মৌলভীবাজারের জুড়ীতে সংরক্ষিত বনের ভেতর পাকা রাস্তা চান স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী। তবে এই রাস্তা চায় না বন বিভাগ।
উন্নয়নকাজ বন্ধ চেয়ে সরকারি সংস্থাটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে এলজিইডি বলছে, মন্ত্রী কাজ চালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
পরিবেশকর্মী ও বন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর পাকা রাস্তা হলে কাঠ চোরাচালান বাড়বে। সেই সঙ্গে বিপন্ন হবে বনের পরিবেশ এবং হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র্য।
৫ হাজার ৬৩০ দশমিক ৪০ একর আয়তনের সংরক্ষিত লাঠিটিলা বন। এই বনের ভেতর দিয়ে ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ১০ মার্চ দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। চলতি মাসের শুরুতে কাজ শুরুর জন্য মালামাল জড়ো করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘প্যারাডাইস কনস্ট্রাকশন’।
এরপর খোঁজখবর নিয়ে রাস্তা তৈরির বিষয়টি জানতে পারেন বন বিভাগের লোকজন। কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে লাঠিটিলা বিটের ফরেস্টার সালাহ উদ্দিন ১০ এপ্রিল এলজিইডি উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে রাস্তা তৈরির আগে বন বিভাগের কোনো পরামর্শ বা অনুমতি নেয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। তবে এর পরও রাস্তা তৈরির তোড়জোড় চলতে থাকায় ২১ এপ্রিল আবার চিঠি দেন বন বিভাগের জুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন।
বনের ভেতর রাস্তা নির্মাণ করতে হলে বন বিভাগের অনাপত্তিপত্র নিতে হয় বলে জানান বন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৯২০ সালে এই বনকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের আগে অনুমতি না নেয়ায় আমি কাজ বন্ধ রাখতে আবারও চিঠি দেই এলজিইডিকে। ১৯২৭ সালের বন আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের ভেতর এভাবে রাস্তা করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, রাস্তাটি হলে ওই এলাকার পুরোনো সেগুনবাগান রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কাঠ চোরাকারবারিদের তৎপরতা বেড়ে যাবে।
তবে কাজ বন্ধ রাখতে নারাজ বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এলজিইডির মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন সরদার নিউজবাংলাকে বলেন, বন বিভাগের আপত্তির পর উপজেলা প্রকৌশলী মন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী আবদুল মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, রাস্তাটি যে বন এলাকায় পড়েছে, সেটি তারা আগে জানতেন না। মন্ত্রীর চিঠির (ডিও লেটার) পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তা নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে যা হচ্ছে তা পরিবেশ-বিধ্বংসী। এই বনকে নষ্ট করার যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছে। অথচ এটি বনমন্ত্রীর নিজের নির্বাচনি এলাকা। রক্ষক যেখানে ভক্ষক আমরা কার কাছে যাব?’
এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তা পাকা হলে লোকজনের চলাচলে সুবিধা হবে। রাস্তার কাজ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সঙ্গে আমি কথা বলব।’
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে উত্তর পাঞ্জাবের মরু অঞ্চল চোলিস্তান। তাপে শুকিয়ে গেছে সব জলাধার। খাওয়ার পানির দেখা দিয়েছে তীব্র সংকট। আর এই সংকটের মুখে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। পানির অভাবে দিন দিন বাড়ছে গবাদিপশুর মৃত্যু। পাকিস্তানের দরিদ্রতম এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবিকা এই গবাদিপশুর ওপর নির্ভর করে।
চোলিস্তানের বাসিন্দাদের দুরবস্থা দেখতে সেখানে চষে বেড়িয়েছে ভাইস নিউজ। মধ্য দুপুরে তারা দেখতে পান, বৃদ্ধ এক খামারি লুটিয়ে পড়েছেন কাদামাটিতে। আশপাশের লোকজন তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা ছিল না বৃদ্ধের।
এ ঘটনার মাত্র কিছু আগে নিজের মারা যাওয়া পশুদের দেহ নিয়ে আসার জন্য ওই কর্দমাক্ত জলাশয়ের কাছে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ ব্যক্তিটি।
একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘হে ঈশ্বর, তাদের (পাকিস্তান সরকার) ধ্বংস করুন। আমার গবাদিপশু তৃষ্ণায় মারা গেছে। আমাদের কোনো রক্ষক নেই। তারা যা করেছে তার জন্য ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
ওই বৃদ্ধের আবেগঘন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নিজ দেশের সরকারকে অভিশাপ দিতে দেখা যাচ্ছে অসহায় এই খামারিকে। তার অভিযোগ, সরকারের উদাসীনতার জন্যই চোলিস্তানের মরু অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
سیف سٹی کے ساتھ ساتھ سیف چولستان کے بارے میں بھی سوچیں۔ ایک کیمرہ چولستان پر بھی لگائیں۔۔جہاں بے زبان جانور پانی ہی قلت اور شدید گرمی کی وجہ سے کررہے ہیں۔#چولستان_کو_پانی_دو pic.twitter.com/lsw9UMtpFy
— Valentina Reece (@reece_valentina) May 11, 2022
মার্চের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহে পাকিস্তানের ২২০ মিলিয়ন জনসংখ্যার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশে তীব্রতর হয়েছে, চালিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদ জুগনু বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি না বদলায়, তবে আমরা মারা যাব। আপনি খবরে দেখতে পাবেন চোলিস্তানের বাসিন্দারা মারা গেছে।
‘ঈশ্বরের ভালোবাসার জন্য, সরকারকে চোলিস্তান সম্পর্কে ভাবতে হবে। আমাদের পানি দেয়া উচিত। অন্যথায় আমরা মারা যাব।’
বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে ১ শতাংশেরও কম নিঃসরণ করে পাকিস্তান। তবে জার্মানওয়াচের ২০২১ সালের সমীক্ষা বলছে, আবহাওয়ায় পরিবর্তনের কারণে দেশটি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে আছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোয় পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অঞ্চলের মানুষ এবং প্রাণীরা পানিশূন্যতায় ভুগছে, হিটস্ট্রোকের বড় ঝুঁকিতে আছে।
চোলিস্তানে তীব্র তাপমাত্রা এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে কূপগুলো শুকিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। বাধ্য হয়ে অঞ্চল ছেড়ে যাচ্ছে বহু মানুষ।
রেহাই পাচ্ছে না পশু-পাখিরাও। এই অঞ্চলে বাস করা দুই লাখ মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস গবাদিপশু। গত কয়েক দিনে অন্তত ৫০ প্রাণী মারা গেছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সংখ্যাটা ২০০-র কাছাকাছি।
জুগনু বলেন, ‘চোলিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় চারদিকে খরা। অনেক প্রাণী মারা গেছে। কিছুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
বিষয়টি আমলে নিয়েছে প্রশাসন। জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির স্থাপন করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিশুদ্ধ পানি আছে এমন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে মানুষ ও গবাদিপশুকে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে আরও পরিকল্পনা নিচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
তবে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ব্যবস্থা আগেই নিতে পারত সরকার। এতে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা কমানো যেত অনেক। গ্রীষ্মে যখন থেকে তাপদাহ বাড়তে শুরু করেছিল, সে সময় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভূগর্ভস্থ পানির জন্য ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের অভাবকে দায়ী করছেন বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পুকুরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হতো না তাদের। সরকার প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চোলিস্তানে পানি সরবরাহ করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও, পাইপগুলো শুকিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে খরা মৌসুমে পানি সরবরাহের জন্য নিয়মিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:আগামী ৪৮ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের এক আবহাওয়াবিদ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম, তবে চট্টগ্রামের দিকে বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
‘এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু এলাকায় ঝোড়ো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে রাতের দিকে সারা দেশে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের দিকে বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। আর রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু এলাকায় ঝড়ের আশঙ্কা আরও কম; ২৫ শতাংশ। আগামী দুই দিনই এমন অবস্থা থাকতে পারে।’
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘সামনে জুনে বর্ষাকাল আসছে। এ সময়টায় হালকা ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিপাত হয়। তাই দেশে এ অবস্থা এখন থাকবেই।’
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:জলবায়ু সংকটের কারণে বিপর্যস্ত পৃথিবীকে কল্পনা করা অনেকের জন্যই অস্বস্তিকর। তারপরও আমাদের এই সত্যকে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রাকৃতির ভয়ংকর রূপ এড়ানোর সুযোগ দিনে দিনে কমে আসছে।
বিখ্যাত ফরাসি ফটোগ্রাফার এবং ডিজিটাল আর্টিস্ট ফ্যাবিয়েন বারাউ বলছেন, জলবায়ু বিপর্যয় নিয়ে ভাবতে গেলে আমাদের প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খেতে হবে। কারণ আমরা এমন সত্যের সামনে পড়ব যেখানে দেখা যাবে দ্রুত পৃথিবীকে আমরা ডিস্টোপিয়ান দুনিয়ার (Dystopian world) দিকে নিয়ে যাচ্ছি।
‘নিউজ ফ্রম দ্য ফিউচার’ নামে এক ধারাবাহিকে বারাউ দেখিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জনপ্রিয় সব স্থাপনাগুলোর কী অবস্থা হতে পারে। এ কাজে তিনি ড্রোনের সাহায্যে ছবি নিয়ে, সেগুলোকে ফটোশপের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
নিজেকে ভবিষ্যতের একজন অনুসন্ধানকারী হিসেবে দেখেন বাররাউ। মরুকরণ, প্লাবন, ধ্বংস এবং ধ্বংসের মধ্যে নিমজ্জিত একটি নতুন বিশ্ব নিয়ে সব সময় ভাবেন এই ফটোগ্রাফার।
তিনি বলেন, এই সিরিজটি জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতিগুলোর একটি ব্যক্তিগত কাজ। এটি কোনো বৈজ্ঞানিক কাজ নয় বরং একটি শৈল্পিক কাজ। যেখানে আমি আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) তথ্যের সম্ভাব্যতা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি।’
এই পরিণতিগুলো কল্পনা করার জন্য বারাউ ডিজিটালভাবে ড্রোন ফুটেজ এবং স্টক চিত্রগুলোকে পুনরুদ্ধার করেন। আইফেল টাওয়ার এবং কলোসিয়ামকে শুষ্ক চরমে নিয়ে যায়, স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে কোমর-গভীর বন্যায় নিমজ্জিত করে (মূর্তির কোমর, আমাদের নয়), আর্ক ডি ট্রায়মফকে সমুদ্রে নিমজ্জিত করে ফেলেন।
বারাউ বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপস থিম এবং একটি সভ্যতার পতনের একজন বড় অনুরাগী ছিলাম। আমি তাই সিরিজকে সিনেমাটিক করার চেষ্টা করেছিলেন।
‘প্যারিসের আর্ক ডি ট্রায়মফের ওপরে দুটি তিমি সাঁতার কাটার চিত্রটি ফরাসি শিল্পী রোলান্ড ক্যাট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করছি। ১৯৭০ এবং ৮০-এর দশকে ডুবে যাওয়া শহরে সামুদ্রিক প্রাণীদের ঘোরাঘুরির ছবি কল্পনা করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া প্ল্যানেট অফ দ্য এপস, ম্যাড ম্যাক্স, আকিরা এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ডকুমেন্টারি আফটারম্যাথ: পপুলেশন জিরোর মতো চলচ্চিত্রগুলো আমাকে উৎসাহী করছে।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফটোগ্রাফি এবং ডিজাইনের ওপর কাজ করেছেন ফ্যাবিয়েন বারাউ। তিনি ব্র্যান্ড এবং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে ফটো রিটাউচার পদে কাজ করছেন। প্রায়ই তার চিত্রের মাধ্যমে পরিবেশবাদের অনুভূতি জাগায়৷
বারাউ বলেন, ‘ল্যান্ডস্কেপ এবং আর্কিটেকচার ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। চমৎকার পরিবেশের ছবি তুলতে আমার অনেক দেশ ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আমি ক্রমবর্ধমানভাবে জীববৈচিত্র্য, ল্যান্ডস্কেপ এবং মানুষের ওপর এই জলবায়ু সংকটের বিধ্বংসী প্রভাব অনুভব করেছি।’
আরও পড়ুন:কানাডার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ অন্টারিও এবং কুইবেকে ভয়াবহ ঝড়ের কবলে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা হাইড্রো ওয়ান অ্যান্ড হাইড্রো-কুইবেকের তথ্যমতে, প্রবল ঝড়ের কবলে এই দুই প্রদেশে শনিবার রাতে প্রায় ৯ লাখ বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সময় শনিবার অন্টারিও ও কুইবেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রীষ্মের একটি শক্তিশালী বজ্রঝড়ের কারণে চার জন মারা গেছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ঝড়ের সময় পাকিং করা লরির ওপর গাছ পড়লে তার ভেতরে থাকা এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। ঝড়ের মধ্যে ৭০ বছরের বেশি এক নারী গাছের নিচে পড়ে পিষ্ট হন।
ফেডারেল রাজধানী অটোয়াতে ঝড়ের আঘাতে আরও একজনের প্রাণ গেছে। তবে স্থানীয় পুলিশ তার পরিচয় প্রকাশ করেনি।
চতুর্থ শিকার পঞ্চাশ বছর বয়সী এক নারী। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিবিসি জানিয়েছে, ঝড়ের সময় অটোয়া এবং কুইবেককে বিচ্ছিন্ন করা অটোয়া নদীতে তার নৌকা ডুবে গেলে তার মৃত্যু হয়।
কানাডার জনবহুল প্রদেশ অন্টারিওতে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বসবাস। কুইবেকে প্রায় ২০ শতাংশ।
প্রায় চার কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এদের একটি বড় অংশ অন্টারিও ও কুইবেকের বাসিন্দা।
আগামী সপ্তাহজুড়ে দেশে কালবৈশাখীর আশঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলেও ২৮ মে’র পর থেকে আবারও বাড়তে শুরু করবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে শনিবার এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহ সারা দেশেই কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চলতি মাসের ২৫ তারিখের পর বৃষ্টিপাত কমে আসবে। আর সার্বিকভাবে ২৮ তারিখের পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে।’
শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের দক্ষিণে আন্দামান সাগরের কাছে মার্তবান উপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তীতে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে বর্তমানে থাইল্যান্ড ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার এলাকায় অবস্থান করছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা প্রশমিত হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠছিল। জ্যৈষ্ঠের এই খরতাপ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রতীক্ষায় ছিল মানুষ। তাদের সে প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে।
শনিবার ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত অবিরাম বর্ষণ দেখেছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এতে প্রাণে স্বস্তি ফিরলেও অস্বস্তি হয়ে আসে আংশিক বা পুরোপুরি ডুবে যাওয়া সড়ক।
রাজধানীর মিরপুর ১০ ও ১৩ নম্বর, মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর এলাকায় সড়ক পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। সেখান দিয়ে যানবাহনগুলোকে ধীরে ধীরে চলতে হয়েছে।
মিরপুর-১৩ নম্বরে বনফুল আদিবাসী গ্রিন হার্ট কলেজ ও স্কলাস্টিকার সামনের সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা যায়।
একই অবস্থা দেখা গেছে হারম্যান মেইনার কলেজ সংলগ্ন সড়কে।
এর বাইরে মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে।
অফিসমুখী মানুষের ভোগান্তি
সরকারি চাকরিজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও শনিবার কর্মস্থলে যেতে হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের। বৃষ্টির মধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে যেতে যানবাহন পেতে সমস্যা হয়েছে অনেকের। কেউ কেউ জলাবদ্ধ সড়ক ধরে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, মর্তবান উপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমারে সৃষ্টি লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তী সময়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। অপর একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আরও পড়ুন:সব সীমা অতিক্রম করতে পারে ভালোবাসা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে আবারও বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, চীনের একটি চিড়িয়াখানায় একটি ল্যাব্রাডর কুকুর পরম যত্নে আগলে রাখছে তিনটি বাঘ শাবককে। শাবকগুলো কুকুরটিকে ঘিরে খেলছে।
শাবকগুলোর জন্মের পর তাদের মা সেগুলোকে ছেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসে কুকুরটি। তাদের সম্পর্ক দেখে মনে হতে পারে, জাতপাত তো দূরের কথা, ‘মায়ের’ ভালোবাসার কাছে কুকুর-বাঘের কোনো ভেদাভেদ নেই।
‘এ পিস অফ নেচার’ টুইটারে এই দৃশ্যটি শেয়ার করে রোববার। মূল ডিভিওটি ২৭ এপ্রিল ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছিল।
ভালোবাসার এমন দৃশ্যে আপ্লুত টুইটার ব্যবহারকারীরা। একজন লিখেছেন, ‘ল্যাব্রাডর কুকুরগুলো সত্যিই আশীর্বাদ।’
ইনস্টাগ্রামে একজন লিখেছেন, ‘তারা তাদের নতুন মাকে ভালোবাসে… তাদের বড় হতে দিন।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘বাঘ এবং কুকুর। ভিন্ন প্রজাতি, কিন্তু ভালোবাসা একই থাকে।’
Because you want to see a lab doggy take care of baby rescue tigers
— A Piece of Nature (@apieceofnature) May 15, 2022
pic.twitter.com/qmKnyO4Fzi
স্ত্রী বাঘ তার শাবক ত্যাগ করা নতুন ঘটনা নয়। ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির (এনটিসিএ) স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বলছে, একটা মা বাঘের শাবক ত্যাগ করার অনেক কারণ থাকে।
তারা বলছে, প্রথম কারণ হলো মা বাঘের মৃত্যু। এ ছাড়া দুর্বল, অক্ষম, আহত বা অসুস্থ হলে মা বাঘ শাবককে ত্যাগ করে। আবার কিছু স্ত্রী বাঘ আঘাতের কারণে শাবকদের খাওয়াতে পারে না বলে শাবককে ছেড়ে চলে যায়।
সাইবেরিয়ার গত বছর একটি রটওয়েলার কুকুর ও পরিত্যক্ত কালো চিতার গল্প ভাইরাল হয়েছিল।
লুনা নামের সেই চিতার জন্ম হয়েছিল একটি চলমান চিড়িয়াখানায়। জন্মের এক সপ্তাহ পর শাবকটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তার মা। উপায় না দেখে কর্তৃপক্ষ হাজির হয় বন্য বিড়াল পুনর্বাসন বিশেষজ্ঞ ভিক্টোরিয়ার কাছে।
ভিক্টোরিয়া চিতা শাবকটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। ভেনজা নামে তার রটওয়েলার কুকুরটির যত্নে সেটি বেড়ে উঠেছিল।
মন্তব্য