লক্ষ্মীপুরে নিখোঁজের এক দিন পর জিহাদ হোসেন নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার বুকে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলা শাকচরের কাচারি বাড়ি এলাকার একটি জমি থেকে পাঁচ বছর বয়সী এ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জিহাদ একই এলাকার জিয়া উদ্দিনের ছেলে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় জিহাদ।
স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু জিহাদ বাড়ির বাইরে খেলতে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।
শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে একটি জায়গায় জিহাদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিশুকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে।
‘ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন আগামী ১৫ জুন। ২৬ মে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। তবে এক দিন আগে বুধবার মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকবর হোসেন।
তিনি বর্তমানে আলেকজান্ডার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আকবরের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর এখন মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম আব্বাছ, রিয়াজ হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবুল ফাতাহ।
রামগতি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী হেকমত আলী বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আকবর হোসেন লিখিতভাবে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আকবর ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তদবির করে ঢাকা থেকে মনোনয়ন এনেছেন। অথচ দুঃসময়ের নির্যাতিত নেতা আবু নাসেরের নাম তালিকার এক নম্বরে পাঠানো হলেও তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আকবরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
গত ৭ জানুয়ারি আলেকজান্ডার ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। এরপর ওই ইউনিয়নের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ জুন এই ইউনিয়নে উপনির্বাচন হবে।
তৃণমূল থেকে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাসের, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর, আলেকজান্ডার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন। তাদের মধ্যে আকবরকে মনোনয়ন দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন আকবর। সেখানে তিনি লেখেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে উপনির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। যারা রাতদিন কষ্ট করেছেন, তাদের কাছে আজীবন ঋণী থাকব। চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছি।’
আকবরের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘আমরা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিয়েছি। হঠাৎ আকবর আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এটি দলের জন্য অমঙ্গল হবে।
‘আকবরের নাম তিন নম্বরে পাঠানো হলেও তদবির করে মনোনয়ন এনেছেন। বিষয়টি জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে। তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় প্রেমিকের ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খালাস দেয়া হয়েছে ৮ জনকে।
রায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক সাউদ হাসান বুধবার দুপুরে এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এস আকবর খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩৩ বছর বয়সী দণ্ডিত ওই ব্যক্তির নাম মাধব চন্দ্র পাল। তার বাড়ি টাঙ্গাইল পৌরসভার এনায়েতপুর এলাকায়।
এজাহারে বলা হয়, মাধব পালের সঙ্গে প্রতিবেশী সত্যরঞ্জন পালের মেয়ে ও সদর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিথী রানী পালের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে মাধব তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে ২০১৫ সালের ১৫ মে বিথী ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসার পর সুস্থ্য হয়ে উঠলে এলাকায় সালিশ বৈঠকে মাধবের সঙ্গে তার বিয়ের দিন ঠিক হয়।
তবে ২০১৫ সালের ১৯ মে সকালে মাধব ফোনে বিথীকে জানায় চাপে পড়ে তিনি বিয়েতে রাজি হয়েছেন। বিয়ের পর বিথীকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। তিনি বিথীকে আত্মহত্যা করতে বলেন। এই ফোন পাওয়ার পর বিথী কান্নাকাটি শুরু করে এবং নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনার পর বিথীর বাবা বাদী হয়ে ওই দিনই মাধব, তার বাবা সুশীল পাল, মা আলো রানী পালসহ নয়জনকে আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষে সংগঠনটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আতাউর রহমান আজাদ বাদীকে আইনি সহায়তা দেন।
রায় ঘোষণার পর মাধব পালকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের শালমারা এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সতী নদী। গ্রামবাসীর পারাপারের জন্য নদীতে সেতু থাকলেও তা ভেঙে গেছে আগেই। সেই থেকে শুরু দুর্ভোগের।
বুক-সমান পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে পার হতে হয় গ্রামবাসীকে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন এক শিক্ষক। ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকো তৈরি করে গ্রামবাসীর দুঃখ লাঘব করেছেন তিনি।
ওই শিক্ষকের নাম ইব্রাহীম আলী। তিনি শালমারা ঘোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
সাঁকো তৈরির নেপথ্যে
শিক্ষক ইব্রাহীম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদীতে ব্রিজ ছিল, কিন্তু ভেঙে যায় নিম্নমানের কাজের কারণে। তখন থেকে শুরু হয় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্রিজটি সম্পর্কে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। ভাঙার পর থেকে মানুষের খুবই অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
‘আমার বাড়ি নদীর পশ্চিম এলাকায় আর স্কুল নদীর পূর্বে। প্রতিদিন বহু মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ভয়ে যাতায়াত করে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুল যাওয়ার জন্য আলাদা পোশাক সঙ্গে নিতে হয়। স্কুলে গিয়ে তারা পোশাক পরিবর্তন করে ক্লাস করে। আমি নিজেও লুঙ্গি ব্যাগে করে নিয়ে যাই। এগুলো আমার খুব খারাপ লাগে। তাই মনে মনে চিন্তা করলাম ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করলে মানুষের যাতায়াত করা একটু সহজ হবে।’
ইব্রাহীম আলী বলেন, ‘সেই চিন্তা থেকে ২০টি ড্রাম ও প্রায় ১০০ বাঁশ দিয়ে পানির ওপর ভাসমান ৫০ ফুট সাঁকো তৈরি করি। এতে দুই গ্রামের প্রায় ১৫-১৬ হাজার মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে।’
কী বলছেন গ্রামবাসী
নওদাবাস দাখিল মাদ্রাসার সুপার রুহুল আমিন বলেন, ‘শালমারা ঘাটে একটি ব্রিজ ছিল, সেটি হঠাৎ ভেঙে যায়। ভাঙার পর থেকে মানুষের খুবই অসুবিধা হয়। এখন সাঁকো দেয়ায় আমরা সুন্দরভাবে চলাচল করতে পারব।’
কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রতিদিন নদী দিয়ে অসংখ্য ছাত্রছাত্রীসহ বহু মানুষ যাতায়াত করি। এত দুর্ভোগের পরও কেউ দেখতে আসেনি। এক বুক পানি পার হয়ে চলাচল করছি। এই রোড দিয়েই হাট-বাজারসহ কালীগঞ্জ, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতে হয় আমাদের। স্যার ড্রামের ওপর ভাসমান ব্রিজ তৈরি করায় অনেক ভালো হয়েছে।’
একই এলাকার সাংবাদিক আব্দুল আলিম বলেন, ‘মৃতপ্রায় সতী নদী বর্ষকাল এলে প্লাবিত হয়, আবার খরার সময়ও পানি থাকে। এখানে একটি ব্রিজ ছিল, সেটি ভেঙে যায়। চন্দ্রপুর ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে এই নদীতে বয়ে গেছে। এই নদীর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজারও মানুষের চলাচল।
‘এ এলাকার প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে মানুষের যাতায়াতের জন্য। এখানে ২০টি ড্রামের ওপর বাঁশ দিয়ে ব্রিজটি করেছে। যেটি ভাসমান অবস্থায় থাকবে। যখন পানি বাড়বে তখন ভাসবে, আর যখন পানি কমবে তখন নিচে নামবে। এটি ভালো উদ্যোগ।’
ভিক্ষুক মজিবর বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ। চোখে দেখতে পারি না। একটা ব্রিজ দিছে তাও ভাঙি গেইছে বন্যায়। এখন আপনাদের কাছে আমার আবেদন- একটা বড় ব্রিজ করি দেন। আমাদের গরিব-দুঃখীর খুব কষ্ট হইছে।’
কলেজশিক্ষার্থী সজল বলে, ‘সাইকেল ঘাড়ে করে এক বুক পানি পার হয়ে এলাম। ব্রিজটি ভাঙার পর দুর্দশায় ভুগছি। এখানে দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ দেখেও না। আমরা খুব কষ্ট করে নদী পার হয়ে যাতায়াত করছি স্কুল-কলেজে।’
কবে পুনর্নির্মাণ হবে সেতু
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সতী নদীর ওপর আগে একটি ব্রিজ ছিল, সেটি ভেঙে যায়। এতে এলাকার মানুষের একটু অসুবিধা হলেও বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেশি হওয়ায় কাজ শুরু করেতে পারিনি। ব্রিজের টেন্ডার হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে।’
আরও পড়ুন:সাম্প্রতিক অভিযোগটি হলো, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এক ঠিকাদারের কাছে ভাড়া দিয়ে নানা ধরনের নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। আর সেই টাকা গ্রহণ করেছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
এবার সেই প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের আরেকটি মামলায় বুধবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ মার্চ ওই স্কুলের ছাত্র অভিভাবক মো. সিরাজুল ইসলাম গোপালগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৩ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও সভাপতি হান্নান মোল্লা ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, কোটালীপাড়া শাখার সঞ্চয়ী হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
অর্থ আত্মসাতের সেই মামলাটিতে জামিনে ছিলেন বান্ধাবাড়ী জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হান্নান মোল্লা। বুধবার তারা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে কোটালীপাড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনুশ্রী রায় তাদের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ওই স্কুলের মাঠ অবৈধভাবে ভাড়া দেয়ার সত্যতা যাচাই করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদাউস ওয়াহিদ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ মাঠটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলারও আয়োজন করা হতো। মাঠটি দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
বুধবার দুপুরে মাঠ দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাঁদপাড়া গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শতাধিক শিশু-কিশোরসহ স্থানীয় অনেক নারী-পুরুষ।
মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন করেন প্রতিবাদকারীরা। মানববন্ধন শেষে খেলার মাঠ রক্ষার দাবি জানিয়ে ইউএনও এর কাছে গণস্বাক্ষর করা একটি লিখিত অভিযোগ দেন তারা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, উপজেলার চাঁদপাড়া এলাকায় ছোট যমুনা নদীর তীরসংলগ্ন সুজাপুর মৌজার ১৮১৫ দাগের সম্পত্তিটি সরকারি এবং এসএ খতিয়ানে তা জনসাধারণের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জায়গাটিকে বছরের পর বছর ধরে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলাও অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। কিন্তু ওই এলাকার পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর প্রভাব খাটিয়ে নিজের সম্পত্তি দাবি করে মাঠটি দখল করে নিয়েছেন।
এর আগে মাঠটি উদ্ধারে চাঁদপাড়া এলাকাবাসী পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই বাধ্য হয়ে মাঠ উদ্ধারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নেমেছেন তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় সুমন, লুৎফর, মৃদুলসহ এলাকাবাসী জানান, তারা অনেক বছর ধরে ওই মাঠটিতে খেলাধুলা করে আসছেন। এ ছাড়া তাদের আর কোনো মাঠ নেই। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজেদুর হঠাৎ করেই মাঠটি দখলে নিয়ে খেলার পরিবেশ নষ্ট করেছেন। তাই খেলার মাঠটি উদ্ধারে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।
এদিকে পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান বলেন, ‘দখল নেয়া জায়গাটি আমার বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তি; যার দাগ নম্বর ১৮১৬। আমি কারও জায়গা দখল করিনি। এলাকাবাসীর দাবি করা জমিটি ১৮১৫ দাগের। সেই অনুযায়ী তাদের জমি আলাদা।’
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আলহাজ মাহমুদ আলম লিটন বলেন, ‘এলাকাবাসীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
অভিযোগ পেয়েছেন উল্লেখ করে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় চলতি মৌসুমে গুটিজাতের আম নামানো শুরু হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বুধবার জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো আম কেনাবেচার ‘উৎসব’।
বাজারে নিরাপদ ও পরিপক্ব আম সরবরাহ নিশ্চিতে আগে থেকেই এই সূচি ঠিক করেছিল জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় জাতভেদে আম নামানোর সম্ভাব্য তারিখ জানানো হয়। সভায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও আমচাষি, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় গুটিজাতের আম নামানোর তারিখ ঠিক করা হয় ২৫ মে।
এ ছাড়া গোপালভোগ ৩০ মে ও ক্ষীরসাপাত বা হিমসাগর ৫ জুন, নাগ ফজলি ৮ জুন, ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙ্গা ১২ জুন, ফজলি আম ২২ জুন ও আম্রপালি ২৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সর্বশেষ ১০ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা, বারী-৪ ও গৌরমতি জাতের আম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বাগানমালিক, ব্যবসায়ী, জেলা প্রশাসন সবার সঙ্গে আলোচনা করে আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তারিখ অনুযায়ী আম সংগ্রহ করতে জেলাজুড়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। পরিপক্ব ও ক্ষতিকারক কেমিক্যালমুক্ত আম খাওয়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে চাষিরা গুটি আম নামাতে শুরু করেছেন। এর মধ্য দিয়ে জেলায় আম নামানোর উৎসব শুরু হলো।’
উন্নত জাতের আমগুলো নামানোর জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করলে ভালো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে যদি কোনো বাগানের আম পেকে যায়, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে চাষিরা আম পাড়তে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশে নওগাঁর আমের খুব সুনাম রয়েছে। এ জন্য কয়েক বছর থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আম পাকানো, সংরক্ষণ বা বাজারজাতে কেমিক্যালের ব্যবহার ঠেকাতে নজরদারি রয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৫০ টন। আশা করা হচ্ছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ টন আম উৎপাদন হবে। যার বিক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৪২ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এর মধ্যে বিদেশে আম রপ্তানির জন্য কয়েকজন আমচাষিকে প্রশিক্ষণ ও নিরাপদ আম প্রস্তুতের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তাদের বাগান থেকেই আম ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, দুবাই, কাতার, সুইডেন ও ওমানে রপ্তানি করা হবে।
মন্তব্য