গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
র্যাব জানিয়েছে, রাজধানীর রামপুরা ও হাতিরঝিল থেকে গ্রেপ্তার চারজন সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা হলেন চক্রের হোতা কামরুল আহমেদ, খালেদ মাসুদ হেলাল, তোফায়েল আহমেদ ও মো. জামাল।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ২৭টি পাসপোর্ট, একটি মনিটর, একটি সিপিইউ, একটি মাউস, একটি কী-বোর্ড, একটি ইউপিএস, ভুয়া ভিসার ১০০টি কপি, ১২৫টি ভুয়া টিকেট, চারটি মোবাইল, কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার দুইটি ফরম এবং একটি প্রিন্টার উদ্ধার করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন জানান, একজনের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ জানতে পারে, রামপুরা এলাকায় মানবপাচার ও প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ওই চক্রের সদস্যরা ভুয়া ভিসা ও টিকেট দিয়ে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বেকারদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে।
তিনি জানান, বিদেশ যাওয়ায় ইচ্ছুক ব্যক্তিরা ভুয়া ভিসা ও টিকিট নিয়ে বিমানবন্দরে যাওয়ার পর বিপাকে পড়েন। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ভিসা ও টিকিট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে অনেককে।
নারীকে উদ্ধার যেভাবে
র্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জানান, কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩-এর একটি দল চক্রের সদস্যদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। ১২ এপ্রিল চক্রটি মৌলভীবাজার থেকে একজন নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে রামপুরা এলাকার কামরুলের বাসায় নিয়ে আসে। ওই বাসায় আটক রেখে তোফায়েল নারীকে ধর্ষণ করেন।
ওই নারী মোবাইলে সাহায্য চাইলে র্যাবের দল ১৩ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে রামপুরা এলাকায় অভিযান চালায়। সে অভিযানে নারীকে উদ্ধার করা হয়।
কীভাবে দালালের কাছে
জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী র্যাবকে জানান, তিনি সাইফুল ইসলাম শান্ত নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর সাইফুল যৌতুক বাবদ ধাপে ধাপে ৫ লাখ টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায়।
ওই নারী আরও জানান, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার বাবা যৌতুকের টাকা ধারদেনা করে জোগাড় করেছিলেন। পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকলে তিনি গ্রামের দালাল তোফায়েলের শরণাপন্ন হন।
ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তোফায়েল তাকে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরব পাঠানোর প্রলোভন দেখান। তিনি সৌদিতে যেতে রাজি হন। এরপর সৌদি যেতে হলে আরবি ভাষার ট্রেনিং করতে হবে বলে তাকে ঢাকায় কামরুলের বাসায় এনে আটক রেখে ধর্ষণ করা হয়।
র্যাব জানায়, পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে ওই নারীকে রামপুরা থানায় পাঠানো হয়। নারী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আসামিদের দেয়া তথ্য
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, আসামিদের জনশক্তি রপ্তানির লাইসেন্স নেই, কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে ভ্রমণ ভিসার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক পাঠাত। এ ছাড়াও চক্রটি মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে জনশক্তি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বেকারদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিত। বিনিময়ে ভুয়া ভিসা ও ভুয়া টিকিট ধরিয়ে দিত ভুক্তভোগীদের হাতে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ভুক্তভোগীরা ভুয়া ভিসা ও টিকিট নিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফিরে এসে চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায়, কিন্তু তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এভাবে গত দুই বছরে চক্রের সদস্যরা আটবার বাসার ঠিকানা পরিবর্তন করে।
গত পাঁচ বছরে চক্রটি অবৈধভাবে শতাধিক লোককে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠায়। তারা বিদেশ গিয়ে কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
যেভাবে গড়ে ওঠে প্রতারক চক্র
র্যাব জানায়, চক্রের হোতা কামরুল নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। তার নির্দিষ্ট পেশা নেই। প্রতারণা ও মানবপাচারই তার কাজ।
২০১৯ সালে কামরুল ভ্রমণ ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যান। তারপর সেখানে মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে দুবাইয়ের রেসিডেন্স ভিসা পান তিনি। সেখানে একটি প্রাইভেটকার কিনে নিজে ড্রাইভিং করে অর্থ উপার্জন করেন।
করোনার প্রাদুর্ভাব হলে প্রাইভেটকারটি বিক্রি করে ২০২১ সালের মে মাসে দেশে ফিরে এসে আবার প্রতারণা ও মানবপাচার শুরু করেন কামরুল। তিনি বিভিন্ন ট্যুরস ও ট্রাভেলসের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবৈধভাবে ভ্রমণ ভিসায় বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাতেন।
র্যাব আরও জানায়, ভুয়া টিকিট সরবরাহ করে পাঁচ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রের সদস্যরা। কামরুলের নামে চট্টগ্রাম কোর্টে একটি চেক জালিয়াতির মামলা এবং মৌলভীবাজার কোর্টে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ১৮ লাখ টাকার একটি মামলা রয়েছে। তার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৮ লাখের বেশি টাকা আছে।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ পাচারের সময় এক পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)।
শনিবার দুপুরে বেনাপোলের খলশী সীমান্ত থেকে ২ কেজি ৮২৯ গ্রাম ওজনের ১৭টি স্বর্ণের বারসহ মিকাইল হোসেন নামের ওই পাচারকারী আটক হন।
৩০ বছর বয়সী মিকাইল হোসেন বেনাপোল পোর্ট থানার বারোপোতা গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে।
বিজিবির ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল এ তথ্য জানান। জব্দকৃত স্বর্ণের মূল্য ২ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার টাকা বলে জানান তিনি।
লে. কর্নেল জামিল বলেন, ‘সীমান্তের খলশী বাজার এলাকা দিয়ে স্বর্ণ পাচার হয়ে ভারতে যাচ্ছে জানতে পেরে ৪৯ ও ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিশেষ দুটি টহল দল সীমান্তের খলশী বাজার এলাকায় অভিযান চালায়। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে এ সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পাচারকারী। তবে বিজিবি সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে তাকে আটক করে।
‘পরে ক্যাম্পে নিয়ে তার শরীর তল্লাশি করে কোমরে বাধা অবস্থায় ১৭টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে বিজিবি।’
আটক মিকাইলকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জব্দকৃত স্বর্ণ কাস্টমসের ট্রেজারি শাখায় জমা দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার একদিন পর ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক কাউন্সিলরের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় দেওড়া পুরোনো মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শাহ আলম।
ভোটে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের আহত সমর্থকরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী আলমাস, ১৯ বছরের শাহজালাল মোল্লা, ২৬ বছর বয়সী আজাহার, ৩২ বছর বয়সী হেলাল উদ্দিন, ২৫ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম সাগর, ২৪ বছরের নিয়ামত, ২১ বছরের তানভীর ও ৩১ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার।
বিজয়ী কাউন্সিলর সোলেমান হায়দারের আহত সমর্থকরা হলেন ৩২ বছর বয়সী রাজিব হায়দার সাদিম, ৩৫ বছর বয়সী আজিম হায়দার আদিম, ৩০ বছর বয়সী ঝলক হায়দার, ২৮ বছরের বিজয় হায়দার ও আরিফ মণ্ডল।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম হোসেন ও লাটিম প্রতীকে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সেলিম হোসেনকে পরাজিত করে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে জয়ের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোটার ও সমর্থকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে বের হন কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার। এ সময় বড় দেওড়া আদর্শপাড়া এলাকায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের সমর্থক আলমাসের সঙ্গে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ঝগড়া হয়। পরে তা সংঘাতে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে সেলিম হোসেনের ভাই মামুন ও তাদের সমর্থক হারুন, অনিক ও মানিকসহ বেশ কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার পুরোনো মসজিদের সামনে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় সাদিম, আদিম, ঝলক, বিজয় ও আরিফ আহত হন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার লোকেদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার বলেন, ‘ভোটে হেরে সেলিমের লোকজন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতরা সুস্থ হয়ে ফিরলেই সালিশের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু ‘অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা’ বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। তবে পরিবার বলছে, তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ও ছায়া তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ধারণা থেকে কথাগুলো বলছে। পুলিশের এই ধারণা ঘিরে অসংখ্য প্রশ্ন সামনে এসেছে, যেগুলোর উত্তর পাওয়া দরকার। এটি হত্যাকাণ্ড।
মামলার তদন্তে অসঙ্গতি ও অমীমাংসিত প্রশ্নের উল্লেখ করে সেগুলো সামনে রেখে একটি বই সংকলন করেছেন দুরন্ত বিপ্লবের বোন শাশ্বতী বিপ্লব। শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ নামে সংকলনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুরন্ত বিপ্লবের মা রোকেয়া আক্তার খাতুন। তিনি বলেন, ‘বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই, ছোট ভাই সবাই দুরন্তকে চেনেন। আমি মা হিসেবে তাকে যতটা চিনেছি তা বর্ণনাতীত। এটা সত্য, সে পানিতে ডুবে মরে নাই। দুরন্তর সার্কেলের লোকজন, যাদের সঙ্গে সে চলাফেরা করতো, তাদের মধ্যেই কারও স্বার্থে আঘাত লাগায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লব গত বছরের ৭ নভেম্বর নিখোঁজ হন। ওইদিনই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এর ৫ দিন পর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ পায় পুলিশ। ওইদিন রাতে মরদেহটি বিপ্লবের বলে নিশ্চিত করেন তার স্বজনরা। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর হত্যা মামলা করা হয়।
মামলাটির তদন্ত শুরু করে ঢাকা জেলা পুলিশ। পরবর্তীতে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে থানা থেকে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা জেলার পিবিআই-এর পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করে ডিবি লালবাগ বিভাগ।
দুই সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করা হয়নি। তিনি অবহেলাজনিত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর শিকার। ৭ নভেম্বর বুড়িগঙ্গা পার হওয়ার সময় মর্নিংসান-৫ নামে একটি লঞ্চের ধাক্কায় দুরন্ত বিপ্লবকে বহনকারী নৌকাটি উল্টে যায়। সাঁতারে দক্ষ না হওয়ায় বা সাঁতার না জানায় দুরন্ত বিপ্লব পানিতে তলিয়ে যান।
তবে তদন্তকারীদের এই বক্তব্য মানতে নারাজ দুরন্ত বিপ্লবের বোনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। বোন শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘পিবিআই ও ডিবি পুলিশ কথাগুলো বলছে ধারণা থেকে। বলছে- হতে পারে, হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে তো অকাট্যভাবে প্রমাণ হয় না যে দুরন্ত বিপ্লব দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
‘পুলিশের তদন্ত ও বক্তব্য নিয়ে আমাদের মনে অসংখ্য প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। আমাদের কাছে থাকা তথ্যগুলো বলছে, দুরন্ত বিপ্লব দুর্ঘটনা নয়, হত্যার শিকার হয়েছেন। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবেদন করে মামলাটি পিবিআইকে দেয়ার জন্য আদালতে অনুরোধ করেছিলাম। পিবিআইয়ের তদন্তে আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু তারপরও আমাদের কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যেগুলো তাদের তদন্তের সঙ্গে মিলছে না। আমরা এসব প্রশ্নের জবাব চাই।’
‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ বইটির সম্পাদক শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘বইটিতে দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজ হওয়ার দিন গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬২ দিনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। সংকলনটি আমাদের দিক থেকে একটি প্রপোজিশন বা প্রস্তাবনা। যেটা এই মামলার তদন্তে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এই প্রশ্নগুলো ধরে তদন্ত এগিয়ে নিলে মৃত্যু রহস্যের সুরাহা করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই বইয়ে য তথ্য-উপাত্ত আছে, তার বাইরে আরও কিছু তথ্য-উপাত্ত ও সূত্র আমরা পিবিআইকে দিয়েছি। সংগত কারণেই আমরা এই বিষয়গুলো এই বইয়ে আনতে পারিনি। মামলাটি তদন্তানাধীন। সে কারণে সব কিছু প্রকাশ করা যায় না।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার উপ-পরিদর্শক সালেহ ইমরান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত তদন্তে যা পেয়েছি সেগুলো দুরন্ত বিপ্লবের পরিবারকে জানানো হয়েছে। মামলাটির তদন্ত এখনও চলছে। যদি নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই যাচাই-বাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
আরও পড়ুন:চাঁদা না পেয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার শেষে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন-জনি হাসান ও এস এম শফিক।
ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাস (নর্থ হল) থেকে শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের ওই দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। শনিবার তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানালে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল গনি সাবু বলেন, ‘একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণের মামলায় ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠালে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।’
এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অয়ন সিগমাইন্ড নামের সিসি ক্যামেরা স্থাপনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেন। বেশ কিছুদিন থেকে ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন তারা৷ কিন্তু তা না দেয়ায় গত ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে তারা প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যান।
রাতে সিয়াম ও রমজান মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানান এবং খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে তাদেরকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন। পরে তৌকির নামে এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী। এ সময় তৌকিরকে জিম্মি করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অভিযুক্তরা। এমনকি টাকা না পেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়৷
পরে ভুক্তভেগী মেহেদী ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে এলে তাকেও জিম্মি করা হয়। মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করেন তারা। এ সময় তাদের কাছে থাকা টাকা ও এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন আসামিরা৷
রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে নিউ মার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে ফেলে রেখে যান তারা। খবর পেয়ে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী জনি হাসান ও এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুইজন ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্ণব, রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, রায়হান, মাসুম, ফাহিম ও শাহীন৷
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত চার দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাইরে চলাফেরায় শর্তসাপেক্ষে পুলিশের নেতৃত্বে এসকর্ট সুবিধা বহাল থাকছে। দেশগুলো হলো- ভারত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে আগুন সন্ত্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজন রাষ্ট্রদূতকে বাইরে চলাফেরার সময় পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক এসকর্ট সুবিধা দেয়া হতো। আগের পরিস্থিতি না থাকায় তাদের দেয়া সুবিধা তুলে নেয়া হয়েছিল। তবে দূতাবাসগুলো চাহিদাসাপেক্ষে সেই এসকর্ট সুবিধা পাবে।
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, শর্তসাপেক্ষে সবাই এসকর্ট সুবিধা ফিরে পাবে। রাষ্ট্রদূতদের এসকর্ট সুবিধা দেয়ার জন্য আমাদের আনসার গার্ড রেজিমেন্ট সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন। কোনো দূতাবাস যদি মনে করে তাদের এসকর্ট সুবিধা দরকার তাহলে তারা সেখান থেকে সেই সুবিধা নিতে পারবে। একজন পুলিশ কমান্ডারের নেতৃত্বে তাদেরকে এই এসকর্ট সুবিধা দেয়া হবে।
ছাত্রদলের দুই নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নরসিংদী সদর মডেল থানার এসআই অভিজিৎ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন নরসিংদী শহরতলির চিনিশপুরে বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এ সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিতে প্রাণ হারান ছাত্রদল নেতা ৩২ বছর বয়সী সাদেকুর রহমান ও ২০ বছরের আশরাফুল ইসলাম।
নিহত সাদেকুর রহমানের ভাই আলতাফ হোসেন ওই ঘটনায় শুক্রবার রাতে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার বিকেলে চিনিশপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় সংঘবদ্ধ হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলামকে গুলি করা হয়।
ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাদেকুর রহমান মারা যান। আর শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আশরাফুল ইসলাম।
নিহত সাদেকুর রহমান সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে। আর আশরাফুল পৌর শহরের সাটিরপাড়া এলাকার নাজমুল হকের ছেলে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভুইয়াকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের (আংশিক) জেলা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবনে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটে। সবশেষ ২৫ মে বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়ার সময় সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন:ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন সেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নামে নিবন্ধন করা সিম কার্ড ব্যবহারের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সেটটি বর্তমানে আশুগঞ্জ থানার হেফাজতে রয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ছিনতাই হওয়া ওই মোবাইল ফোন সেটের মালিক আশিকুর রহমান। তিনি ভোরের ডাক পত্রিকার আশুগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। সেট ছিনতাইয়ের ঘটনায় বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলার আবেদন করা হয়। তাতে বিজয়নগরের ইউএনও-কে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আশুগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু শামার একটি ইটভাটার সামনে থেকে আশিকুরের স্যামসাং ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল সেট ছিনতাই হয়। মুখোশ পরা দুষ্কৃতকারীরা মোবাইল সেট ছাড়াও আশিকুরের কাছ থেকে ৫০০ ইউএস ডলার, আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার টাকা, এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও ৬ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের আংটিসহ মূল্যবান কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন আশিকুর। মোবাইল সেটের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরির তদন্ত করেন আশুগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান। তদন্তে দেখা যায়, ছিনতাই হওয়া ওই মোবাইল সেটে ব্যবহৃত সিম কার্ডটি বিজয়নগরের ইউএনও’র নামে নিবন্ধন করা।
এএসআই মুজিবুর রহমান বলেন, ‘শনাক্ত হওয়ার পর মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সিম কার্ডে যোগাযোগ করলে বিজয়নগর ইউএনও’র একজন স্টাফ ফোনটি রিসিভ করেন। ফয়সাল নামের ওই স্টাফ তখন স্যারের (ইউএনও) সাথে কথা বলতে বলেন। পরে ইউএনও স্যার ফোন দিয়ে জানতে চান যে মোবাইল সেট ছিনতাই হওয়ার তথ্য-প্রমাণ থানায় আছে কি না। তাছাড়া মোবাইলের সব কাগজপত্র রয়েছে কি না। আমি ইউএনও স্যারকে জানাই যে জিডি কপি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএনও স্যার তার স্টাফ জালালকে যে সিমটি দিয়েছেন সেটি প্রথমে একটি বাটন ফোনে ছিল। বাটন ফোনটি নষ্ট হয়ে গেলে জালাল তার ব্যক্তিগত ফোন সেটে সিমটি লাগিয়ে ব্যবহার করতে থাকেন। আর জালাল ফোন সেটটি এনেছিলেন ভৈরব থেকে। আর এই ফোন সেটটিই হচ্ছে সাংবাদিক আশিকের ছিনতাই হওয়া সেট।’
মামলার বাদী আশিকুর রহমান বলেন, ‘পরিচিত এক পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে ছিনতাই হওয়া সেটটিতে ব্যবহার হওয়া সিমকার্ডধারীর নাম-পরিচয় বের করি। সেখানে এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের ছবিসহ নাম-ঠিকানা পাই। তখনও আমি জানতে পারিনি তিনি বিজয়নগরের ইউএনও। ‘২২ মে বিকেলে ইউএনওর কার্যালয়ের একটি সরকারি নম্বর থেকে ফয়সাল নামে একজন ফোন করেন। তিনি জানান- মোবাইল সেট নিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, সেটটি কেনার রসিদ ও বক্স লাগবে। সে অনুযায়ী পরদিন মোবাইল সেটটি আনতে গেলে তারা টালবাহানা শুরু করে। সে জন্য আদালতে মামলা করেছি।’
ওসি আজাদ রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক স্টাফ মোবাইল সেটটি থানায় দিয়ে গেছেন। আর বাদী বলতেই পারেন। তবে আমরা তদন্ত করে দেখব সিম ও সেটটি কার ছিল।’
ইউএনও এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ জানান, তার এক কর্মচারী ভৈরব থেকে মোবাইল সেটটি কিনেছিল। ব্যবহার ও যোগাযোগের জন্য তার নিবন্ধিত একটি বাংলালিংক সিম ওই কর্মচারীকে দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরল বিশ্বাসে স্টাফ জালালকে সিমটি দেয়ায় এমনটা হয়েছে। আমার সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। মোবাইলের মালিকের সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি। তিনি আমাকে বিপদে ফেলতে ও সম্মান ক্ষুণ্ন করতে এই মামলা করেছেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য