পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা লভ্যাংশ যে বিনিয়োগকারীরা নিয়েছেন, তাদের সবাই এখন লোকসানে।
কোম্পানিটি এবার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে মোট সাড়ে ১৭ শতাংশ, যার মধ্যে পাঁচ শতাংশ দেয়া হবে বোনাস শেয়ার হিসেবে।
বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের পর তারাই এই লভ্যাংশ পাবেন, যাদের কাছে রেকর্ড ডেট ৬ তারিখে শেয়ারদর ছিল ১৭ টাকা ১০ পয়সা। পাঁচ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর দাম দাঁড়ায় ১৬ টাকা ৩০ পয়সা।
কিন্তু ৭ এপ্রিল লেনদেন শুরু করার পর পাঁচ কর্মদিবসের প্রতিদিনই দাম কমেছে ৩০ পয়সা করে। সর্বোচ্চ দরপতনের সীমা এখন ২ শতাংশ নির্ধারিত থাকায় এর চেয়ে বেশি কমা সম্ভব নয়। কিন্তু দাম এই পরিমাণ কমার পরও শেয়ার বিক্রি করা যাচ্ছে না, এর কারণ শেয়ার কেনার লোক নেই।
রেকর্ড ডেট শেষে প্রথম দিন ১৬ টাকায় শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ২৩ হাজারের কিছু বেশি, কিন্তু বিক্রেতা ছিল কয়েক গুণ। তার পরদিন ১৫ টাকা ৭০ পয়সায় বিক্রেতা ছিল ৪০ লাখের বেশি, কিন্তু বিক্রি হয় ২৬ হাজার ৯৮৭টি শেয়ার।
১১ এপ্রিল দাম কমে হয় ১৫ টাকা ৪০ পয়সা, সেদিন শেয়ার বিক্রি হয় ৩৪ হাজার ৭৩৮টি, ১২ এপ্রিল ১৫ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয় ৬৯ হাজার ৭৮১টি।
এই চার দিনে ১ টাকা ২০ পয়সা দর কমার কারণে বিনিয়োগকারীদের যারা লভ্যাংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের কারও আসলে লাভ হবে না। এর কারণ তারা লভ্যাংশ হিসেবে যে ১ টাকা ২৫ পয়সা পাবেন, তার মধ্যে যাদের টিআইএন নম্বর আছে, তাদের কাছ থেকে কর কাটা হবে ১২ দশমিক ৫০ পয়সা, আর যাদের টিআইএন নম্বর নেই, তাদের কাছ থেকে কর কাটা হবে ১৮ দশমিক ৭৫ পয়সা।
তবে লোকসান নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর ১৩ এপ্রিল দর কমে আরও ৩০ পয়সা। দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৮০ পয়সা।
লভ্যাংশ নেয়ার পর শেয়ারপ্রতি লোকসান ৪০ পয়সার মতো।
পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দেয় দুইভাবে। ১. বোনাস শেয়ার, ২. নগদ। এর মধ্যে যত শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া হয়, রেকর্ড ডেটের পর তত শতাংশ দর সমন্বয় করা হয়। নগদ লভ্যাংশ শনাক্ত হয় না। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে যত টাকা নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়, তত টাকা বা তার চেয়ে বেশি অর্থ শেয়ারদর থেকে কমে যাওয়ার প্রবণতা আছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে বোনাস শেয়ারের বদলে নগদ লভ্যাংশে উৎসাহ দেয়ার পাশাপাশি চাপও তৈরি করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও সরকার। কেবল বোনাস শেয়ার দিলে কোম্পানিগুলোকে বাড়তি কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। আবার বোনাস শেয়ার কেন দেয়া হবে, তার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করে এর জন্য বিএসইসির কাছ থেকে আলাদা অনুমতি নিতে হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে একবার নগদের জন্য এবং একবার বোনাস শেয়ারের জন্য রেকর্ড ডেট দিতে হচ্ছে।
কিন্তু এভাবে নগদ লভ্যাংশেও যদি বিনিয়োগকারীর লোকসান হয়, তাহলে তারা কেন লভ্যাংশ নিতে আগ্রহী হবেন- এ বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলছে না।
যত বেশি নগদ লভ্যাংশ, দরপতন তত বেশি!
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবার লভ্যাংশ দেবে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। লভ্যাংশসংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ২৮ মার্চে শেয়ার দর ছিল ৭৬ টাকা ২০ পয়সা। বোনাস সমন্বয়ের পর দর দাঁড়ায় ৬৯ টাকা ৩০ পয়সা। বর্তমান দর ৬৩ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থাৎ বোনাস সমন্বয়ের পরও দাম কমেছে ৬ টাকা, যদিও নগদ লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ১ টাকা ৭৫ পয়সা, যার থেকে সাড়ে ১৭ বা সোয়া ২৬ পয়সা কাটা হবে কর হিসেবে।
ব্যাংক এশিয়া ২০২১ সালের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ নগদ, অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি দেড় টাকা করে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৬ মার্চ ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
লভ্যাংশসংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ছিল গত ৬ এপ্রিল। দর ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। রেকর্ড ডেট শেষে দর কমার সুযোগ ছিল প্রথম দুই দিন ৪০ পয়সা করে। এরপর ২০ টাকার নিচে নেমে আসার পর দর কমার সুযোগ কমে হয় ৩০ পয়সা। পাঁচ কর্মদিবসের প্রথম দুই দিন ৪০ পয়সা করে এবং পরের তিন দিন কমে ৩০ পয়সা করে।
এরই মধ্যে কমেছে ১ টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ লভ্যাংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া বিনিয়োগকারীর শেয়ারপ্রতি লোকসান ২০ পয়সা, সঙ্গে করের ১৫ বা সাড়ে ২২ পয়সা।
লোকসান দিয়ে বের হয়ে যাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীদের জন্য এই কারণে যে, প্রতিদিনই দরপতনের প্রান্তসীমায় বসিয়েও শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না। রেকর্ড ডেটের পর প্রথম দিন তিন খাতের বেশি শেয়ার হাতবদল হলেও এরপর এক দিন কেবল ১ হাজার ৫১০টি, আরেক দিন ১ হাজার ৪৫১টি, এক দিন ১ লাখ ৮ হাজার ৪৭৭টি, এক দিন ২৪ হাজার ৭৮০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
উত্তরা ব্যাংক এবার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ২৮ শতাংশ, অর্ধেক বোনাস, অর্ধেক নগদে। রেকর্ড ডেট ৬ এপ্রিল দর ছিল ২৮ টাকা ৯০ পয়সা। বোনাস সমন্বয়ের পর দর দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমান দর ২৩ টাকা ৩০ পয়সা।
অর্থাৎ দাম সমন্বয়ের পরও কমেছে ২ টাকা ২০ পয়সা, যদিও নগদ লভ্যাংশ মিলবে ১ টাকা ৪০ পয়সা, যার থেকে ১৪ বা ২১ পয়সা কাটা হবে কর হিসেবে।
ব্র্যাংক ব্যাংক এবার লভ্যাংশ দিয়েছে ১৫ শতাংশ, যার মধ্যে নগদ ও বোনাস সমান সমান সাড়ে ৭ শতাংশ করে।
রেকর্ড ডেট ৬ এপ্রিল দর ছিল ৪৯ টাকা ৭০ পয়সা। বোনাস সমন্বয়ে দর দাঁড়ায় ৪৬ টাকা ৩০ পয়সা। বর্তমান দর ৪৫ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ দাম সমন্বয়ের পরও কমেছে আরও ১ টাকা ১০ পয়সা, যদিও নগদ লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ৭৫ পয়সা। এ থেকে আবার ১০ বা ১৫ শতাংশ কাটা হবে কর।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এবার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৫ শতাংশ বোনাস আর শেয়ারপ্রতি এক টাকা বা ১০ শতাংশ নগদ।
রেকর্ড ডেট ৬ এপ্রিলে ব্যাংকটির শেয়ারদর ছিল ২১ টাকা ৭০ পয়সা। বোনাস শেয়ার সমন্বয়ে দর দাঁড়ায় ২০ টাকা ৭০ পয়সা। পাঁচ কর্মদিবস পর দর দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ১০ পয়সা।
বহুজাতিক কোম্পানি লিনডে বিডি এবার লভ্যাংশ দেবে শেয়ার প্রতি ৫৫ টাকা। রেকর্ড ডেট ৩১ মার্চ শেয়ারদর ছিল ১ হাজার ৫৮১ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমান দর ১ হাজার ৪৩৮ টাকা ৬০ পয়সা। কমেছে ১৪২ টাকা ৮০ পয়সা।
অর্থাৎ যারা লভ্যাংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের শেয়ারপ্রতি লোকসান ৯০ টাকার বেশি।
বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিনজার এবার লভ্যাংশ দেবে শেয়ারপ্রতি ১৬৫ টাকা। রেকর্ড ডেট ৩ মার্চ শেয়ারদর ছিল ৫ হাজার ৩৮৮ টাকা ৪০ পয়সা। লভ্যাংশ নগদ আসায় দর সমন্বয়ের কোনো বিষয় ছিল না। তবে এখন দর কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৩৩ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ কমেছে ১৫৫ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থাৎ লভ্যাংশ ১৬৫ টাকা থেকে ১৬ টাকা ৫০ পয়সা বা ২৪ টাকা ৭৫ পয়সা কর কাটলে বিনিয়োগকারীর লোকসান হবে।
প্রবণতা নতুন নয়
গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে ইউনিট মূল্যের তুলনায় দারুণ লভ্যাংশ ঘোষণা করা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ যারা পেয়েছেন, তাদের সবাই বেশ লোকসানে আছেন।
যেমন পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এটি ইউনিটপ্রতি গতবার ৮৫ পয়সা করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। রেকর্ড ডেট ১৫ সেপ্টেম্বর দাম ছিল ৭ টাকা। অর্থাৎ ইউনিট দরের ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলেও এত বেশি হারে মুনাফা পাওয়া যায় না। আবার মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ করমুক্ত বলে প্রকৃত লভ্যাংশ আরও বেশি। কিন্তু যারা লভ্যাংশ নিয়ে ইউনিট ধরে রেখেছেন, তাদের মুখে হাসি নেই।
ইউনিট দর এখন নেমেছে ৫ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ লভ্যাংশ বিবেচনায় নিলেও ইউনিটপ্রতি আরও ৮৫ পয়সা লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত জুনে প্রায় সব কটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশের হার ছিল সঞ্চয়পত্রের হারের চেয়ে বেশি। কিন্তু সব কটির লভ্যাংশ গ্রহণের পর ইউনিটমূল্য কমে গেছে অনেকটাই।
কী বলছেন পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা
লোকসান হতে থাকলেও বিষয়টি নিয়ে বিনিয়োগকারী বা পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে খুব একটা ভাবনা আছে- এমন প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
মাসুম জামান নামে একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লভ্যাংশ ঘোষণার পরে দর সমন্বয় হয়ে থাকে। ফান্ডামেন্টাল ভালো এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে লভ্যাংশ গ্রহণের পরে শেয়ারটি ধরে রাখলে দর ফিরে পাওয়া যায়। খুব বেশি সময় লাগে না। তবে পচা শেয়ার হলে সেটা বছরও লাগতে পারে।’
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না থাকার কারণে ভালো লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও দর কমছে। নগদ লভ্যাংশের পরে খুব বেশি দাম কমে না। বরং ভালো লভ্যাংশ দিলে বাড়তেও দেখা যায়। বিনিয়োগকারীরা এই মুহূর্তে ক্যাপিটাল গেইন করতে পারছেন না। তবে ডিভিডেন্ড গেইন করে শেয়ারটি ধরে রাখলে আবারও দর ফিরে পাবে শেয়ারগুলো। তখন ক্যাপিটাল গেইন করতে পারবেন।’
নগদ লভ্যাংশের ক্ষেত্রে দর সমন্বয়েও বিনিয়োগকারীদের খুব বেশি লোকসান দেখছেন না পুঁজিবাজারের রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ রশিদ লালী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নগদ অথবা বোনাস, উভয় ক্ষেত্রেই প্রাইস অ্যাডজাস্ট হয়। ক্যাশ ডিভিডেন্ড হলে কম হয়, স্টক হলে বেশি হয়। তবে কোম্পানির কোনো স্পেসিফিক গ্রোথ থাকলে দর বাড়ে, সেটা ভিন্ন বিষয়। তবে অ্যাডজাস্ট হবেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘লভ্যাংশ ঘোষণার পরে একটা বিক্রয় চাপ আসে। বোনাস শেয়ার হলে সেটা আরও বেশি হয়, তখন সমন্বয় হয়। তবে সমন্বয়ের পরে দর সেখানে থাকে না। রিগেইন হয়ে যায়। তবে আমাদের বাজারের কোনো কিছুই পূর্বানুমান করা যায় না।’
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য