সব চেষ্টা বিফল করে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে হালির হাওর।
রাত ১২টার দিকে জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের আহসানপুর এলাকার হেরাকান্দি গ্রামে ঢলের পানির চাপে ঝুঁকিতে থাকা বাঁধটি ভেঙে যায়। বেহেলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত শামন্ত সরকার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই সময় ওই চেয়ারম্যান একটি ফেসবুক লাইভও করেন। লাইভে তিনি বলেন, ‘আমাদের হালির হাওর রক্ষা করা সম্ভব হলো না। আমাদের সব চেষ্টা বিফলে গেছে। হেরাকান্দি গ্রামের বাঁধ ভেঙে হালির হাওর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।’
লাইভে তিনি আশপাশে যারা আছেন তাদের সবাইকে দ্রুত বাঁধটি রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা চালানোর অনুরোধ করছিলেন।
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেবকে একাধিবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘যেদিক দিয়ে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে, সেখানে আমাদের ৯৯ শতাংশ ধান কাটা শেষ। তবে এখান থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে ৫০০ একর জায়গার ধান কাটা বাকি আছে। ভয়ের কিছু নেই। আমাদের ২৫টি হারভেস্টার মেশিন কাজ করছে। আমরা ধানগুলো পানি আসার আগেই কেটে ফেলতে পারব।’
আরও পড়ুন:ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তির মুখে এবার বিশেষজ্ঞদেরকে দিয়ে সেটি পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, যারা এই মেশিনগুলো পরীক্ষা করবেন, তাদের তালিকা করা হয়েছে। জুনের মধ্যে সেই বিশেষজ্ঞ দল আসবে।
মানিকগঞ্জে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে অন্তত এক শ আসনে ইভিএমে ভোট নিতে চায় নির্বাচন কমিশন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য গণমাধ্যমে এসেছে যে, আগামী নির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে।
এক দশক ধরেই বাংলাদেশে ব্যালটের ভোটের বদলে যন্ত্রের ভোটের প্রচলন করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। তবে এই যন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর আপত্তি আছে। তাদের দাবি, এই যন্ত্র দিয়ে দূর থেকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যন্ত্রগুলো পরীক্ষা করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে একাধিকবার আহ্বানও জানানো হয়েছে। তবে কেউ সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি।
এবার বিশেষজ্ঞ দলকে নিয়ে ইভিএম পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম বিষয়ে যারা অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ আমরা দ্রুত তাদের আমন্ত্রণ জানাব। ইতিমধ্যে আমাদের তালিকাও হয়ে গেছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে ইভিএম পরীক্ষার বিশেষজ্ঞ টিম আসবে।’
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে কত আসনে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন। আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে, সেগুলো দিয়ে ১০০ থেকে ১২০ কেন্দ্রে ভোট নিতে পারব। এর চেয়ে বেশি নেয়া সম্ভব না।
‘কিছু রাজনৈতিক দলের ইভিএম নিয়ে আস্থা-অনাস্থা ও আপত্তি আছে। তাই ৩০০ আসনে আমরা ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে পারি না।’
তিনি দাবি করেন, ইভিএম ব্যবহার করে যতগুলো নির্বাচনগুলো হয়েছে, তার কোনোটি নিয়ে আপত্তি উঠেনি। বরং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নিতে তাদের কাছে আবেদন এসেছে।
তবে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তার জোটের আপত্তি কেবল ইভিএম নিয়ে নয়। তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার চায়, পাশাপাশি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বদলে নতুন নির্বাচন কমিশনও চায়।
বিএনপি ও সমমনাদের এই অবস্থানের কারণে ২০১৪ সালের পর আবার আগামী নির্বাচনের অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সব দলকে ভোটে আনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কোনো উদ্যোগ থাকা সম্ভব নয় বলে মনে করেন কমিশনার মো. আলমগীর। বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসা বা না নিয়ে আসা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে এগুলো সংশ্লিষ্ট। নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করা। সে প্রস্তুতি আমরা নেব।’
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, জেলা নির্বাচন অফিসার শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রশাসক গোলাম মহীউদ্দীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বরিশালে বিয়েবাড়িতে ঢুকে কনেকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে বরের প্রেমিকার বিরুদ্ধে।
প্রেমিকার উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছেন বর। আর প্রেমিকা দাবি করা তরুণীর কাণ্ডে কনের পরিবার বিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শহরতলির চরআবদানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে গ্রামের ১৮ বছরের এক মেয়ের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয় পাশের মহাবাজ এলাকার মৃদুলের সঙ্গে। সকাল থেকে কনের বাড়িতে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। জুমার নামাজের পর বিয়ে সম্পন্নের প্রস্তুতি চলছিল।
জুমার আগ মুহূর্তে মৃদুলের বাড়ির পাশের এক তরুণী তার বোন ও মাকে নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন। ওই তরুণী নিজেকে মৃদুলের প্রেমিকা দাবি করে কনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
একপর্যায়ে স্থানীয় মুরব্বিরা প্রেমিকা দাবি করা তরুণীর অভিযোগ শুনে এবং কনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে বাতিল করে দেন।
স্থানীয় মারুফ হোসেন জানান, প্রেমিকা দাবি করা ওই তরুণী বিয়ের আসরে মৃদুলের সঙ্গে তার সাড়ে সাত বছরের প্রেমের নানা ঘটনা-প্রমাণসহ তুলে ধরেন। এর মধ্যেই কনের বাড়িতে বর সেজে আসা মৃদুল পালিয়ে যান।
কনের বাবা জানান, মেয়েকে মৃদুলের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত বরপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বরপক্ষের লোকজন না খেয়েই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, ‘এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন কনের বাবা। মৃদুলের প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই মেয়ের পরিবার থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।’
একে তো মরা ছাগল জবাই, তার ওপর ওই ছাগলের মাংসে গরুর রক্ত মিশিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার এক কসাই। কিন্তু তার এই প্রতারণা ধরা পড়ে যায় স্থানীয়দের কাছে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে বসেই এমন প্রতারণা করছিলেন ৪০ বছর বয়সী কসাই নজরুল ইসলাম ইদু। তিনি উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের ধনিবস্তী মহাজনঘাট গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে। প্রতারণা ধরা পড়ার পর স্থানীয়রা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম ডন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, সকালে উপজেলা পরিষদের ভেতরে মরা ছাগল জবাই করার পর ওই ছাগলের গায়ে গরুর রক্ত মেখে মাংস বিক্রির সময় স্থানীয়রা দেখে ফেলে। এ সময় মরা ছাগল ও কসাইকে আটক করে উপস্থিত লোকজন থানায় খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে কসাইকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়, আর ছাগলটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি।
তিন বছর পর হওয়ার কথা ছিল যে সম্মেলন, সেটি হতে যাচ্ছে ২৫ বছর পর। তাও যে প্রক্রিয়া মেনে এগোনোর কথা, তার কিছুই হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি পক্ষ গঠনতন্ত্র না মেনে নিজেদের মতো করে কাউন্সিলর বানিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নেতৃত্বে আসতে চাইছে।
কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ ভীষণ ক্ষুব্ধ।
শুক্রবার উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আড়াই দশক পর সম্মেলন ঘিরে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কথা, সেটির বদলে বিরাজ করছে হতাশা।
অভিযোগ করা হয়, সম্মেলন ঘিরে বর্ধিত সভার মাধ্যমে কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেটি না করে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ইচ্ছামতো কাউন্সিলর বানিয়েছেন। সবার নাম আবার প্রকাশ করা হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে ইউনিয়নভিক্তিক কাউন্সিলর করার বিধান থাকলেও সেখানে সেই নেতার পছন্দসই লোকদের করা হয়েছে কাউন্সিলর। জানেন না বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আগামী ২৫ মে সম্মেলন সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিদ্দিক হোসাইন এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জোবায়ের।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলার সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। সে সময় কেবল সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নিতে যাওয়া হয়নি।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শরীফ আহমেদ সাদী নেতৃত্ব করে গেছেন।
এই কমিটি প্রথমত ২০০৩ সালে এবং পরে ২০১৪ সালে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সম্মেলন ও কাউন্সিল করেছিল। এসব সম্মেলনে ১১টি ইউনিয়নে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং কোনো কোনো ইউনিয়নে সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।
১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সনের করা ইউনিয়ন কমিটিগুলোকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটিগুলো যে কাউন্সিলর তালিকা করছে সেই তালিকা বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ মে হয়তো সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন হতে পারে, কিন্তু কাউন্সিল অধিবেশন করা গঠনতান্ত্রিক বিধানে সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর এক বছর আগে থেকে তার আত্মীয় এক নেতা এই অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিত্ত-বৈভব ও সম্পদ অর্জনের রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সদরের গোছানো এই মাঠ তিনি তছনছ করে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খানকেও কাউন্সিলার রাখা হয়নি। ইউনিয়নে বসবাসকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, সহযোগী সংগঠনগুলোর জেলা-উপজেলা নেতাদেরও নাম নেই। ইউনিয়নের সাবেক গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতারও নাম রাখা হয়নি। ওয়ার্ড কমিটিসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অধিকাংশের নাম নেই।
অন্যদিকে ইউনিয়ন কমিটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির এবং কমিটির পদবিধারী নেতাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এমনকি কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানেন না তাদের ইউনিয়নের কী তালিকা করা হয়েছে এবং তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এসব ঘটনায় সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুকে দায়ী করছেন সংবাদ সম্মেলনে আসা নেতারা। বলা হয়, ‘বস্তুপেঁচা, গণবিচ্ছিন্ন, কর্মী ও সমর্থক বিচ্ছিন্ন সর্বোপরী সাধারণ জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য জরাজীর্ণ নেতৃত্বই প্রতিষ্ঠিত হবে। যদি তা-ই হয় তাহলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐ বিশেষ নেতার পকেটবন্দি নেতৃত্ব পাবে। ফলশ্রুতিতে দার্শনিক রাজনীতিবিদ, আমাদের বিপুল শ্রদ্ধার আসনে থাকা বিউটি অব পলিটিক্সখ্যাত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি অবমাননা হবে।’
এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো করা সম্ভব হয়নি।’ কী ধরনের প্রতিকূলতা ছিল? জানতে চাইলে সুদত্তর দেননি।
তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলার কমিটি করা হবে। এ মাসেই চারটি উপজেলায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৫ মে সদর উপজেলা, ২৬ তারিখে হোসেনপুর উপজেলা, ৩০ তারিখে ইটনা এবং ৩১ তারিখে অষ্টগ্রাম উপজেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল, দানাপাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিবাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম, মারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাল মিয়া, মহিনন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক তৌহিদ, কর্শা কড়িয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাকুল, মাইজকাপন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে রাস্তার পাশ থেকে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শহরের ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো গাড়ির ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি জানান, বেণুরাম নাথ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলায়।
ওসি কবিরুল বলেন, ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের সামনের রাস্তার পাশে মরদেহটি পড়ে ছিল। সেখানেই তিনি দায়িত্ব পালনে ছিলেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।
‘ধারণা করা হচ্ছে, কোনো ভারী ট্রাক বা লরি তাকে চাপা দিয়ে চলে গেছে। বিকেলে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি টিভির ফুটেজ চেক করে গাড়িটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) বসানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের প্রথম টেস্ট কেস। নির্বাচনের আগের দিন থেকে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা কাজ করবে।’
শরীয়তপুরে শুক্রবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার। এ লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে- এমন খবর প্রচারিত হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। পক্ষে-বিপক্ষে কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।
‘ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নয়। একসঙ্গে ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সক্ষমতা-সামর্থ্য ও প্রস্তুতি এই মুহূর্তে ইসির নেই।’
আনিছুর রহমান বলেন, ‘ইভিএমে সর্বোচ্চ ১২০-১৩০টি আসনের ভোট করার সক্ষমতা রয়েছে। মেশিনগুলো যে সঠিক, সেটা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
‘বিভিন্ন দলের কথা শুনব। তারা যদি বলেন ইভিএমে সমস্যা, তাহলে বলব মনোনীত এক্সপার্ট (বিশেষজ্ঞ) টিম দিয়ে পরীক্ষা করুন। ত্রুটি ধরিয়ে দেন। আর ক্রুটি না থাকলে সার্টিফিকেট দেন। সেখানে যে ত্রুটি দেখা দেবে তা সমাধান করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে কি না।’
আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার বিষয়ে কমিশনের কী উদ্যোগ রয়েছে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে আনিছুর রহমান বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশ নেয়া তাদের এখতিয়ার। নির্বাচনে আনা বা না আনা আমাদের বিষয় না। এর পরও প্রত্যেক দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। একবার না, একাধিকবার আমন্ত্রণ জানাব।
‘আসবে, কি আসবে না, সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। এটা বলা সঠিক হবে না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। পরিস্থিতি কখন কী হয় কেউ বলতে পারবে না।
‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা। একবার নয়, যতবার প্রয়োজন ততবার আলোচনা করব। আলাপ করে তাদের সমস্যাগুলো শুনব। সেই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। আমরা লক্ষ রাখছি, শুনছি সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে কী বলা হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন কার্যালয়।
জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামান, জেলা পরিষদের প্রশাসক সাবেদুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তফা ফারুকী, পৌর মেয়র পারভেজ রহমান।
আরও পড়ুন:প্রায় ১৫ দিন ধরে টানা পানি বাড়ার পর অবশেষে ভাটার টান পড়েছে সুরমায়। সিলেটের এই প্রধান নদীর পানি শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও প্রতিটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি বইছে।
আর কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসীদ পয়েন্টে কমলেও বেড়েছে ফেঞ্চুগঞ্জে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শুক্রবার বেলা ৩টায় এ তথ্য জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, উজানে বৃষ্টি কমলে নদীর পানি অব্যাহতভাবে কমতে থাকবে। প্লাবিত এলাকা থেকেও পানি নেমে যাবে।
জেলায় শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও দুপুর থেকে রোদ হেসেছে। নগরের জলমগ্ন কয়েকটি এলাকার পানিও কিছুটা কমেছে। তবে প্লাবিত উপজেলাগুলোর পরিস্থিতি একই রকম। ফেঞ্চুগঞ্জে পানি কিছুটা বেড়েছে।
শুক্রবার বেলা ৩টায় পাউবোর দেয়া হিসাবে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত সুরমার পানি কানাইঘাটে ১২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার কমেছে।
পাউবো জানিয়েছে, কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসীদ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ৮ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এই সময়ে ফেঞ্চুগঞ্জে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
কিছুটা কমেছে লোভা, সারি ও ধলাই নদীর পানিও।
পাউবো সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা নিউজবাংলাকে জানান, উজানে বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে জকিগঞ্জের অমলসীদে একটি বাঁধ ভেঙে নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কুশিয়ারার পানি কমতে থাকলেও তা ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ হয়ে নামবে। ফলে ওই এলাকায় পানি বাড়ছে। এই দুই উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিতও হতে পারে।
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গত ১১ মে থেকে। এর কয়েক দিন আগে থেকে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার ৮৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ১৫ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য