মাথায় টুপি, লম্বা দাড়ি আর সুন্নতি পাঞ্জাবি- এই লেবাসের নিচেই লুকিয়ে ছিলেন দুর্ধর্ষ অপরাধী মুফতি মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুন। এই বেশ একদিকে যেমন তাকে নিরাপদে অপরাধ সংগঠনের সুযোগ করে দিয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের অর্থ আত্মসাতেও কাজে লেগেছে। লেবাসধারী মামুন সখ্য গড়ে তুলেছিলেন মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে পুলিশ পর্যন্ত।
মাথায় টুপি আর দাড়ি থাকলেও মাদক ব্যবসায় নিজস্ব সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন মামুন। ছিলেন মাদকসেবীও। তবে অপরাধ জগতে তার হাতেখড়ি হয়েছিল বড় ভাই মিজানের হাত ধরে। সাত বছর আগের চাঞ্চল্যকর আরেকটি অপহরণের ঘটনায় মিজানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। কিন্তু জামিনে বের হয়ে এখন আত্মগোপনে আছেন তিনি।
মামুনের আত্মীয়স্বজন, পুলিশ, এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
২০ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবিতে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু দাসকে অপরহরণের ঘটনায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া মামুন ও তার ভাই মিজানের চাঞ্চল্যকর সব কাহিনি।
জানা গেছে, কৃত্রিম ডান পায়ের ভেতরে করে অনায়াসে লাখ লাখ টাকার ইয়াবা পাচার করা ছিল মামুনের অন্যতম অপরাধগুলোর একটি। এ ছাড়া পটুয়াখালী শহরের সদর রোডে থাকা মাতৃছায়া দোকানে বসেও অনেক পরিচিতজনকে ইয়াবা সেবনে আকৃষ্ট করতেন তিনি। আর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে গাজীপুরা বাজারসংলগ্ন রাস্তার উত্তর পাশের চিহ্নিত এক বাড়িতে ছিল মামুনের নারী ও মাদকের আসর। দামি গাড়িতে চড়ে ওই বাসায় তাকে প্রায়ই যাতায়াত করতে দেখেছে আশপাশের মানুষ।
বরগুনার এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গেও মামুনের ঘনিষ্ঠতার ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ওই জনপ্রতিনিধির মোটরসাইকেলের শোরুমটি মামুন আর তার ভাই মিজানই করে দিয়েছেন। ওই জনপ্রতিনিধির ক্ষমতা ব্যবহার করে মামুন আসলে নিজের আখের গুছিয়েছেন।
অভিযোগ আছে, হুজুরি লেবাসের কারণে পটুয়াখালী শহরের অনেকেই লাভের আশায় নিশ্চিন্তে মামুনকে টাকা ধার দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘মামুনের কাছে আমি ৩৫ লাখ টাকা পাব। ব্যবসায়ে তিন ভাগ লাভ দেবে- এই শর্তে প্রথমে তাকে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। দেখছি- হুজুর মানুষ। সারা দিন হুজুরগো সাথে থাকে।
‘প্রথম ছয় মাস লাভের তিন ভাগ মামুন নিজে বাসায় এসে দিয়ে যেত। ধীরে ধীরে টাকার পরিমাণ বাড়াতে বাড়াতে ছয় মাস আগে আমি তাকে ৩০ লাখ টাকা দিই। কিন্তু এখন তো আমার সব শেষ।’
যে বাসায় মামুন তার পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন সেই বাসার মালিক পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকার মদিনা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবু ইউসুফ। তিনি জানান, দুই বছর আগে মাসে ১০ হাজার টাকায় তার বাড়ির তৃতীয় তলার একটি বাসা ভাড়া দেন মামুনের কাছে। ওই বাসায় স্ত্রী, তিন সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে বাস করতেন মামুন। পুরো পরিবারটিকে পরহেজগার হিসেবেই জানতেন বাড়ির মালিক ইউসুফ।
ইউসুফের ছোট ভাই শহরের বড় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবু সাইদের বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে সেখানে মাতৃছায়া দোকানের মালামাল রাখতেন মামুন।
ইউসুফ জানান, মামুন সব সময় লম্বা দাড়ি, মাথায় টুপি ও পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে থাকতেন। প্রতি শুক্রবার মদিনা মসজিদে তার পেছনে জুমার নামাজ আদায় করতেন। তার স্ত্রী সব সময় বোরকা পরতেন। বয়স্ক এবং বৃদ্ধ হওয়ায় মামুনের বাবা-মা তৃতীয় তলা থেকে নিচতলায় সচরাচর নামেন না।
ইউসুফ আরও জানান, মামুনের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে ছেলেটি বড়। সে শহরের কেজি স্কুল সড়কে দারুল কোরান মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওই প্রতিষ্ঠানেই পড়াশোনা করছে মামুনের বড় ভাই মিজানের দুই মেয়েও। মিজানের খোঁজ নেই অনেক দিন ধরেই।
মামুনের অপরাধের কথা জেনে আবু ইউসুফ বলেন, ‘এ রকম একটা মানুষ আমার বাসায় ছিল বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। মানুষ কত রঙের হতে পারে তা মামুনকে দিয়েই জানা গেল। সে লেবাসধারী এক অপরাধী। আগে জানলে তাকে বাসা ভাড়া দিতাম না। বর্তমানে তার পরিবারকে বাসা ছাড়ার জন্য বলেছি।
‘তবে এই মুহূর্তে মানবিক কারণেই তাদের বাসা থেকে বের করে দিতে পারছি না। কারণ মামুনের একটি নবজাতক রয়েছে; যার বয়স মাত্র ১০ থেকে ১৫ দিন। তার বাবা-মা বৃদ্ধ। একজন মুসলমান হিসেবে এই অবস্থায় তাদের আমার বাসা থেকে বের করে দেয়া সঠিক হবে না। যদি মামুন জেল থেকে বের হয় কিংবা মামুনের কোনো অভিভাবক পাওয়া যায়, তবে তাদের জিম্মায় দিয়ে বাসা খালি করা হবে।’
এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, মামুন গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিনই তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে অটোরিকশায় চড়ে লঞ্চঘাটে যান। সেখান থেকে যাত্রীবাহী একটি ডাবল ডেকার লঞ্চে চড়ে ঢাকায় চলে গেছেন। বর্তমানে পটুয়াখালীর ওই বাসায় মামুনের বাবা আর মা ছাড়া একজন কাজের মহিলা অবস্থান করছেন।
শহরের আদালতপাড়ায় বসবাসরত ব্যবসায়ী বিএনপির সাবেক নেতা গাজী মিজানুর রহমান সাইদ বলেন, ‘তিন বছরের চুক্তিতে হোটেল হিল্টনের পূর্ব পাশে একটি দোকান মাতৃছায়া বুটিকসের জন্য মামুনের কাছে ভাড়া দিয়েছিলাম। মাসিক ভাড়া ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে তিন বছরের জন্য অগ্রিম নেয়া হয়েছিল। পরে চলতি বছর জানুয়ারি মাসে হিসাব নিয়ে ঝামেলা করায় বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগেই ফেব্রুয়ারিতে মামুন আমার দোকান থেকে নেমে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘লম্বা দাড়ি, মাথায় টুপি, পায়জামা-পাঞ্জাবি দেখে সন্দেহ করার কোনো উপায় ছিল না। তার পায়ে সমস্যা ছিল। তবে তার একটি পা যে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন তা আমরা জানতাম না। তা ছাড়া তার হাঁটাচলায় বোঝার উপায় ছিল না যে, এটি তার কৃত্রিম পা। মূলত লেবাস দেখে আর কথাবার্তায় রাজি হওয়ায় আমি দোকান বরাদ্দ দিয়েছিলাম। তবে সন্দেহ হয়েছিল কয়েক মাস আগের একটি ঘটনা শুনে।
‘আমার বিল্ডিংয়ের পশ্চিম পাশে লোটো কোম্পানির জুতার শোরুমের মালিক আবদুর রহমানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল মামুন। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয় এবং মামলাও হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করে। কিন্তু পরের দিনই দেখি সে জামিনে বের হয়ে এসেছে। বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল। শিবু লাল দাস অপহরণে মামুনের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় এ ঘটনাটি নিয়েও এখন আলোচনা হচ্ছে।’
এদিকে শহরের সবুজবাগ এলাকার এসপি কমপ্লেক্সের মালিক ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী গোলাম সরোয়ার বাদল বলেন, “আমার ভবনের দোতলার একটি রুম ‘বাংলাদেশ রং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দিই। মাসিক ৪০ হাজার টাকা ভাড়া হিসাবে ঈদের পর তাদের দোকানে ওঠার কথা। সেই হিসাবেই তাদের সঙ্গে আমার ডিড হয়েছে। কিন্তু শিবু দাস অপহরণের ১৫-১৬ দিন আগে মামুন এসে আমাকে বলে, ভাইয়া ওই দোকানটা আমার লাগবে। আমি ভাড়া নেব।
‘এই বলে আমাকে অনেক অনুরোধ করে। তখন ওর সঙ্গে পটুয়াখালীরই কয়েকটা ছেলে ছিল। আমি বলছি, দোকান তো ভাড়া হয়ে গেছে।
‘এমন কথা বলতেই মামুন বলে, যাদের সঙ্গে ভাড়া হয়েছে তাদের ভাড়াটারা আমি বুজবোআনে।
‘এই কথা বলেই মামুন চলে যায়। সাত-আট দিন পর কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তার আগের দোকান বা অন্য কোথাও থেকে কাপড় রাখার কিছু র্যাক আমার দোকানে রেখে গেছে। কোনো ডিড ছাড়াই র্যাক পাঠানোর পর আমি ওকে কয়েকবার ফোনও দিয়েছি। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি।’
মামুনের ভাই মিজানের কাহিনি
২০১২ সালের কোনো একদিন শহরের চৌরাস্তা এলাকার মধ্যবিত্ত মালেক মিয়ার কন্যা সুমা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক ও সামাজিকভাবেই বিয়ে হয় মামুনের ভাই মিজানুর রহমান ওরফে রং মিজানের। বিয়ের পর তাদের দুই কন্যার জন্ম হয়। আর দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের কয়েক দিনের মাথায় মুক্তিপণের টাকা আনতে গিয়ে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মিজান।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ২ মে রাজধানীর বনানী থেকে টিএনজেড গ্রুপের মালিক মো. শাহাদাত হোসেনের আট বছরের সন্তান আবিরকে অপহরণ করে ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন ল্যাংড়া মামুনের বড় ভাই মিজান ও তার সঙ্গীরা।
ঘটনার চার দিন পর ৬ মে তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে মুক্তিপণের ৭৩ লাখ টাকা অপহরণকারীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। ওই দিনই ঢাকার র্যাডিসন হোটেলের সামনে নগদ আরও ২৭ লাখ টাকা নিয়ে আবিরকে ফিরিয়ে দেয় মিজানসহ অন্যরা। পরে ১৭ মে পটুয়াখালী শহরের সদর রোডের মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে মুক্তিপণের টাকা তুলতে গেলে ওঁৎ পেতে থাকা র্যাবের একটি বিশেষ দল মিজানকে আটক করে।
পরের দিন ১৮ মে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় অপহরণের ঘটনায় একটি মামলা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০১৯ সালের ১৬ মে ল্যাংড়া মামুনের ভাই মিজানসহ দুজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি আট আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার ৭ নম্বর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস। কিন্তু তার পরও ভুয়া জামিনানামা দেখিয়ে আদালত থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান মিজান।
এ ব্যপারে কথা হয় মিজানের শ্বশুর মালেক মিয়ার সঙ্গে। লজ্জা ক্ষোভ আর হতাশাগ্রস্ত মালেক মিয়া বলেন, ‘সাত বছর ধরে কোনো যোগাযোগ নাই জামাইসহ তার পরিবারের কারও সঙ্গে। আমরা বিষয়টা ভুলে গেছি। ভুলে থাকতেই চাই। আমার আর মেয়ের কপাল খারাপ ছিল। তাই আজ এ অবস্থা। সাত বছর ধরে মেয়ে আর দুটি নাতি লালন-পালন করে যাচ্ছি।’
জানা যায়, অভাবের তাড়নায় গ্রাম ছেড়ে পটুয়াখালী শহরে এসে মামুন ও মিজান পরিবারের হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। একপর্যায়ে পটুয়াখালীতে অবস্থান করে বড় চৌরাস্তায় ডেন্টিং-পেইন্টিংয়ের দোকান দিয়ে চোরাই মোটরসাইকেলের ব্যবসা শুরু করেন মিজান।
এ ছাড়া ঢাকা-পটুয়াখালী লঞ্চরুটে কেবিন বয়ের সুবাদে মাদক বহন, যানবাহনের জাল রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে মিজান পারদর্শী ছিলেন। মিজানের হাত ধরেই অপরাধ জগতে পা দেন মুফতি মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুন।
শিবু অপহরণ মামলার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ইনস্পেক্টর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পটুয়াখালী, আমতলী ও ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পুলিশ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে বিআরটিসির চালক জসিম মৃধা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ায় তাকে ছাড়া বাকি ছয়জনকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।
কিন্তু এখনও রিমান্ড শুনানি হয়নি। কারণ ঢাকার ডিবি পুলিশ মামলার প্রধান আসামি মামুনসহ তার তিন সঙ্গীকে চার হাজার পিস ইয়াবাসহ ঢাকায় গ্রেপ্তার করেছে। তাই ওই মামলায় আসামিরা এখনও ঢাকায় রিমান্ডে আছে।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য