× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Mango Jilapi What is behind the fines for Rasgolla?
google_news print-icon

আমের জিলাপি: ‘রসগোল্লা’কে জরিমানার পেছনে আসলে কী

আমের-জিলাপি-রসগোল্লাকে-জরিমানার-পেছনে-আসলে-কী
প্রথমে অভিযানে যাওয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠানটির রং ব্যবহারের অনুমোদনপত্র দেখে এসে বলেছে, তারা এটা ব্যবহার করতে পারবে। দ্বিতীয়বার অভিযানে যাওয়া জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে ভেজালের দায়ে, যদিও মুখে বলছে অবৈধ রং ব্যবহারের কথা। তবে তারা বৈধতার নথিপত্রই দেখতে চায়নি বলে অভিযোগ করছেন আমের জিলাপি নিয়ে আসা রসগোল্লার স্বত্বাধিকারী। জিলাপিতে আম ছিল- বলছে দুই পক্ষই। তবে বলছে পরিমাণে কম। যদিও কী পরিমাণে থাকা উচিত, সে বিষয়ে ধারণা নেই কারও।

রাজশাহীতে অভিনব মিষ্টি তৈরি করে আলোড়ন তোলা প্রতিষ্ঠান ‘রসগোল্লা’য় অভিযান চালিয়ে এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিমানার ঘটনায় কাঁচা আমের জিলাপি তৈরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে প্রথমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও পরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায় প্রতিষ্ঠানটিতে। প্রথম সংস্থা জরিমানা করে ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান জরিমানা করে ৩০ হাজার টাকা।

একই প্রতিষ্ঠানে দুটি সংস্থার অভিযান নজিরবিহীন। পাশাপাশি জরিমানা ঠিক কী কারণে, সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারছেন না সাজা ঘোষণা করা দুই কর্মকর্তা।

তবে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করেছেন, এখানে আইনের ব্যত্যয় হয়নি।

প্রথমে অভিযানে যাওয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠানটির রং ব্যবহারের অনুমোদনপত্র দেখে এসে বলেছে, তারা এটা ব্যবহার করতে পারবে। দ্বিতীয়বার অভিযানে যাওয়া জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে ভেজালের দায়ে, যদিও মুখে বলছে অবৈধ রং ব্যবহারের কথা। তবে তারা বৈধতার নথিপত্রই দেখতে চায়নি বলে অভিযোগ করছেন আমের জিলাপি নিয়ে আসা রসগোল্লার স্বত্বাধিকারী।

জরিমানার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, জিলাপির খামিরে আমের পরিমাণ কম। তবে কী আম ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই জরিমানা আদেশ দেয়া দুই পক্ষের কারও মধ্যেই।

পরে জানা গেছে পাঁচ কেজি খামিরে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আম দেয়া ছিল।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট এ ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলেছেন। যদিও মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাটির কাছে জিলাপির মান নিয়ে কোনো নির্ধারিত শর্তই নেই। যেসব পণ্য বাজারে আনতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগে, তার মধ্যে জিলাপি নেই।

এই পরিস্থিতিতে রসগোল্লার পরিচালক আরাফাত রুবেল জানিয়েছেন, তিনি জিলাপিটি আর বানাচ্ছেনই না। তিনি বলেন, ‘খুলনাসহ দেশের অন্য জায়গাতেও কাঁচা আমের জিলাপি হচ্ছে অথচ আমরা আমের শহরে, আমের জিলাপি বন্ধ।’


আমের জিলাপি: ‘রসগোল্লা’কে জরিমানার পেছনে আসলে কী


গত বছরের শেষ দিকে ‘রসগোল্লা’নানা স্বাদের মিষ্টি নিয়ে এসে তুমুল আলোচিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচার পায় খেজুরের গুড়ের রসগোল্লা। আরও আছে পাকা আমের, কমলার মিষ্টি, কাঁচা মরিচের রসগোল্লা।

এবার রোজায় তারা নিয়ে আসে কাঁচা আমের জিলাপি। আগের সবগুলো পণ্যের মতো এটিও আলোড়ন তোলে। দেশের প্রধান গণমাধ্যমগুলোতেও এটি প্রতিবেদন আকারে উঠে আসে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এটি আলোচিত হয়। কাঁচা আমের জিলাপির পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের মতামতই আসতে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

বিএসটিআইয়ের অনুমোদন কোথায় পাবে

দোকানটিতে দ্বিতীয় অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয় দাসের মন্তব্য জানতে পারেনি নিউজবাংলা। পরে কথা হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানার সঙ্গে।

তিনি জানান, অভিযানে দেখা গেছে পাঁচ কেজি খামিরে ৫০০ গ্রাম আম দেয়া হয়। এ কারণে তারা একে আমের জিলাপি বলতে রাজি নন।

তিনি নিজেই উদাহরণ টানেন বাজারে চলা লিচি জেলির কথা। বলেন, ‘লিচুর মতো টেস্ট কিন্তু ওইটার মধ্যে তো লিচুর কিছুই নেই।’

এই পণ্য তো বাজারে চলছে... কেউ তো বন্ধের আদেশ দেয়নি- এ বিষয়টি স্মরণ করালে তিনি বলেন, ‘সে কোম্পানিগুলো বিএসটিআইয়ের অনুমতি নিয়ে করছে। তিনিও যদি এমন কোনো অনুমোদন নিয়ে আসেন তখন আমরা কিছু বলব না।’

তবে জিলাপির বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আনা সম্ভবই না। এর কারণ মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাটির রাজশাহীর সহকারী পরিচালক দেবব্রত বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জিলাপির অনুমোদন দেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।’

দ্বিতীয়বার জরিমানা কোন অপরাধে

জেলা প্রশাসনের যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়, তারা জরিমানা করে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন ফুড কালার ব্যবহারের কারণে। কিন্তু ফুড কালার বিএসটিআই দেখে না। এটা দেখে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ সায়েন্স ল্যাবরেটরি।

‘রসগোল্লা’র পরিচালক আরাফাত রুবেল নিউজবাংলাকে জানান, প্রথম যারা এসেছিলেন তারা দেখে বলেছেন, এটা ওকে আছে, এটা (রং) ব্যবহার করতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই।

তাহলে জরিমানা কেন করল- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা জরিমানা করল আম পরিমাণে কম হয়েছে বলে।’


আমের জিলাপি: ‘রসগোল্লা’কে জরিমানার পেছনে আসলে কী


কতটুকু আম দিতে হবে- সেটা বলেছে কি?- এমন প্রশ্নে বলে, ‘না, তারা সেটা বলেনি। বলে এ বিষয়ে আইন নেই। বলেছে, এটায় যেহেতু পুরোটা আম নেই, তাহলে বলতে হবে ম্যাঙ্গো ফ্লেভারড জিলাপি।’

অথচ দ্বিতীয়বার যখন অভিযান চালানো হয়েছে, তখন জরিমানা করা হয়েছে কোন অপরাধে সেটিই স্পষ্ট নয়।

‘রসগোল্লা’কে যে জরিমানার স্লিপ দেয়া হয়, তাতে আইনের ধারা কাটাকাটি করা হয়েছে। প্রথমে লেখা হয়, ‘ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন, ২০১৮-এর ২৪(১) ধারার কথা। সেটি কেটে পরে লেখা হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪১ ধারার কথা।

এই ধারায় বলা আছে, ‘কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করিলে বা করিতে প্রস্তাব করিলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

রসগোল্লায় কী ভেজাল মেশানো হয়েছে, সেটি বুঝতে পারছেন না এর মালিক আরাফাত রুবেল।

তিনি জানান, দ্বিতীয় আদালত এসে বলেছে, তারা যে রং ব্যবহার করেন, সেটির বিএসটিআই অনুমোদন নেই।

রুবেল জানান, তিনি বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, রঙের বিষয়টি বিএসটিআই দেখে না, এটা সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিষয়। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট সেটা শোনেননি।

তিনি বলেন, ‘তারা তো আমার কথা শোনেনি। কাটাকাটি করেছে স্লিপে। কত ধারায় জরিমানা করবে, সেটাও স্পষ্ট করতে পারেনি।’

রুবেল যে রং ব্যবহার করেন, সেটির অনুমোদনপত্র সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নিয়েছেন রুবেল। সেই নথিও নিউজবাংলাকে দিয়েছেন তিনি।

তবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা দাবি করেছেন, রং ব্যবহারের কোনো অনুমাদনপত্র দেখাতে পারেনি রসগোল্লা। বলেন, ‘দেখাতে পারলে জরিমানা করা হতো না।’

যে ধারাটি কেটে দেয়া হয়েছে, সেটি মূলত মোড়কজাত পণ্যের বিষয়ে। এই ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি মোড়কজাত কোনো পণ্য-

ক. তৈরি, উৎপাদন, মোড়কজাত বা বিক্রয় করিবেন না, বা মোড়কজাত বা বিক্রির ব্যবস্থা করবেন না;

(খ) পরিবেশন বা সরবরাহ করবেন না অথবা পরিবেশন বা সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন না; বা

(গ) বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রদর্শন বা অধিকারে রাখবেন না;

যদি না পণ্যসামগ্রী মোড়কজাতকরণের নিবন্ধন সনদপত্র থাকে।

এসব মোড়কের উপরিভাগে প্যানেলে বাংলা ভাষায় (বাংলা ভাষার অক্ষরের আকৃতিকে অধিক প্রাধান্য দিয়া) বেশ কিছু তথ্য দেয়ার শর্তও দেয়া আছে।

‘এক দিনে দুবার জরিমানা কখনও শুনেছেন?’

পরপর ‍দুবার জরিমানা, এর পেছনের কারণও অস্পষ্ট। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে আরাফাত রুবেলের মধ্যে।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার তো মনে হয় এটার পেছনে অন্য কিছু আছে। নইলে কখনও দেখেছেন এক দিনে একই অভিযোগে একটি প্রতিষ্ঠানে দুবার অভিযান চালানো হয়?

তিনি বলেন, ‘এটা মনে হয় খ্যাতির বিড়ম্বনা। আমাদের এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে অনেক প্রচার হয়েছে। এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনাও হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনে হয় নেগেটিভ আলোচনাটিকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’


আমের জিলাপি: ‘রসগোল্লা’কে জরিমানার পেছনে আসলে কী


এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না জানতে চাইলে ‍রুবেল বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কি না জানি না। তারা কি আমার আবেদন নেবে?’

কেন নেবে না- এমন মন্তব্য করার পর তিনি বলেন, ‘তাহলে আমি বিষয়টি ভেবে দেখব।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটা নিয়ে অভিযান চলেছে, কথা উঠেছে, এ কারণে আজ থেকে জিলাপি বানানো বন্ধ রেখেছি।’

একই প্রতিষ্ঠানকে একই অপরাধে একই দিন আবার জরিমানা করা যায় কি না- এমন প্রশ্নে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা বলেন, ‘এটা আইনসম্মতই হয়েছে।’

তবে দুই অভিযানের মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা ছিল, সেটি স্বীকার করেছেন তিনি। বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার আমাদের ইনফর্ম করে যায়নি। তারা যে অভিযান চালিয়েছেন তারা জানাননি। এ ক্ষেত্রে একটু গ্যাপ হয়েছিল।

‘ডিসি স্যারের কাছে কিছু খবর ছিল ওইখানকার বিষয়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ম্যাজিস্টেট পাঠিয়েছিলাম। পরে আমরা জানতে পারি যে ভোক্তা অধিকারের অভিযান হয়েছে। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছিলাম, অভিযানের পর তারা যদি সেভাবে জিলাপি তৈরি আর না করে তাহলে দরকার নেই। কিন্তু অভিযানের পরও দেখা গেছে তারা একইভাবে জিলাপি বানাচ্ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জরিমানা করা হয়েছে।’

আম আছে স্বীকার করে নিয়েছে দুই পক্ষই

প্রথম জরিমানার আদেশ দেয়া অধিদপ্তরের রাজশাহী শাখার উপপরিচালক হাসান আল মারুফ বলেন, ‘কাঁচা আমের জিলাপি বলে প্রচার করা হচ্ছে, আসলে এটা কাঁচা আমের না, কাঁচা আমের ফ্লেভারযুক্ত জিলাপি; যা এক ধরনের প্রতারণা।’

তিনি বলেন, ‘জিলাপির রং কখনও সবুজ হয় না। ফুড গ্রেড কালার ব্যবহার করে কাঁচা আমের জিলাপি বলা হচ্ছে। এই প্রতারণা বন্ধ করার জন্য ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

আম কি একেবারেই পাননি?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আম ছিল, তবে তা ৫ শতাংশেরও কম হবে।’

জিলাপিতে আম কত শতাংশ থাকার কথা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, শতাংশ ওভাবে না। একেবারেই পরিমাণটা খুবই সামান্য। আবার এখন যে আমটা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা খুবই ছোট। এখনও কোনো স্বাদ হয়নি। তারা যদি বলত, কাঁচা আমের ফ্লেভারের জিলাপি, তাহলে হতো।’

এক ঘণ্টার মধ্যে সেখানে হাজির হন রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয় দাস। তিনি জরিমানা করেছেন ৩০ হাজার টাকা।

তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, তারা পাঁচ কেজি খামিরে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আম পেয়েছেন।

তাহলে জরিমানা কেন?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাঁচা আমের যে জিলাপি বিক্রি করছে, তার সঙ্গে কৃত্রিমভাবে সবুজ রং মেশানো হচ্ছে যার কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। এ জন্য ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।’

তবে নথিপত্র বলছে, ব্যবহার করা রংটি খাদ্যে দেয়ার সরকারি অনুমোদন ছিল রসগোল্লার।

পাঁচ কেজির মধ্যে আধা কেজি আম দিলে কীভাবে হবে, বলছেন এডিএম

জিলাপিতে আমের পরিমাণ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা বলেন, ‘পাঁচ কেজি জিলাপির মধ্যে যদি আধা কেজি আমের রস দেয়, তবে কী সেটি আমের জিলাপি হবে? সেটি তো প্রতারণা। সেটায় তো আরও বেশি জরিমানা হবে।’

তাহলে পাঁচ কেজি ময়দার সঙ্গে কতটা আমের মিশ্রণ থাকলে মানসম্পন্ন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমি কী করে বলব? তবে আপনি বলেন, যদি পাঁচ কেজির ভেতর হাফ কেজি আম ব্যবহার করে। বাজারে সেভাবে আমও আসেনি। ওইখানে যদি রং দিয়ে ফ্লেভার দিয়ে চালিয়ে দেয় তাহলে কী করে হবে?’

আরও পড়ুন:
কাঁচা আমের পর এবার তরমুজের জিলাপি
কাঁচা আমের জিলাপি: জরিমানা নিয়ে প্রশ্ন
এবার কাঁচা আমের জিলাপি
এক কেজি জিলাপির দাম কেন ২৭০০ টাকা
সংকটকালে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দুই অর্থনীতিবিদের

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।

সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।

তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।

করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Chittagong six days Karona identifies 3 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Daudkandi Upazila Health Complex was injured in the fire

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷

মন্তব্য

বাংলাদেশ
What are the obstacles to the smuggling and the loot of the stone?
জাফলংয়ে হামলা

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা?

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা? জাফলংয়ের পাথুরে নদী। ছবি: নিউজবাংলা

ঈদের ছুটিতে সিলেটে বেড়াতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। একদিনের ব্যবধানে জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা ও কোম্পানীগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ, নির্বিঘ্নে চোরাচালান ও পাথর লুট করতেই পর্যটকদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পর্যটক সমাগম বাড়লে লুটপাট ও চোরাকারবারে সমস্যা হয়। তাই পর্যটকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

অশ্লীলতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগরে “রাজনগর রিসোর্ট এন্ড কফি হাউজে” তালা দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক। এসময় স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুটি স্থান জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ। সবসময়ই এই দুই এলাকায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদের মতো বড় ছুটিতে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী এই দুই এলাকা দিয়েই ভারত থেকে দেদারছে চোরাই পণ্য আসে। এছাড়া এসব এলাকার পাথুরে নদী ও ছড়া থেকে পাথর লুটপাটও নিত্তকার ঘটনা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর চোরাচালান ও পাথর লুট অনেকটা বেড়ে গেছে। প্রশাসনও লুটপাটকারী ও চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারছে না।

জানা যায়, ঈদের পরদিন রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথুরে ছড়া উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। বিকেলে সেখানে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক জড়ো হয়ে পর্যটকদের বের করে দেয়। এ রকম একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া যুবকরা পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও এলাকার পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পর্যটকদের বের করে দেয়ার একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, 'এই এলাকা আলিমদের এলাকা, দ্বীনদার এলাকা। কিন্তু এইখানে অনেকে অনেক পরিবেশে থেকে আসে। এসে মদ খায়, আরও অনেককিছু করে, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের আবেদন, আপনারা এখানে আর আসবেন না। তাছাড়া এটি পর্যটনভুক্ত এলাকাও নয়'।

ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকার আলেম-ওলামা ও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎমাছড়াকে পর্যটন করা যাবে না। তাই আপনারা যারা এখানে এসেছেন দয়া করে এখান থেকে চলে যান। আপনারা এখানে থেকে এখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। এই এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমরা এখানে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করছি আজকের পর আপনারা এখানে আর কোনদিন আসবেন না’।

পর্যটকদের বের করে দেয়ার এই ভিডিও যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ফেসবুকে লিখেন, ‘একদিকে চলবে পর্যটক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে পর্যটনে বাঁধা! দেশের ভেতরে সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকা ও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানাধীন জায়গা ব্যতীত কোথাও জনসাধারণের প্রবেশে বাঁধা দেয়া মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। মানুষের চলাচলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সিলেটে এই অপরাধ ইতিপূর্বেও ঘটেছে।

কিম লিখেন, 'বছর কয়েক পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক ঈদে মায়াবন নামে পরিচিত যুগীরকান্দি জলারবনে পর্যটকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই বনে কোন পর্যটক আর পা রাখেনি। স্থানীয় মাদ্রাসা ওই জলার বনের মাছ ভোগ করে বলে এখানে পর্যটক আসুক তা চায় না। অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে যুগীরকান্দি বন বা মায়াবন সবার দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। উতমাছড়ার পাথর লুটে ওই মাদ্রাসার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন।'

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে’।

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?’

এদিকে, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিছু লোক। হামলাকারীরা চোরাকারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বখাটেরা পর্যটকদের ওপর হামলা করেছে। পরে সাংবাদিক ও ইউপি সদস্য মিলে ঘটনাস্থলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান হয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকের ভুল ধারণা হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hundreds of families on Shahpir Island are now sheltered
প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টি

শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন

খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন
শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন শাহপরীর দ্বীপ। ছবি: নিউজবাংলা

নাফ নদীর ভাঙন যেন থামছেই না। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্ন। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল ঈদের প্রস্তুতি, হাসি-আনন্দে মুখর পরিবার—আজ সেখানে কান্না আর হাহাকার। প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টির তোড়ে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন, চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। বসতভিটা হারিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ গাছতলায় কিংবা নদীর পাড়েই মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে।

‘নাফের পানি ও তুফানে আমার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। ঈদের দিনেও কোরবানি দিতে পারিনি, ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনতে পারিনি। এর চেয়ে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না।’-বলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবুল আলী। আলোকিত শহরের ঈদ আনন্দের বিপরীতে এই দ্বীপে নেই রান্নার হাঁড়ি, নেই নতুন জামার ঝলক, শুধু অসহায়ত্ব আর কান্নার সুর।

ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধের আহাজারি

বৃদ্ধ আবুল আলী, কাঁপা গলায় হাতের ইশারায় দেখালেন যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে আছেন, সেখানেই ছিল তার ছোট্ট ঘর। নাফের পানি একরাতে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ঘর, চুলা, শোবার জায়গা, কিছুই নাই আর। কতবার ঘর তুলুম? আমাদের দেখার কেউ নাই। বারবার আশার বাণী শুনিয়েছেন প্রশাসন। কেউ আজো কিছু দেয়নি। তবে কিছু করবে এমন আশায় আছি।’

ঈদের রান্নাও থেমে গেছে

বৃদ্ধা চলেমা খাতুন বলেন, ‘নাফের পানি চুলোতে ঢুকে ভেঙ্গে গেছে। এখনো রান্না করতে পারি না। ঈদের দিনেও ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত দিতে পারি নাই। নতুন কাপড় তো দূরের কথা। কোরবানিও করা সম্ভব হয় নাই। সাহায্য আসলেও তা আমরা পাই না।’

শুধু আবুল আলী বা চলেমা খাতুনই নন, এমন গল্প আজ জালিয়াপাড়ার শত শত পরিবারের। ঈদের সময় যখন দেশের অন্যপ্রান্তে আনন্দে মুখর প্রতিটি বাড়ি, তখন এই দ্বীপে ঈদ মানে কষ্ট, ভাঙা ঘর, খালি পেট, আর ভেজা চোখ।

আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি—কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বহুবার প্রশাসনের লোকজন এসেছেন, ছবি তুলেছেন, কথা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা তারা পাননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন,

‘কেবল ছবি তুললে আর রিপোর্ট করলেই কি ঘর ফিরে পাই? আমরা তো বাস্তব সাহায্য চাই।’ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলছে নদীভাঙনের আতঙ্ক। শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর ভাঙন নতুন নয়। ২০১২ সালের ভয়াবহ সামুদ্রিক জোয়ারে এই দ্বীপের চারটি পাড়ার অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান সাগরে বিলীন হয়ে যায়। নোনা পানি নষ্ট করে দেয় কৃষিজমি, নিশ্চিহ্ন হয় গ্রাম, গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ। কিন্তু এত বড় অভিজ্ঞতার পরও দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

২০২৫ সালের এই ঈদুল আজহার সময়, ইতিহাস যেন আবার নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে—আর এই পুনরাবৃত্তি শুধু কষ্টের, শুধু কান্নার। ধ্বংসের চিত্র এখনো স্পষ্ট জালিয়াপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এখনো পড়ে আছে ভাঙা কাঠামো, উপড়ে যাওয়া গাছের শিকড়, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ঘরের চিহ্ন। পথচারীদের চোখে-মুখে শোক, মুখে একটাই প্রশ্ন—‘এই ভাঙন কি আর থামবে না?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় যেসব বাংলাদেশি নাফ নদীর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তাদের তালিকা করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The bodies of the EasyBike driver recovered from the Chandana River

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চন্দনা নদী থেকে মো. আসলাম প্রামানিক (৪২) নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ।
বুধবার (১১ জুন) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চন্দনা ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আসলাম শেখ পাংশা উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পিয়ার আলী প্রামানিকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসলাম শেখ গত মঙ্গলবার ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা চন্দনা ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মরদেহটি আসলাম শেখের বলে শনাক্ত করেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার জানান, “প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসলাম শেখকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Narayanganj battery chasit Atorixa and Microbes clash killed 2

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হ‌য়ে‌ছে।

সোমবার রা‌তে উপ‌জেলার তারা‌বো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘ‌টে। নিহতরা হলেন, তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্র‌তি‌নি‌ধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রা‌তে তারা‌বো বিশ্ব‌রোড এলাকা থে‌কে অ‌টো‌রিক্সা যোগে তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার বা‌ড়ি‌তে ফির‌ছি‌লেন শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। প‌থিম‌ধ্যে সাই‌ফিং ফ্যাক্টরীর সাম‌নে এক‌টি হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের সা‌থে অ‌টো‌রিক্সা‌টির মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ হয়। সংঘ‌র্ষে অ‌টো‌রিক্সাটি দুম‌ড়েমুচ‌ড়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থ‌লেই নিহত হয় অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অ‌টো‌রিক্সার যাত্রী শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। তা‌দের ম‌ধ্যে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তা‌মিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়

স্থানীয়রা উদ্ধার ক‌রে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে নি‌য়ে গে‌লে চি‌কিৎসকরা শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা ক‌রেন।

এ ব্যাপা‌রে রূপগঞ্জ থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ও‌সি) লিয়াকত আলী ব‌লেন, দূর্ঘটনার পর হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের চালক মাই‌ক্রোবাসটি নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে যাওয়ায় তা‌কে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।

মন্তব্য

p
উপরে