আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এই রাত। পবিত্র রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে শবে কদর পালন করা হয়।
ইসলাম ধর্মমতে শবে কদরের রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়। এ রাতকে ঘিরে নাজিল হয় আল-কদর নামে একটি সুরা।
শব শব্দের অর্থ রাত। আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, ভাগ্য। তাই এই রাতকে বলা হয় মর্যাদা বা ভাগ্যের রাত।
বলা হয়, অন্য যেকোনো দিনের ইবাদতের চেয়ে শবে কদরের রাতের ইবাদতে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এ রাতে দেশের মুসলমান সম্প্রদায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদে ছুটে যায়। নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন তারা। মহান আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে নিজেদের গুনাহ মাফ চান।
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শবে কদরের রাতে দেশের অব্যাহত অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্ষণস্থায়ী জীবনে হাজার মাসের চেয়েও বেশি ইবাদতের নেকি লাভের সুযোগ এনে দেয় এই রাত। এই মহিমান্বিত রজনী সবার জন্য ক্ষমা, বরকত, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ বয়ে আনুক মহান আল্লাহর দরবারে এ মোনাজাত করি।’
ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এমন একটি সময়ে পবিত্র রমজান মাস পালন করা হচ্ছে, যখন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে করোনা মহামারি, সংঘাত, যুদ্ধবিগ্রহ, অভাব-অনটনসহ বিভিন্ন কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্বিষহ দিন অতিবাহিত করছে।’
শবে কদরের এই পবিত্র রাতে এসব সংকট থেকে উত্তরণে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনার আহ্বান রেখেছেন রাষ্ট্রপতি হামিদ।
দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে এই মহিমান্বিত রজনীতে মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে বিশেষভাবে ইবাদত ও দোয়া প্রার্থনা করি যেন আল্লাহ বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি দেন।’
পবিত্র এই রজনীতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম জাহানের উত্তরোত্তর উন্নতি, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন শেখ হাসিনা।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর হজযাত্রা বন্ধ ছিল। তাই কোনো ব্যস্ততা ছিল না রাজধানীর আশকোনার হজ ক্যাম্পে। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছেন হজযাত্রায়।
আর কয়েক দিন পরই শুরু হবে হজ ফ্লাইট। তাই ধুয়ে-মুছে সাফসুতরো করার কাজ চলছে হজ ক্যাম্পে।
রোববার দুপুরে হজ ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ধোয়া-মোছার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। কেউ কেউ রঙ করছেন দেয়ালে। কেউবা বাথরুম ঠিক করছেন। কয়েক জনকে দেখা যায় দেয়ালে প্লাস্টার করতে।
সেখানে কাজ করা শ্রমিক আব্দুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ দিন ধরে এখানে সব ধরনের স্যানিটারির কাজ করছি। এই কাজ করছেন ৬০ জনের বেশি শ্রমিক। দুই দলে ভাগ হয়ে কাজ করছি। দুই-এক দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে আমাদের। ক্যাম্পের ভেতরে সব রুম, বাথরুম থেকে শুরু করে পুরা হজ ক্যাম্প পরিপাটি করা হচ্ছে।’
রাজধানীর আশকোনার হজ ক্যাম্প। ছবি: নিউজবাংলা
হজযাত্রীদের সেবা দিতে সৌদি আরব যাচ্ছেন ৫৩২ কর্মকর্তা-কর্মচারী। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। আর সর্বনিম্নটি হলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা।
প্রথম হজ ফ্লাইট ৩১ মে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা। শুরুর ফ্লাইটে ৪১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যাওয়ার কথা রয়েছে।
হজের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম সচিব ও হজ অফিস ঢাকার পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী বেসরকারিভাবে এবং ৪ হাজার সরকারিভাবে হজে যাচ্ছেন। আমাদের সময় যেহেতু অল্প, তাই অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে পাশে রেখেই কাজগুলো আমাদের করতে হচ্ছে। আশা করছি সময়মতো সব কিছু আমরা শেষ করতে পারব। ইতোমধ্যে নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যাও প্রায় সব পেয়ে গেছি।’
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে যাবেন। এর আগের কয়েক দিনে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ যাত্রীরা যাবেন বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘হজ ক্যাম্পকে আগের থেকে অনেক পরিপাটি করা হয়েছে। আমাদের মসজিদে এসি ছিল না। ডরমেটরিতে এসি ছিল না। গরমের কথা বিবেচনা করে আমরা চিন্তা করছি এসি না থাকলে সম্মানিত হজযাত্রীরা কষ্ট পাবেন। এ জন্য আমরা সব ব্যবস্থা করেছি।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর হজযাত্রা বন্ধ থাকার পর এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছেন হজযাত্রায়। তাই রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। হজ ক্যাম্পের ভেতরে ধোয়া-মোছার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। ছবি: নিউজবাংলা
‘বাংলাদেশ বিমানের হজযাত্রীরা শুধু এখানে বোডিং কার্ড নিতেন এবং ইমিগ্রেশন হতো। এখন সৌদি এয়ারলাইন্সের যাত্রীরাও এখানে আসবেন। এখানে চেকিং হবে। তারা বোর্ডিং কার্ড নেবেন এবং ইমিগ্রেশন হবে। সে জন্য এখানে যা যা করা দরকার, স্থাপনা করা দরকার সব করেছি। চট্টগ্রাম ও সিলেট বাদে আমাদের এখান থেকে যত যাত্রী ফ্লাই করবেন, সকলকেই আমরা ইনিস্টিটিউটের আওতায় আনতে পারব। তিনটি এয়ারলাইন্সেই এখান থেকে হজযাত্রীদের চেকিং, ইমিগ্রেশন হবে।’
হজযাত্রীরা ঢাকার হজ ক্যাম্পে কবে থেকে আসা শুরু করবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৩১ মে ফ্লাইট শুরু হওয়ায় ঢাকার বাইরের যাত্রীদের তিন দিন আগে আসার জন্য আমরা অনুরোধ করব। ঢাকার হাজিদের আমরা বলে থাকি ফ্লাট ছাড়ার সাত-আট ঘণ্টা আগে আসলেই চলবে। আশা করছি হজযাত্রীরা ২৮ মে বিকেলে অথবা ২৯ মে সকাল থেকে আসা শুরু করবেন। তাদের থাকার জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমাদের এখানে দুটা ক্যান্টিন আছে। সেখানে তারা নিজ ব্যবস্থাপনায় খাবেন।’
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক পরিবহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক বহন করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:চলতি মৌসুমের হজ ফ্লাইট ৩১ মে উদ্বোধন হলেও নিয়মিত ফ্লাইট শুরু হচ্ছে আরও দেরিতে। তাই অপেক্ষা করতে হবে হজ যাত্রীদের। ৫ জুন থেকে নিয়মিত হজ ফ্লাইট শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
অবশ্য সূচি চূড়ান্ত না হলেও আগামীকাল মঙ্গলবার তা চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে (সোমবার) সৌদি সরকারের কর্মকর্তারা আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমাদের একটি মিটিং হয়েছে। আমরাও একটি মিটিং করব, এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
‘৫ জুন থেকে ফ্লাইট হবেই। আমাদের একটি বিষয় ঠিক করা আছে যে, ৩১ মে প্রথম ফ্লাইট করব; আর ৫ জুন থেকে বাকি ফ্লাইটগুলো শুরু করব।’
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বলছেন, চূড়ান্ত ফ্লাইট শুরু হতে পারে ৫ জুন থেকে।
প্রায় দুই বছর পর এবার বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন মুসল্লিরা। এবার হজ মৌসুমে সৌদি আরবে হজযাত্রীদের নিয়ে হাজির হওয়া প্রথম ফ্লাইট হতে চায় বাংলাদেশ। সে লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর কথা জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়।
২০১৫ সালে মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।
এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রস্তাবিত হজ সূচিতে অনুমোদনও দিয়েছে সৌদি সরকার।
উদ্বোধনী ফ্লাইটের পর আরও কিছু সময় চূড়ান্ত ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে এমন ধারণা দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষও।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ৩১ মের উদ্বোধনী ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত আছি। তারপরও যেভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় আমাদের বলেছে যে, গ্যাপ দিয়ে মনে হয় বাকিগুলো করতে পারবে, আমরা সেভাবেই ঠিক রেখেছি। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুত আছি।
‘আমরা যেভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে ফ্লাইট চেয়েছি বা বলেছি, সেভাবেই অনুমোদন পাওয়া গেছে। আমরা অনুমোদিত সিডিউল পেয়েছি, আমরা আমাদের দিক থেকে প্রস্তুত আছি।’
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকার।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে এবার দলিত পুরোহিতের চিবানো মিষ্টি হাসিমুখে খেয়ে নিলেন ভারতের এক মুসলিম রাজনীতিবিদ।
বেঙ্গালুরুর চামরাজপেট আসনের বিধায়ক (এমএলএ) জামির আহমেদ খান রোববার দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব আম্বেদকর জয়ন্তী এবং মুসলমানদের ঈদে মিলন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সেখানে বক্তব্য দেয়ার মাঝে একটি মিষ্টি তিনি তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোহিতকে খাইয়ে দেন। এরপর পুরোহিতকে চিবানো মিষ্টি মুখ থেকে বের করে তার মুখে দেয়ার অনুরোধ করেন এমএলএ নিজেই।
এতে পুরোহিত কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বিধানসভার সদস্যের অনুরোধে নিজের চিবানো মিষ্টি পুড়ে দেন এমএলএ-র মুখে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তুলে ধরতে বিধায়কের এমন দৃষ্টান্তমূলক সম্প্রীতির ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে উসকে দিয়ে ফায়দা আদায় করা রাজনীতিকদের উদ্দেশ করে বিধায়ক জামির আহমেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদী দল ভারতের মাটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
চারবারের বিধায়ক জামির খান এর আগে খাদ্য ও নাগরিক অধিকার, ভোক্তা অধিকার এবং সংখ্যালঘুদের কল্যাণবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের হজযাত্রা ঝামেলাহীন করতে ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
সম্প্রতি হজ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত পর্যালোচনায় এক সভা থেকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।
এটি ছাড়াও সভায় আরও আটটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ হজসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাবকে সিদ্ধান্তগুলো জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
সভায় বিমানকে ফ্লাইট বিপর্যয় ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি হজযাত্রী পরিবহনে সম্ভাব্য সব ফ্লাইট ডেডিকেটেড হতে হবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়।
হজযাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে সব এয়ারলাইনসকে রুট-টু-মক্কা ইনিশিয়েটিভের বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, হজযাত্রীদের সব ইমিগ্রেশন হজ ক্যাম্পেই করতে হবে। এ লক্ষ্যে হজ ক্যাম্পে প্রয়োজনীয়সংখ্যক বুথ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত হিসেবে বিমানবন্দরে দুটি বুথ স্থাপন করতে হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, সুষ্ঠুভাবে ইমিগ্রেশন সম্পন্নের জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রিম সরবরাহ করতে হবে। হজযাত্রীদের আরটি-পিসিআর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল নির্ধারণসহ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হজযাত্রীদের কোভিড-১৯ টিকা নেয়া সংক্রান্ত সুরক্ষা অ্যাপে থাকা তথ্যপ্রাপ্তি হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত যথাযথ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
সিদ্ধান্তের মধ্যে আরও রয়েছে, হজযাত্রীদের যাতে কোনো কষ্ট না হয় সে লক্ষ্যে হজ ক্যাম্পে সব সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষণিক সেবাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। এয়ারপোর্ট থেকে হজ ক্যাম্পে যাতায়াতের রাস্তা সচল ও বাধাহীন রাখতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২০২২ সালের হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থা কর্তৃক নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ মে থেকে শুরু হচ্ছে এ বছরের হজ ফ্লাইট। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি হলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক বহন করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের প্যাকেজ নির্বাচন, নিবন্ধন স্থানান্তর ও নিবন্ধনের সময় আরও দুই দিন বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
রোববার রাতে মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১-এর নিবন্ধন কার্যক্রম ২২ মে সন্ধ্যায় বন্ধ করা হয়েছে। শূন্য কোটা পূরণের জন্য সরকারঘোষিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী বর্ধিত সময়সূচি ঘোষণা করা হলো।
নিবন্ধনের অর্থ পরিশোধে বর্ধিত সময়ের শুরু ২৩ মে। বর্ধিত সময়ের শেষ হবে ২৪ মে (ব্যাংকিং সময় পর্যন্ত)।
বর্ধিত সময়ে প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ২৫ হাজার ৯২৫ থেকে ২৭ হাজার ১০৫ পর্যন্ত হজযাত্রীরা নিবন্ধনের আওতায় আসবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ সময়ে নিবন্ধনকারী ব্যক্তিরা শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-২-এর অধীনে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন, কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন:শুরুতে অনিশ্চয়তা থাকলেও সময় যত গড়াচ্ছে নির্ধারিত দিনে হজ ফ্লাইট শুরুর বিষয়ে অনিশ্চয়তা তত কাটছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চলতি বছরের হজ সূচিতে অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার।
প্রায় দুই বছর পর এবার বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজব্রত পালনের সুযোগ পাচ্ছেন মুসল্লিরা। এবার হজ মৌসুমে সৌদি আরবে হজযাত্রীদের নিয়ে হাজির হওয়া প্রথম ফ্লাইট হতে চায় বাংলাদেশ। সে লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর কথা জানাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিমান বলছে, হজ ফ্লাইট শুরু করতে তাদের সব প্রস্তুতি নেয়া আছে।
২০১৫ সালে মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এ বছরও একই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হজ ফ্লাইটের জন্য যে সিডিউল দেয়া হয়েছিল, তা সৌদি সরকার অনুমোদন করেছে। আমরা আশা করি, ৩১ মে প্রথম ফ্লাইট শুরু করতে পারব। আমার ২০১৫ সালের কথা স্পষ্ট মনে আছে। বাংলাদেশের বিমানের মৌসুমের প্রথম ফ্লাইটটি যখন সৌদিতে গেল এবং এটাই ছিল সে বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট।
‘আমরা চেষ্টা করব এবারও প্রথম ফ্লাইটটি করতে পারি কি না। আমাদের প্রথম ফ্লাইট যেটা যাবে, তা যদি প্রথম হয়, তবে সেটাকে সৌভাগ্য বলেই মনে করি। ২০১৫ সালে হয়েছিল। এবার হবে কি না জানি না, তবে আমরা চেষ্টা করছি। এবার সব যাত্রী যাতে ডেডিকেটেড ফ্লাইটে যেতে পারে, আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বলছে, এরই মধ্যে ৩১ মে ফ্লাইট শুরু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ৩১ মের জন্য প্রস্তুত আছি। তারপরও যেভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় আমাদের বলেছে যে, গ্যাপ দিয়ে মনে হয় বাকিগুলো করতে পারবে, আমরা সেভাবেই ঠিক রেখেছি। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুত আছি।
‘আমরা যেভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে ফ্লাইট চেয়েছি বা বলেছি, সেভাবেই অনুমোদন পাওয়া গেছে। আমরা অনুমোদিত সিডিউল পেয়েছি, আমরা আমাদের দিক থেকে প্রস্তুত আছি।’
মৌসুমের প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মাথায় রেখেই এগোচ্ছি। এখন সব দিক থেকে যদি সম্ভব হয়। ওনাদের দিক থেকে যদি সব শেষ করে হজযাত্রী দিতে পারেন, তাহলে আমরা চেষ্টা করছি।’
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি হলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক বহন করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হজযাত্রীদের সেবা দিতে সৌদি আরব যাচ্ছেন ৫৩২ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ তালিকায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, চিকিৎসক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকছেন। এতে সরকারের খরচ হবে অন্তত ২৪ কোটি ৫৭ হাজার ৮৪ হাজার টাকা।
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন চার হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
প্রতি বছরই হজ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সৌদি আরবে পাঠানো হয়। এই দলে থাকেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, চিকিৎসকসহ নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ বছর কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী সৌদি আরব যাচ্ছেন জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে অনেকগুলো ক্যাটাগরি আছে। একটি হলো প্রতিনিধি দল। ১০ জনের এই দলে মন্ত্রী বা সচিবরা থাকতে পারেন। আমাদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বা অন্য সদস্যরাও থাকতে পারেন।
‘এ ছাড়া ৪০ জনের একটি প্রশাসনিক টিম আছে। এই টিমে সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব বা উপসচিবরা থাকেন। এ রকম প্রত্যেক সেক্টরেই কোটাভিত্তিক ভাগ করা আছে। যেমন ডাক্তার কতজন যাবেন বা নার্স কতজন যাবেন তাদের একটি কোটা আছে। এখানে সবই কোটাভিত্তিক ভাগ করা আছে। সব মিলিয়ে ৫৩২ জন যাবেন।
সৌদি সরকারই এই বিভাজনটা করে রেখেছে, আমাদের করা নয়। তারা পাঠিয়েছে, আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি।’
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। আর সর্বনিম্নটি হলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। সর্বনিম্ন প্যাকেজটি ধরে হিসাব করলেও যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সৌদি আরব যাচ্ছেন তাদের পেছনে সরকারের খরচ হবে ২৪ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
চলতি হজ মৌসুমে বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট ৩১ মে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা। শুরুর ফ্লাইটে ৪১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য বছর হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের সহায়তা করতে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ লোক সৌদি আরবে যেতেন। এবার যাচ্ছেন মাত্র ৫৩২ জন। বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যাচ্ছেন অন্য সময়ের তুলনায় অর্ধেক। সে হিসাবে ৯০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী যাওয়ার কথা। সেখানে এবার যাচ্ছেন মাত্র ৫৩২ জন।’
হজযাত্রীরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থেকে তেমন কোনো সেবা পান না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি। বিগত সময়ে যারা গেছেন, আল্লাহর মেহমানদের সেবা করতেই গেছেন। সেবাদানে ত্রুটি করে থাকলে আল্লাহর কাছে তাদের দায়বদ্ধতা আছে; সরকারের কাছেও আছে। সেটা হয়তো সেভাবে দেখা হয়নি। এবার আমরা খুঁটিনাটি বিষয় আলোচনা করে অতীতের ভুলত্রুটির পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যবস্থা করেছি।’
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক বহন করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য