রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রায় অচেতন তিন রোগীকে নিয়ে আসা হয়।
এদের মধ্যে তাসলিমা বেগম নামে এক নারীকে স্টোমাক ওয়াশ করে ভর্তি রাখা হয়। আর তাসলিমার স্বামী ও শাশুড়িকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ ওঠেছে, তাসলিমার পুত্রবধূই সবাইকে কোকের সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু পান করিয়ে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ভাটারায় ওই ঘটনার সূত্রপাত।
অসুস্থ তাসলিমার স্বামী আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমি নয়া নগর নতুন বাজার এলাকায় চায়ের দোকান করি, যেটুকু আয় করি এ দিয়ে ঘর ভাড়া দিয়ে স্বচ্ছল সংসার আমার।
‘শনিবার বিকেলে আমার পালক ছেলে বাবু মিয়ার স্ত্রী রিয়া আমাদের বাসায় ওঠে। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে তার সাথে নিয়ে আসা কোকোকোলা সবাইকে খাওয়ায়। পরে আমারা ঘুমিয়ে পড়ি।
‘মধ্যরাতে পাশের ঘরের লোকজন আমাদের সেহেরি খাওয়ার জন্য যখন ডাকাডাকি করে তখন উঠে দেখি আমি অচেতনের মতো। কিছুটা জ্ঞান ফিরে আসলে দেখি, আমার স্ত্রী আর মা- এরা কোনো কথা বলে না। অচেতন পড়ে আছে। কিন্তু আমার ছেলের বউ রিয়াকে দেখি না!
‘তখন আমার ছোট মেয়ে দেখে, ট্রাঙ্কের তালা খোলা! ৩০ হাজার টাকা নাই! কাপড়-চোপড় এলোমেলো!
আবু সায়ীদ জানান, কিছুটা জ্ঞান ফিরে আসলে আত্মীয়-স্বজন তাদেরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে রোববার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও জানান, পালক পুত্র বাবু মিয়াকে ৬ মাস আগে ভাটারা নয়ানগর এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়। সে ওই এলাকায় ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত ছিল। মিরপুরের রিয়াকে বিয়ে করেছিল বাবু।
সেই রিয়াকেই পুত্রবধূ বেশে পাঠিয়ে ৩০ হাজার টাকা চুরি করিয়েছে বাবু নিজেই, এমন দাবি করেন আবু সায়ীদ।
দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘এমন সময় কাজটা করল; যখন আমার ঘর ভাড়া দিতে হবে, ঈদের খরচ করতে হবে। আমি গরিব মানুষ আমার পুঁজি-বাট্টা সব নিয়ে গেল।’
স্ত্রী সুস্থ হলে থানায় মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন সায়ীদ।
আরও পড়ুন:পরিবারভিত্তিক কৃষিজমির পরিমাণ ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির কর মওকুফের বিধান রেখে ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২২-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
পরে সচিবালয়ে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আগের একটি অধ্যাদেশকে পরিমার্জন করে নতুন আইন করা হচ্ছে। নতুন আইন পাস হলে কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও পরিবারভিত্তিক কৃষিজমির পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হবে না।
‘তবে জমি ২৫ বিঘার ওপরে থাকলে সব জমির জন্য ট্যাক্স দিতে হবে। তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর না দিলে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হারে জরিমানা করে আদায় করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি করবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, মন্দির, গির্জা বা সর্বসাধারণের প্রার্থনার স্থানকে ভূমি উন্নয়ন করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কবরস্থানকে ট্যাক্স দিতে হবে।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক কবরস্থানের রেকর্ড ব্যক্তিনামে থাকে। এলাকাবাসী মিলে মসজিদের পাশে যে কবরস্থান করে সেটি মসজিদের নামে হওয়ায় সেটির কর দিতে হবে না।’
একজনের নামে ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি থাকলে সরকার তা নিয়ে নেবে বলে আগের যে অধ্যাদেশ ছিল, সেটি পরিমার্জন করে নতুন আইন করা হবে বলেও জানান সচিব। বলেন, ‘৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি একজনের নামে রাখা না গেলে রপ্তানিমূলক কৃষিপণ্য বা অন্য কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প হয়, তবে সে ক্ষেত্রে ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘পল্লি এলাকায় বাস্তুভিটা হিসেবে ব্যবহারের জন্য কোনো খাস জমি পাওয়া গেলে সরকার ভূমিহীন, মুক্তিযোদ্ধা বা তার পরিবার, ভূমিহীন কৃষক ও তাদের পরিবারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে লিজ দেবে। তবে কাউকে ৫ শতাংশের বেশি লিজ দেয়া যাবে না।’
এই আইন পাস হলে পাঁচ বছরের চুক্তি করে জমি বর্গা দিতে হবে। বর্গাদার মারা গেলে তার ওয়ারিশদারের ওপর বর্গার চুক্তি বর্তাবে।
এই আইনের আদেশ লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সংবাদ সম্মেলনের সময় স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারের মোবাইল ফোন এক ইমাম চুরি করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার ২৫ দিন পর এটি উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। চুরির অভিযোগে সেই ইমামকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ইমামের নাম আজিজ মোহাম্মদ। তিনি একসময় প্রবাসে মসজিদে ইমামতি করতেন।
পুলিশ জানায়, বিদেশে থাকাকালীন গাড়ি চুরির মামলায় তিন বছর সাজা খেটেছেন তিনি। দেশে এসে মাদ্রাসায় চাকরি করতে গিয়ে মোবাইল চুরি করে সেই চাকরিও হারান। পরে মাদকাসক্ত হয়ে মোবাইল চুরির সংঘবদ্ধ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
আজিজের সঙ্গে মোবাইল চোর চক্রের আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন রনি হাওলাদার ও মো. জাকির হোসেন।
গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. মশিউর রহমান জানান, গত ২৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারের অফিসে ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত প্রেস কনফারেন্সের সময় দুটি মোবাইল ফোন, একটি ওয়ালেটের ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা চুরি হয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত করতে থাকে।
ঘটনার ২৫ দিন পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার চোরাই মোবাইলসহ আজিজ মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মশিউর রহমান বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আজিজ স্বীকার করেছেন, তিনি সংবাদ সম্মেলন চলাকালে স্টেশন ম্যানেজারের ফোন এবং ওয়ালেট চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজিজ একজন কোরআনে হাফেজ। তিনি দীর্ঘ ৩৩ বছর সৌদি আরবের বিভিন্ন মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৌদি আরবে ইমামের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গাড়িচালকের কাজও করতেন তিনি। ড্রাইভিং করতে গিয়ে তার গাড়ি চুরির নেশা হয়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি গাড়িও চুরি করতেন তিনি। ২০১৫ সালে গাড়ি চুরির মামলায় সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আজিজ। গাড়ি চুরির মামলায় তিন বছর সাজা হয় তার।
‘সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান নেন। সেখানে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। কিছুদিন পরে মাদ্রাসায় মোবাইল চুরি করে ধরা পড়লে চাকরি চলে যায় তার। এর পর থেকে আজিজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। ঢাকা শহরে এসে বিভিন্ন মেসে থেকে মোবাইল চুরি শুরু করেন।’
তিনি তিন বছর ধরে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, টিএসসি চত্বর, নগর ভবন, গুলিস্তান, ধানমন্ডি লেক, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০টি করে মোবাইল চুরি করতেন। এরপর চোরাই মোবাইলগুলো গ্রেপ্তার রনি ও জাকিরের কাছে বিক্রি করতেন বলে জানায় পুলিশ।
আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থানায় মামলা আছে বলেও জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বংশাল আলুবাজার পুকুরপাড় এলাকায় পুকুরে গোসলের সময় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিশুর নাম মো. ইয়াসিন। তার বয়স আট বছর।
অচেতন অবস্থায় শিশুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুর বাবা বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আলুবাজার পুকুরপাড় এলাকার একটি পুকুরে কয়েকজন শিশু মিলে গোসলের সময় পানিতে ডুবে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
‘আমাদের বাসা বংশালের লুৎফর রহমান লেনে। তার (শিশুর) মা নেই। নানি রুমা বেগম লালনপালন করে বড় করেছেন।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যনীতি, ২০২২'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
পরে সচিবালয়ে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এটা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা বিশ্বব্যাপী একটা ট্রেন্ড যে মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা অসম্পূর্ণ। সুতরাং যখনই স্বাস্থ্যের কথা আসবে, তখনই মানসিক স্বাস্থ্যের কথা আসবে।
‘আমাদের যেটা সার্ভে আছে সেখানে দেখা যায় যে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রায় ১২ দশমিক ০৬ শতাংশ মানসিক রোগে অসুস্থ। এই সংখ্যাকে অ্যাড্রেস করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘সেই জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা ও সেই সেবা প্রাপ্তি কীভাবে সহজ করা যায়, মাঠ পর্যায়ে কীভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায় এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে কীভাবে তাদেরও সমাজজীবনের অংশ করা যায় সেই জন্য এই স্বাস্থ্যনীতিটা।
‘এখানে বিশেষজ্ঞদের একটি দল গঠন করে তাদের নিয়ে চার-পাঁচ বছর ধরে কাজ করে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে তারপর এটা করা হয়েছে। জাতিসংঘের ইউএনসিআরপিডির কনভেনশন আছে যে মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মানবাধিকার বিষয়টিকে যেন বিবেচনা করা হয়।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যান এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের আট তলার মাচায় কাজ করার সময় নিচে পড়ে এক নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।
মারা যাওয়া নির্মাণশ্রমিকের নাম মো. শিপন। তার বয়স ২৫ বছর।
তিনি ভোলা সদরের ফুলবাড়ী সিকদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকায় সপরিবার থাকতেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিপনের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী পেশায় নির্মাণশ্রমিক। মোহাম্মদপুর চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকায় একটি আটতলা ভবনে মাচায় দাঁড়িয়ে আস্তরের কাজ করছিলেন।
‘ওই সময় মাচা ভেঙে নিচে পড়ে যায়। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পাইলট স্কুলের পাশে একটি বাসায় গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যান তিনি।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন। তার বয়স ৪০ বছর।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার ও ৯ বছরের ছেলে মো. রুহান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্নে চিকিৎসাধীন। আরেক ছেলে ১৭ বছরের রোমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
গত ১০ মে ভোরের দিকে গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত। দগ্ধ অবস্থায় তাদের চারজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ভর্তি করানো হয়।
আনোয়ারের বোন ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই রিকশাচালক। সকালের দিকে উঠে ফ্রিজ থেকে সেমাই বের করে খাওয়ার সময় জানালা দিয়ে গ্যাসের বুদবুদ শব্দ শুনতে পায়, এর কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ একটি শব্দ হয়। আগুন লেগে যায়, পরে তার ছেলে ও স্ত্রীকে ডাকতে ডাকতেই পুরা রুমে আগুন লেগে যায়।
‘সবাইকে দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ আমার ভাই মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা থানার নসুনপুর গ্রামে। আনোয়ার বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাইলট স্কুলের পাশে পরিবার নিয়ে থাকতেন।’
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে আনোয়ার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যান। তার শরীরে ১৭ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
‘নিহতের স্ত্রী রোজিনার শরীরে ২৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তার ছেলে রুহান ৩৫ শতাংশ দগ্ধ ও রোমান ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহানের আগাম জামিন আবেদনের শুনানি পিছিয়ে আগামী রোববার দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনকারিদের পক্ষে আইনজীবী মিজান সাঈদ এক দিনের সময় আবেদন করেন। পরে আদালত আগামী রোববার দুপুর ২টার সময় ঠিক করে দেয়। এ সময় আদালত ওই দিন আসামিদের হাজির থাকতেও নির্দেশ দেয়।
আদালতে জামিন আবেদনকারি এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, বেনজীরের পক্ষে ছিলেন এএফ হাসান আরিফ আর শাহজাহানের পক্ষে ছিলেন ফিদা এম কামাল।
অন্য দিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মুহাম্মদ মোর্শেদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
গত ৫ মে দুদক কার্যালয়ে মামলা করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। মামলার বাকী আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দীন আহমেদ, আশালয় হাউজিংয়ের আমিন মো. হিলালী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলো বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অফ অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকারের সুপারিশ বা অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদন বা সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬.৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ অপরাধজনকভাবে প্রদান/গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন আসামিরা।
পরবর্তী সময়ে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকজনের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন তারা। সে এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য