সাতক্ষীরার তালায় কলেজছাত্রকে মারপিট ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নামে হওয়া মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হননি। পুলিশ বলছে আসামিরা পলাতক। তবে স্থানীয়রা বলছেন, অভিযুক্তদের কেউ কেউ এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রধান আসামির ভাইয়ের সঙ্গে তালার মাঝিয়াড়া বাজারে সোমবার রাতে ‘দীর্ঘক্ষণ বৈঠক’ করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, পথে দেখা হওয়া আসামিপক্ষের এক স্বজনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে মাত্র। তবে এ ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ।
জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী বলছেন, তদন্তসংশ্লিষ্ট বিষয়ের বাইরে আসামিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা আইনবহির্ভূত।
নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র শোয়েব আজিজ তন্ময় তালা সদরের জাতপুর গ্রামের নার্সারি ব্যবসায়ী শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে। তন্ময়ের অভিযোগ, রোববার তালা সরকারি কলেজের একটি কক্ষে তাকে দুপুর ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নির্যাতন করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মাথা ন্যাড়া করে বিবস্ত্র অবস্থায় মারপিট ও ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর বাড়িতে ফোন দিয়ে তার মায়ের কাছে দুই লাখ টাকা চাওয়া হয়।
কেন মারধর করা হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে তন্ময়ের চাচাতো ভাই জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘মারধর করার আগে আকিব (ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত) তাকে (তন্ময়কে) বারবার জিজ্ঞাসা করেছে, কেন সে তার চাচাতো বোনকে হুমকি দিয়েছে। তবে তন্ময় তাকে (আকিব) বলেছে, যদি সে কারও সঙ্গে এ রকম করে থাকে তবে তাকে হাজির করতে। এই কথা শোনার পরও তারা থামেনি। লাঠি, রড দিয়ে মারধর করেছে।’
এ ঘটনায় রোববার রাতেই মামলা করতে যান কলেজছাত্রের বাবা আজিজুর রহমান। মামলা গ্রহণ না করায় রাত ৩টার দিকে তিনি চলে আসেন। পরদিন দুপুরে মামলা নথিভুক্ত হয়। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, তালার মাঝিয়াড়া গ্রামের সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকিব, হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র চক্রবর্তী, তালা গার্লস স্কুলের পাশের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী জে. আর সুমন, তালার মহান্দি গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী মো. জয় ও তালা সদরের ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ হাসান উৎস।
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তালা থানার ওসি-তদন্ত আবুল কালাম আজাদ বলছেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আসামিরা এখন পলাতক।
তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী হাসান আলী বাচ্চু বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ হাসান উৎসকে সোমবার সন্ধ্যায় তালা বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখেছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাঝিয়াড়া বাজারের একজন জানান, মাঝিয়াড়া বাজারের নুর ইসলামের দোকান থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সোমবার রাতে তদন্ত কর্মকর্তা চন্দন কুমার ও মামলার প্রধান আসামির মেজ ভাই খালিদ হাসান বৈঠক করেন। দূরে দাঁড়িয়ে আমি তাদের মধ্যে কী আলোচনা হচ্ছে সেটি শুনতে পাইনি। রাত অনেক হওয়ায় তখন বাজারে মানুষের উপস্থিতি কম ছিল।
‘অনেকক্ষণ দেখার পর আমি তাদের দিকে এগিয়ে যাই। তখন এসআই চন্দন বলতে থাকেন, দ্রুত জামিনের ব্যবস্থা করেন ভাই। না হলে কিন্তু আমি আটক করব।’
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই চন্দন কুমার বলেন, ‘আমি রাতে ওইদিকে গিয়েছিলাম। তখন খালিদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল এবং একটু কথা হয়।’
কী কথা হয়েছিল এই প্রশ্নের জবাব দেননি এসআই চন্দন।
আসামির ভাইয়ের সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তার বৈঠকের বিষয়ে তালা থানার ওসি-তদন্ত বলেন, এমন হতে পারে আসামির বাড়ি চিনে নিতে তিনি কথা বলেছেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী সাহেদুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ তদন্তের স্বার্থে সবার সঙ্গে কথা বলতে পারে। তবে তদন্তের বাইরে কোনো বিষয়ে আলোচনা করে থাকলে সেটি আইনবহির্ভূত।’
মামলার বাদী আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা মামলা করতে গেলেও পুলিশ সময়মতো আমাদের মামলা নেয়নি। আবার আসামির স্বজনদের সঙ্গে বৈঠক করছে। তাহলে আমরা কি ন্যায়বিচার পাব না?
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। বাকি বিষয়গুলো আমরা দেখব।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পাথরবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৪ আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌরীনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটগামী পাথরবাহী একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে ৬ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার লুবিয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী নয়ন মিয়া।
এ ঘটনায় নয়ন মিয়ার ভাই ৪০ বছর বয়সী হারুন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শাহ আলম, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রঞ্জিত সাহার ছেলে ২৩ বছর বয়সী পার্থ সাহাসহ অজ্ঞাতনামা আরও একজন আহত হয়েছেন।
চলমান তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশ অমান্য করায় টাঙ্গাইলের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছেন গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার সূতি পলাশ মহল্লার দারুল কোরআন ও কওমী মাদ্রাসায় যান ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। সেখান গিয়ে তিনি দেখতে পান সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে টিনের ঘরে দমবদ্ধ পরিবেশে ছোট ছোট শিশুরা ক্লাস করছে।
তিনি উপস্থিত হওয়ার পরপরই গরমে রায়হান নামের প্রথম শ্রেণির এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। অথচ সেখানে কোনো পানির ব্যবস্থা ছিল না। এমতাবস্থায় ইউএনও তার গাড়িতে রাখা খাবার পানি এনে শিশুটির মাথায় ও চোখমুখে দেয়ার ব্যবস্থা করান।
খবর পেয়ে শিশুটির বাবা বাছেদ মিয়া সেখান হাজির হন এবং চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যান।
পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বাছেদ মিয়া বলেন, প্রচণ্ড গরমে যেখান কোথাও একদণ্ড তিষ্ঠানো (থাকা) যায় না, সেখান প্রতিষ্ঠান প্রধান সরকারি নির্দেশে ছুটি না দিয়ে জলন্ত দুপুরজুড়ে ক্লাস নেন। অভিভাবকরা সন্তানদের ক্লাসে পাঠাতে বাধ্য হন।’
তিনি বলেন, ‘দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। তখন টিনের ঘর নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানে আইপিএস বসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফিসও আদায় করা হয়েছে, কিন্তু আইপিএস বসানো হয়নি।’
সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে ক্লাস চালু রাখায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শেখ সাদী ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সরকারি নিয়ম মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে মুচলেকা দেন।
এরপর তপ্ত দুপুরজুড়ে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ পেয়ে পৌর শহরের কোনাবাড়ী বাজারে লাইটহাউজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড আলহেরা নূরানী মাদ্রাসায় হাজির হন ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। সেখানে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা পান তিনি।
ওই স্কুলের কয়েকজন অভিভাবক নিউজবাংলাকে জানান, স্কুলপ্রধান মৌখিক ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোনো শিশু ক্লাস না করলে পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হবে। ফলে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের ক্লাসে পাঠাচ্ছেন।
ওই স্কুল ও মাদ্রাসাপ্রধান হাবিবুর রহমানও ইউএনওর কাছে মুচলেকা দেন।
ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যের চেয়ে শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে, শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রেখে কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য