জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম।
এর আগে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
আগের ভিসির মেয়াদ শেষ হলে নুরুল আলম এতদিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের অনুমোদনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপার্চায ড. মো. নুরুল আলমকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়া হলো।
নুরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়টির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।
উপাচার্য হিসেবে তার মেয়াদ হবে চার বছর। এই পদে তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
এর আগে বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে ২০১৪ সালের ২ মার্চ দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। টানা দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে রাইসকুকার ও রান্নার সরঞ্জাম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হল গেটের সামনে মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে ছাত্রীরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্ররাও। রাত ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে অপরাজিতা হলের টয়লেটে গিয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে গলায় বটি দিয়ে পোচ দেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় অপরাজিতা হলে দা, বটি, চাকু এমনকি রাইসকুকারও নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের রুমে গিয়ে সরঞ্জামগুলো জব্দ করা হয়। সবাইকে ডাইনিংয়ের খাবার খেতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরাজিতা হলের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের ডাইনিংয়ের খাবারের মান খুবই খারাপ। তার মধ্যে রাইসকুকার নিষিদ্ধ করা হলো। রান্নার সব সরঞ্জামও হলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হলে ফিরব না।’
লীমা নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আজকে আন্দোলনে আসতে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছিল। আমরা হলের দুটি তালা ভেঙে নেমেছি।’
আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক মো. শরীফ হাসান লিমন সেখানে যান।
তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রীদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেছিলাম। তবে তারা রাজি হয়নি।’
গুচ্ছভুক্ত দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ‘বি’ ইউনিটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ৮২.২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন দিগন্ত বিশ্বাস। অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করতে চান এই মেধাবী।
দিগন্ত বিশ্বাস দিনাজপুরের পার্বতীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। এছাড়া জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ দশমিক ৪৪ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাস করেন দিগন্ত। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তার কেন্দ্র ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অনুভূতি প্রকাশ করে দিগন্ত বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম হওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম, সবার অনুপ্রেরণাই আমার এই সফলতার মূল কারণ। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমার এই সাফল্য।
‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পেয়েছি। গুচ্ছতেও হয়েছে। এখন সময় যেহেতু আছে তাই ভাবনা-চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেব। দুটোর মধ্যে গুচ্ছে আমার অগ্রাধিকার থাকবে। আর গুচ্ছের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবশ্যই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। অর্থনীতি নিয়ে পড়তে চাই। ভবিষ্যতে অর্থনীতি নিয়ে কিছু করতে চাই।’
তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট দিগন্ত ছোটবেলা থেকেই দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বেড়ে উঠেছেন। তার বড় বোন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে লেখাপড়া শেষ করে আইনজীবী পেশায় কর্মরত। বড় ভাই রুয়েট থেকে পাস করে বর্তমানে আমেরিকায় পিএচডি করছেন। পাশাপাশি অ্যাপল-এ চাকরি করছেন। তার মা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা প্রায় ১৪ বছর আগে মারা গেছেন। তিনিও শিক্ষক ছিলেন।
গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে প্রক্সি দিতে এসে আটক মো. আকতারুল ইসলামের রিমান্ড আবেদন নাকচ করেছে আদালত।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন।
আসামির আইনজীবী ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু আদালতকে বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত নেই, তাই আকতারকে রিমান্ড নেয়ার প্রয়োজন নেই।’
শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড আবেদন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসামি বড় চক্রের সদস্য। তাকে রিমান্ডে নিলে বাকি আসামিদের ধরা সহজ হতো। তবে আমাদের তদন্ত চলবে। প্রয়োজনে আবার রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
মামলার রহস্য উদঘাটন ও তদন্তের জন আকতারকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম।
শনিবার ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়ার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক রইছ উদদীন তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা হলেন প্রক্সি দিতে আসা শিক্ষার্থী মো. আকতারুল ইসলাম, মূল পরীক্ষার্থী সিজান মাহফুজ ও মো. রাব্বি।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা (ম্যানিজিং) কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ করার বিধান অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এর ফলে কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য কোনো সুপারিশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০০৮ ও ২০১৯ সালের দুটি প্রজ্ঞাপন রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে দুজন বিদ্ব্যৎসাহী (নারী ও পুরুষ) সদস্য থাকবেন, যাদের নাম প্রস্তাব করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘সাধারণত একজন সংসদ সদস্য যখন কারও নাম প্রস্তাব করেন তখন তাকেই সভাপতি করা হয়। তাহলে নির্বাচনের তো আর প্রয়োজন হয় না। এ কারণে ওই প্রজ্ঞাপনের ২(২) ধারা চ্যালেঞ্জ করে শহীদুল্লাহ নামে একজন অভিভাবক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিলেন।
‘আজ রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুলটিকে যথাযথ ঘোষণা করে আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেছেন, প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে কারা থাকবেন সে ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য পরামর্শ বা কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।’
এর আগে ভিকারুনিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির বিষয়ে আদালত যে আদেশ দিয়েছিল অনুরূপ আদেশ হয়েছে বলে জানান রিটকারীর পক্ষের এই আইনজীবী।
আরও পড়ুন:নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড ঢেলে সাজানো হয়েছে। পুরাতন ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন ট্রাস্ট্রি বোর্ড গঠন করে একটি আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিদায়ী ট্রাস্টি বোর্ড সদস্যদের অনেকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ লোপাট, জঙ্গিবাদ বিস্তারে ভূমিকা রাখা, যৌন হয়রানি, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এসেছে। এসব কারণে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হলো।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুসারে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১২ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড নতুন করে গঠন করে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করে।
এ আদেশের মাধ্যমে মূলত বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানায় বড় ধরনের পরিবর্তন এলো। দেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত এবারই প্রথম।
নতুন ট্রাস্টি বোর্ডে উদ্যোক্তা ট্রাস্টি হিসেবে আছেন টি কে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ কালাম, কনকর্ড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের চেয়্যারম্যন ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম কামাল উদ্দিন, আবুল খায়ের গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল কাশেম, মিনহাজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ইয়াসমিন কামাল, বেক্সিমকো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আহমেদ সোহেল ফসিউর রহমান ও ইউনাইটেড ফসফরাস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফৌজিয়া নাজ।
নতুন ট্রাস্টি বোর্ডে শিক্ষাবিদ হিসেবে আছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম। আর উদ্যোক্তা ট্রাস্টির উত্তরাধিকারী হিসেবে বোর্ডে আছেন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ড. জুনাইদ কামাল আহমাদ, ইনকনট্রেড লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর হারুন, উদ্যোক্তা জাভেদ মুনির আহমেদ, ফাইজা জামিল ও শীমা আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি কেনায় অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রভাবশালী চার ট্রাস্টি সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে আদালত। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন করতে পারেন। অথচ প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাবদ প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) কিছু সদস্য ও অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকালাপ, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িত বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়, যা দেশের প্রচলিত আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি ক্রয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিওটির চারজন সদস্য জমি কেনায় আর্থিক দুর্নীতি করায় দুদকের মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছেন। তা ছাড়া ট্রেজারার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি নথি জালিয়াতির ঘটনায় একজন ট্রাস্ট্রির বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজে অন্তর্ভুক্ত থাকা সমীচীন নয় বলে মনে করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পূর্ণাঙ্গভাবে পরিচালনা করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা ও পরিচালনা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত সভার সুপারিশ বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর উদ্যোক্তা ট্রাস্টি ও উদ্যোক্তা ট্রাস্টির উত্তরাধিকারীদের সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেন প্রভাবশালী সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ, রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাজাহান ও বেনজীর আহমেদ। তারা প্রত্যেকেই একাধিকবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই পাঁচ সদস্য গত দেড় দশক ধরে ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের ভূমিকায়। তাদের মেয়াদে জমি কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় গাড়ি ও ভ্রমণবিলাস, অবৈধভাবে মোটা অংকের সিটিং অ্যালাওয়েন্স গ্রহণের মতো বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘটে নর্থ সাউথে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টিদের অনিয়ম তদন্ত করতে গিয়ে জমি কেনা বাবদ কয়েকশ কোটি টাকার অনিয়ম খুঁজে পায় দুদক।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের জমি কেনায় অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়টির পাঁচ ট্রাস্টিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ পাঁচ ট্রাস্টি হলেন- আজিম উদ্দিন আহমেদ, রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ। আর বাকি একজন হলেন আশালয় হাউজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
এ মামলায় জামিন চেয়ে গত ২২ মে আদালতে হাজির হলে চার ট্রাস্টিকে শুরুতে পুলিশের হেফাজত এবং পরে কারাগারে পাঠায় আদালত। তারা এখনও জামিন পাননি।
১৯৯২ সালে দ্য নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট গঠনকালে এর সদস্য সংখ্যা ছিল ২৩। এর মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ‘প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য’। আর বাকি সাত জন সাধারণ সদস্য। ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্যদের মৃত্যুর পর তাদের উত্তরসূরী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি হবেন। আর সাধারণ সদস্যদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর তাদের সদস্যপদ থাকবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে, বিওটিতে সদস্য সংখ্যা ১৫। এছাড়া উপাচার্য আইনি ক্ষমতাবলে বিওটির সদস্য।
ট্রাস্টি বোর্ডে আকস্মিক এ পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জামিল আহমেদের মোবাইল ফোনে কল করে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:বর্তমান সময়কে ক্রান্তিকাল হিসেবে দেখছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তাদের দাবি, স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে দেশে বর্তমানের মতো এত কঠিন সময় আর আসেনি।
বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয় এবং জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সাদা দলের নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি সেটি জাতির একটি ক্রান্তিলগ্ন। স্বাধীনতার পর এ রকম ক্রান্তিলগ্ন এ দেশের মানুষ দেখেনি। আমরা জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষকরা এখানে দাঁড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের এই বিপর্যয় একদিনে ঘটেনি। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ খাতের অব্যবস্থাপনা, চুরি-ডাকাতি এবং রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের নামে টাকা-পয়সা যে পাচার করা হয়েছে কিংবা দিয়ে দেয়া হয়েছে, তারই সমন্বিত প্রভাব আজকের এই বিদ্যুৎ খাতের বিপর্যয়। জনগণের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সরকারের উচিত দায়িত্বশীল আচরণ করে এই দুর্ভোগ কমানো।’
সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমছে, তখন আত্মঘাতী একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশে দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতেও বিপর্যয় ঘটেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে জনগণের অবস্থা নাভিশ্বাস। ডিমের দামও বেড়ে গেছে। সরকার জনগণকে নিয়ে খেলতামাশা লাগিয়ে রেখেছে, ছিনিমিনি খেলছে। কারণ তারা জানে জনগণের ভোট তাদের লাগে না।’
বিরোধীদের আন্দোলনে বাধা না দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘এসব কথা মুখে মধু রেখে অন্তরে বিষ রাখার মতো।
‘ভোলায় মিছিল হয়েছে, ছাত্রদলের সভাপতি মারা গেছে, তাদের মধু খাওয়াইছে নাকি বিষ খাওয়াইছে সেটা হচ্ছে দেখার বিষয়। সুতরাং আন্দোলন করলে কিছু করা হবে না, এ সমস্ত ভণ্ড কথা বাদ দেয়া উচিত।’
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ সাদা দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এমরান কাইয়ুম, আব্দুস সালামও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ‘বি’ ইউনিটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে পাসের হার ৫৬.২৬ শতাংশ।
মঙ্গলবার বিকেলে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ওয়েবাসাইটে ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ফলাফল দেখতে পারবেন।
গুচ্ছভুক্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাছিম আখতার এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাছিম আখতার জানান, বি ইউনিটের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাওয়া নম্বর ৮২.২৫ এবং সর্বনিম্ন মাইনাস (-) ১২.২৫। প্রথম স্থান অধিকার করেছেন দিগন্ত বিশ্বাস। তার রোল ৩০২২৪৯ ও কেন্দ্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার কলেজ ছিল দিনাজপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ।
এই ইউনিটে মোট আবেদন করেন ৯৫ হাজার ৬৩৭ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৮৫ হাজার ৫১২ জন যা মোট আবেদনকারীর ৯৪.৩৫ শতাংশ। এ ছাড়াও অনুপস্থিত ছিলেন ৫ হাজার ১২৫ জন অর্থাৎ ৫.৬৫ শতাংশ।
এই ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছেন ৪৮ হাজার ১০৬ জন। যা পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর ৫৬.২৬ শতাংশ। এ ছাড়াও অকৃতকার্য হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৫১ জন। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীদের ৪৩.৬৮ শতাংশ। অকৃতকার্য সকলেই ৩০ এর কম নম্বর পেয়েছেন।
এদিকে ৫৫ জন পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল হয়েছ। যা মোট পরীক্ষার্থীর ০.০৬ শতাংশ৷ এদের মধ্যে ৭ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার, রোল নম্বর ভুল লেখায় ১২ জনের খাতা বাতিল ও সেট নম্বর ভুল লিখায় ৩৬ জনের খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য