সকালে ভিড় কম থাকলেও গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিকেল থেকেই ঈদের ছুটিতে বাড়িমুখী মানুষ বাড়তে শুরু করে। কানায় কানায় ভরে ওঠে বাস কাউন্টারগুলো। যানবাহনের চাপে মহাসড়কের বেশ কিছু পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে এই যানজটের আকার আরও বড় হতে শুরু করেছে।
এ অবস্থায় সরেজমিন কিছু বিশৃঙ্খলাও চোখে পড়ছে মহাসড়কে। বিশেষ করে কাউন্টারগুলোয় যাত্রীদের টানাহেঁচড়ার পাশাপাশি প্রায় সব রুটেই বাস ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ এসব অনিয়ম প্রতিহত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষগুলোর কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।
যাচাই করে দেখা গেছে, চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাটের গাড়িগুলোয় টিকিটপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার বাস কাউন্টারগুলোয় নরসিংদী, ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুটে বাসের টিকিটপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে৷ ঈদের আগে ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনপ্রতি ভাড়া ছিল ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা। বর্তমানে ভাড়া বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী ইকোনো পরিবহনে আগের ভাড়া ছিল ২৪০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে নেয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
বাদশা পরিবহনে ১৫০ টাকার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কাজী পরিবহনে ৩০০ টাকার ভাড়া বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা।
একই চিত্র পিপিএল, তিতাস, উত্তরাসহ অন্যান্য পরিবহনেও। স্থানীয় ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের নেতৃত্বে কাউন্টারগুলোয় বাড়তি ভাড়া আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছে একাধিক কাউন্টার কর্তৃপক্ষ।
তবে এ বিষয়ে ওই যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া ছাড়াও যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করারও অভিযোগ উঠেছে বাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আব্দুল গাফফার পরিবার নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে টঙ্গী স্টেশন রোডের বাস কাউন্টারে এসেছেন। রিকশা থেকে নেমে কাউন্টারের কাছে যেতেই চার-পাঁচ যুবক তাদের গতিরোধ করে জানতে চান, তারা কোথায় যাবেন। গন্তব্যের কথা জানালে ওই যুবকরা আব্দুল গাফফারের ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে গাফফার জানান, শুধু এবার নয়, প্রতি বছরই ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় পরিবার নিয়ে কাউন্টারে এলেই এ ধরনের বিপত্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। কাউন্টারের ছেলেগুলো কেউ হাত ধরে টানাটানি করে, কেউবা হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়।
নরসিংদীগামী সালমা আক্তার বলেন, ‘কাউন্টারের ছেলেগুলো ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করে। সুযোগ বুঝে শরীরের স্পর্শকাতর জায়গাতেও স্পর্শ করার চেষ্টা করে। বাড়ি যাওয়ার তাড়া থাকে এ কারণে অভিযোগ জানানোর মতো সুযোগও থাকে না। বাসস্ট্যান্ডগুলোয় পুলিশের মনিটরিং টিম থাকলে যাত্রীরা সহজে অভিযোগ জানাতে পারতেন।’
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ বলেন, ‘যাত্রীদের ব্যাগ ও হাত ধরে টানাটানি করা অপরাধ। এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউন্টারগুলো বাড়তি ভাড়া আদায় যেন না করে সে জন্য সতর্কও করা হয়েছে।’
এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে বোর্ডবাজার থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ময়মনসিংহমুখী সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সালনা বাজার থেকে ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত ঢাকামুখী লেনেও যানজট বাড়ছে। পরিবহনের দীর্ঘ সারি হচ্ছে বাইপাস-বাসন সড়ক ও টঙ্গী-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের স্টেশন রোড এলাকায়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ‘বিকেল থেকে যাত্রীর চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। বাসস্ট্যান্ডগুলোয় যাত্রী ওঠানামার কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাফিক সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।’
সাভারে ঘরমুখো পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা
ঢাকার সাভারের দুটি মহাসড়কসহ শাখা সড়কগুলোয় ঘরমুখো পোশাক শ্রমিকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। দুপুরের পর থেকেই তারা যে যার মতো বাড়ির দিকে ছুটছেন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের জটলা ও যানবাহনের চাপ দেখা গেলেও এই রুটে যানজট তেমন চোখে পড়েনি।
তবে এই রুটেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কেই প্রধান ভোগান্তি হিসেবে দাবি করেছেন যাত্রীরা। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার দুপুরে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানা ছুটি হওয়ার পর পরই বিভিন্ন সড়কে ভিড় জমতে থাকে। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বাসস্টপেজগুলোয় পরিবহনের অপেক্ষায় শ্রমিকরা জটলা পাকাতে শুরু করেন।
যানজট তেমন না থাকলেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড ও নবীনগর এলাকায় যানবাহনের কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের সংযোগস্থল বাইপাইল ত্রিমোড়েও ছিল যানবাহন ও মানুষের চাপ।
সাভার রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষারত পোশাক শ্রমিক শমসের আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইজ দুপুরে ডিউটি কইরা হেরপর ছুটি অইছে। ব্যাগট্যাগ রাইতেই গুছায় রাখছিলাম। দুপুরে খালি ডিউটি কইরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিছি। কিন্তু রাস্তায় অতটা জ্যাম না থাকলেও ভাড়া অনেক বেশি চাইতাছে। রংপুরের ভাড়া চাইতাছে ১২০০-১০০০ টাকা। ট্রাক আর বাসের ছাদে আবার ভাড়া কম। ৩০০-৪০০ ট্যাকা হইলেই যাওন যায়।’
আঁখি আক্তার নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘আমার বোইন (বোন) থাকে বাইপাইলে। আমি গেন্ডা থাইকা ওহানে যামু। তারপর অগো সাথে গাইবান্ধা বাড়িতে যামু। কিন্তু গেন্ডা থাইকা লোকাল বাসে বাইপাইলের ভাড়া চাইতাছে ৬০-৭০ ট্যাকা। অথচ এইখানকার ভাড়া হলো ২০ ট্যাকা।’
সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুস সালাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক ধাপে সাভার শিল্পাঞ্চলে কারখানাগুলো ছুটি হয়েছে। গত দুই দিনে অনেক কারখানার শ্রমিক বাড়ি পৌঁছেছেন। আজ প্রায় অর্ধেক কারখানা ছুটি হয়েছে। এতে সড়কে যানবাহন ও ঘুরমুখো মানুষের চাপ কিছুটা বেড়েছে। তবে কোথাও কোনো যানজট নেই। মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারছেন।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য