লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার ভেতরে স্বামীর সামনে বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক গৃহবধূ।
আদিতমারী থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই গৃহবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাবিনা রুবেল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই স্ত্রীকে নিয়ে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শঠিবাড়ি এলাকায় একই বাড়িতে থাকেন রুবেল। সাবিনার বাবার বাড়ি উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি ভেটেশ্বর গ্রামে।
সাবিনা জানান, মাস কয়েক আগে তাকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন রুবেল। এরপর কোনো যোগাযোগ রাখেননি। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আদিতমারির শিববাড়ি এলাকায় ডেকে নেন রুবেল। সেখানে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় নেয়।
সাবিনা বলেন, ‘আমি স্বামীর সঙ্গে তার বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরি। তাতে রাজি না হওয়ায় আমি বিষ কিনে নেই। পরে থানায় গিয়ে আমি শেষবারের মতো তাকে অনুরোধ করি তার সঙ্গে আমাকে নিয়ে যেতে। তখন রুবেল আমাকে তালাক দেয়ার কথা বলে। তাই আমি বিষ পান করি।
‘দুই বছর সংসার করার পর যদি স্বামী তালাক দেয়ার ঘোষণা দেয় তাহলে এই জীবন রেখে কী লাভ? তাই মরার জন্য থানার ভেতরেই বিষ খেয়েছি। কিন্তু পুলিশের কারণে মরতেও পারলাম না। স্বামী তালাক দিলে আমি আত্মহত্যা করব।’
থানার ওসি মোক্তারুল জানান, সাবিনা বিষ পানের করে থানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তখনই হাসপাতালে নেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সৌরভ দত্ত জানান, সাবিনা আশঙ্কামুক্ত।
সাবিনার স্বামী রুবেল মিয়া বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পুলিশ গিয়ে আমাদের থানায় নিয়ে আসে। থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে আপাতত নিজ নিজ বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাকে আমি তালাক দেইনি, কিন্তু আমার সঙ্গে যেতে না পারায় সাবিনা থানার ভেতরে আমার ও পুলিশের সামনেই বিষ পান করেছে। এখন সে হাসপাতালে আছে; সুস্থ আছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের শালমাড়া এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সতি নদী। গ্রামবাসীর পারাপারের জন্য নদীতে সেতু থাকলেও তা ভেঙে গেছে আগেই। সেই থেকে শুরু দুর্ভোগের।
বুক সমান পানির মধ্যদিয়ে হেঁটে পার হতে হয় গ্রামবাসীকে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন এক শিক্ষক। ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘের সাঁকো তৈরি করে গ্রামবাসীর দুঃখ লাঘব করেছেন তিনি।
ওই শিক্ষকের নাম ইব্রাহীম আলী। তিনি শালমাড়া ঘোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
সাঁকো তৈরির নেপথ্যে
শিক্ষক ইব্রাহীম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদীতে ব্রিজ ছিল, কিন্তু ভেঙে যায় নিম্নমানের কাজের কারণে। তখন থেকে শুরু হয় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্রিজটি সম্পর্কে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। ভাঙার পর থেকে মানুষের খুবই অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
‘আমার বাড়ি নদীর পশ্চিম এলাকায় আর স্কুল নদীর পূর্বে। প্রতিদিন বহু মানুষ ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ভয়ে যাতায়াত করে। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল যাওয়ার জন্য আলাদা পোশাক সঙ্গে নিতে হয়। স্কুলে গিয়ে তারা পোশাক পরিবর্তন করে ক্লাস করে। আমি নিজেও লুঙ্গি ব্যাগে করে নিয়ে যাই। এগুলো আমার খুব খারাপ লাগে। তাই মনে মনে চিন্তা করলাম ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করলে মানুষের যাতায়াত করা একটু সহজ হবে।’
ইব্রাহীম আলী বলেন, ‘সেই চিন্তা থেকে ২০টি ড্রাম ও প্রায় ১০০ বাঁশ দিয়ে পানির ওপর ভাসমান ৫০ ফিট সাঁকো তৈরি করি। এতে দুই গ্রামের প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে।’
কী বলছেন গ্রামবাসী
নওদাবাস দাখিল মাদ্রাসার সুপার রুহুল আমিন বলেন, ‘শালমারা ঘাটে একটি ব্রিজ ছিল, সেটি হঠাৎ ভেঙে যায়। ভাঙার পর থেকে মানুষের খুবই অসুবিধা হয়। এখন সাঁকো দেয়ায় আমরা সুন্দরভাবে চলাচল করতে পারব।’
কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রতিদিন নদী দিয়ে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীসহ বহু মানুষ যাতায়াত করি। এত দুর্ভোগের পরেও কেউ দেখতে আসেনি। এক বুক পানি পার হয়ে চলাচল করছি। এই রোড দিয়েই হাট-বাজারসহ কালীগঞ্জ, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতে হয় আমাদের। স্যার ড্রামের ওপর ভাসমান ব্রিজ তৈরি করায় অনেক ভালো হয়েছে।’
একই এলাকার সাংবাদিক আব্দুল আলিম বলেন, ‘মৃতপ্রায় সতি নদী বর্ষকাল এলে প্লাবিত হয়, আবার খরার সময়ও পানি থাকে। এখানে একটি ব্রিজ ছিল সেটি ভেঙে যায়। চন্দ্রপুর ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে এই নদীতে বয়ে গেছে। এই নদীর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজারও মানুষের চলাচল।
‘এই এলাকার প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে মানুষের যাতায়াতের জন্য। এখানে ২০টি ড্রামের ওপর বাঁশ দিয়ে ব্রিজটি করেছে। যেটি ভাসমান অবস্থায় থাকবে। যখন পানি বাড়বে তখন ভাসবে, আর যখন পানি কমবে তখন নিচে নামবে। এটি ভালো উদ্যোগ।’
ভিক্ষুক মজিবর বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ। চোখে দেখতে পারি না। একটা ব্রিজ দিছে তাও ভাঙি গেইছে বন্যায়। এখন আপনাদের কাছে আমার একটা আবেদন একটা বড় ব্রিজ করি দেন। আমাদের গরিব, দুঃখির খুব কষ্ট হইছে।’
কলেজশিক্ষার্থী সজল বলে, ‘সাইকেল ঘাড়ে করে এক বুক পানি পাড় হয়ে আসলাম। ব্রিজটি ভাঙার পর দুর্দশায় ভুগছি। এখানে দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান মেম্বার কেউ দেখেও না। আমরা খুব কষ্ট করে নদী পার হয়ে যাতায়াত করছি স্কুল-কলেজে।’
কবে পুনর্নির্মাণ হবে সেতু
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সতি নদীর ওপর আগে একটি ব্রিজ ছিল, সেটি ভেঙে যায়। এতে এলাকার মানুষের একটু অসুবিধা হলেও বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেশি হওয়ার কাজ শুরু করেতে পারিনি। ব্রিজের টেন্ডার হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে।’
আরও পড়ুন:সাম্প্রতিক অভিযোগটি হলো, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এক ঠিকাদারের কাছে ভাড়া দিয়ে নানা ধরনের নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। আর সেই টাকা গ্রহণ করেছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
এবার সেই প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের আরেকটি মামলায় বুধবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ মার্চ ওই স্কুলের ছাত্র অভিভাবক মো. সিরাজুল ইসলাম গোপালগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৩ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও সভাপতি হান্নান মোল্লা ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, কোটালীপাড়া শাখার সঞ্চয়ী হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
অর্থ আত্মসাতের সেই মামলাটিতে জামিনে ছিলেন বান্ধাবাড়ী জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হান্নান মোল্লা। বুধবার তারা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে কোটালীপাড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনুশ্রী রায় তাদের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ওই স্কুলের মাঠ অবৈধভাবে ভাড়া দেয়ার সত্যতা যাচাই করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদাউস ওয়াহিদ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ মাঠটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলারও আয়োজন করা হতো। মাঠটি দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
বুধবার দুপুরে মাঠ দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাঁদপাড়া গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শতাধিক শিশু-কিশোরসহ স্থানীয় অনেক নারী-পুরুষ।
মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন করেন প্রতিবাদকারীরা। মানববন্ধন শেষে খেলার মাঠ রক্ষার দাবি জানিয়ে ইউএনও এর কাছে গণস্বাক্ষর করা একটি লিখিত অভিযোগ দেন তারা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, উপজেলার চাঁদপাড়া এলাকায় ছোট যমুনা নদীর তীরসংলগ্ন সুজাপুর মৌজার ১৮১৫ দাগের সম্পত্তিটি সরকারি এবং এসএ খতিয়ানে তা জনসাধারণের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জায়গাটিকে বছরের পর বছর ধরে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলাও অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। কিন্তু ওই এলাকার পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর প্রভাব খাটিয়ে নিজের সম্পত্তি দাবি করে মাঠটি দখল করে নিয়েছেন।
এর আগে মাঠটি উদ্ধারে চাঁদপাড়া এলাকাবাসী পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই বাধ্য হয়ে মাঠ উদ্ধারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নেমেছেন তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় সুমন, লুৎফর, মৃদুলসহ এলাকাবাসী জানান, তারা অনেক বছর ধরে ওই মাঠটিতে খেলাধুলা করে আসছেন। এ ছাড়া তাদের আর কোনো মাঠ নেই। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজেদুর হঠাৎ করেই মাঠটি দখলে নিয়ে খেলার পরিবেশ নষ্ট করেছেন। তাই খেলার মাঠটি উদ্ধারে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।
এদিকে পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান বলেন, ‘দখল নেয়া জায়গাটি আমার বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তি; যার দাগ নম্বর ১৮১৬। আমি কারও জায়গা দখল করিনি। এলাকাবাসীর দাবি করা জমিটি ১৮১৫ দাগের। সেই অনুযায়ী তাদের জমি আলাদা।’
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আলহাজ মাহমুদ আলম লিটন বলেন, ‘এলাকাবাসীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
অভিযোগ পেয়েছেন উল্লেখ করে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় চলতি মৌসুমে গুটিজাতের আম নামানো শুরু হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বুধবার জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো আম কেনাবেচার ‘উৎসব’।
বাজারে নিরাপদ ও পরিপক্ব আম সরবরাহ নিশ্চিতে আগে থেকেই এই সূচি ঠিক করেছিল জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় জাতভেদে আম নামানোর সম্ভাব্য তারিখ জানানো হয়। সভায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও আমচাষি, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় গুটিজাতের আম নামানোর তারিখ ঠিক করা হয় ২৫ মে।
এ ছাড়া গোপালভোগ ৩০ মে ও ক্ষীরসাপাত বা হিমসাগর ৫ জুন, নাগ ফজলি ৮ জুন, ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙ্গা ১২ জুন, ফজলি আম ২২ জুন ও আম্রপালি ২৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সর্বশেষ ১০ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা, বারী-৪ ও গৌরমতি জাতের আম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বাগানমালিক, ব্যবসায়ী, জেলা প্রশাসন সবার সঙ্গে আলোচনা করে আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তারিখ অনুযায়ী আম সংগ্রহ করতে জেলাজুড়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। পরিপক্ব ও ক্ষতিকারক কেমিক্যালমুক্ত আম খাওয়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে চাষিরা গুটি আম নামাতে শুরু করেছেন। এর মধ্য দিয়ে জেলায় আম নামানোর উৎসব শুরু হলো।’
উন্নত জাতের আমগুলো নামানোর জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করলে ভালো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে যদি কোনো বাগানের আম পেকে যায়, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে চাষিরা আম পাড়তে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশে নওগাঁর আমের খুব সুনাম রয়েছে। এ জন্য কয়েক বছর থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আম পাকানো, সংরক্ষণ বা বাজারজাতে কেমিক্যালের ব্যবহার ঠেকাতে নজরদারি রয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৫০ টন। আশা করা হচ্ছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ টন আম উৎপাদন হবে। যার বিক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৪২ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এর মধ্যে বিদেশে আম রপ্তানির জন্য কয়েকজন আমচাষিকে প্রশিক্ষণ ও নিরাপদ আম প্রস্তুতের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তাদের বাগান থেকেই আম ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, দুবাই, কাতার, সুইডেন ও ওমানে রপ্তানি করা হবে।
নেত্রকোণার বারহাট্টায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ অননুমোদিত ও মেয়াদবিহীন আইসললি এবং ম্যাংগোবার জব্দ করা হয়েছে। একই সময়ে অপর আরেকটি প্রতিষ্ঠানকেও জরিমানা করা হয়েছে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনের জন্য।
বুধবার দুপুরে বারহাট্টা উপজেলা সদরের গোপালপুর বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে আরও অংশ নেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা হাবিল উদ্দীন এবং বারহাট্টা উপজেলার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুস সালাম।
অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ আলম জানান, দুপুর দেড়টার দিকে গোপালপুর বাজারের মেসার্স ছিদ্দিক স্টোরে অভিযান পরিচালনা করে ৯ বস্তা ও ৮ কার্টন (বড় বাক্স) মেয়াদবিহীন এবং বিএসটিআইয়ের অনুমোদনবিহীন আইসললি এবং ম্যাংগোবার পাওয়া যায়। পরে ২০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িকভাবে সিলগালা করে দেয়া হয়। জব্দ করা পণ্যের দাম আনুমানিক ৭০ হাজার টাকা। জব্দ করা পণ্যগুলো প্রকাশ্যে ধ্বংস করে দেয়া হয়।
এর কিছুক্ষণ পর একই এলাকার ‘কাউসার সিলেট বেকারিতে’ অভিযান পরিচালনা করে দেখা যায়, তাদের শ্রমিকরা অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করছেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছি। পণ্য কিনে কেউ প্রতারিত হলে প্রতিকারের জন্য আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারেন।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন যাচাই করে দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আসতে হবে। সেখানেই ইভিএম কাস্টমাইজেশন করে দেখানো হবে।
কুমিল্লা সিটি ভোটের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান।
আগামী ১৫ জুন কুমিল্লায় ভোট পুরোপুরি ইভিএমে নেয়া হবে। এই যন্ত্র ব্যবহারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর আপত্তি না থাকলেও স্বতন্ত্র পরিচয়ে দাঁড়ানো বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতা ব্যালটে ভোট নেয়ার দাবি করছেন। তাদের দাবি, ইভিএমে কারচুপি করা যায়।
এই পরিস্থিতিতে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে করা হবে। সেখানে কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা তার মনোনীত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে পারবেন।
যারা এখানে আসতে চান, তাদের ২৬ মে বিকেল ৪টার মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে বা প্রতিনিধির নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ মের মধ্যে আবেদন না করলে ধরে নেয়া হবে যে ওই প্রার্থী ইভিএম কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া দেখতে আগ্রহী নন।
২৬ মে নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৭ মে।
দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। পরের বছর হয় প্রথম নির্বাচন হয়। এরপর ২০১৭ সালে এসে এ সিটিতে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয় প্রায় তিন গুণ। এতে দেখা দেয় সীমানা জটিলতা। বর্তমানে এই সিটিতে ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে।
দুটি নির্বাচনেই কিছু কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। দুটি ভোটেই জয় পেয়েছেন বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু। তার দল এবার ভোট বর্জন করায় গত দুবারের মেয়র এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের প্রচারে নেমেছেন।
আওয়ামী লীগ এখানে পরপর তিনটি নির্বাচনে নতুন মুখ দিয়ে জয়ের চেষ্টায় আছে। প্রথম নির্বাচনে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতা আফজল খানকে দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরের বার তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমাও পেরে ওঠেননি।
এবার নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতকে।
দুই দলেই আছে কোন্দল। সাক্কুর বিরোধিতা করে মাঠে আছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার। অন্যদিকে প্রয়াত আফজল খানের ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরান নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য