সীমানা জটিলতায় আবারও আটকে গেল মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। তবে পৌরসভাসহ চার ইউনিয়নে ভোট হবে আগামী ১৫ জুন।
সোমবার নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। আরও বলা হয়, ইউনিয়নগুলোতে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
এর আগে ২০১১ সালের ৯ জুন আমদহ ইউপিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়। সীমানা জটিলতার কারণে প্রায় এক যুগ ধরে ভোট বন্ধ রয়েছে ইউনিয়নটিতে।
জেলা নির্বাচন কমিশন জানায়, সীমানা জটিলতা নিরসন করে ২০১৭ সালে মেহেরপুর পৌরসভায় ভোট হয়। ওই সময় আটকে যায় আমদহ ইউপি নির্বাচন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ জুন মেহেরপুর পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সীমানা ঘিরে জটিলতা থেকে যাওয়ায় এবারও হচ্ছে না আমদহ ইউপি নির্বাচন।
মেহেরপুর পৌরসভাসহ সদর উপজেলার যে চারটি ইউনিয়নে ভোট হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো আমঝুপি ইউনিয়ন, নবগঠিত শ্যামপুর ও বারাদি ইউনিয়ন এবং পিরোজপুর ইউনিয়ন।
নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ১৭ মে, বাছাই ১৯ মে ও আপিল করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০, ২১ ও ২২ মে। আপিল নিষ্পত্তির সময় ২৩, ২৪ ও ২৫ মে। এ ছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২৭ মে এবং ভোট হবে ১৫ জুন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে আরও জানা যায়, ২০১১ সালের ৯ জুন আমদহ ইউপিতে ভোট হয়। ২৮ জুলাই বিজয়ী পরিষদের প্রথম সভা হয়। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। ওই সময় দেশের অন্য পৌরসভা ও ইউপিতে ভোট হলেও সীমানা জটিলতা দেখিয়ে মেহেরপুর পৌরসভা ও আমদহের তফসিল ঘোষণা স্থগিত রাখে নির্বাচন কমিশন।
পরে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল পৌরসভা ও ২৩ এপ্রিল আমদহ ইউপির তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। পরে পৌরসভার নির্বাচন হলেও আমদহে ভোট স্থগিত করে কমিশন।
ভোট বন্ধ থাকায় আমদহ ইউপিতে প্রায় ১২ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা আনারুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের শিশুপাড়ার সীমানা জটিলতা নিয়ে নির্বাচন আটকে আছে। তবে জনগণ সেবা ঠিকমতোই পাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:সিলেট সদরে ঝড়ের কবলে পড়ে বিলে ডু্বে যাওয়া নৌকার আরেক আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
জালালাবাদ থানার লালপুর গ্রামের লোকজন মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে মরদেহ দেখে জানালে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে।
মৃত ব্যক্তির নাম রেজাখ আলী, তার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার রায়েরগাঁও গ্রামে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা ডুবে নিখোঁজ আছকন্দর আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আছকন্দরের বাড়ি একই উপজেলার পুটামারা গ্রামে।
জালালাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ ইসহাকের বরাত দিয়ে ওসি জানান, বন্যায় সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রোববার রাতে নৌকায় করে খারইল বিলের ওপর দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আছকন্দর, রেজাখসহ কয়েকজন। ঝড়ের কবলে পড়ে বিলের মাঝামাঝি জায়গায় নৌকাটি ডুবে যায়। অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন ওই দুজন।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে প্রাইভেটকার চালক জাহাঙ্গীর আলম হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের যাবজ্জীবন দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য্য এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী (এপিপি) রঞ্জন বসাক নিউজবাংলাকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিস্তারিত আসছে...
সকালের রোদ দেখে রাস্তার ধারে ধান ও খড় শুকানোর কাজ করছিলেন বগুড়ার শাজাহানপুরের বয়রাদীঘি এলাকার শামিম আহমেদ। বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কাটার পর সপ্তাহখানেক ধরে এভাবেই চলছে তার।
কাজের ফাঁকে জানালেন, আবাদের দুই বিঘা জমির ধান বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়েছিল। এতে তিন ভাগ ধানের এক ভাগ মাঠেই ফেলে আসতে হয়েছে তাকে।
শামিমের মতো এমন দশা বগুড়ার কয়েকটি উপজেলার অনেক কৃষকের। কালবৈশাখী ঝড়ে হেলে পড়া বোরো ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। সময়মতো চাহিদা অনুযায়ী ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
কৃষকরা জানান, বৃষ্টিতে জমিতে প্রতি বিঘায় অন্তত ৮ মণ ধান নষ্ট হয়েছে। শঙ্কা, এবার বোরো ধানে তাদের লোকসান হতে পারে। খরচের টাকা তুলতে পারবেন কি না, সেই চিন্তার ভাঁজ তাদের কপালে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও উৎপাদনের ঘাটতির কথা বলছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এখনও মাঠে বোরো ধান রয়েছে। সব ধান কাটা শেষ হলে সঠিক ক্ষতির হিসাব বের করা যাবে।
শাজাহানপুরের কৃষক শামিম আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগে ঝড়ে জমির ধান মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। সে সময় শ্রমিক পাওয়া যায়নি। পরে প্রতি বিঘায় ৬ হাজার টাকা খরচ করে ধান কাটি।’
আরেক কৃষক শামিম বলেন, ‘ধান ঘরে তোলার আগেই বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। যে ধান পেয়েছি, তা বেচলেও খরচ উঠবে না। আবার পানিতে ভেজা এই ধান ঘরেও রাখা যাবে না। এখন রোদ পেলে শুকিয়ে বিক্রি করা যাবে।’
বোরো চাষের এ খরচ নিয়ে বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর বিঘাপ্রতি জমিতে বোরো ধানে খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ ধান কাটার মজুরিতে। প্রতি বিঘায় শ্রমিকেরা নিচ্ছেন ৬ হাজার টাকা করে। তবে যে জমিতে পানি জমেনি সেখানে মজুরি কম। এর পরের খরচ সার ও কীটনাশকে, অন্তত ৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। এ ছাড়া জমি হাল দেয়া, নিড়ানি, ধান মাড়াই ও পরিবহনে আরও ৪ হাজার টাকা খরচ কৃষকের।
ধান চাষে ব্যয়ের হিসাব দেয়া একজন কৃষক কাহালু উপজেলার এরুল গ্রামের মোহাম্মদ ইনছান। তিনি ৩০ বিঘা জমি পত্তন কৃষিকাজ করেন। মূলত তার আবাদকৃত জমি থেকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়।
ইনছান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পানিতে জমে থাকা ধান কাটার সময় বিঘায় প্রায় ৪ মণ ধান নষ্ট হয়। আবার পানিতে পচে বিঘায় আরও ৪ থেকে ৫ মণ নষ্ট। এদিকে পানিতে ডুবে থাকায় এসব ধানের গাছ গজিয়ে গেছে। এতে খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে কড়া রোদ না পেলে ধানের মান ভালো থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোরো আবাদে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক সংকট। কারণ এত আগে আমাদের বগুড়ায় ধান কাটার শ্রমিকরা আসেন না। এ ছাড়া হাওর অঞ্চলে ধান কাটার কারণে বেশির ভাগ শ্রমিক সেখানে গিয়েছিল। হারভেস্টার মেশিনও ওই এলাকার দিকে ছিল। ফলে আমরা চাইলেও ধান কাটতে পারিনি।’
মামুন সরকার নামে শাজাহানপুরের আরেক কৃষক জানান, বাজারে ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। কিন্তু ভেজা ধান নিতে চাচ্ছে না কেউ। এ জন্য ধান শুকানোর ব্যবস্থা করছেন তিনি।
শাজাহানপুর উপজেলার জোড়া এলাকার এক জমিতে গিয়ে কথা হয় শ্রমিক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি নাটোরের জামতলী গ্রাম থেকে বগুড়া এসেছেন ধান কাটতে।
তিনি জানান, চৈত্র-বৈশাখ মাস পর্যন্ত নিজের জেলায় ধান কাটার কাজ করেন। এরপর বগুড়ায় আসেন। এবার নাটোরেই প্রতি বিঘায় ৭ থেকে শুরু করে সাড়ে ৫ হাজার টাকা মজুরি নিয়েছেন তারা। পানি জমে থাকার ওপর এই টাকার হিসাব হয়। বগুড়ার শাজাহানপুরে এক বিঘা ধান কাটায় চুক্তি করেছেন সাড়ে ৫ হাজার টাকা।
আরেক মাঠে গিয়ে কথা বললে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতি বছর বগুড়ায় আসা হয় তার। এবার ঈদের জন্য একটু দেরি হয়েছে।
জেলা কৃষি দপ্তর জানায়, বগুড়ায় এবার ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ ৭ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে ২৯ এপ্রিল রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে বগুড়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ওই সময় জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছিল, কালবৈশাখীতে বগুড়ায় ১৪ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে গত ১৩ মে জেলায় আরেকটি ঝড়ে বোরো ধানে আরও ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জেলার বোরো ধানের মোট ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. এনামুল হক। তিনি জানান, মাঠের ৬০ ভাগ বোরো ধান কাটা হয়েছে। যে ধান পরে চাষ করা হয়েছিল, সেগুলোই শুধু জমিতে আছে। মাঠপর্যায়ে জরিপের কাজ চলছে। এতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
এনামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি হিসাবের পাশাপাশি কৃষকের তালিকা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলে কৃষককে সহযোগিতা করার প্রস্তাব পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে।’
আরও পড়ুন:নাটোরের লালপুরে চালককে শ্বাসরোধে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারা হলেন, লালপুরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সজিব হোসেন, রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলার কাফুরিয়া এলাকার মেহেদী হাসান ও দস্তানাবাদ গ্রামের সাগর আলী।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের বড় হরিশপুর এলাকার পুলিশ লাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বড়াইগ্রামের মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা খোরশেদ আলম মিলন ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সেদিন রাতে মিলন বাড়ি না ফেরায় ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় স্বজনরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে।
পরে মিলনের পরিবার বিষয়টি বড়াইগ্রাম থানার পুলিশকে অবহিত করে। পর দিন সন্ধ্যায় পাশের লালপুর উপজেলার ঘাটচিলান এলাকায় সড়কের পাশে আখের ক্ষেত থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা ফখরুল ইসলাম লালপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর ঘটনার অনুসন্ধানে নামে জেলা পুলিশের ৬টি টিম।
পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে সজিব, মেহেদী, রবিউল ও সাগরকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা মিলনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তারা জানান, ১৪ মে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বনপাড়া বাজার থেকে লালপুরের ঘাটচিলানে যাওয়ার কথা বলে তারা মিলনের নতুন ইজিবাইকটি ২৫০ টাকায় ভাড়া করে।
ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে কৌশলে ইজিবাইকটি ভাড়া করেন সজিব, মেহেদী, রবিউল ও আরেকজন। ঘাটচিলান এলাকায় পৌঁছালে তারা চালক মিলনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ আখক্ষেতে ফেলে চলে যায়। পরে ইজিবাইকটি মেহেদীর বাড়িতে রেখে আসে।
এসপি লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। বিকেলে আসামিদের আদালতে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যায় এক নারী ও তার সঙ্গীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রায়ে শাস্তি পাওয়া দুজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা নাজির মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় দেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহমান রানা বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়ারা হলেন উপজেলার শক্তিপুর গ্রামের মুক্তি খাতুন ও বাড়াবিল গ্রামের সাইদুল ইসলাম।
এজাহারে বলা হয়, উপজেলার শক্তিপুর গ্রামের মুক্তি খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার বাড়াবিল উত্তরপাড়া গ্রামের মনিরুল হকের বিয়ে হয় ২০১৯ সালে। এই বিয়ের আগে মুক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সাইদুলের। মুক্তি বিয়ের পরও তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।
বিয়ের দুই মাস পর মনিরুলকে নিয়ে মুক্তি শক্তিপুর গ্রামে দাদা হোসেন আলীর বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ঘুমানোর আগে তিনি তার স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। পরে মুক্তি ও তার সঙ্গী মিলে মনিরুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ ঘটনার পরদিন ৪ জুন নিহতের বাবা জেলহক প্রামানিক শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরার সদরে একটি এসএলআর জাতীয় অস্ত্রসহ এক যুবককে আটকের পর বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীপুর ঢালীপাড়ার সামছুর রহমানের রাইস মিলের পাশ থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক যুবক স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তার নাম রানা হোসেন। তিনি একই উপজেলার নারায়ণজোল গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, আটক যুবকের বয়স আনুমানিক ২২/২৩ বছর।
আলীপুর ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লাকি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রানা নামের ওই ব্যক্তি খানপুর মোড় দিয়ে ঢালীপাড়ায় ঢোকার সময় সামছুরের রাইস মিলের সামনে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সন্দেহ হয়। এসময় তার কোমরে প্যাঁচানো গামছার মধ্যে একটি অস্ত্র দেখতে পেয়ে তাকে দাঁড়াতে বললে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
‘পরে স্থানীয়রা ধরলে তার কাছে রাইফেলের মতো অস্ত্রটি পাওয়া যায়। এসময় তাকে মারধর করে আটকে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে বাঁকাল চেক পোস্টের বিজিবি সদস্যরা অস্ত্রসহ ওই ব্যক্তিকে আটক করে বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যায়।’
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আটকের পর রানা জানিয়েছে, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে ভোমরা এলাকায় বসবাস করা আজহারুল ইসলাম, ইমরান হোসেন ও জুলফিকার রায়হান (এলাকা অজ্ঞাত) নামের তিন ব্যক্তি মঙ্গলবার ভোরে অস্ত্রটি তার কাছে দিয়েছে। সেটি সাতক্ষীরা শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন একটি মৎস্য ঘেরে পৌঁছে দেয়ার কথা। বিনিময়ে তাকে এক হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ম্যাগজিন ও একটি গামছা পাওয়া গেছে।’
ওসি গোলাম কবীর বলেন, ‘অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা আটক করে রেখেছে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে জানতে পারে, ওই ব্যক্তিকে বিজিবি নিয়ে গেছে। আটক যুবক সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।’
বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়নের লেফটেন্যান্ট কর্নেল আল মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
আরও পড়ুন:টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা নদীসহ সকল শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। এরই মধ্যে বন্যার সতর্কতা জারি করেছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুনামগঞ্জ পাউবো জানিয়েছে, ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় সুনামগঞ্জের সুরমা, পাটলাই, আপারবুলাই, কামারখালিসহ সব কটি শাখা নদী ও হাওরের পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পাউবো জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ৭ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে প্লাবিত হয়েছে ছাতক উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে গেছে। একই সঙ্গে পানিতে ডুবে গেছে অনেক সড়ক।
আরও জানা যায়, সম্প্রতি জেলায় ১৫টিরও বেশি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকায় তড়িঘড়ি করে ধান কেটে নেয়া কৃষকরা নতুন বিপদের সম্মুখীন। বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় চারা গজিয়ে গেছে এসব ধানে। চারপাশে পানি থইথই করায় রাস্তাগুলোতেই ধান ও বাদাম শুকানোর চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আসামে বন্যা পরিস্থিতি এবং মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।
সুনামগঞ্জের আরপিন নগর এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ আলী বলেন, ‘পানি বেড়ে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে স্থানীয়রা।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বসতভিটা হারানো ছাত্তার আলী বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল আমার সব নিয়ে গেছে। কাজ করে অল্প অল্প টাকা জমিয়ে অনেক কষ্টে একটি ঘর করেছিলাম, সেটিও বানে ভেসে গেল। এখন আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানিয়েছেন, গত দুই দিনে নদনদীগুলোতে পানির চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের গজারিয়া নদীর রাবার ড্যামের পাম্পহাউস নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত জেলার নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ উজানে প্রচুর বৃষ্টির ফলে জেলার নদনদীতে পানি বাড়ছে। পানি আজ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য