সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্য করে এই সরকার পতনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর জেলা বিএনপির সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষায় সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যারা দেশকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে, গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে তারাই আমাদের শত্রু। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি জনগণের কাছে সবচেয়ে প্রিয় দল। বিএনপি জনগণের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। আর আওয়ামী লীগ বিপরীত কথা বলে। তারা গণতন্ত্র ধ্বংস করে মানুষের অধিকার হরণ করে দেশে একদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে যারা অস্বীকার করেন, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান, তারাই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি, পাকিস্তানের পক্ষের শক্তি। এ অপশক্তি মানুষের অধিকার হরণ করেছে, দেশকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে, দুঃসময় চলছে। গণতন্ত্রবিরোধী একটি সরকার আমাদের ওপর চেপে বসেছে। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ হাজার মামলা দিয়েছে। দেশে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। করোনা টিকা ক্রয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
‘গাজীপুরের টঙ্গী-চৌরাস্তা সড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৩ কোটি টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে এমন কোনো সেক্টর নেই ,যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে না। এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা দুদকে চিঠি দিয়েছি।’
গাজীপুর মহানগরীর নগপাড়ায় একটি কনভেনশন সেন্টারে দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বেনজির আহমেদ টিটু, সহশ্রম সম্পাদক হুমায়ূন কবীর খান, সহস্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার, সদস্য সচিব সোহরাব উদ্দিন।
সম্মেলন সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল।
আরও পড়ুন:ছাত্রলীগের হামলায় নেতাকর্মী জখমের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল ২৬ মে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। পরদিন সংগঠনটি একই কর্মসূচি পালন করবে জেলা ও মহানগরে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার রাতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রদলের নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৮০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। ক্যাম্পাসে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের সময় হকিস্টিক, রড, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘হামলায় ছাত্রদলের নেত্রী মানসুরা আলম, রেহেনা আক্তার শিরীন, শানজিদা ইয়াসমিন তুলি, সৈয়দা সুমাইয়া পারভীন, তন্বী মল্লিক রেহাই পাননি। তাদেরকে সড়কে ফেলে পেটানো হয়েছে। দুজন ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে শহীদুল্লাহ হলের ড্রেনে ফেলে নির্যাতন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আহত নেতাকর্মী ও চিকিৎসকদের হয়রানি করছে ছাত্রলীগের কর্মীরা।’
সংবাদ সম্মেলনে আহত নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন ছাত্রদলের নেতারা। এ তালিকায় কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক আকতার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম সোহেলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলাকালে এক তরুণের তৎপরতা অনেকের দৃষ্টি কাড়ে। কারণ সংঘর্ষকালে দুই ছাত্র সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মাঝে কেবল ওই তরুণের হাতে একটি রামদা দেখা গেছে।
সংঘর্ষের সময়ে ছাত্রলীগের পক্ষে থাকা ‘রামদা’ হাতে ওই তরুণের পরিচয় জানা গেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত ডিটু। প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী থাকেন শহীদুল্লাহ হলেই।
ডিটু শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফ আহমেদ মুনিমের অনুসারী। আর মুনিম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিতে দেখা যায়, কমলা রংয়ের শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরিহিত ডিটুর ডান হাতে একটি রামদা ধরা। রামদার কাঠের বাঁটও দৃশ্যমান। শার্টের হাতা ফোল্ডিং করা।
আর ডিটুর ডান পাশে ছিলেন ধূসর রংয়ের টি-শার্ট ও সাদা প্যান্ট পরিহিত শরিফ আহমেদ মুনিম। তিনি শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ইয়াসির আরাফাত ডিটু ও শরিফ আহমেদ মুনিমের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরে ছবির সঙ্গে তাদের মিল শনাক্ত করা গেছে।
তবে মুনিমের দাবি- এটি রামদা নয়, পাইপ। আর ডিটুর ভাষ্য, এটি ছিল লোহার রড।
ইয়াসির আরাফাত ডিটু বলেন, ‘এ নিয়ে আসলে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমার হাতে আসলে রামদা ছিল না, এটি আসলে রড। এটির মাথায় কাপড় বাঁধা ছিল। আর রডটি কোথাও কোনো কিছুর সঙ্গে লেগে বাঁকা হয়ে গেছে। আর ছবিটা এমন অ্যাঙ্গেলে তোলা যে এই রডকেই রামদা মনে হয়েছে।’
ডিটু আরও বলেন, ‘আমি রামদা হাতে নিয়ে থাকলে যদি কাউকে কোপ দিতাম তখন কেটে যেত। এরকম কিছু তো হয়নি। মূলত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যখন ইট ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের আক্রমণ করতে আসছিল তখন মূলত তাদের প্রতিহত করতে আমি রড হাতে নিয়েছিলাম।
হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনিম বলেন, ‘ছাত্রদল যেন নৈরাজ্য করতে না পারে সেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। এরপর ছাত্রদল যখন লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে আক্রমণ করতে আসছিল তখনকার পরিস্থিতিতে যে কেউই তাদের প্রতিরোধ করবে। এজন্য আমরা এগুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
‘ছবিতে হয়তো আপনারা ভুল দেখছেন। এটি রামদা নয়, বাঁকা পাইপ ছিল।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলকে ছাত্রলীগের অবাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল।
মঙ্গলবার রাতে মিছিলটি ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে শুরু হয়ে রায় সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলটি ৮টায় শুরু হয়ে ৮টা ১৫ মিনিটে শেষ হয়।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জবির সাবেক সহসভাপতি মহিউদ্দিন ইকবাল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মোমেন মিয়া, সানোয়ার হোসেন মিঠু, সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র কর্মী এস এম কিবরিয়া, রাকিবুল ইসলাম পলাশ।
এ ছাড়া জবির ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী শামসুল আরেফিন, সাইফ সবুজ, জাহিদুর রহমান জামাল, সজীব সাজু, জাহিদুল ইসলাম, সাজাদ হোসেন পলাশ, ওলিউর রহমান, মোজ্জামেল হক ডেনি, তারিকুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন।
শামসুল আরেফিন বলেন, ‘মধ্যযুগীয় আচরণ ছাড়তে হবে ছাত্রলীগকে। কোনোভাবেই ছাত্রসমাজ এবং দেশের মানুষ এমন বর্বর আচরণ সহ্য করবে না। সংগ্রামী সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এবং সাইফ মাহমুদ জুয়েল কথা দিয়েছিল কোন ছাত্রদল নেতাকর্মীর হামলা হলে পাশে থাকবেন আর প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। তারা কথা রেখেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার কর্মী হিসেবে পাশে থাকার অঙ্গীকার করে এবং পাশে থাকবে।
‘ছাত্রদলকে অবাঞ্ছিত করার কোনো অধিকার ছাত্রলীগের নেই। আমরা এমন ঔদ্ধত্য আচরণ সহ্য করব না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবিতে মাঠে থাকব। রক্ত দিয়ে হলেও অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।’
এর আগে রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এর পরদিন সোমবারই ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল বের করে শাখা নেতাকর্মীরা। এদিকে গত দুই দিন ধরে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে জবি শাখা ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন:ঘোষণা ছিল নিজস্ব কার্যালয়ে সম্মেলন করার। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে বাগানের ভেতরে লুকিয়ে অতি সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্মেলন করতে হয়েছে রাজাপুর উপেজেলা বিএনপিকে।
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পুলিশের বাধায় উপজেলা শহরের বাইপাস মোড়ে নিজস্ব কার্যালয় সম্মেলন করতে পারেনি রাজাপুর বিএনপি।
নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর উপজেলা শহরের বাইরে উত্তর বাঘড়ি গ্রামে গিয়ে বাগানের ভেতর গোপনে কাউন্সিল সারতে হয়েছে দলটিকে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্মেলন শুরু হয়।
এর আগে দুপুর ৩টার দিকে শহরের বাইপাস মোড়ে উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল।
উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দুদলের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন।
বেলা ২টার দিকে শহরের বাইপাস মোড়ে দুদল মিছিল বের করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা বাঘড়ি বাজার এলাকায় গেলে সেখানেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাত হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের বাইপাস মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। এর কাছেই বাইপাস সড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশ ডাকে। এতে সকাল থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বেলা ২টার দিকে সেখানে দুদল মিছিল বের করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় লাঠিসোটা ও ইট-পাটকেলের আঘাতে রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনসহ দুই পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হন।
এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে সম্মেলন বন্ধ করে দিলে নেতাকর্মীরা বাঘড়ি গ্রামে চলে যান। বাঘড়ি বাজারে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রামে বাগানের ভেতর ঢুকে পড়েন। সেখানেই তড়িঘড়ি সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়া হায়দার লিটন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ডেকেছি। বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরে পুলিশ এসে ওদেরকে সরিয়ে দিয়েছে।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র জানান, দুই পক্ষকে সরাতে গিয়ে ইটের আঘাতে এস আই মামুন আহত হয়েছেন।
উপজেলা বিএনপি সূত্র জানায়, বাগানের ভেতরে সম্মেলনে ওড়ানো হয়নি পায়রা, উত্তোলন হয়নি জাতীয় পতাকা, এমনকি বাজানো হয়নি জাতীয় ও দলীয় সংগীত। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য আর কমিটি ঘোষণা দিয়েই শেষ করতে হয়েছে উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন।
মৌখিক ঘোষণায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তালুকদার আবুল কালাম আজাদ। সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব নাসিম উদ্দিন আকন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান তাপু, মিজানুর রহমান মুবিন, জাকারিয়া সুমন, আল ইমরান কিরন।
কাউন্সিলে তালুকদার আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি ও নাসিম উদ্দিন আকনকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘দফায় দফায় হামলা করে ওরা (আওয়ামী লীগ) প্রমাণ করেছে দেশে গণতন্ত্র নেই। আগামীতে পাল্টা হামলা করা হবে, আর সহ্য করা হবে না।’
রাজাপুর থানার ওসি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। দুপক্ষকে সড়ক থেকে সরাতে দিতে গিয়ে ইটের আঘাতে এসআই মামুন মাথায় চোট পেয়েছেন। বিএনপি বিকেলে কোথায় প্রোগ্রাম করেছে তা আমার জানা নেই।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের বড় ছেলে।
আগামী ২৬ জুনের মধ্যেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন তিনি।
আফজাল খানের মেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি আনজুম সুলতানা সীমা ও ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
এর আগে তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই সময় নাছিমসহ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর্ফানুল হক বিফাত। একই পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সিমা ও ইমরানও।
দল তাদের মনোনয়ন না দেয়ায় অসন্তোষ তৈরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের মঙ্গলবার ঢাকায় ডেকে নেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের পক্ষে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সোমবার ফোন করে তাদের ঢাকায় আসতে বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে দলের যুগ্ম-সাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগে প্রতিযোগিতা থাকে। দিনশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে ভুল করে না। আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তাই হতে যাচ্ছে।
‘কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী পরিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল খানের পরিবার। তারা অতীতেও দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে। কুমিল্লা সিটি নির্বাচনেও তাই করতে যাচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আফজাল খানের ছেলে মাসুদ পারভেজ খান তার প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
‘আগামী ২৬ মে নির্বাচন কমিশনের পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। শেষ দিন তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন ইমরান।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে নাছিম বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন দৃষ্টান্তকারী নির্বাচন হবে। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
আরও পড়ুন:দেশের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা পদ্মা সেতু বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে পদ্মা সেতু নৌকা প্রতীকের বিজয়ের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে তিনি মত দিয়েছেন।
রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।
মায়া বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শুনেই বিএনপির নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এ সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ সেতু নির্মাণ করেছেন। নিজস্ব অর্থে এ সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য বিশাল বিজয়, এটি আমাদের গর্বের সেতু।
‘দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, অগ্রগতি চায়। আর আওয়ামী লীগ উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ধ্বংসের রাজনীতি করে কেউ মানুষের মন জয় করতে পারবে না। অন্য কাজের পাশাপাশি পদ্মা সেতু হবে ২০২৩ সালের নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের মাইলফলক।’
কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দুষ্ট লোকদের রাজপথে শায়েস্তা করতে হবে। রাজনীতি হবে রাজপথে। তাই রাজপথ দখলে নিতে হবে।’
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক মকবুল হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার এ আলোচনা ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য অপরাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। উন্নয়নবিরোধীদের প্রতিরোধ করতে হবে।’
সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি।
সভায় বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কাজী শহিদুল্লাহ লিটন, আব্দুল আলীম বেপারি, সৈয়দ নাসির উদ্দিন, ফারুক আমজাদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, মজিবুল ইসলাম পান্না, কামরুল হাসান রিপন, আব্দুল্লাহ আল সায়েম, আরিফুর রহমান টিটু, রফিকুল ইসলাম বিটু, আবুল কালাম আজাদ হাওলাদার, অ্যাডভোকেট সালমা হাই টুনি, প্রিন্সিপাল এমএ হান্নান সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
সভা শেষে সংগঠনের অসচ্ছল নেতাকর্মীদের অর্থসহায়তা দেয়া হয় এবং রান্না খাবার বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন:ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করতে আসা সংগঠটির নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এই ঘটনায় বিচার চেয়েছে সংগঠনটি।
সাদা দলের আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক লুৎফুর রহমান সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বের করলে ছাত্রদলে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। এই হামলায় ৩০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
আহতদের চিকিৎসা দিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বেরিয়ে আবারও মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে যায় ছাত্রদল। মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্ত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনে দিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় ছাত্রলীগ।
সেখানে দ্বিতীয় দফায় ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাদের সংঘর্ষ হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মত-পথের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নেই। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক ছাত্রলীগ হল ও ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হলসমূহে গেস্টরুম কালচারের নামে ভিন্নমত এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়ন চালিয়ে এক রকম ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তারা প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে নানা রকম অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আজকের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এরই এক নজির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো একক ছাত্র সংগঠনের সম্পত্তি নয়। সব মত-পথের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠন এখানে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে এটাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য বিনষ্টকারী সন্ত্রাসীদের বিনা উস্কানিতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর আজকের হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা এবং আহতদের চিকিৎসার দাবি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা এবং ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। অন্যথায় উদ্ভুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই দায়ভার গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য