বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটে।
শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে অন্তত ছয় শতাধিক পণ্য ও যাত্রীবাহী যান। ফেরিঘাট টার্মিনাল পূর্ণ হয়ে খায়েরপট্টি পর্যন্ত দীর্ঘ আড়াই কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানজট লেগেছে। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থেকে যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি ট্রাকগুলোয় থাকা কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এই ঘাটে মাত্র সাতটি ফেরিতে যানবাহন পারাপার করায় এবং ঈদের বাড়তি চাপে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস, কাঁচা পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন পারাপার করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সঙ্গে বরিশাল, খুলনা, বেনাপোলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুট ব্যবহার করে মেঘনা পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করে। এই রুটে মোট সাতটি ফেরি থাকলেও গত সোমবার দুটি ফেরি বিকল হয়ে গিয়েছিল। এতে নরসিংহপুর ফেরিঘাটে অপেক্ষমাণ যানবাহনের চাপ আরও বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকায় এই ঘাটে দ্বিগুণেরও বেশি যানবাহন পারাপারের জন্য আসছে।
তবে বিকল হয়ে যাওয়া ফেরি দুটি মেরামত করে গত বৃহস্পতিবার সকালে বহরে যুক্ত করায় যানবাহন পারাপারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ধীরে ধীরে জট কেটে যাবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা। নতুন করে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ না বাড়লে ঈদের আগেই ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
শুক্রবার সকালে নরসিংহপুর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংহপুর ঘাটে থাকা দুটি পন্টুন ব্যবহার করে ফেরি লোড ও আনলোড করা হচ্ছে। আর ফেরিঘাট থেকে খায়েরপট্টি পর্যন্ত সড়কের প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এর বাইরেও ফেরিঘাটের টার্মিনালে আটকে আছে আরও আড়াই শ পণ্যবাহী যান।
নরসিংহপুর-খায়েরপট্টি সড়কে তিন সারিতে যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। মাত্র একটি লেন ব্যবহার করে ফেরিঘাট থেকে আসা যানবাহনকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন কাঁচা ও পচনশীল পণ্য বহনকারী যানবাহনের চালক ও ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় তীব্র রোদে আটকা থাকায় অনেক ট্রাকের তরমুজ, পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় ট্রাকচালকরা সড়কের পাশে থাকা গাছপালার নিচে কিছুটা ছায়ায় এসব যানবাহন দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার মাছের ট্রাক ছায়ায় রেখে মাছের ড্রামের পানি বদলের চেষ্টা করছেন।
বরিশাল থেকে ট্রাকবোঝাই তরমুজ নিয়ে চট্টগাম যাওয়ার পথে বুধবার রাতে নরসিংহপুর ঘাটে এসে আটকা পড়েন ট্রাকচালক মালেক সরদার। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারেনি তার ট্রাক।
ক্ষুব্ধ মালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সারা দিন রোদে আটকা থাকায় তীব্র তাপে তরমুজ থেকে পানি বের হতে শুরু করেছে। অনেক তরমুজই নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি যা আছে তাও মনে হয় নষ্ট হয়ে যাবে। ২ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও ফেরিতে ওঠার সিরিয়ালের বিষয়ে কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। আজকের মধ্যে ফেরিতে উঠতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানে পরতে হবে।’
পটুয়াখালী থেকে আসা বাসের যাত্রী সুমাইয়া আকতার জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘাটে এসেছি। সড়কজুড়ে এলামেলা যানবাহন পার্কিং করে রাখায় শেষ দুই কিলোমিটার পার হতে দুই ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছে। প্রায় ৭ ঘণ্টা ঘাটে আটকে থেকে মাত্র ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পেয়েছি। সকালে নোয়াখালী থাকার কথা থাকলেও আজ সন্ধ্যার মধ্যে পৌঁছাতে পারব কিনা নিশ্চিত নই।’
ফরিদপুর থেকে পেঁয়াজ নিয়ে চট্রগ্রাম যাচ্ছিলেন মোজাম্মেল হোসেন। দীর্ঘ সময় ঘাটে আটকা থাকায় তার পেঁয়াজে পচন ধরেছে। রোদের উত্তাপ থেকে বাঁচতে সড়কের পাশে একটি গাছের তলায় ট্রাকটি পার্ক করে সিরিয়ালের অপেক্ষা করছেন।
মোজাম্মেল বলেন, ‘পেঁয়াজ সব নষ্ট হইয়া যাইতাছে। অন্য ঘাটে ট্রাক পারাপার বন্ধ কইরা দিছে। কোনো উপায় না পাইয়া এইহান দিয়া আইছি। আমার মত আরও অনেক ট্রাক একলগে আহায় যানজট তৈরি হইছে। তাড়াতাড়ি পার হইতে না পারলে সব যাবে।’
নরসিংহপুর ফেরিঘাটে বিআইডব্লিউটিসির ঘাট ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি নৌপথে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রয়েছে। তাই এই ঘাটে চাপ বেড়ে গেছে। বিকল দুটি ফেরি বহরে যোগ দেয়ায় যানবাহন পারাপারে গতি এসেছ। আশা করি, ২/১ দিনের মধ্যে ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে মোটরসাইকেলে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক প্রবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।
সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, আবুধাবি প্রবাসী অনিক দুই মাস আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন তিনি। ওই সময় মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে রাস্তার উল্টোপথে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে পাবনায় ভুয়া জন্মসনদ তৈরির ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে জমা দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করা হয়। এতে বহিরাগত কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমন জড়িত।
প্রতিবেদনে জেলার সুজানগরের আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল, যার জবাব দিয়েছেন তারা।
পাবনার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির ঘটনায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নির্দেশে ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
‘পাবনার স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনি জমা দেন। আমি প্রতিবেদনটি এখনও দেখিনি। দেখার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।’
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি সুজানগরের সেই আহম্মদপুর ইউনিয়নে গিয়ে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। সেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেয়েছি। দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইউনিয়নটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তারা সেটির জবাব দেন।
‘এটা (তদন্ত প্রতিবেদন) আমরা জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিই। জেলা প্রশাসক দেখার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব কারণ দর্শানোর নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক কি না, সে বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘সব বিষয় ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’
পাবনার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করা হয়। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পর সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে জন্মনিবন্ধনের সার্ভার থেকে ভুয়া সনদটি সরানো হয়।
এ ঘটনায় নিলয় পারভেজসহ কয়েকজনকে আসামি করে আমিনপুর থানায় মামলা করা হয়।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনির শিকার দুজনের মধ্যে একজন নিহত হন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে। অন্যজন একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে প্রাণ হারান।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহত দুজনের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নামিলা গ্রামে চান মিয়ার বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি গরু চুরির উদ্দেশ্যে ঢোকেন। বিষয়টি টের পেয়ে চান মিয়া ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা জড়ো হন। ওই সময় একজনকে ধরে সংঘবদ্ধ পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, স্থানীয়দের ধাওয়া খাওয়া অপরজন পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানক্ষেতের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন। ওই সময় উত্তেজিত লোকজন ক্ষেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরি রোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহারা বসিয়েছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাড়িতে করে এক কৃষকের গরু চুরি করতে যান কয়েকজন। বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুজনকে পিটুনি দেয় গ্রামবাসী। এতে নামিলা গ্রামে একজন ও বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে আরেকজন নিহত হন।
চেয়ারম্যান আরও জানান, গ্রামে গরু চুরি করতে আসা আরও চার থেকে পাঁচজন আছেন, যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
কাপাসিয়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই আরিফ হোসেন জানান, গরু চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হন, যাদের মরদেহ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
মন্তব্য