কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ডেনমার্কের রাজকুমারী ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন। এ সময় ক্যাম্পে দৈনন্দিন জীবনযাপন ও নানা বিষয় নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন রাজকুমারী।
রাজকুমারী ম্যারি মঙ্গলবার সকালে উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান। প্রথমে তিনি ৫ নম্বর ক্যাম্পে যান।
পরে ৬ ও ৮ নম্বর ক্যাম্পে ডেনমার্কের সংস্থা ডেনিশ রিফিউজি কাউন্সিল পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ঘুরে ঘুরে দেখেন। রাজকুমারী ক্যাম্পে পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। নিজেও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে অংশ নেন।
এ ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন এবং বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে রাজকুমারী ক্যাম্পের মানবিক কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদের থেকে জানা যায়, রাজকুমারীর ক্যাম্প পরিদর্শনে দিনব্যাপী কর্মসূচিতে রয়েছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও বিকেলে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেনিশ রিফিউজি কাউন্সিল পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করা।
তিন দিন রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার সকালে বাংলাদেশে এসে বিকেলে একটি বেসরকারি বিমানে কক্সবাজারে পৌঁছান তিনি। বুধবার সকালে রাজকুমারী হেলিকপ্টারে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কালিয়াকৈরের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের কারখানায় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার সময় আগুন লেগে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর সোমবার রাত ৮টায় সাংবাদিকদের একথা জানান ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (অপারেশন) লেফট্যানেন্ট কর্নেল রেজাউল করিম।
তিনি জানান, আগুনে স্যালাইন ও নানা ট্যাবলেট তৈরির বিপুল উপকরণ ও কেমিক্যাল পুড়ে গেছে।
কারখানার লার্জ ভলিউম প্যারেন্টাল ইউনিটে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের ৭ ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রেজাউল বলেন, ‘আগুন নেভাতে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল কারখানার বিশাল আয়তন। প্রায় ৬০-৭০ হাজার স্কয়ার ফিটের কমপেক্ট কারখানার বহুতল ভবনটিতে সংস্কার ও ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। সেখান থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।
‘অনেক বড় বিল্ডিং এবং চারিদিক থেকে প্রবেশপথ খুবই স্বল্প ছিল। স্টিল এবং গ্লাসের পার্টিসান ছিল, সেগুলো ভেঙে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়েছে। এ কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এর ফলে দুপুরের দিকে আগুনের ব্যপকতা বেড়ে যায়। বিকেল নাগাদ আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।’
তিনি জানান, এত বড় কোম্পানিতে যে পরিমাণ নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকার কথা, তা ছিল কি না সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিয়ের দাবিতে এক যুবকের বাড়িতে অবস্থান নেয়া তরুণী ওই যুবকের নামে ধর্ষণের মামলা করেছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সোমবার দুপুরে তিনি ওই মামলা করেন বলে জানান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না।
এর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামে দেলোয়ার হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ির সামনে অবস্থান নেন ওই তরুণী। দেলোয়ার তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন। তবে বাড়িতে নেই দেলোয়ার।
মামলার বরাত দিয়ে পরিদর্শক জহিরুল জানান, দেলোয়ারের সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক চলছে ১৩ বছর ধরে। বিয়ের আশ্বাস দেয়ায় তার সঙ্গে বাদীর একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। হঠাৎ বাদী জানতে পারেন আগামী বৃহস্পতিবার পারিবারের পছন্দে দেলোয়ার অন্য কাউকে বিয়ে করছেন।
এ কারণে তিনি বিয়ের দাবিতে দেলোয়ারের বাড়িতে অবস্থান নেন।
সোমবার সন্ধ্যায় মেয়ের বড় ভাই নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার পরামর্শে বোন অনশন ভেঙেছে। তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে বলে জানিয়েছে। এখন সে ধর্ষণ মামলা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছে।’
থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘মামলার পর তরুণীর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামির বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে হত্যার মামলায় গিয়াসউদ্দিন শেখকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এর আগে তিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম চতুর্থ আদালতে সোমবার বিকেলে তোলা হলে বিচারক রকিবুল হক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন নিউজবাংলাকে এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গিয়াসের নামে তার শ্যালক মো. মোশারফ রোববার রাতে বেলাব থানায় হত্যা মামলা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে গিয়াসের দেয়া তথ্যের বরাতে পরিদর্শক সালাউদ্দিন জানান, তিনি রংমিস্ত্রির ঠিকাদারের কাজ করেন। তার জমি ও বাড়ি নিয়ে প্রতিবেশী রেনু শেখের সঙ্গে অনেকদিনের বিরোধ ছিল। তিনি নিয়মিত জুয়া খেলতেন। জুয়ার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, এলাকার লোকজন ও শ্বশুরবাড়ির অনেকের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন বিভিন্ন সময়। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো ঋণ তার। পাশাপাশি আরেক নারীর সঙ্গে তার বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কও চলছিল।
গিয়াস পিবিআইকে আরও জানান, ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে রেনু শেখের সঙ্গে জমির বিরোধের জেরে তার তর্কাতর্কি হয়, যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। এরপর থেকে রেনুর উপর ক্ষুব্ধ হন তিনি। সেইসঙ্গে ঋণ পরিশোধের চাপও ছিল। তিনি ভাবেন, স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে রেনুকে ফাঁসিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে নিতে পারবেন ও বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারবেন। সেই ধারণা থেকে তিনি স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
আরও পড়ুন:অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। পরে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছে চেম্বার আদালত।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আগামী ৩০ মে আপিল বিভাগে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
জামিন বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন সম্রাট।
চেম্বার আদালতে সম্রাটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
১৮ মে হাইকোর্ট সম্রাটের জামিন বাতিল করে সাত দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে আদেশটি স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন সম্রাট।
গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দেয় ঢাকার বিশেষ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান।
সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগে মামলা হয়। মামলা করে দুদকও। সব মামলাতেই তিনি জামিনে ছিলেন।
দুদকের মামলা থেকে জানা গেছে, ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলা করেন।
২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন দুদকের ওই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মোহম্মদ সেলিমকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালটির কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক নিউজবাংলাকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বেলা ১১টার সময় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি ৫১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন। তিনি আমার অধীনেই চিকিৎসাধীন। ভর্তির পর তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার পরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট পাওয়া যাবে। তখন হয়তো এ বিষয়ে জানতে পারব। ওনার আগে থেকেই তো অনেক সমস্যা রয়েছে। ওনার হার্ট, ব্রেনে সমস্যা রয়েছে। রিপোর্ট আসলে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
হাজি সেলিমের চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
হাইকোর্টের নির্দেশে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের পর দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য রোববার আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক সে দিনই তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানোর আদেশ শোনার পর আদালত চত্ত্বরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন হাজি সেলিম। তাকে চিকিৎসা ও কারাগারে ডিভিশনের জন্যও আবেদন করেন তার আইনজীবী। পরে আদালত এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে তাদের আইনে ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেয়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচারিক আদালত হাজি সেলিমকে ১৩ বছরের দণ্ড দিয়েছিল। রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০২০ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল বেঞ্চ তার ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই রায় প্রকাশ হয়। এতে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
গত ৯ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট।
এই হিসেবে ৯ এপ্রিলের মধ্যে কেন হাজি সেলিম আত্মসমর্পণ করেননি, সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তার আইনজীবী।
তার আইনজীবী জানান, ২০২১ সালের মার্চ মাসে মৌখিকভাবে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে। এরপর চলতি বছরের ৯ মার্চ অনলাইনে রায়টি প্রকাশ করা হয়। আর রায়টি অফিশিয়ালি বিচারিক আদালতে কমিউনিকেট করা হয় গত ২৫ এপ্রিল। সে হিসেবে তারপর থেকে এক মাস, অর্থাৎ ২৫ মে পর্যন্ত সময় হাতে রয়েছে।
আরও পড়ুন:সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নামতে শুরু করেছে পানি। সোমবার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সব কটি পয়েন্টেই কমেছে। তবে এখনও বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত রয়েছে।
এদিকে পানি কমতে থাকায় ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বন্যায় সিলেটে ধান ও মাছের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলার প্রায় ৫৮২ কিলোমিটার সড়ক ডুবে যায়। এর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২৬৭ কিলোমিটার এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন ১০ সড়কের ৬৫ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে যায়। এসব সড়কের বেশির ভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ভেঙে গেছে দুটি কালভার্টও।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব সড়কের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে। তবে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এবং সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
এদিকে প্লাবিত এলাকার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত, পুনর্নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত বাসাবাড়ির তালিকা প্রণয়ন এবং নগরকে বন্যামুক্ত রাখতে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে একটি উচ্চতর সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। রোববার মহানগরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।
এলজিইডির অধীন সিলেট জেলার ১০টি উপজেলার ১১১টি সড়কের ২৬৭ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে যায়। এসব সড়ক অনেক জায়গায়ই ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত এই দপ্তরের হিসাবে বন্যায় ১৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইনামুল কবীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সড়কগুলোতে পানি থাকায় এখন ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র জানা যাবে না। পুরো চিত্র জানতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে বন্যায় আমাদের ১১১টি রাস্তার ২৬৭ কিলোমিটার অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জে ২টি কালভার্ট ভেঙেছে।’
এলজিইডির অধীন কানাইঘাট উপজেলার কানাইঘাট-সুরাইঘাট সড়ক। রোববার ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, পানির তোড়ে স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে সড়ক। সড়কের মাঝখানেই তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। পানি উঠে যাওয়া বেশির ভাগ সড়কেরই এমন অবস্থা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এলজিইডির সিলেট কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বন্যায় জেলার গোয়াইনঘাটে ২৭টি সড়কে ৮২ দশমিক ১৩ কিলোমিটার, কানাইঘাটে ১৫টি সড়কে ৩০ দশমিক ৫ কিলোমিটার, জৈন্তাপুর উপজেলার ১১টি সড়কে ৩২ কিলোমিটার, সদরের ১২টি সড়কে ২১ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার, গোলাপগঞ্জে ১০টি সড়কে ২২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জে চারটি সড়কে ৩৪ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার, দক্ষিণ সুরমার চারটি সড়কে সাড়ে তিন কিলোমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জে একটি সড়কে দেড় কিলোমিটার, ওসমানীনগর উপজেলায় একটি সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার ও বালাগঞ্জে একটি সড়কে দেড় কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে নিউজবাংলাকে সওজের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনও পানি পুরোপুরি না নামায় ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে তলিয়ে যাওয়া সব সড়কই সংস্কার করতে হবে।’
সওজ কার্যালয় সূত্র জানায়, সারি-গোয়াইনঘাট সড়কের ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কের ১ দশমিক ২০, কানাইঘাটের দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়কের ১৪ দশমিক ৮০ এবং সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পানির নিচে ছিল।
এ ছাড়া সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রশিদপুর-লামাকাজি সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-ছাতক সড়ক, শেওলা-সুতারকান্দি সড়ক এবং বিমানবন্দর-বাদাঘাট-কুমারগাঁও সড়কের বিভিন্ন জায়গা পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যায় তলিয়ে গেছে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ১৪টি ওয়ার্ডের ২৫০ কিলোমিটার সড়ক।
সড়কসহ বন্যার সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী বিধায়ক রায় চৌধুরী।
রোববার দুপুরে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সভার আয়োজন করে সিলেট সিটি করপোরেশন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সোমবার বলেন, ‘আগামী বর্ষায় যাতে বন্যার পানি মহানগরে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য মহানগরের যেসব এলাকায় নদীর পাড় নিচু সেসব পাড় উঁচু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ছাড়া সুরমা নদী খননের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘নগরের প্লাবিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বাসাবাড়ির তালিকা প্রণয়ন ও করণীয় বিষয়ে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, সওজ এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামি নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলাম ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রোববার রাত ৯টার দিকে আসামিদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বেগমগঞ্জ পৌরসভার গণিপুর গ্রামের আয়মন হত্যা মামলার তিন আসামি পাভেল, রাকিব ও নীরবকে রোববার বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তৌহিদুল ইসলামের খাস কামরায় নেয়া হয়। রাত ৯টার দিকে জবানবন্দি নেয়া শেষে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে চৌমুহনী বাজারের মেইন রোডে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় আয়মনকে। আয়মন চৌমুহনীতে খোলা বাজারে জুতার ব্যবসা করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব জানান, রাকিব তার সহযোগীদের নিয়ে তিন মাস আগে আয়মনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। তখন তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ আয়মনের অভিযোগের ভিত্তিতে রাকিবকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
তিন মাস জেল খেটে রাকিব গত ১৯ মে জামিনে বের হন। বের হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাকিব, পাভেল ও রিমন আয়মনকে ছুরিকাঘাত করেন। স্থানীয়রা তাকে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নেয়ার পথে আয়মন মারা যান।
এ ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় বেগমগঞ্জের আটিয়াবাড়ী এলাকা থেকে পুলিশ তিনজনকে আটক করে।
এরপর রোববার সকালে আয়মনের বড় ভাই জহিরুল ইসলাম আটক তিন যুবকসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও সাত-আটজনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য