনি জানান, বেলা ১১টার দিকে তরুণীকে আদালতে নেয়া হয়। এরপর উভয় পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন।
শুনানি শেষে বিচারক মাহবুবুর রহমান তরুণী ও তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি জামিন দেন। জামিনের কোনো শর্ত দেয়া হয়নি বলেও জানান এ আইনজীবী।
তবে আইন ভঙ্গ হয় এমন কোনো কাজ থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়। একই সঙ্গে কারো বিরুদ্ধে তার অভিযোগ থাকলে আইনি পদ্ধতিতে এগোতে বলা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইমুল ইসলাম রাব্বি বলেন, ‘আমরা আদালতে বলেছি, আসামির ভাইয়ের জিম্মায় জামিন দেয়া হলে বাদীপক্ষের আপত্তি নেই। পরে আদালত তাকে জামিন দেয়।’
তরুণীর বড় ভাই বলেন, ‘ছেলে মাহমুদুল হাসানের মামা আমাকে ফোন করে আলোচনার জন্য তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে আসার আগেই তারা আমার বোনের নামে মামলা দিয়ে জেলে পাঠায়। আমার বোন আমাদের বলেছে, সে বিয়ে করেছে, শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছে। তাই আমরা আর দুশ্চিন্তা করিনি।’
মাহমুদুল হাসানের পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এর আগে শুক্রবার ভোরে বেতাগী থানা পুলিশ চান্দখালি এলাকার মাহমুদুল হাসানের বাড়ি থেকে ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে। পরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে বিচারক নাহিদ ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মাহমুদুল হাসানকে প্রেমিক দাবি করে গত ২৮ এপ্রিল থেকে বিয়ের জন্য তার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে ছিলেন ওই তরুণী।
বেতাগী থানার শাহ আলম হাওলাদার জানান, ওই তরুণীর বিরুদ্ধে মাহমুদুলের বাবা মোশাররফ হোসেন বৃহস্পতিবার মামলা করেছেন। তাতে জিম্মি করে তালা ভেঙে বাসায় প্রবেশ, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই মামলায় মেয়েটিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যা ঘটেছিল
ওই তরুণী জানিয়েছিলেন, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে তার গ্রামের বাড়ি। ঢাকার উত্তরায় থাকেন এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।
মেয়েটির দাবি, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। তিন বছর প্রেমের পর সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে নানা অজুহাতে তরুণীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। রোজার শুরুতে যুবকটি গ্রামের বাড়ি চলে আসেন।
এরপর গত ২৮ এপ্রিল ওই তরুণী বেতাগীর চান্দখালীতে মাহমুদুল হাসানের বাসার সামনে বিয়ের দাবি নিয়ে অবস্থান নেন। তবে সে সময় মাহমুদুলের বাসা তালাবদ্ধ পান।
গত রোববার দুপুরে ওই তরুণী জানান, তিন দিনেও মাহমুদুল বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ে তার দাবি মেনে না নেয়া হলে বাসার সামনেই আত্মহত্যা করবেন।
সেদিন মেয়েটির খোঁজ নিতে গেলে মাহমুদুলের মামা আবদুস সোবাহান গাজীকে স্থানীয়দের সহায়তায় অবরুদ্ধ করে রাখেন সেই তরুণী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাহমুদুলকে হাজির করার আলটিমেটাম দেন।
নিউজবাংলাকে বেতাগী থানার ওসি জানান, ওই তরুণীর বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেন মাহমুদুল হাসানের বাবা মোশাররফ হোসেন। বিচারক সেদিনই মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালত মাহবুবুর রহমান বেতাগী থানার ওসি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী সাইমুল ইসলাম রাব্বি মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে জানান, ওই তরুণী মাহমুদুলের মামাকে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ওই বাড়িতে ঢোকেন। বিয়ের দাবি মেনে না নিলে সেখানেই আত্মহত্যার হুমকি দেন। বাড়ি ফিরলে মাহমুদুলের মা-বাবাকেও মেয়েটি অবরুদ্ধ করেন।
ওসি শাহ আলম নিউজবাংলাকে জানান, মেয়েটির নামে ৪৮৪, ৩০৯, ৩৪৪, ৪২৭, ২৯০, ৫০৬ ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তাতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪ থেকে ৫ জনকে।
আরও পড়ুন:হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।
দেশে ফিরতে চান বলেও জানিয়েছেন আলোচিত এ ব্যক্তি।
ভারতের অর্থসংক্রান্ত গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) শনিবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগর থেকে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে এক নারী রয়েছেন।
ওই ছয়জনকে গ্রেপ্তারের দিনই আদালতে উপস্থাপন করা হলে পাঁচজনকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পায় ইডি। গ্রেপ্তার নারীকে কারা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
গোয়েন্দা সংস্থাটির হেফাজতে থাকা পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষকে সোমবার সকালে রুটিন চেকআপের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঘণ্টাখানেক রাখার পর ইডির সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের অফিসে তাদের ফিরিয়ে আনেন তদন্তকারীরা।
ইডির কার্যালয়ে লিফটের এক কোনায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন পি কে হালদার। ওই সময় লিফটের বাইরে থাকা সাংবাদিকরা তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চান।
জবাবে পি কে হালদার বলেন, ‘আমি দেশে ফিরতে চাই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।’
দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ
ইডি সূত্র জানিয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে রোববার দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
ইডি আরও জানায়, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ও নকল পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে অবৈধভাবে দেশটিতে ছিলেন গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। তারা জালিয়াতি করে যাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন:বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টয়লেটে নাড়ি ছিঁড়েই পড়ে গিয়েছিল সেই শিশুটি। হাসপাতালের তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে এমনটিই নিশ্চিত করা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলামের কাছে সোমবার দুপুরে এক পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
এই কমিটির সদস্য সচিব ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টয়লেটের প্যানের সঙ্গে পাইপ সরাসরি যুক্ত ছিল। কোনো বাঁকা লাইন হয়ে পাইপ যুক্ত থাকলে বাচ্চাটি পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা থাকত। পাইপ সরাসরি প্যানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বাচ্চাটি পাইপে পড়ে গেছে।
‘তা ছাড়া বাচ্চাটির ওজন ছিল ১ কেজি ৩০০ গ্রাম এবং আকার স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট। এ কারণে সহজেই টয়লেটের পাইপে পড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাচ্চার মায়ের প্রসব ব্যথার মধ্যে মলত্যাগের বেগ পেলে তিনি টয়লেটে যান। টয়লেটে তিনি বাচ্চা প্রসব করেছিলেন। প্রথমে বিষয়টি টের পাননি তিনি। তা ছাড়া তদন্তে পাওয়া গেছে, বাচ্চার নাড়ি স্বাভাবিকভাবেই ছিঁড়ে গেছে।’
তদন্ত কমিটির সভাপতি বরিশাল মেডিক্যালের শিশু বিভাগের প্রধান মুজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে বাচ্চাটি ৪৭ মিনিটের মতো পাইপের মধ্যে আটকা ছিল। মেডিক্যাল সায়েন্সে এ রকম ঘটনার নজির নেই। বাচ্চাটি নাড়ি ছিঁড়েই পড়ে গিয়েছিল। বাচ্চার কোনো রক্তক্ষরণও হয়নি।
‘বাচ্চা কীভাবে বেঁচে আছে সেটা অলৌকিক, মিরাকল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক্সপ্লেইন করার সুযোগ নেই।’
এ ঘটনায় হাসপাতালের কারও গাফিলতি ছিল না বলে জানান পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে তিনি জানান, এক পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে কারও গাফিলতির বিষয় উঠে আসেনি। রোগী তার স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে থেকেই মলত্যাগের জন্য টয়লেটে যান। সেখানেই বাচ্চা প্রসব করেন।
তিনি বলেন, ‘বাচ্চার নাড়ি ছিঁড়ে গিয়েছিল। এ কারণে কোনো বাধা ছাড়াই পাইপে বাচ্চাটি ঢুকে যায়। পাশাপাশি বাচ্চার সাইজ থেকে পাইপের সাইজ বড় হওয়ায় বাচ্চাটি সহজে পাইপে ঢুকে গিয়েছিল।’
গত ৭ মে বরিশাল মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগের টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করেন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির গণমান শেখপাড়া বাজারের শিল্পী বেগম। এটি তার দ্বিতীয় সন্তান। তার চার বছরের আরেকটি মেয়ে আছে।
ওই টয়লেটের পাইপ তিন তলা থেকে সোজা নেমে গেছে দোতলায় শিশু ওয়ার্ডে। শিশু ওয়ার্ডের ছাদের নিচের পাইপ ভেঙে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
টয়লেটে ভূমিষ্ঠ হওয়া কোনো শিশু কী করে পাইপের ভেতরে গেল এবং তাকে কী করে জীবন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হলো তা জানতে তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করে।
হাসপাতালের পরিচালক জানান, শিল্পীকে প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। তিনি এখন শিশু বিভাগে তার সন্তানের কাছে আছেন। বাচ্চাটাকে শিগগিরই রিলিজ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:পাকশী রেল বিভাগের ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসাদাচরণের কোনো প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। তাকে নির্দোষ উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা নেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি ৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়।
ডিআরএম শাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবেদনে টিটিইকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলা হয়েছে। ওই ট্রেনের গার্ড শরিফুল ইসলাম বিনা টিকেটের যাত্রী ইমরুল কায়েস প্রান্তকে টিটিইর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বাধ্য করেন।
রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করার অপরাধে গত ৫ মে ইমরুল কায়েস প্রান্ত, ওমর এবং হাসানকে জরিমানা করেছিলেন টিটিই শফিকুল। এর মধ্যে প্রান্ত টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
৫ মে রাতের এ ঘটনার পর ওই টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, যা নিয়ে তৈরি হয় সমালোচনা।
প্রান্তর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ মে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে রেল বিভাগ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। পরে এই সময় দুদিন বাড়িয়ে ১৬ মে করা হয়।
এর আগে ৮ মে তাকে দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। ১০ মে কাজে যোগ দেন শফিকুল।
তবে তাকে বরখাস্ত করার দায় চাপানো হয় পাকশীর রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের ওপর।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে খবর আসে, রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আকতার মনির নির্দেশে শফিককে বরখাস্ত করা হয়। শাম্মীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। রেলমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন, তার স্ত্রী টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে টেলিফোন করে অভিযোগ দিয়েছিলেন।
এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে ৮ মে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তার ‘নবপরিণীতার’ বোঝার এখনও অনেক কিছু বাকি।
আরও পড়ুন:হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এ নিয়ে তার জন্মস্থান পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দীঘিরজান গ্রামের বাসিন্দারা কী ভাবছেন, তা জানতে চেয়েছে নিউজবাংলা।
ওই গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে লজ্জিত। পি কে হালদার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান, তবে পি কের এক আত্মীয় বলছেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা উচিত।
দীঘিরজান গ্রামের যুবক দীপু বড়াল ও পিন্টু বড়াল জানান, পি কে বুয়েটে পড়াশোনা করে অনেক বড় চাকরি করেন। এ নিয়ে অনেক আগে গর্ব করতেন তারা,কিন্তু এখন তার কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রামের লোকজন লজ্জা পাচ্ছেন।
পি কের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন দীঘিরজানের এ দুই বাসিন্দা।
মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে পি কে হালদারকে দেশে এনে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনও না ঘটে।
‘শিক্ষিত হয়েও এমন জঘন্য কাজ কাম্য নয়। তার জন্য এখন আমাদের সম্মানহানি হচ্ছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।’
ভিন্ন কথা বলেছেন পি কে হালদারের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী আলো হালদার। তিনি বলেন, ‘দাদা (পিকে হালদার) গ্রামের অনেক মানুষকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন।
‘দাদা এমন একটা ঝামেলায় পড়তে পারেন বা পড়েছেন সেটা মানতে কষ্ট হচ্ছে। সরকারেরও ক্ষতিয়ে দেখা উচিত এর পেছনে কারা জড়িত।’
পি কের জন্ম-বেড়ে ওঠা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান হিসেবে সবাই চিনত পি কে হালদারকে। বাবা মৃত প্রণবেন্দু হালদার পেশায় ছিলেন দীঘিরজান বাজারের দর্জি। মা লীলাবতি হালদার ছিলেন স্কুলশিক্ষক। পি কে হালদার দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পাশের বাগেরহাটের সরকারি পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
এরপর বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের জুট ফ্যাক্টরিতে চাকরি শুরু করেন। পরে পরিচিত পায় একজন বড় ব্যবসায়ী ও দানশীল মানুষ হিসেবে। তবে দুদকের মামলার পরে মানুষ তার প্রতারণার বিষয় জানতে পারে। সবশেষ শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর এলাকা থেকে দুই ভাইসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সরেজমিনে গ্রামবাসীর তথ্যে জানা যায়, পি কের মা লীলাবতি হালদারের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ২০০২ সালে তিনি এলাকায় এসেছিলেন। সে সময় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে কলেজ সংক্রান্ত বিষয় দিয়ে লাঞ্চিত হওয়ার পর আর আসেননি দীঘিরজানে। তবে গ্রামের অনেকের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো নিয়মিত।
অর্থপাচারের কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর শিক্ষিকা মা আরেক ছেলে প্রীতিশ হালদারের বাড়ি ভারতের অশোকনগরে চলে গেছেন। পি কে হালদারের আরেক ভাই প্রাণেশ হালদারও কানাডায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। আপন আত্মীয় বলতে তার চাচাতো ভাইয়ের বউ (কাকাতো ভাইয়ের বৌ) আলো হালদার থাকেন সেখানে গ্রামে। আত্মীয় আলো হালদার কোনো ভাবেই মানতেই পারছেন না তিনি এ ধরনের কাজ করতে পারেন।
ভারতে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করে দেশ থেকে পলাতক পি কে হালদারকে শনিবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ সময় পি কেসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটি। ওই দিনই আদালতে তুলে তাকে তিন দিনের হেফাজতে নেয় তারা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘বাংলাদেশের ওই ব্যাংকের ১০ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার, তার ভাই গণেশ হালদারসহ বাংলাদেশের বাসিন্দা ইমাম হোসেন, স্বপন মৈত্র, উত্তম মৈত্র এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বিচারক শর্মিকে ১৭ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। অন্য পাঁচ জনকে তিন দিন করে রিমান্ড আদেশ দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
ওই আইনজীবী জানান, বাংলাদেশে ভুয়া সংস্থা তৈরি করে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তোলেন মূল অভিযুক্ত পি কে হালদার। অভিযোগ, বিভিন্ন ঘুর পথে সেই টাকা পাচার রুটে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেয়া হতো।
এই ঘটনায় কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে ইডি।
অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করেছে। ভারতের অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেকটরেটের কর্মকর্তারা পি কে হালদারসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সংবাদ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে ছড়িয়ে পরলে এলাকাবাসীর কেউ কেউ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
মন্তব্য