চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অটোরিকশা চালকের মারধরের পর শিক্ষার্থীরা একটি অটোরিকশা আটক করলে তাদেরকে আবার মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির কর্মীরা।
নেতাকর্মীরা জানান, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন মোটরসাইকেল নিয়ে এক নম্বর রেল ক্রসিংয়ে যান। এ সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে তার মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগে। ওই চালককে সাবধানে সিএনজি চালাতে বললে চালকের সঙ্গে আরাফাতের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অটোচালক আরাফাতকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জিরো পয়েন্ট ফটকে তালা দেয় সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। একই সঙ্গে রেলক্রসিং থেকে একটি অটোরিকশা জব্দ করে নিয়ে আসে।
বিষয়টি জানতে পেরে ক্যাম্পাসের সিএনজি চালক ও স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং ও এক নম্বর গেটে অবস্থান নেয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরা শিক্ষার্থীদের মারধর করে।
বাংলা বিভাগ ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তানভির আহমেদ শরীফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না জিজ্ঞেস করার পর রেল ক্রসিং এলাকায় আমাকে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বিনা কারণে মারধর করে।’
শহর থেকে টিউশন করে ফিরছিলেন প্রাণিবিদ্যা ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্য ভট্টাচার্য। তাকেও মারধর করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ফেইসবুক গ্রুপে নিশাত তাবাসসুম মারধরের কয়েকটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘ইফতারের ঠিক কিছুক্ষণ আগে আমার বন্ধু এক নম্বর থেকে আসার সময় সিএনজি চালকেরা আগের দিনের ঝামেলার জের ধরে পিটিয়েছেন। কোনোমতে মাথা ও কপাল বাঁচিয়ে আসা গেছে।
‘সিএনজি চালকেরা এক নং গেটে আজকে যাকে পেয়েছেন তাকেই পিটিয়েছেন বেধড়ক। অন্য একজনের মাথা ফেটে রক্তারক্তি অবস্থা। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদেরকে আসলে কী ভাবা হয়? লোকাল মানুষ যা পারবে করবে, প্রশাসন কিছু বলবে না?’
এ ঘটনায় ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা মো. ইলিয়াস বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে হবে, তারপর পড়ালেখা। না হলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে।’
এরপর পৌনে ১০টায় ফটকের তালা খুলে দেয়া হয়। পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, স্থানীয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আগামী শনি ও রোববার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম জানান, আগামী শনিবার ও রোববার বৈঠক হবে। শনিবার সকালে ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মিলে বসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেছে। শনিবার দুপুরে সিএনজির মালিক এবং রোববার সিএনজি চালকদের সঙ্গে বৈঠক হবে।
আরও পড়ুন:দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।
সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।
টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।
এমন পরিস্থিতিতে সকালে উন্মুক্ত করে দেয়ার পর রাতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে রোববারের তুলনায় সোমবার সকালে যানবাহন কম দেখা গেছে। বাসের সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হাসিবুল হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।
‘মোটরসাইকেল যেহেতু বন্ধ রয়েছে, তার জন্য চাপ অনেকটা কমে গেছে। আসলে আমাদের একটা আবেগের ব্যাপার, যার জন্য গতকাল এই চাপ দিচ্ছিল। আর দুর্ঘটনা ব্যাপারটা আমরা আপনাদের থেকে শুনেছি।’
আরও পড়ুন:মাগুরা সদরের আঠারখাদা ইউনিয়নের আলীধানী গ্রামের নবগঙ্গা মধ্যপাড়ার পান্নু মোল্লা মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তা কাঁচা। কিন্তু তাতে তার যতটা না ভোগান্তি ছিল, সেটা আরও বেড়ে গেছে রাস্তার উন্নয়নকাজের পর।
পান্নু মোল্লা বললেন, ‘বাড়ির সামনে রাস্তাডা ভালোই ছিল। বৃষ্টিতে পানি হোক, তাও একটা কায়দা করে চলতাম। মাটির রাস্তা হলিও শক্ত আছে। কাদা হতো না।
‘আর মাটি ফেলিছে দেহেন কিরাম। উঁচু ঢিবি হয়ে গেছে। কাদা যাতে না হয় সে জন্য মাটি ফেলিছে। কিন্তু মাটি সমান করে যায় নাই। ইউনিয়ন পরিষদে বললাম যে এই মাটির ঢিবিতে বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিছে। সমান করেন। তারা বলে, আর কাজ হবে না। টাকা নেই বলে কাজ হবি না। এহন কাদা তো হইছেই, সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হতি লাগে কষ্ট। এরাম কাজ করার মানে কী বুঝলাম না।’
এক মাস ধরে এমন ভোগান্তি পান্নু মোল্লার। মাঠে কাজে যেতে কষ্ট হয়। কেউ দেখার নেই।
ইউনিয়ন পরিষদে কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের কাজের টাকা অর্ধেক সময়ে এসে ফেরত চলে যাওয়ায় মাগুরা জেলা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নে গ্রামীণ উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।
ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২২ অর্থবছরের প্রকল্পের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেরিতে ছাড় হওয়ায় সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। দেশের অধিকাংশ ইউনিয়নে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এই অর্ধেক কাজকে ভোগান্তি হিসেবে দেখছেন। মাগুরা সদরের আঠারখাদার মধ্যপাড়ায় একই এলাকার কৃষক নসিম জানান, ‘সামনে পাটের সময়। তাহলে এ রকম উল্টাপাল্টা কাজ করার দরকার কী? অর্ধেক মাটি ফেলে আমার বাড়ির সামনে উঁচু ঢিবি বানাই রাখছে। বৃষ্টির পানি গড়ায় বাড়ির ভেতরে যায়। আগে তো এটা হতো না। মাটি কোনো রকম ফেলে তারা চলে গেছে।’
একই ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি ক্লাবসংলগ্ন মাটির রাস্তাটিও এক পাশে উঁচু তো অন্য পাশে নিচু। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি ছিল বেলে মাটির। সেটাই ভালো ছিল। কিন্তু এখন মাটি ফেলেছে এক পাশে, সমান করেনি। তাই অর্ধশতাধিক পরিবার এই পথ দিয়ে যেতে পারে না। হাঁটু কাদা পেরিয়ে শিশুরা স্কুলে যায়। তাদের ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায়। এমন কাজ তাদের দরকার নেই বলে জানান গ্রামবাসী।
সদরের ১৩টি ইউনিয়নেই এমন কমবেশি খারাপ পরিস্থিতি। আগের বছরগুলোতে নারী কর্মী দিয়ে কাজ করা গেলেও এবার অর্ধেক কাজ হয়েছে দায়সারাভাবে। এই কর্মসূচির নিয়মিত এক নারী শ্রমিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তাড়াহুড়ো করে কাজ করানো হয়েছে এ বছর। কোথাও দুই দিন, কোথাওবা এক দিন মাটি ভরাট করার কাজ তারা করতে পেরেছেন। তবে ঠিকমতো টাকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। আর বছর শেষে কাজ শুরু হলে আবার কিছু উপার্জন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সদরের হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘এলাকার রাস্তার পাশে মাটি ভরাট কাজ পুরো সম্পন্ন হয়নি। কোথাও কোথাও থেমে আছে। বলা যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হলেও পুরো কাজ শেষ হওয়া দরকার। গত অর্থবছরের ২০ দিনের কাজ শেষে হয়েছে। এরপর আর বরাদ্দ আমরা পাইনি। বর্ষা মৌসুমে এই কাজগুলো শেষ হলে ভালো হয়। না হলে রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে।’
জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৪০ দিনের কাজ আসে বছরে দুইবার। এবার শুনেছি অর্থ বরাদ্দ ২০ দিনের হয়ে আর আসেনি। এ জন্য ২০ দিনের কাজ করা হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় কাজ হয়েছে, সেসব স্থানে কাজ সমাপ্ত হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। আশা করছি জটিলতা অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান জানান, তার এলাকায় ২০ দিনের কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা টাকা পেয়ে গেছেন। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যতটুকু বরাদ্দ, ততটুকু উন্নয়ন হয়েছে। ৪০ দিনের কাজ ২০ দিনে হলে তো কিছু অপ্রাপ্তি থাকে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে বর্ষায় কাঁচা রাস্তা মেরামতের কাজ খুব প্রয়োজনীয়।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা আম্বিয়া বেগম শিল্পী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় পাওয়া গেছে অর্ধেক কাজের। ফলে বাকি ২০ দিনের কাজের অর্থ না আসায় পরিষদের এই কাজগুলো আর এগোয়নি। তবে এই অর্থবছরে আর টাকা বরাদ্দ হবে না। ২০২৩ অর্থবছরে কাজ শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নের আলমখারী বাজার এলাকায় পদ্মা সেতু নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক পোস্ট দেয়ায় দুই যুবককে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয়রা।
রোববার রাত সাড়ে ৮টায় পিটুনির ঘটনাটি ঘটে। এতে আহত ২৪ বছর বয়সী মাসুম রেজা হাজরাপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। আহত অপর ব্যক্তি ২৮ বছর বয়সী আকিদুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। এক বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে তিনি দেশে এসেছিলেন।
আহত মাসুম বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন আগে বন্ধু সমতুল্য আকিদুলের সঙ্গে শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া এলাকার খালের ওপর বাঁশের তৈরি একটি সাঁকোতে দুই বন্ধু সেলফি তুলি। সেই ছবি সম্প্রতি আমার বন্ধু তার নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশন দেয়া হয়- আমরা পদ্মা সেতুতে উঠেছি।’
মাসুম জানান, ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। ছবির সূত্র ধরে হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন আলমখারী বাজার এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে দুজনকে ডেকে নিয়ে যান।
পরে চেয়ারম্যান তাদের কাছে ছবির বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তারা জানান, ছবিটি অনেক আগে তোলা। আর ছবির ক্যাপশনের জন্য ভুল শিকার করে ক্ষমা চান তারা। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন মাসুম ও আকিদুলকে মারধর শুরু করে।
মাসুম আরও জানান, ছবিটি তার বন্ধু নিজের ফেসবুকে এমনভাবে পোস্ট করবে তা তিনি কখনোই ভাবেননি। মারধরের পর পরিবারের লোকজন তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
মাসুমের বাবা সুলাইমান বলেন, ‘আমার ছেলে এলাকায় খুব ভদ্র বলে পরিচিত। বন্ধুদের সঙ্গে কি ছবি তুলে কি লিখেছে তা নিয়ে এলাকায় হাতাহাতি হয়েছে। আমি দূরে থাকায় পরে জানতে পেরেছি। কারা মেরেছে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।’
অপর আহত যুবক আকিদুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের একটি নম্বরে বারবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন মুটোফোনে জানান, মারামারির বিষযটি তার জানা নেই। এমন ঘটনা তার কার্যালয়ে কখনোই ঘটেনি। তবে ফেসবুকে পদ্মা সেতু নিয়ে দুই যুবক কটূক্তি করেছেন বলে তিনি মর্মাহত।
মাগুরা সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, সদরের একটি গরুর হাটে মারামারির সংবাদ আমাদের জানা আছে। তবে পদ্মা সেতু নিয়ে এমন ঘটনার কোনো অভিযোগ তাদের কাছে নেই।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজার এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে কটূক্তির দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
গ্রেপ্তার ২১ বছর বয়সী রুমন সরকার রনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের আঞ্জু মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম। তিনি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করেন রুমন।
এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রোববার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় রোববার সন্ধ্যায় পৌর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সকালে গাইবান্ধার আদালতে রুমনকে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে বিক্রি নিষিদ্ধ ও সরকারি ওষুধসহ বাবুর আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার বিকেলে মেহেরপুর-কাথুলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইমন-ঈশান ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ওষুধসহ দোকান মালিককে আটক করা হয়।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসব তথ্য জানান।
৪৫ বছর বয়সী বাবুর আলী মেহেরপুর সদরের কাথুলি বাজার এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ কর্মকর্তা অপু সরোয়ার জানান, ইমন-ঈশান ফার্মেসিতে বিক্রি নিষিদ্ধ ও সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বিক্রির গোপন তথ্যে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সেখান থেকে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট টাপেন্টাডল ৩৬ পিস, গর্ভনিরোধকারী সরকারি ইনজেকশন স্বস্তি-১৫০ মিলি ১৯৪ পিস, ইন্ডিয়ান ভায়াগ্রা-১০০ মিলি ৭৫০ পিস ও সরকারি হাসপাতালের বিক্রি নিষিদ্ধ ওষুধের মধ্যে সেফিক্সিম-২০০ মিলি ২০০ পিস, সেফ্রাডিন-৫০০ মিলি ৫০০ পিস, এজিথ্রোমাইসিন-৫০০ মিলি ১০০ পিস, সিপ্রোফ্লক্সিন-৫০০ মিলি ৩০০ পিস জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাপেন্টাডল বিক্রির নগদ ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও নিষিদ্ধ এসব ওষুধসহ ইমন-ঈশান ফার্মেসির মালিক বাবুর আলীকে আটক করে মেহেরপুর সদর থানায় নেয়া হয়।
তার বিরুদ্ধে মেহেরপুর সদর থানায় তিনটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। সোমবার তাকে আদালতে নেয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা অপু সরোয়ার।
আরও পড়ুন:আগামী ২৭ জুলাইয়ের ভোটকে ঘিরে একটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ২৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পরে দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রার্থী তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
কোথায় কারা প্রার্থী
ঝিনাইদহ শৈলকূপায় চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন এম আব্দুল হাকিম আহমেদ।
দুটিটি পৌরসভার মধ্যে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মেয়র পদে হাবিবুর রহমান, ক্ষেতলালে সিরাজুল ইসলাম বুলুকে মেয়র পদে প্রার্থী করা হয়েছে।
ইউনিয়নের ভোটে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁওয়ে মতিউর রহমান, বাচোরে জীতেন্দ্র নাথ বর্মন, নন্দুয়ারে আব্দুল বারীর হাতে নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে রেজাউল করিম নান্নু, রামনাথপুরে শাহ্ মো. মোফাজ্জল হোসেন, পীরগঞ্জে নূরুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হোসেন আলী বাগছীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নে ইব্রাহিম ফারুক, টাঙ্গাইল সদরের কাতুলী ইউনিয়নে ইকবাল হোসেন, মাহমুদনগরে সাহাদৎ হোসেন, কাকুয়ায় বদিউজ্জামান ফারুকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নৌকা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে খুরশীদ আলম (মাসুম), মেঘচামীতে হাসান আলী খাঁন, আড়পাড়ায় আরমান হোসেন (বাবু) কে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।
মুন্সীগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নে সিরাজুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নে শাহ নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন নৌকা।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়ায় হাফিজুল ইসলাম জুয়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা (উত্তর) ইউনিয়নে আবুল খায়ের, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইলে আবু মুছা মজুমদার, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁওয়ে সৈয়দ মনজুর হোসেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরীতে হাসান মাকসুদ, চরআবদুল্যাহে কামাল উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর সদরের দিঘলী ইউনিয়নে সালাউদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন নৌকা।
রাঙ্গামাটি লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নে রকি চাকমাকে মার্কা তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার মোবারক আলী টিলার নারিশ্চা ছোট্ট খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ শাহ্ আলম শিলক ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মাইজপাড়ার ওমর ফারুক নঈমী জানান, এক ব্যক্তিকে হাতি আক্রমণ করেছে এমন খবর শুনে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন সেখানে শাহ্ আলমের মরদেহ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে হাতিটিকে পাওয়া যায়নি। পরে তারা দক্ষিণ থানার পুলিশকে খবর দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ‘হাতির আক্রমণে শাহ্ আলমের মৃত্যুর বিষয়টি আমি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পুলিশ মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে গেছে।’
রাঙ্গুনিয়া নারিশ্চা বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মিন্টু কুমার দে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত শাহ আলমকে আক্রমণের পর হাতিটি বনে চলে গেছে। পরিবারের আবেদন সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।’
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থল যাই। গিয়ে দেখি, নিহত ব্যক্তির মরদেহ নারিশ্চা এলাকার একটি খালের পাড়ে পড়ে আছে। সুরতহাল শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য