বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার আপিল শুনানি হাইকোর্টে ঝুলে আছে আট বছর ধরে। কবে নাগাদ এ মামলা হাইকোর্টের গণ্ডি পেরোবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। মামলাটির আপিল শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি হলেও এখনও সেখানেই থেমে আছে। একবার শুনানি শেষে মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায়ে গেলেও ওই পর্যন্তই। ফলে মামলাটি এখনও হাইকোর্টে শুনানির পর্যায়ে রয়ে গেছে।
বারবার আদালত পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রপক্ষ বারবার সময় চাওয়ায় এই দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, বারবার হাইকোর্টের বেঞ্চ পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে।
মামলাটির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দফা আদালত পরিবর্তন হয়েছে। এরপর আবার নতুন করে আদালত নির্ধারণ, আইনজীবীদের প্রস্তুতির জন্য সময় লাগছে। কেননা আদালতে বিচারক পরিবর্তন হলে বা বেঞ্চ ভেঙে গেলে মামলাটি আবার প্রথম পর্যায় থেকে শুরু হয়। মামলাটি যে বেঞ্চে ছিল সেই বেঞ্চের একজন বিচারক আপিল বিভাগে চলে গেছেন। সে কারণে বর্তমানে মামলাটি কোনো বেঞ্চে নেই। এখন প্রধান বিচারপতি নতুন করে যে বেঞ্চে মামলাটি দেবেন সেখানেই শুনানি হবে।’
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘মামলাটি ৩৭৫ বারের বেশি কার্যতালিকায় এলেও শুনানি সম্পন্ন হয়নি। এখন পর্যন্ত মামলাটি নতুন কোর্টের শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়নি।
‘আমি মনে করি, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধিকার খর্ব হচ্ছে। এই অনুচ্ছেদে বলা আছে- দ্রুত বিচার, এখানে আসামির ক্ষেত্রেও এবং যে ভিকটিম তারও অধিকার। এই দীর্ঘসূত্রতার ফলে উভয় পক্ষের অধিকার খর্ব হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলা করতে চায় না। তার কারণ এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ তেমন কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। এ জন্য তারা বারবার সময় নিচ্ছে। এভাবে বারবার সময় নেয়া সঠিক নয়, আইনসম্মত নয়।’
সর্বশেষ মামলাটি বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য ছিল। পরে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হলে নতুন করে হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন করা। ফলে মামলাটি এখন কোনো বেঞ্চে নেই।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। এরপর ওই বছরের ১৪ মার্চ চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ঠিক করা হয়। কিন্তু তারপর আর এগোয়নি। পরে আদালত মামলাটি কার্য তালিকা থেকে বাদ দেন।
দীর্ঘ সময় পর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে মামলাটি আরেকটি বেঞ্চে দেয়া হয়। ওই বেঞ্চের বিচারক পরিবর্তন হওয়ায় সেখানেও শুনানি হয়নি। এভাবে কয়েক দফা আদালতের বেঞ্চ ও বিচারক পরিবর্তন হয়ে অবশেষে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে যায়।
২০১৪ সালের ২৩ জুন বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন। রায়ে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ ৮ জনের ফাঁসি ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। অনাদায়ে আরো এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন মাওলানা তাজউদ্দিন, মওলানা আকবর হোসেন, মুফতি আব্দুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান ও মাওলানা আরিফ হাসান সুমন। এর মধ্যে পৃথক একটি মামলায় মুফতি আবদুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হাফেজ মওলানা আবু তাহের, মওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, হাফেজ মওলানা ইয়াহিয়া, মওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মওলানা আব্দুর রউফ ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন ও অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি নিয়ে হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতে শেষ হয়।
আরও পড়ুন:অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার তালেবুর রহমান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মেহের আফরোজ শাওনকে তার নিজ বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করার কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সম্প্রতি শাওনের রাজনৈতিক অবস্থান ও কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এরই মধ্যে আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিল ডিবি।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাটের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এতে বলা হয়, ‘ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
‘গত ছয় মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধংসযজ্ঞ হয়নি। গতকাল রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে, যার দুটো অংশ আছে।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘একটা অংশ হলো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন, শেখ হাসিনা তাদেরকে অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহিদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
‘দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি একই হুমকি-ধামকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে, সে ক্ষতে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব। সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।
‘জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা সরকার খতিয়ে দেখবে।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর গ্রামের মিয়া বাড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে, বেলা ১১টায় হামলা করা হবে। এতে লেখা হয়, ‘নোয়াখালীর বিপ্লবীরা, বুলডোজার নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। মার্চ টু কাউয়া কাদেরের বাড়ি! আজ বেলা ১১টা।’
সকাল থেকে সাংবাদিকরা বাড়ির সামনে অবস্থান করেন। বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক লোকজন বাড়িটি দেখতে আসেন।
ওই সময় বিক্ষুব্ধদের কাউকে বাড়ির ছাদ, বাড়ির ভেতর, আবার কাউকে বাড়ির সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের ‘কাউয়া’ ‘কাউয়া’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তারা বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র, ছাদের রেলিং ও সামনে থাকা পোড়া একটা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়িতে ওবায়দুল কাদেরের নিজস্ব কোনো ঘর নেই। যেটি আছে, সেটি তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কাদের মির্জার।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের একজন বলেন, “সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। সবাই ‘কাউয়া’, ‘কাউয়া’ স্লোগান দিচ্ছে।”
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. ফৌজুল আজিমকে কল করে পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে একই বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ওই সময় বাড়ির পাঁচটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় ফজলুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম ও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এ মামলায় আরও ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈকত ইলিয়াস কবির।
ভুক্তভোগী ফজলুর রহমান রাইগাঁ গ্রামের প্রয়াত ইউনুস আলীর ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রাইগাঁ গ্রামের শহীদুল ইসলাম (৫০), আবদুস সালাম (৬০), আবুল কালাম আজাদ (৫৫), আশরাফ (৪৫) ও আতুরা গ্রামের ইব্রাহিম (৬০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল দুপুরে মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ গ্রামে আবদুস সাত্তারের জমির পাশে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৮ থেকে ২০ জন ফজলুর রহমানকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈকত ইলিয়াস কবির জানান, ঘটনার দিনই ভুক্তভোগীর স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করলে পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরে সিআইডি আবার তদন্ত করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় আদালতে।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলার ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৯ আসামির মধ্যে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। বাকি ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। আর তিন আসামি রায়ের আগেই মারা যায়।
আরও পড়ুন:সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ফেরত দুই যাত্রীর লাগেজ তল্লাশি করে সাড়ে ১৭ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বর্ণের বার ও পিণ্ডগুলো যাত্রীদের লাগেজে করে আনা ফ্যানের ভেতরে ছিল।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও কাস্টমস কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে স্বর্ণের এ চালান জব্দ করেন।
ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা দুই যাত্রী আফতাব উদ্দিন (৩৬) ও সাঈদ আহমদকে (২৪) আটক করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে শারজাহ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করে। ওই সময় দুই যাত্রীর আচরণ সন্দেহজনক হলে তাদের লাগেজ তল্লাশি করেন সংশ্লিষ্টরা।
তল্লাশিকালে যাত্রীদ্বয়ের লাগেজের ভেতর ফ্যানের মধ্যে কৌশলে রাখা সোনার ১২০টি বার ও গোলাকার চারটি স্বর্ণপিণ্ড উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত সোনার ওজন প্রায় সাড়ে ১৭ কেজি বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর হাতিরঝিলের ওয়াপদা রোডের বাগিচরটেক এলাকায় মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে মোহাম্মদ সুমন (২৫) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন।
তিনি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া একটি দোকানের কর্মচারী।
গুরুতর আহত অবস্থায় যুবককে প্রথমে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এনে ভর্তি করা হয়।
সুমনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তার বোন ইভা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই ইন্টারনেটের লাইনম্যান। রাতে রামপুরা ওয়াপদা রোডের একটি চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ১০ থেকে ১৫ জনের একটি গ্রুপ হেলমেট পড়া চলন্ত মোটর বাইক থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ত্যাগ করে। এতে ভাইয়ের ডান পায়ের ঊরুতে গুলি লাগে।
‘পরে আমরা মুগদা হাসপাতাল নিয়ে যাই। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক ভর্তি দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার কুতুবপুর গ্রামে। বর্তমানে রামপুরা ওয়াপদা রোডের দুই নম্বর গলির একটি ভাড়া বাসায় থাকি আমরা।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘হাতিরঝিল থেকে এক যুবককে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে তাকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওহাবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নে বুধবার সকাল পৌনে আটটার দিকে অভিযান চালিয়ে নিজ গ্রাম মথুরাপুর বটতলার আনসার সরকারের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আবদুল ওহাব সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক পৌর মেয়র।
গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া একাধিক মামলার পলাতক আসামি ছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল পৌনে আটটার দিকে অভিযান চালিয়ে আবদুল ওহাবসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এই ঘটনায় আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়ার পর নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলা থেকে বাঁচতে আবদুল ওহাব নিজ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর পুলিশের সঙ্গে কথা অনুযায়ী নিজ এলাকায় ফজর নামাজের পর আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিজ এলাকা সুজানগর পৌরসভার মথুরাপুর হাই স্কুলের মাঠে আবদুল ওহাবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা করে গাড়ি থেকে আবদুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনায় পুলিশের আটজন সদস্য আহত হয়েছিলেন।
ঘটনার পরের দিন ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। সে সময় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য