নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মা ও ছেলের মৃত্যুতে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ও লাইনম্যানকে বরখাস্ত করেছে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ।
জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ আহমেদ ও লাইনম্যান শাহিনুল ইসলামকে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে বরখাস্ত করা হয়।
সুবর্ণচর উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ফসিউল হক জাহাঙ্গীর নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটির কথা জানিয়েছেন নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, ‘সোনাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম বলাই মিত্র ও কবিরহাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ হানিফকে নিয়ে শুক্রবার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে কারো গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয় থেকেও দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি জিএম গোলাম মোস্তফা।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটার ইউনিয়নে বাড়ির পাশের বাগানে বিদ্যুতায়িত হয়ে কোহিনুর আক্তার ও তার ৩ বছরের ছেলে মো. ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের বরাতে চর জাব্বার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শাহ আলম জানান, বুধবার কালবৈশাখি ঝড়ে বাগানের বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গিয়ে সেটি দেখে জানায়, মেরামতের জন্য সরঞ্জাম লাগবে; সেগুলো নিয়ে ফিরে আসবে। তবে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইয়াছিন ওই বাগানে খেলতে গিয়ে ছেঁড়া তারটি ধরেই চিৎকার দেয়। কোহিনুর তাকে বাঁচাতে জড়িয়ে ধরেন। দুজনই বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
আরও পড়ুন:প্রায় ১৫ দিন ধরে টানা পানি বাড়ার পর অবশেষে ভাটার টান পড়েছে সুরমায়। সিলেটের এই প্রধান নদীর পানি শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও প্রতিটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি বইছে।
আর কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসীদ পয়েন্টে কমলেও বেড়েছে ফেঞ্চুগঞ্জে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শুক্রবার বেলা ৩টায় এ তথ্য জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, উজানে বৃষ্টি কমলে নদীর পানি অব্যাহতভাবে কমতে থাকবে। প্লাবিত এলাকা থেকেও পানি নেমে যাবে।
জেলায় শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও দুপুর থেকে রোদ হেসেছে। নগরের জলমগ্ন কয়েকটি এলাকার পানিও কিছুটা কমেছে। তবে প্লাবিত উপজেলাগুলোর পরিস্থিতি একই রকম। ফেঞ্চুগঞ্জে পানি কিছুটা বেড়েছে।
শুক্রবার বেলা ৩টায় পাউবোর দেয়া হিসাবে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত সুরমার পানি কানাইঘাটে ১২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার কমেছে।
পাউবো জানিয়েছে, কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসীদ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ৮ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এই সময়ে ফেঞ্চুগঞ্জে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
কিছুটা কমেছে লোভা, সারি ও ধলাই নদীর পানিও।
পাউবো সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা নিউজবাংলাকে জানান, উজানে বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে জকিগঞ্জের অমলসীদে একটি বাঁধ ভেঙে নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কুশিয়ারার পানি কমতে থাকলেও তা ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ হয়ে নামবে। ফলে ওই এলাকায় পানি বাড়ছে। এই দুই উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিতও হতে পারে।
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গত ১১ মে থেকে। এর কয়েক দিন আগে থেকে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার ৮৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ১৫ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন:ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অলিভিয়া বন্দরে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের নিহত হবার পর কেটে গেছে দুই মাস।
তার মরদেহ দেশে আনার পর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) থেকে বলা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে দেয়া হবে ক্ষতিপূরণের অর্থ। এরপর ১০ সপ্তাহ পার হলেও এখনও মেলেনি ওই অর্থ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারান জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।
মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার দুপুর সোয়া ১২টা ২০ তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে। রাত ১০টায় হাদিসুরের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)।
সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে শুক্রবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ক্ষোভ জানান নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী। লিখিত বক্তব্য পড়েন সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাখওয়াত হোসেন।
নেতারা বলেন, বিএসসির সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অদক্ষতার কারণে ক্ষতিপূরণের টাকা যথাসময়ে পায়নি। অথচ তারা বলেছিল, এক সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ বুঝিয়ে দেবে।
সংগঠনের সভাপতি আনাম চৌধুরী বলেন, ‘তদন্ত কমিটিতে আমাদের দুজন প্রতিনিধি রাখার বিষয়ে দাবি জানালেও তা মানা হয়নি। বিএসসিতে মেরিনারদের বিষয়ে বোঝেন এমন লোক এখন নেই। প্রতিষ্ঠানটিতে অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে মেরিনার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব প্রতীয়মান। আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাদিসুর রহমানসহ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের সকল নাবিক-ক্রুদের ক্ষতিপূরণের অর্থ বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাখওয়াত হোসেন বলেন, ‘৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও আমরা এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন পাইনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটির সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেশের সংবাদ মাধ্যমসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে জাহাজে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুরের পরিবারকে ১০ লাখ ২৭ হাজার ১৭৭ টাকা তুলে দেয়া হয়। বিএমএমওএ সদস্য ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (আইটিএফ) এই অর্থ সহায়তা করে। চেক গ্রহণ করেন হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে চলন্ত বাসে ডাকাতদের কবল থেকে যাত্রীদের বাঁচানো ট্রাফিক পুলিশের সেই এসআইকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছে পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ পদকের জন্য তার সুপারিশও করা হয়েছে।
এ তথ্য নিজেই নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সাভার ট্রাফিক পুলিশের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ডিআইজি (অ্যাডমিন) আমিনুর ইসলাম তার কার্যালয়ে আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন, যা আমার কাছে ১০ কোটি টাকার সমান। এ জন্য স্যারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি আইজিপি স্যার ও ঢাকা জেলার সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে আমার সংবাদ আসার পর অনেকেই প্রশংসা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার ছবি পোস্ট করেছেন অনেকে। সবাই এসব পোস্টের নিচে আমার ভালো কাজের প্রশংসা করেছেন। আসলে এই প্রশংসা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর।’
গত ১৬ মে রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাভার পরিবহনের একটি বাস ডাকাতদের কবলে পড়ে। সে সময় দায়িত্বে থাকা এসআই হেলাল উদ্দিন সন্দেহের জেরে বাস থামিয়ে তাতে ওঠেন। অস্ত্রধারী এক ডাকাতকে তিনি ধরে ফেলেন। তার সঙ্গে ওই ডাকাতের ধস্তাধস্তির সুযোগে অন্য দুই ডাকাত পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা এসআইয়ের কাছ থেকে ডাকাতকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটুনি দেয়। আহত অবস্থায় আটক ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় পুলিশ হত্যা ও দস্যুতার চেষ্টার মামলা করে।
আরও পড়ুন:ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জের নদনদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর উপচে পড়া পানিতে পৌর শহরে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক শ মানুষ।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জেলায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন পাউবো কর্মকর্তারা।
এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব নতুনপাড়া, মরাটিলা, শান্তিবাগ ও নবী নগর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাঁটুসমান পানি জমেছে এসব এলাকায়। প্রায় সব ঘরেই পানি ঢুকেছে। অনেকের রান্নাঘরে পানি ঢোকায় খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পৌর এলাকার বাসিন্দারা।
মরাটিলা এলাকার বাসিন্দা রিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার ঘরে কোমর পানি। ঘরের চুলা দুদিন হলো বন্ধ। পানির দুর্গন্ধের মধ্যেই কষ্ট করে কোনো রকম ঘরে থাকছি। ছেলেমেয়ে কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারছে না।’
একই এলাকার সবিতা রানী দে বলেন, ‘পানি আইয়া বিপদের মধ্যে আছি। রান্নাবান্না সব বন্ধ, বাজারের গাড়িও আয় না। আর এর মধ্যে গিয়া কর্তা অনেক কষ্ট করি বাজার থাকি হোটেলের খাবার আনিয়া খাইরাম।’
পানির মধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা
ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে ২২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যোগাযোগপথ ও আঙিনা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে হাঁটুসমান পানি থাকায় ২৮টিতে সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের অনেক স্কুলে পানি ঢোকায় পরীক্ষা দিতে এসে অনেক ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষার্থী।
পরীক্ষা দিতে আসা তন্ময় সেন বলেন, ‘ঘরের কাপড় পরেই হাঁটুপানির মধ্যে হেঁটে পরীক্ষা দিতে যাই। কেন্দ্রে গিয়ে সেই পোশাক পরিবর্তন করি।’
তাহিরপুর ভ্রমণ না করতে প্রশাসনের অনুরোধ
ঢলের পানির কারণে এ দুর্যোগের মধ্যে পর্যটকদের তাহিরপুর উপজেলা ভ্রমণে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ অনুরোধ জানান।
সেখানে তিনি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টির কারণে তাহিরপুরের প্রতিটি নদনদী, হাওর ও খালবিল কানায় কানায় পানিতে পূর্ণ।
এ দুর্যোগের সময় নদী ও হাওরের পানিতে প্রচুর ঢেউ হচ্ছে যা চলাচলকারী নৌকার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি অসংখ্য বজ্রপাতের ঘটনাও ঘটছে। তাই এ সময়ে নদী ও হাওরে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে পর্যটকদের অনুরোধ করেন তিনি।
ভ্রমণ করলেও এ সময় পর্যটকদের সতর্কতা অবলম্বনসহ লাইফ জ্যাকেট ও অন্যান্য নিরাপত্তমূলক ব্যবস্থা সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও রায়হান কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমরা বর্তমানে হাওরে ভ্রমণে না আসতে অনুরোধ জানিয়েছি। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।’
কর্তৃপক্ষ যা বলছে
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘শুক্রবার সুরমার পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তবে এটি বৃহস্পতিবারের তুলনায় কিছুটা কম। তবে ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় ঢলের কারণে সুনামগঞ্জের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। একই সঙ্গে নদনদীর পানি আরও বাড়তে পারে।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বন্যার্তদের সব রকমের সহযোগিতা করতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শুকনো খাবার, চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করছি।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের দুটি হোটেল থেকে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আলাদা হত্যা মামলা করেছে তাদের পরিবার।
বৃহস্পতিবার করা দুই মামলাতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিচ হলিডে
হোটেল বিচ হলিডেতে ১৯ বছরের লাবণী আকতারের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বাবা মনির হোসেন কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তরুণীর বাবা মামলাটি করেন। এতে চারজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ২০ বছরের কামরুল আলম ও ২১ বছরের আরিফ রহমান নিলু আগে থেকেই আটক ছিলেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওসি জানান, আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন শরীয়তপুরের নড়িয়ার ২১ বছরের যুবক তানজিল হাসান ও নারায়ণগঞ্জের ২০ বছরের মাহিম হাসান অনিক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তরুণী এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়েছিলেন। অভিযুক্ত চারজন কৌশলে তাকে কক্সবাজারে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।
ওসি সেলিম জানান, চার বন্ধুসহ ১১ মে কক্সবাজার আসেন লাবণী। কলাতলীর বিচ হলিডে নামের আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন তারা। সেখানে ১৪ মে অসুস্থ হলে লাবণীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৬ মে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ১৮ মে দুপুরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় তরুণীর সঙ্গে কক্সবাজারে আসা দুজনকে আটক করা হলেও অপর দুজন পালিয়ে যান। আটক দুজন জানিয়েছেন, তারা সবাই অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিলেন।
রয়েল টিউলিপ
হোটেল রয়েল টিউলিপ থেকে বুধবার সন্ধ্যায় ২৯ বছরের মাফুয়া খানমের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার ভাই ছৈয়দুল ইসলাম কক্সবাজারের উখিয়া থানায় মামলা করেছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন।
তিনি জানান, একজনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়, যাকে আটক করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার দুপুরে। সন্ধ্যায় মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওসি জানান, বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের মাফুয়া খানম দিনাজপুরের নাছির উদ্দিন নামের যুবকের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল রয়েল টিউলিপে ওঠেন। দুপুরে খাবার শেষে দুজনই নিজেদের কক্ষে অবস্থান নেন।
এর কিছুক্ষণ পর মাফুয়ার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কথা বলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেন নাছির। সেখানে চিকিৎসক মাফুয়াকে মৃত বলে জানান।
এজাহারে বলা হয়, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে মাফুয়াকে কক্সবাজার এনে হত্যা করা হয়েছে।
মামলা হয়নি সী গালের ঘটনায়
কক্সবাজারের হোটেল সী গালে বুধবার রাতে মনিরুল ইসলাম নামের এক পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে ওঠা ৩৫ বছরের লিজা রহমান ঊর্মিকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।
তিনি জানান, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সী গাল হোটেলের ৭২৪ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন। সেখানে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অসুস্থতা বোধ করলে মনিরুলকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে রাত ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় স্ত্রী পরিচয়ে সঙ্গে থাকা নারীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল স্বামী নন বলে স্বীকার করেছেন ঊর্মি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ সদস্যের কবজি বিচ্ছিন্নের ঘটনায় প্রধান আসামি কবির আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গেলে গোলাগুলিতে কবির গুলিবিদ্ধ হন বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
তিনি বলেন, ‘লোহাগড়ার গহীন পাহাড়ে র্যাবের অভিযানে গুলিবিদ্ধ হন কবির আহমদ। পরে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
এর আগে গত রোববার রাতে বান্দরবন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কবিরের স্ত্রী রানু বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত রোববার সকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কবির আহমদ, তার স্ত্রী ও মাকে আসামি করে মামলা হয়।’
গত রোববার সকাল ১০টার দিকে লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নের আধারমানিক এলাকায় আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হামলার শিকার হন পুলিশ। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ জনি খান ও মো. শাহাদাত ছাড়াও মামলার বাদী আবুল হাশেম আহত হন। আসামি কবির আহমদের ধারালো দায়ের কোপে কনস্টেবল জনি খানের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তিনি ঢাকার আল মানার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন:
সিলেট নগরীর চালিবন্দর এলাকার কুন্তি দাসের ঘর চার দিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। ঘরে-বাইরে চারদিক থইথই পানিতে। তবু খাওয়ার জন্য নেই এক ফোঁটাও। নেই বিদ্যুৎও।
১৫ মিনিট হেঁটে গিয়ে একটি কারখানা থেকে প্রতিদিন খাওয়ার পানি নিয়ে আসেন তিনি।
কুন্তি বলেন, ‘পানির কারণে না হয় বিছানার ওপরে উঠে বসে থাকা যায়। কষ্ট করে রান্নাবান্নাও করা যায়। কিন্তু পানি ছাড়া তো থাকা যায় না। চার দিন ধরে পানি পাচ্ছি না। টয়লেটও পানিতে তলিয়ে গেছে। সেটিও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।’
তিনি জানান, যে কারখানা থেকে পানি আনা হয়, সেখানে গিয়ে টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে ঘরের সবাইকে।
সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎহীনতা। সব মিলিয়ে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ এখন চরমে। জেলার অর্ধেক এলাকাই এখন বিদ্যুৎহীন।
কুন্তির প্রতিবেশী দীপক রবি দাস বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সিটি করপোরেশন থেকে পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বন্যায় সিটি করপোরেশনের পানির লাইন তলিয়ে গেছে। এখন পাইপ দিয়ে ময়লা পানি আসে। আর তাতে খুব দুর্গন্ধ। খাওয়া তো দূরের কথা, হাতেই নেয়া যায় না।’
চালিবন্দরের পাশের উপশহরেও মিটার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চার দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
উপশহরের বি-ব্লকের নাজাত আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ দিন ধরে ঘরে পানি। ঘর থেকে বের হওয়ারও উপায় নেই। চার দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। খাওয়ার পানি নেই। টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটছে আমাদের।’
এসব সমস্যার কথা জানিয়ে সি-ব্লকের আব্দুল আহাদ বলেন, ‘লজ্জায় আশ্রয়কেন্দ্রেও যেতে পারছি না। বাচ্চারা সেখানে থাকতেও পারবে না। আবার ঘরেও থাকতে পারছি না। বন্যায় আমাদের সংকট বলে বোঝানো যাবে না।’
কোমর পানি নগরীর তালতলা এলাকাতেও। সেখানে বাড়ি বেসরকারি চাকরিজীবী মিলন তালুকদারের।
তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পানি বন্ধ। ফিল্টারে করে পানি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এদিকে আসছে না বন্যার কারণে। তাই বোতলজাত পানি কিনে পান করতে হচ্ছে। আমরা সামান্য আয়ের মানুষ। এভাবে কতদিন চলতে পারব। চাকরির কারণে গ্রামের বাড়িও যেতে পারছি না।’
নগরের ঝালোপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সরবরাহ করা পানি সংগ্রহ করতে আসেন শাহেদ আহমদ।
তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিনে একবার আসে। এই পানিতে এলাকার অর্ধেক মানুষের এক বেলার চাহিদাও মেটে না।
‘আগে পাশের সুরমা নদীতে আমরা গোসল করতে পারতাম। কিন্তু এখন নদীর পানি এত ময়লা হয়েছে যে তাতে গোসল করারও উপায় নেই।’
নগরীর সোবহানীঘাট এলাকার উত্তরা সেন পম্পা বলেন, ‘নোংরা পানিতে পায়ে ঘা হয়ে গেছে। আজ বাধ্য হয়ে বাচ্চাকে নিয়ে আরেকটি পরিবারের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এখানেও খাওয়ার পানি নেই।’
ঘর ছেড়ে পরিবার নিয়ে নগরের একটি হোটেলে গিয়ে উঠেছেন শেখঘাট এলাকার কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘পানির সঙ্গে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনাও ঘরে ঢুকছে। এর মধ্যে থাকতে থাকতে আমার পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বাসায় খাওয়ার পানি ও স্যানিটেশনের সমস্যা। তাই একটি হোটেলে উঠেছি।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে প্লাবিত এলাকায় বুধবার থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ সরবরাহের পাইপে কোনো ছিদ্র থাকলে তাতে বন্যার পানি মিশে রোগবালাই দেখা দিতে পারে।’
তবে এসব এলাকায় ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে আলিম বলেন, ‘যেসব এলাকা প্লাবিত হয়নি, সেসব এলাকায় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।’
নগরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে দুর্ভোগ আরও বেশি।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে ১০৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি সম্পূর্ণ ও ১৫টি ইউনিয়ন আংশিকভাবে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি আছে ১৫ লাখ মানুষ।
জকিগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রী ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বন্যায় এলাকার বেশির ভাগ টিউবওয়েল ডুবে গেছে। খাওয়ার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। দূর-দূরান্ত থেকে পানি নিয়ে আসতে হচ্ছে। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় রান্নাবান্নাও করা যাচ্ছে না।’
‘ঘরে অনেকগুলো গরু আছে। নিজেরা তবু কোনো রকমে খেতে পারছি। কিন্তু মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।’
নগরের দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকা প্লাবিত না হলেও বরইকান্দি এলাকায় বিদ্যুতের সাবস্টেশন তলিয়ে যাওয়ায় তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই কোথাও।
গোটাটিকর এলাকার সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বন্যা আসেনি এখনও। তবে আমরাও দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছি না। তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। এতে পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।’
তবে বিশুদ্ধ পানির সংকটের তথ্য নেই জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলামের কাছে।
তিনি বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানি সংকটের তেমন কোনো তথ্য আমরা পাইনি। পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি অবশ্য বলেছেন, সিলেট জেলায় ১৩ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানিয়েছেন, দুটি উপকেন্দ্রে বন্যার পানি ঢুকেছে। সেখানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে একটি উপকেন্দ্র সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। আর শাহজালাল উপশহর এলাকায় জলাবদ্ধতা বেশি থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সিলেটের সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় যারা অবস্থান করছেন, তাদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সিটি মেয়র জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বন্যার্তদের সেবায় করপোরেশনের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
১৩ দিনের ব্যক্তিগত সফর শেষে বৃহস্পতিবার সিলেটে ফিরে নগরের একাধিক প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন শেষে মেয়র বলেন, ‘সিলেট মহানগরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নগরের নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। খাওয়ার পানির সংকট, স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
‘দ্রুত সময়ের মধ্যে প্লাবিত এলাকার পানিবন্দি মানুষের দোরগোড়ায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পাঠানো হয়েছে। খাওয়ার পানির সংকট নিরসনে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। আরও আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য