রাজধানীতে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সক্রিয় এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
মিরপুরের সনি সিনেমা হলের বিপরীতের রাস্তা থেকে বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার বুলবুল আহমেদ মনিরের কাছ থেকে দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও তিনটি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
মনির সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অষ্টম পর্বের ছাত্র। উগ্র মতাদর্শের কারণে তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, গ্রেপ্তার মনির ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এবিটির মতবাদ প্রচারের জন্য উগ্রবাদী বই ও প্রচারপত্র তৈরি করতেন। তিনি অনলাইনে তার সহযোগী অন্যান্য আইডির সঙ্গে এনক্রিপ্টেড অ্যাপের মাধ্যমে জিহাদের আর্মড কমব্যাট প্রশিক্ষণের ভিডিও ও জিহাদের ময়দানে শরিক হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি দেশবিরোধী পরিকল্পনা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘মনির সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র, হত্যা, জনমনে ত্রাস ও ভীতি সঞ্চার এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা করছিলেন। এ ছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।’
মনিরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আসলাম খান বলেন, ‘এবিটির কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তিনি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন লিংক পাওয়া গেছে এবং এর মধ্যে খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।’
মনিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দুই কন্যাকে নিয়ে জাপান যেতে আপিলে আবেদন করেছেন জাপানি মা এরিকো নাকানো।
মঙ্গলবার তার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী শিশির মনির।
তিনি জানান, দুই মেয়েকে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুই মেয়ের বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদন করেন মা এরিকো। সেই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী সোমবার তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
গত ১৫ ডিসেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ দুই শিশুকে মায়ের কাছে দেয়ার নির্দেশ দেয়। তবে দিনের বেলা বাবা দেখা করতে পারবেন।
গত বছরের ১৯ আগস্ট বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বামী ইমরান শরীফের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই কন্যাসন্তানকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি মা এরিকো। রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২১ নভেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট।
রায়ে দুই মেয়েকে বাবার কাছে রেখে মা বছরে তিনবার ১০ দিন করে দেখা করতে পারবেন। আর এ জন্য মায়ের সব খরচ বাবাকে বহন করতে হবে। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেন মা। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ দুই শিশুকে মায়ের কাছে রাখার আদেশ দেয়।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান শরীফ ইমরান জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।
এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিল।
গত বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিয়ে বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এরপর ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেন। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রাজধানীর সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজে বঙ্গবন্ধু ‘সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ’-এর জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বীয় জ্ঞানের চেয়ে ব্যহারিক শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক শিক্ষার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।’
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সঙ্গে কাজ করার মানসিকতাই তৈরি হয়নি। আমরা তত্ত্বীয় জ্ঞানের ওপর এত বেশি জোর দিচ্ছি যে, বাস্তবে কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে কৃষি কাজসহ কায়িক পরিশ্রমের কাজ হচ্ছে অশিক্ষিত লোকের কাজ। যেহেতু সে শিক্ষিত হয়ে গেছে সেহেতু সে এসব কাজ করবে না।
‘কিন্তু শিক্ষার্থীরা লদ্ধ জ্ঞানকে ব্যবহার করার মাধ্যমে উদ্ভাবন করতে পারে। তাই শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ থাকলো, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ব্যবহারে উপযুক্ত করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত ও বিজ্ঞানমনস্ক করার আহ্বান জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কূপমণ্ডুকতা, জড়তা, অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াশীলতার মধ্যে ডুবে থাকে এবং কুসংস্কার, ধর্মীয় অপব্যখ্যা, নারী-পুরুষের মধ্যে অসমতার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ চলে যায় সৃজনশীল চর্চার অভাবে।
‘সে কারণে শিক্ষকদের আমি অনুরোধ করব, জাতির পিতা যে দক্ষতা নির্ভর জনগোষ্ঠী করতে চেয়েছিলেন, শিক্ষার্থীদের সেই বাস্তব শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দক্ষতা নির্ভর জনগোষ্ঠী গেড়ে তুলতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
আরও পড়ুন:
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় মৌলভীবাজারের আব্দুল আজিজ হাবলুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারমান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন বিচারপতির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করে দেয়।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রাখে ট্রাইব্যুনাল।
আব্দুল আজিজ ছাড়া বাকি দুই আসামি হলেন আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মতিন। এর মধ্যে আব্দুল মতিন পলাতক।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি।
পরে সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। পরে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। মামলাটি রায়ের জন্য তালিকায় এলে আগামী ১৯ মে বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেয় আদালত।’
তিনি বলেন, ‘এ আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগে শুনানি হয়েছে। আমরা সবগুলো অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে যুক্তি দিয়েছি। ১৯৭১ সালে আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মতিন দুই ভাই মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে তারা রাজাকারে নাম লেখান।
‘এর স্বপক্ষে আমরা প্রমাণ জমা দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের মামলাও রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা তাদের অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে আমার মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রসিকিউশনের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং আমার মক্কেলেরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেক্টর কমান্ডারসহ আতাউল গনি ওসমানির দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট আছে। সুতরাং এ মামলায় আমরা খালাস পাবো এমনটিই প্রত্যাশা করছি।
২০১৮ সালের ১৫ মে এ মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর করোনা কারণে দীর্ঘদিন ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর সড়ক ধরে যারা নিয়মিত চলাচল করেন, তারা পরিচিত সোবহানবাগ জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের সঙ্গে। মসজিদের একটি অংশ রাস্তার ওপরে হওয়ায় এখানে মিরপুর রোড সংকুচিত হয়ে গেছে।
বহু বছরের এ চিত্র এবার বদলে যাচ্ছে। রাস্তার জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এর বদলে পুরাতন তিনতলা মসজিদটি ভেঙে নতুন ১০ তলাবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে পুরাতন ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের কাজ শুরু করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে নির্মাণের জন্য সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আগের মসজিদের আয়তনের সমপরিমাণ জায়গা নিয়ে বেষ্টনী দেয়া আছে পুরো প্রকল্প এলাকা। এর ভেতরে চলছে নতুন ভবন নির্মাণের কর্মযজ্ঞ।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের নতুন অস্থায়ী তিনতলা ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
প্রকল্প এলাকার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাইলিংয়ের জন্য বড় বড় যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। নিজেদের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা।
এখানে কথা হয় প্রকল্পের প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি অস্থায়ী ভবন করে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়েছে গত বছরের শেষের দিকে। এরপর পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন সবেমাত্র ১০ তলা ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। পুরো ভবন নির্মাণে দুই বছরের মতো সময় লাগবে।
প্রকল্প এলাকা থেকে মূল সড়কের জন্য ১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘১৩ ফুট জায়গা ছেড়ে নতুন মসজিদ করা হচ্ছে। আমরা কাজের সুবিধার্থে এখনই ১৩ ফুট জায়গা ছাড়িনি। কাজ কিছুটা গুছিয়ে তারপর রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয়া হবে।’
প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আরো জানান, নকশা অনুযায়ী ১০ তলা এই মসজিদে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। এতে জেনারেটর, লিফট, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, সোলার প্যানেল সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, এয়ারকুলার, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাসহ আরো অনেক ব্যবস্থাপনা থাকবে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
১৯৩৭ সালে প্রায় ৩৫ শতাংশ জমির ওপর সোবহানবাগ মসজিদ ও পাশে পারিবারিক কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সোবহান। ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মারা গেলে আবদুস সোবহানকে এই কবরস্থানেই দাফন করা হয়। তিনতলা এই মসজিদে এক সঙ্গে ৬০০ থেকে ৭০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। এখন নতুন ভবন হলে সেখানে অন্তত ৪ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন।
প্রকল্পের ঠিক পাশেই মসজিদের অস্থায়ী ভবন করে দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তিনতলা একটি ভবনে চলছে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম। এখানে প্রায় ৭০ জন মাদ্রাসা ছাত্রের থাকা-খাওয়া-পড়াশোনার পাশাপাশি সাধারণ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
সোবহানবাগ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দীন নিউজবাংলাকে জানান, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মসজিদ কমিটিকে একটি চিঠি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার মসজিদটিকে আরও বড় করতে চায়। তবে রাস্তার জন্য কিছুটা জায়গা ছাড়ার অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। তখন মসজিদ কমিটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
মো. আলাউদ্দীন আরো বলেন, ‘মসজিদটি ৮৩ বছর আগে নির্মিত। তখন তো মিরপুর সড়ক এত চওড়া ছিল না। আর মানুষের সংখ্যাও কম ছিল। তখন মসজিদটি তিনতলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বেড়েছে। মুসল্লিদেরও চাপ বেড়েছে। একসময় বাড়তি চাপের কারণে রাস্তায় দাঁড়িয়েই মানুষ নামাজ পড়া শুরু করে, এতে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়।
'অন্যদিকে মসজিদের ভিত্তি পুরাতন ও দুর্বল থাকায় এটি আর ওপরের দিকে বাড়ানো সম্ভবও হচ্ছিল না। সব কিছু বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে মসজিদ কমিটি রাজি হয়। কারণ মসজিদ তো মানুষের জন্যই, আবার রাস্তাও মানুষের জন্য। তাহলে মানুষে মানুষে অসুবিধা তৈরির দরকার কী?’
কলেজ ড্রেস পরে অযথা ঘোরাঘুরি না করা, কলেজ বাসে যাতায়াতের সময় ইভটিজিংসহ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা কলেজ প্রশাসন।
নির্দেশনায় শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজ করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
সোমবার ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এ. টি. এম. মইনুল হোসেনের সই করা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জানানো যাচ্ছে যে, তাদের ক্লাস শুরুর আগে, ক্লাস চলাকালীন এবং ছুটির পরে সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজ সংলগ্ন এলাকা, নিউ মার্কেট এবং নীলক্ষেত এলাকায় কলেজ ড্রেস পরিহিত অবস্থায় অযথা ঘোরাঘুরি বা আড্ডা দেয়া সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ করা হলো।
তাছাড়া কলেজ বাসে যাতায়াতের সময় ইভটিজিংসহ যে কোনো বিশৃঙ্খলা করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কোনো শিক্ষার্থী নিয়মবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর ব্যবস্থা নিলে তার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী থাকবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীতে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যাতে কেউ নাশকতা করতে না পারে সেদিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার সকালে রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি বেড়েছে। রাজধানীতে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যাতে কেউ আগুনসন্ত্রাস বা নাশকতা করতে না পারে সেদিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।’
রমজান মাস ও ঈদ-উল-ফিতরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক থাকায় ডিএমপির সব স্তরের অফিসার ও ফোর্সদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধ ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলবে। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে ডিএমপির ক্রাইম বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না ঘটে সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।’
ঢাকা শহরের অপরাধ প্রতিরোধে সবাইকে আরও নিরলসভাবে কাজ করতে হবে বলে নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার।
সভায় ঢাকা মহানগরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানসহ ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসারদের পুরস্কৃত করা হয়।
এপ্রিল মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আটটি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে তেজগাঁও বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে রমনা থানা। শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী বিভাগ উত্তরা।
সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মুজিব আহম্মেদ পাটওয়ারী। পুলিশ পরিদর্শকদের (তদন্ত) মধ্যে প্রথম হয়েছেন হাজারীবাগ থানার মাসুদুর রহমান। পুলিশ পরিদর্শকদের (অপারেশনস্) মধ্যে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার তোহাফাজ্জল হোসেন।
আটটি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররা, উপ-পুলিশ কমিশনাররাসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের সঙ্গে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সোমবার নবনির্বাচিত কমিটির একাংশের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষসহ বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবী এ সিদ্ধান্ত নেন।
সাত আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সহসম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কার্যকরী পরিষদের সদস্য মাহদীন চৌধুরী, গোলাম আকতার জাকির, মঞ্জুরুল আলম সুজন ও কামরুল ইসলাম।
জরুরি সভায় পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সেগুলো হলো- ১. বিদায়ী ২০২১-২২ কমিটির সাতজন আওয়ামীপন্থি সদস্যের গত ১২ এপ্রিল তথাকথিত ১৫তম কার্যকরী কমিটির সভা এবং সে অবৈধ সভায় তথাকথিত নির্বাচন সাবকমিটি গঠন ও তাদের সব কার্যক্রম অবৈধ মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
২. যেহেতু পরাজিত প্রার্থী আব্দুন নুর দুলালকে অবৈধ পন্থায় সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিনি অবৈধভাবে সম্পাদকের পদ জবরদখল করেছেন, সেহেতু নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
৩. যেহেতু আব্দুন নুর দুলাল অবৈধভাবে ঐহিত্যবাহী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের পদ জবরদখল করেছেন, তাই তার সঙ্গে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে কোনো রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
৪. আব্দুন নূর দুলালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় সভাপতির সঙ্গে কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে চেক বা ভাউচার পাস এবং হিসাব পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৫. এসব সিদ্ধান্তের অনুলিপি প্রধান বিচারপতি, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সমিতি সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৫-১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২০২৩ কার্যকরী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১৭ মার্চ ভোট গণনা হয়। গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। বিএনপি প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে বিজয় ঘোষণার সময় আপত্তি দিয়ে ভোট গণনার দাবি তোলেন আওয়ামী লীগ থেকে সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল।
একপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক ফল ঘোষণা না করেই পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয়। বারের সাবেক সভাপতিদের মধ্যস্থতায় সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলেও তা সমাধান হয়নি।
পরে বিএনপির রুহুল কুদ্দুস কাজল নেম প্লেট লাগিয়ে চেয়ারে বসে পড়লে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে নূরের সমর্থকেরা। পরে তালা ভেঙে ভোট পুনর্গণনা করে আব্দুন নূর দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে তারা চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
ভোট পুনর্গণনায় ১৪ পদের মধ্যে সভাপতি, সম্পাদকসহ সাতটিতে আওয়ামী লীগ এবং কোষাধ্যক্ষসহ সাতটিতে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা জয় পান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য