কৃষিতে উৎপাদন কার্যক্রম গতিশীল ও পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধ করতে বিশেষ ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ডাউন পেমেন্ট না নিয়েই তিন বছরের জন্য পুনঃতফসিল করা যাবে কৃষি ঋণ।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ডাউন পেমেন্ট গ্রহণের শর্ত শিথিল করে স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণ পুনঃতফসিলের তারিখ থেকে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ৩ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে। ক্ষেত্র বিশেষে বিনা ডাউন পেমেন্টেও এ ধরনের ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে।
ঋণ পুনঃতফসিলের পর এ খাতের ঋণগ্রহীতাদের কোনো অর্থ নতুনভাবে জমা ছাড়াই পুনরায় নতুন ঋণ দেয়া যাবে।
কৃষকদের সার্টিফিকেট মামলা চলার সময় গ্রাহকের সঙ্গে সমঝোতার (সোলেনামা) মাধ্যমে সার্টিফিকেট মামলা স্থগিত বা নিষ্পত্তি করে ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে বলেও এতে জানানো হয়।
এর আগে পুনঃতফসিল করা স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণের ক্ষেত্রেও নতুন এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
নতুন এ নির্দেশনা সার্কুলার জারির দিনথেকেই কার্যকর হবে এবং চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কৃষি ঋণ সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আর্ন্তজাতিক বাজারে বিভিন্ন কৃষি উপকরণের মূল্য এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এর আমদানি মূল্য বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে কৃষি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধে এ খাতের উদ্যোক্তাদের উৎপাদন কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনা প্রয়োজন।
এমন পরিস্থিতিতে, কৃষি খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধ সহজতর করা এবং স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখতে স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে অসাধু ব্যবসায়ীদের ফৌজদারি আইনের আওতায় শাস্তি চায় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বালাদেশ-ক্যাব। বেসরকারি এই সংগঠন মনে করে, ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে ভোক্তা অধিদপ্তর যথেষ্ট নয়; এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ জরুরি।
সোমবার ‘অতিমুনাফা ও প্রতারণার শিকার ভোক্তারা: আইন মানার তোয়াক্কাই নেই’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে বক্তারা এমন বক্তব্য তুলে ধরেন।
ওয়েবিনারে ক্যাবের নেতারা বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে উচ্চ পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হলেও বেপরোয়া কিছু ব্যবসায়ীর কারণে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। চাল-ডাল থেকে শুরু করে ভোগপণ্যের বাজারে কিছু ব্যবসায়ী নিম্ন মানের পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় এসব ব্যবসায়ীকে ঠেকাতে কেবল জরিমানা নয়, আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
মূল প্রবন্ধে নাজের হোসাইন বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা ঠেকাতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও সিটি করপোরেশনের বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে। অপরাধের জন্য সতর্ক করার পাশাপাশি জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। তারপরও অপতৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না।’
সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীদের ভিত এতটাই শক্তিশালী যে সরকারি প্রশাসন যন্ত্র মনে হয় তাদের কাছে অসহায়। এরা টাকার জোরে সরকারি আমলা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিভিন্ন মিডিয়াকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেন।’
ব্যবসায় অসাধু প্রক্রিয়ায় কোটিপতির সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আগে একই কায়দায় গুঁড়োদুধে ময়দা মিশ্রিত করার হোতাসহ চিনি, সয়াবিন, চাল কেলেঙ্কারির হোতাদের কোনো শাস্তি হয়নি। তারা বরাবরই পর্দার আড়ালে থেকে রেহাই পেয়ে যায়।’
‘ব্যবসায় এমন প্রতারণা ফৌজদারি অপরাধও বটে। তবে আইন দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সব সময় সম্ভব না-ও হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন অতিমুনাফালোভী, প্রতারক, মজুতকারী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের সামাজিকভাবে বয়কট করা। তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যে জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত হতে পারে।’
ক্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এম সামসুল আলম বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়া আর কোথাও ভোক্তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য কেবল ভোক্তা অধিদপ্তরই যথেষ্ট নয়, বিভাগ চাই।
‘দেশে এমন কোনো খাত নেই যেখানে অসাধু ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দেয়নি। আমরা ভোক্তারা অনেকটা বন্দি হয়ে গেছি। এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে দেশের আইন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কেউ-ই সফল নয়।’
‘দেশে অসাধু ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম। কিন্তু সৎ ব্যবসায়ীরা এই অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারছেন না। তারা অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত হচ্ছেন।’
ভোক্তাদের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, ‘আপনারা জেলায় জেলায় অন্তত একটা করে ঘটনা চিহ্নিত করুন। যাতে এসব ঘটনাকে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা আইনের আওতায় ফৌজদারি আইনে মামলা করা যায়। ভোক্তা অধিদপ্তরের হয়তো এখনও মামলা করার অধিকার নেই। তবে আইন করা হচ্ছে। ক্যাক একমাত্র সংগঠন, যাকে মামলা করার অধিকার দেয়া হয়েছে। ভোক্তা স্বার্থবিরোধী এসব ঘটনায় আমরা প্রয়োজনে প্রমাণসহ আদালতে যাব।
আরও পড়ুন:বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) উদ্যোগ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ‘বিলাস ও অনভিপ্রেত’ পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বাজেট ঘোষণার আগেই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
আগামীকাল মঙ্গলবার অথবা তার পরের দিন এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে তা কার্যকর করবে এনবিআর। রাজস্ব বোর্ডের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একটি সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করছে।
পণ্যের তালিকা এবং কত হারে শুল্ক বসানো হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে যেসব পণ্য ব্যবহার না করলে ভোক্তাদের আপাতত সমস্যা হবে না কিংবা দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, তালিকায় সেইসব পণ্য যুক্ত করা হচ্ছে।
এনবিআরের একটি সূত্র বলেছে, পণ্যের সংখ্য দুই শতাধিক হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: আমদানি করা বিস্কুট, চকলেট, বিভিন্ন জাতের ফল, জুস ও বিদেশি তৈরি পোশাক।
এসব পণ্যের ওপর তিন ধরনের শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। আমদানি শুল্ক বা কাস্টম ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা আরডি।
বর্তমানে যে পরিমাণ শুল্কহার আছে তার সঙ্গে বিভিন্ন হারে বাড়তি শুল্ক ধার্য করা হবে।
মূলত ওইসব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বাড়তি শুল্কহার কার্যকর হলে দেশীয় বাজারে পণ্যগুলোর দাম বেড়ে যাবে।
এনবিআর বলেছে, সাময়িকভাবে এ শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। যেদিন থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে সেদিন থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। তবে সরকার ইচ্ছা করলে বাস্তবতার আলোকে মেয়াদ আরও বাড়াতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, কাঁচামাল ও তেলের দামসহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। সঙ্গে বেড়েছে জাহাজ ভাড়াও। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এর চাপ পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর।
আমদানি যে হারে বেড়েছে, রপ্তানি সে হারে বাড়েনি। আবার প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সও কমে গেছে। ফলে প্রতি মাসে বিশাল ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এ কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে জোগান দিতে হচ্ছে আমদানির খরচ। সোমবার পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ ৪২ বিলিয়ন ডলার।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিলাস ও অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১০ মে এক পরিপত্র জারি করে ওইসব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এলসি মার্জিন বা ঋণপত্র খোলার জন্য নগদ টাকা জমার পরিমাণ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর এবার এনবিআর বিভিন্ন হারে বাড়তি শুল্ক ধার্য করতে যাচ্ছে।
রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে এনবিআরের কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। কোন কোন পণ্যের শুল্ক বাড়ানো হবে, তা যাচাই-বাছাই করে দেখছে এনবিআর।
রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকার দুটি ব্যবস্থা নিতে পারে। আমদানিকে নিরৎসাহিত করতে এলসির বিপরীতে নগদ টাকা জমার পরিমাণ বাড়ানো এবং সাময়িক সময়ের জন্য বাড়তি শুল্ক আরোপ করা। সরকার এখন সেই পথেই হাঁটছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকার চাইলে কাস্টম আইনের ১৫ ধারা অথবা আমদানি নীতির ১৬ ধারা প্রয়োগ করে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে পারে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, কাস্টমস আইনে উল্লেখ থাকলেও সাধারণত এনবিআর পণ্য আমদানি বন্ধ বা নিষিদ্ধ করে না। শুল্ক আরোপ করাই এনবিআরের কাজ। পণ্য আমদানি নিষিদ্ধের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
কাস্টমস আইনে বিলাস পণ্যের কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে যেসব পণ্যে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ রয়েছে, সাধারণত সেইসব পণ্য ‘বিলাস ও অনভিপ্রেত’ বলে বিবেচনা করা হয়।
বর্তমানে আমদানি করা প্রস্তুতকৃত প্রায় সব পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা আরডি আরোপ আছে। এর সর্বোচ্চ হার ৩৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন হার ৩ শতাংশ। অপরদিকে আমদানি করা ১ হাজার ৮৭৮টি পণ্যের ওপর বিভিন্ন হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ রয়েছে।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকট মোকাবিলায় কৃষকের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ তহবিল থেকে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৭০ জন গ্রাহককে ৪ হাজার ২৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো। বিতরণ করা এ অর্থ স্কিমের তহবিলের ৮৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে ‘কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। পুনঃঅর্থায়ন স্কিম থেকে জামানতবিহীন সহজ শর্তে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছেন কৃষক।
যেসব ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের এ অর্থ সাধারণ কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করেছে, তাদের মধ্যে সফল বাস্তবায়নকারী ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীকে প্রশংসাপত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এ এন হামিদুল্লাহ্ কনফারেন্স রুমে একটি সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশংসাপত্র তুলে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
প্রশংসাপত্র পাওয়া ব্যাংকগুলো হলো সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট, কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন, ইসলামী, এক্সিম, ব্র্যাক, প্রিমিয়ার, ওয়ান , ব্যাংক এশিয়া, শাহজালাল ইসলামী, উত্তরা, এবি, এনআরবি কমার্শিয়াল এবং মধুমতি ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, নির্বাহী পরিচালক আওলাদ হোসেন চৌধুরী ও কৃষি ঋণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল হাকিমসহ অন্যরা।
আরও পড়ুন:
পায়রা বন্দরের জন্য উচ্চক্ষমতার দুটি টাগবোট নির্মাণ করছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
৭০ টন বোলার্ড পুলবিশিষ্ট দুটি টাগবোট তৈরি করা হবে। নির্মাণ শেষ হলে এ দুটি হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বোলার্ড পুল ক্ষমতার টাগবোট।
সোমবার দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে দুটি টাগবোটের কিল লেয়িং উদ্বোধন করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
তিনি বলেন, পায়রা বন্দরের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। অচিরেই এটি দেশের আমদানি-রপ্তানির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই বন্দরকে কেন্দ্র করে প্রচুর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, জাহাজ নির্মাণে খুলনা শিপইয়ার্ডের ঐতিহ্য রয়েছে। ভবিষ্যতেও পায়রা বন্দর ও খুলনা শিপইয়ার্ড পারস্পরিক উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজিজ। উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর এম মামুনুর রশীদসহ শিপইয়ার্ডের কর্মকর্তারা।
খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টাগ বোট দুটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন হবে। এটা আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় যাতায়াতে সক্ষম।
বোট দুটি বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়াবে। এ ছাড়া পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বন্দরে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
চাকরিচ্যূত ১৭৬ কর্মীকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পরিশোধের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্যোক্তা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আদালতের বাইরে বসেই দুই পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। এরপর তারা আদালতে বিষয়টি জানালে আদালত মামলাটি প্রত্যাহার ঘোষণা করে।
সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চ মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দেয়।
আদেশে আদালত বলে, ‘বাস্তবতার প্রেক্ষিতে দেখা যায়, উভয়পক্ষ বন্ধুত্বপূর্ণভাবে আদালতের বাইরে সমস্যাটি সমাধান করে ফেলেছে। এ অবস্থায় এটি মামলা হিসেবে ধরে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। সুতরাং মামলাটি ডিসমিস করা হলো।’
আদালতের প্রত্যাহারের আবেদন করেন ১৭৬ জনের পক্ষে আইনজীবী ইউসুফ আলী। আর গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।
আদেশের পরে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষের আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের দীর্ঘমেয়াদি একটা বিরোধ ছিল। এই বিরোধের প্রেক্ষিতে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মামলা করেন তারা। সবশেষ তারা গ্রামীণ টেলিকম অবসায়ন চেয়ে কোম্পানি কোর্টে একটা মামলা করে।
‘পরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যে কোর্টের বাইরে একটা সেটেলমন্টে হয়েছে। ফলে তাদের দাবি করা টাকার একটা অংশ তাদের দেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আজকে তারা সব মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
টাকার পরিমাণ কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।’
গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ চলে আসছিল।
একপর্যায়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে প্রতিষ্ঠানটির ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ ছাড়া কোম্পানি আইনে একাধিক মামলা করে।
এ ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ কর্মী। পরে আরও অনেকেই যুক্ত হন সেখানে। ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলবও করেছিল হাইকোর্ট। শেষপর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে ১৭৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী কোম্পানি কোর্টে আবেদনও করেন।
সব শেষ দুইপক্ষই কোর্টের বাইরে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়। আর প্রতিষ্ঠানটি ৪০০ কোটি টাকা দিতে রাজি হওয়ায় মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালে প্রথম মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৪ কর্মী। পরে বকেয়া পাওনা চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ৯৩টি মামলা করেন তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীরা।
ঢাকার শ্রম আদালতে সব মিলে ১০৭টি মামলা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ১৪ কর্মী আরও ১৪টি মামলা করেন পাওনা টাকার জন্য।
২০২০ সালে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে গ্রামীণ টেলিকম ৯৯ জনকে চাকরিচ্যুতি করে। এটি নিয়েও পরে আদালত পর্যন্ত গড়ান চাকরিচূত কর্মীরা।
আরও পড়ুন:পতনমুখি পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে আরও একটি সিদ্ধান্ত নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, যা বাজারে তারল্য বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বড় উত্থানের পর সোমবার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগসীমা বাড়িয়ে তিন গুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
কমিশন জানিয়েছে, পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাট অফ ডেট এ যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগসীমা বাড়িয়ে তিন কোটি টাকা করা হয়েছে। এতদিন এই সীমা ছিল এক কোটি টাকা।
কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে কমিশনের ৮২৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রোববার পর্যন্ত আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচক পতনের পর তারল্য বাড়াতে দুই দিনে এটি বিএসইসির দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত। আগের দিন মার্জিন ঋণের অনুপাত ১:০৮ থেকে বাড়িয়ে ১:১ করা হয়।
তবে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে এই সিদ্ধান্তের চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের নানা নির্দেশনা।
রোববার ১১৫ পয়েন্ট পতনের পর মন্ত্রী পুঁজিবাজার ইস্যুতে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী।
এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান বিনিয়োগকারীদের মনের চাপ অনেকটাই দূর করেছে।
তবে এই উত্থানেও বিনিয়োগকারীরা যে পুরোপুরি সক্রিয় হননি, সেটি স্পষ্ট লেনদেনে। আগের দিনে ধসে যত টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল, এবার উত্থানেও হয়নি ততটা।
রোববার ১১৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের দিন লেনদেন ছিল ৬৮২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরদিন ১১৮ পয়েন্ট সূচক বাড়ার দিন হাতবদল হলো ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকার।
বাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বিএসইসির আসা আদেশে বলা হয়, পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ব্যতীত অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকরীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা ১ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আর অনুমোদিত পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দেড় কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ইলেকট্রনিক্স সাবসক্রিপশন সিস্টেমে (ইএসএস) নিবন্ধনের জন্য এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) অনুমোদিত কপি এবং নিরীক্ষিত আর্থিক ও ব্যাংক বিবরণী যাচাই করতে হবে।
আরও পড়ুন:ডলারের বিপরীতে টাকার মান আবার ৪০ পয়সা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি মে মাসেই তৃতীয়বারের মতো কমানো হলো এই মান। তিন দফায় ডলারের দাম বাড়ল ১ টাকা ৪৫ পয়সা।
এখন থেকে ব্যাংক চ্যানেলে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। তবে ব্যাংকগুলোকে ৮৮ টাকায় আমদানি বিল আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছর ষষ্ঠবারের মতো বাড়ল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মুদ্রাটির মান। অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমল ছয় দফা।
এটি অবশ্য কেবল বাংলাদেশের চিত্র নয়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য ক্রমেই বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে দেশে দেশে। ডলারের টান পড়ায় দেশে দেশেই মুদ্রার মান কমছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে মুদ্রার মান বরং কমেছে সবচেয়ে কম হারে। ভারতের মুদ্রার মান কমেছে বাংলাদেশের দ্বিগুণ হারে। আর পাকিস্তানে কমেছে বাংলাদেশের প্রায় ১০ গুণ হারে। মিয়ানমারে কমেছে পাঁচ গুণ হারে।
গত জানুয়ারির শুরুতে ডলারের বিনিময় মূল্য ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২৩ মার্চ তা আবার ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা করা হয়। গত ২৭ এপ্রিল বাড়ানো হয় আরও ২৫ পয়সা। তখন ১ ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ৯ মে ডলারের বিনিময় মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
এরপর গত ১৬ মে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দিনে সবচেয়ে বড় অবমূল্যায়ন করা হয় টাকার। সেদিন টাকার মান ৮০ পয়সা কমিয়ে ডলারের বিপরীতে করা হয় ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।
অবশ্য খোলা বাজারে ডলার কিনতে গেলে এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সম্প্রতি তা ইতিহাসের রেকর্ড ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। টাকার মান আরও কমবে- এমন ধারণা ছড়িয়ে পড়ার পর ১০৪ টাকাতেও ডলারে কেনার ঘটনাও প্রকাশ পায়।
তবে মুনাফা করার আশায় গুড়েবালি হয়েছে। বিদেশযাত্রায় সরকার লাগাম পরানোর পর খোলা বাজারে ডলারের চাহিদা কিছুটা কমায় দামও কমে ৯০-এর ঘরে চলে এসেছে।
মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনতে সোমবার ৯৮ দশমিক ২০ টাকা গুনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এর আগে গত ১৭ মে খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০২ টাকায় উঠেছিল।
দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রিও করেছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৫৫০ কোটি ডলার বাজারে ছেড়েছে তারা।
ডলারের দাম আরও বাড়ায় রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হবেন। অন্যদিকে আমদানিকারকদের খরচ বাড়বে। আর আমদানি খরচ বাড়া মানে ভোক্তাদের একই পণ্যের জন্য আরও বেশি খরচ করা।
ডলার নিয়ে এই অস্থিরতার মধ্যে ব্যয় সংকোচন এবং ডলারের ওপর চাপ কমাতে অতি জরুরি প্রকল্প ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে অর্থায়নে সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকার।পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণও সীমিত করা হয়েছে। বিলাসপণ্যের পেছনে খরচ কমিয়ে আনতে আমদানিতে এলসি মার্জিন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সরকার বিশ্ব মন্দার আশঙ্কাও করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য