‘চাকরির কারণে আমাকে প্রতিদিন বীরগঞ্জে যেতে হয়। সকাল ৮ থেকে দুপুর পর্যন্ত এখানে বসে আছি। একটা বাসও পেলাম না। উল্টো দেখলাম সড়কে বাস রেখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে বিকল্প যানবাহনেও যেতে পারছি না। যেভাবেই হোক না কেন, অফিসে যেতে হবে। অফিসে যেতে না পারলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর শহরের সরকারি কলেজ মোড়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে বাস না পেয়ে নিউজবাংলাকে কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ওয়াহিদুল ইসলাম।
পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতাকে ‘মারধরের’ বিচার এবং দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে গ্রেপ্তার ৮ অ্যাম্বুলেন্স চালকের মুক্তির দাবিতে বুধবার মধ্যরাত থেকে জেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। দিনাজপুর-রংপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে বাস রেখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখেন শ্রমিকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের ফুলবাড়ী বাস স্ট্যান্ড, বালুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড, সুইহারী মোড়, কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে বাস দিয়ে ব্যারিকেড দেয় শ্রমিকরা।
এছাড়া জেলার বিরল, বোচাগঞ্জ, কাহারোল, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, ঘোড়াঘাট ও হাকিমপুরে বাস স্ট্যান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে একইভাবে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকরা।
এভাবে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ করে করে দেয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন ওয়াহিদুল ইসলামের মতো আরও অনেক যাত্রী। বাস স্ট্যান্ডে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন, বাস না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।
নিউজবাংলাকে যাত্রী আসমা বেগম বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে বাবার বাড়ি যাব। কিন্তু গাড়ি নাই। এই ছোট বাচ্চা নিয়ে কীভাবে যাব সেই চিন্তায় মাথা ঘুরপাক খাচ্ছে।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘১০/১৫ দিন আগে ঢাকা থেকে দিনাজপুর বেড়াতে আসছি। কিন্তু আজ ঢাকায় যাওয়ার জন্য কোচ কাউন্টারে গেলে সেখানে জানানো হয়েছে বাস ও কোচ বন্ধ। এখন বিকল্প যেকোনো ব্যবস্থায় হলেও ঢাকা যেতে হবে।’
আরেক যাত্রী শরিফুল আলম বলেন, ‘জরুরি কাজে বিরামপুর যেতে হবে। কিন্তু বাস বন্ধ। বিকল্প যানবাহনে যেতে চাইলেও যেতে পারছি না। কেননা যে পাশ দিয়ে বিকল্প যানবাহন যাবে, সেই রাস্তায় বাস দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।’
শ্রমিকদের অভিযোগ, বুধবার বিকেলে দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে সিএনজি চালিত অটোরিকশার এক যাত্রীকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে বাসে তুলে নেয় এক বাস হেলপার। এর জেরে অটোরিকশা চালকরা সেই হেলপারকে মারধর করে। বাস স্ট্যান্ড শাখা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাব্লু এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার মাথায় আঘাত করে চালকরা।
এছাড়া তারা আরও জানান, একই দিন বিকেলে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে রোগী ও নিহতদের মরদেহ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে কোতয়ালী থানা পুলিশ ৫ অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তাদের মুক্তির দাবিতে রাত ১২টায় হাসপাতালের সামনে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে অ্যাম্বুলেন্স রেখে অবরোধ করেন অন্যান্য চালকরা। পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আরও ৩ অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
দিনাজপুর জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রমিক নেতাকে মারধরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। পরে কোতয়ালী থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন এসে শ্রমিকদের অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করেন। পরে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
‘সন্ধ্যায় থানায় মামলা দিতে গেলে সেখানে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বসায় রেখে ওসি সাহেব আমাদের বলেন, এসপি সাহেবের সঙ্গে কথা না বলে মামলা নিতে পারব না। তখন আমি ওসি সাহেবকে আটক অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ছেড়ে দিতে বলি। তারা অপরাধ করে থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা শ্রমিক ইউনিয়নকে জানাতে পারতেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে ৮ জন চালককে ধরে নিয়ে যাবে। মারধর করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সড়কে বৈধভাবে চলাচল করি। অথচ পুলিশ প্রশাসন আমাদের লোকজনকে ধরে নিয়ে যায়। পাগলু ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তাই আমরা বাধ্য হয়ে এই অবরোধ ও যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি।’
শ্রমিক নেতার ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের মুক্তি না দিলে তাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলতে থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। তা আমরা গ্রহণ করেছি। তারা কি কারণে আন্দোলন করছে, তা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মারামারি থামাতে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার নতুনপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
৫৫ বছর বয়সী দুলাল হোসেন দুলুর বাড়ি একই গ্রামে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, বিজিবির কাছে হাজিরা দেয়া নিয়ে রাতে নতুনপাড়া গ্রামের মোংলা হোসেনের সঙ্গে বাদশাহ আলী ও রাজা মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এ সময় পাশের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন দুলাল হোসেন।
মারামারি থামাতে তিনি সেখানে এগিয়ে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান।
ওসি আরও জানান, দুলাল হোসেন হৃদরোগে ভুগছিলেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্ট্রোক করার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও তিনি একবার স্ট্রোক করেছিলেন।
ওসি আব্দুল খালেক বলেন, ‘ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সকাল ১০টায় তাকে দাফন করা হবে বলে জেনেছি।’
আরও পড়ুন:বগুড়ার গাবতলীতে আম কুড়াতে বেরিয়ে দুই শিশুর পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। তারা দুজন চাচাতো ভাইবোন।
উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের তারাবাইশা গ্রামে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলো তারাবাইশা গ্রামের মো. মিরাজ ও আয়েশা সিদ্দিকা। দুজনেরই বয়স পাঁচ বছর।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেলে হালকা ঝোড়ো বাতাস শুরু হলে মিরাজ ও আয়শা বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও শিশু দুটি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাদের খুঁজতে বের হয়। একপর্যায়ে আমগাছের পাশের পুকুরে তাদের ভাসমান মরদেহ পাওয়া যায়।
ওসি বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা করেছে পুলিশ।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে সহপাঠীরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত স্কুলছাত্রের নাম ধ্রুব চন্দ সাহা। তার বয়স ১৫ বছর।
সে ওই এলাকার মাদব চন্দ্রের ছেলে। ইসদাইর রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত সে।
আটক স্কুলছাত্ররা হলো ইয়াসিন, পিয়াস, অজয় দাস ও মো. নিপন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, নিহত ধ্রুবর সঙ্গে তার ক্লাসের কয়েকজন সহপাঠীর বিরোধ ছিল। রাতে ধ্রুব এই এলাকায় গেলে তার পাঁচ থেকে সাতজন সহপাঠী স্কুলের সামনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে অন্ধকার স্থানে পেয়ে তারা ধ্রবকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
ধ্রুব চিৎকার করলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে ফেলে পালিয়ে যায় সহপাঠীরা। পরে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, স্থানীয় লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ধ্রুবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে।
নিহত ধ্রুবর বাবা মাধব চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার ছেলে রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। বাসার সামনে দুর্বৃত্তরা তাকে তলপেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রকাশ্যে শিয়ালের মাংস বিক্রি ও ভাগবাটোয়ারা হয়েছে।
উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের তন্তর বাজার এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ইউনিয়নের ছতুরা শরীফ গ্রামের কয়েকটি পরিবারের লোকজন শিয়ালের মাংস ভাগবাটোয়ারা করে।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও ধরখার ফাঁড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই শিয়ালের মাংস নিয়ে পালিয়ে যান লোকজন।
এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে না পারলেও দড়িতে বাঁধা জীবিত একটি শিয়াল উদ্ধার করে জঙ্গলে মুক্ত করা হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ছতুরা শরীফ গ্রামের একটি বেগুনক্ষেত থেকে দুটি শিয়াল ধরা হয়। ওই সময় কসবা উপজেলার ভাদুইর গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আসলাম ও ফোরকান ওই গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে তন্তরবাজার এলাকায় একটি শিয়াল জবাই করেন।
এরপর সেই মাংস ভাগবাটোয়ারা ও বিক্রি করা হয়।
শিয়ালের মাংস কেনা এক ক্রেতা বলেন, ‘বাত, ব্যথা কিংবা কঠিন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে শিয়ালের মাংস রান্না করে খাওয়ার বিকল্প নেই। এসব ক্ষেত্রে শিয়ালের মাংস অব্যর্থ ওষুধ। এই কথা বিশ্বাস করে অনেকেই শিয়ালের মাংস কিনে নেন।’
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগ তুলেছেন ওই স্কুলেরই দশম শ্রেণির এক ছাত্রী।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আশাশুনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই স্কুলছাত্রী।
ভুক্তভোগী জানান, কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালীর কাছে তিনি প্রাইভেট পড়তেন। সেই সুযোগে প্রথমে ফোন নম্বর নিয়ে পরে তার সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত হন প্রধান শিক্ষক।
এর পর থেকে প্রায়ই ভুক্তভোগীকে ফোন করে লেখাপড়ার খোঁজখবর নিতেন দুখীরাম। একপর্যায়ে ফেসবুক মেসেঞ্জারে উত্তেজক মেসেজ দিতে থাকেন তিনি। এমনকি মেসেজে ও ভিডিও কলে শরীরের গোপন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ছবি দেখতে চাইতেন তিনি।
ওই স্কুলছাত্রী বলেন, ‘যখন আমি একা থাকতাম তখন স্যার আমার ওড়না ধরে টানাটানি করতেন। আমি এগুলো সহ্য করতে পারতাম না। ভয়ে প্রথমে কাউকে কিছু জানাইনি। পরে সহপাঠীদের জানালে তারা এর প্রতিবাদ করতে বলে।’
এ বিষয়ে ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক দুখীরাম দুই বছর আগে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। ছাত্রীর সঙ্গে এই ঘটনা শুনে আমরা সবাই হতভম্ব। ফেসবুকে গোপনে তিনি কখন কী করেছেন তা আমরা জানি না। আমরা স্যারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি ফেসবুক হ্যাক করে কেউ এমনটি করেছেন বলে দাবি করেন।’
এদিকে প্রধান শিক্ষকের পাঠানো মেসেজগুলোর স্ক্রিনশট শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন মানুষের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগটি আমি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের কচুয়ায় এম এম মনির নামের এক ভুয়া চিকিৎসককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কচুয়া উপজেলার জিরো পয়েন্ট এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার রোহান সরকার এই দণ্ডাদেশ দেন।
ওই সময় চিকিৎসকের চেম্বার সিলগালা করে দেয়া হয়।
বাগেরহাট জেলার সহকারী কমিশনার রোহান সরকার বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিয়েই তিনি নিজেকে এমবিবিএস পাস দাবি করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। তিনি সাইনবোর্ডে যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখেছেন সেটিও ভুয়া।
‘তার অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক লাখ টাকা জরিমানা ও তার চেম্বরটি বন্ধ করে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। তিনি কখনও চিকিৎসা সেবা দেবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।’
পরীক্ষা চলাকালে ফেসবুকে লাইভে এসে দেশব্যাপী সমালোচিত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমনকে দলীয় অনুষ্ঠানে দেখা গেছে।
ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও মিছিলে দেখা যায় তাকে।
শহরের ভূষণ স্কুল রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেলে কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। সুমন এমপির ৭ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের বক্তব্য নিজের ফেসবুকে লাইভ দেন।
এরপর একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে স্লোগান দিতেও দেখা যায় সুমনকে। ভিডিওতে দেখা যায় কালো রঙের পাঞ্জাবি পরে আছেন সুমন।
ছাত্রলীগের সমালোচিত এই নেতা আবারও দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল দুপুরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ সময় পরীক্ষার হলে বসেই ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন সুমন। পরে তার এই লাইভটি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়।
এরপর এ ঘটনা তদন্তে ৯ এপ্রিল ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চিফ ইন্সট্রাক্টর সোহরাব হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
দলের এক নেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করা নেতা দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া লজ্জাকর। দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন নেতা দরকার নাই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য