পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি এসএস স্টিল ২০২১ সালের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে গত ২৫ নভেম্বর। এর মধ্যে ২ শতাংশ নগদ আর ৮ শতাংশ বোনাস।
কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট ছিল ১৫ ডিসেম্বর। পরের কর্মদিবসে দাম সমন্বয়ও হয়।
রেকর্ড ডেটে শেয়ারদর ছিল ২১ টাকা ৪০ পয়সা। ৮ শতাংশ সমন্বয়ে দাম দাঁড়ায় ১৯ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে ২০ পয়সা কমে লেনদেন শেষ হয় ১৯ টাকা ৬০ পয়সায়।
২০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার ঘোষণার কারণে বিনিয়োগকারীদের আসলে সেভাবে লোকসান হয়নি। তবে রেকর্ড ডেটের সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় পর গত ৫ এপ্রিল সেই বোনাস শেয়ার বাতিল করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার দিন শেয়ারটির দর ছিল ১৯ টাকা। এরপর তিন দিন পরপর দর পতনের সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হয়ে এখন দর ১৮ টাকা ১০ পয়সা।
নগদ লভ্যাংশ আর বোনাস লভ্যাংশের জন্য পৃথক রেকর্ড ডেট কেন? বিশ্বের আর কোথাও এমন নিয়ম আছে কি না আমার জানা নেই। একবারেই দুটির অনুমোদন হতে হবে। একই রেকর্ড ডেট থাকবে। একবারই দর সমন্বয় হবে।
এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা এখন ২ শতাংশ নির্ধারণ থাকায় এক দিনে শেয়ারটির দর কমার সুযোগ আছে ৩০ পয়সা। এই পরিমাণই কমেছে দর।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, দাম সমন্বয়ের পর সেই বোনাস শেয়ার বাতিলে বিনিয়োগকারীর যে আর্থিক লোকসান হলো, তার দায় কে নেবে?
পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দেয় দুই ভাবে। প্রথমত. নগদ, দ্বিতীয়ত. বোনাস শেয়ার।
কোনো কোম্পানি তার আয় বিনিয়োগকারীর মধ্যে বিতরণ না করে তা পুনর্বিনিয়োগ করে বোনাস শেয়ার দিতে পারে। বছরের পর বছর ধরেই এভাবে বোনাস দেয়ার কারণে পরিশোধিত মূলধন তথা শেয়ারসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় কমে যেতে পারে এবং একপর্যায়ে কোম্পানির লভ্যাংশ বিতরণের সক্ষমতা কমে যেতে পারে।
এ কারণে বছর দুয়েক ধরে বিএসইসি নগদ লভ্যাংশ বিতরণে কোম্পানিগুলোকে উৎসাহী করে আসছে, পাশাপাশি বোনাস শেয়ারের যৌক্তিকতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
কিন্তু এই যৌক্তিকতা যাচাই করতে মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে। আর বোনাস শেয়ার অনুমোদন হলে নতুন আরেকটা রেকর্ড ডেট দেয়া হচ্ছে।
স্টক ডিভিডেন্ড যদি বাতিল করতে হয়, তাহলে সেটা ঘোষণার দু-এক দিনের মধ্যেই করতে হবে। তার ওপর বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নেবেন, ওই শেয়ারটি তারা রাখবেন কি না। লভ্যাংশ ঘোষণার এতদিন পর এসে তা বাতিল করা হলে যারা শেয়ারটি ধরে রেখেছিলেন তারা কী করবেন?
এ কারণে এসএস স্টিলের বিনিয়োকারীদের মতোই অন্যদেরও লোকসানের একটি প্রক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর কারণ বিনিয়োগকারীরা সেভাবে সচেতন নয়, প্রথম রেকর্ড ডেটেই দাম সমন্বয় হয়ে যাচ্ছে।
আবার প্রথম রেকর্ড ডেটের পর দাম সমন্বয় হলে পরে বোনাস লভ্যাংশ বাতিলের পর আবার দাম কমছে। এতে দুবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা।
প্রিমিয়ার সিকিউরিটিজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নগদ লভ্যাংশ আর বোনাস লভ্যাংশের জন্য পৃথক রেকর্ড ডেট কেন? বিশ্বের আর কোথাও এমন নিয়ম আছে কি না আমার জানা নেই। একবারেই দুটির অনুমোদন হতে হবে। একই রেকর্ড ডেট থাকবে। একবারই দর সমন্বয় হবে।’
তিনি বলেন, ‘এজিএমে যদি পাস হয়ে যায়, তাহলে বিএসইসি অনুমোদন দেবে না- এমন কোনো বিধান দুনিয়ার কোথাও আছে? এখন বিএসইসির আইনে কী আছে তা তো জানি না। তারা একেকবার একেক কাজ করছে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘লভ্যাংশের বিষয়ে একটা রেকর্ড ডেট হলেই তো ভালো হয়।’
তিনি বলেন, বোর্ড মিটিংয়ের পরেই তো পরিচালকরা বিএসইসির অনুমতি চাইতে পারেন। এরপর এজিএম হোক। সে ক্ষেত্রে রেকর্ড ডেট একটা থাকবে। তা না হলে তো বিনিয়োগকারীর লোকসান হবে।
শাকিল রিজভী মনে করেন, দুবার রেকর্ড ডেটের কারণে কারসাজিও হতে পারে। কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘ধরুন, কোনো কোম্পানির পরিচালকরা জানেন বোনাস শেয়ার দেয়ার সক্ষমতা নেই তাদের। কিন্তু তারা ২৫ শতাংশ ঘোষণা করলেন। শেয়ারের দর বাড়ল। এরপর এসে সেটা বাতিল হয়ে গেল। লভ্যাংশ ঘোষণার পর পরিচালক বা অন্য কেউ বাড়তি দামে শেয়ার বিক্রি করে দিল। পরে বিএসইসি সেই প্রস্তাব বাতিল করল। আবার শেয়ারদর কমে গেল।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেবে তা আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষিত লভ্যাংশের বিষয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানায়।
লভ্যাংশ ঘোষণার ওপর ভিত্তি করেই বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, শেয়ারটি বিক্রি করবেন নাকি ধরে রাখবেন। ঘোষিত লভ্যাংশ মনঃপুত হলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারটি রেকর্ড ডেট পর্যন্ত ধরে রাখেন। কারণ রেকর্ড ডেট পর্যন্ত যার পোর্টফোলিওতে ওই শেয়ার থাকবে, তিনিই লভ্যাংশের দাবিদার হবেন।
রেকর্ড ডেটের পর শেয়ারহোল্ডারদের অংশগ্রহণে হয় বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম। সেখানেই লভ্যাংশ চূড়ান্ত হয়।
শাকিল রিজভী মনে করেন, দুবার রেকর্ড ডেটের কারণে কারসাজিও হতে পারে। কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘ধরুন, কোনো কোম্পানির পরিচালকরা জানেন বোনাস শেয়ার দেয়ার সক্ষমতা নেই তাদের। কিন্তু তারা ২৫ শতাংশ ঘোষণা করলেন। শেয়ারের দর বাড়ল। এরপর এসে সেটা বাতিল হয়ে গেল। লভ্যাংশ ঘোষণার পর পরিচালক বা অন্য কেউ বাড়তি দামে শেয়ার বিক্রি করে দিল। পরে বিএসইসি সেই প্রস্তাব বাতিল করল। আবার শেয়ারদর কমে গেল।’
বিএসইসির মুখমাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলছেন, এজিএমে অনুমোদনের পর তাদের কাছে লভ্যাংশ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার দিতে পারবে কি না, সেটি লভ্যাংশ ঘোষণার আগে বা রেকর্ড ডেটের আগে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেই পারে বিএসইসি।
মেট্রো স্পিনিংয়ের বোনাস বাতিলেও দুই দফা ক্ষতি
এসএস স্টিলের আগে মেট্রো স্পিনিং ঘোষিত ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ গত ৩ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে বিএসইসি।
গত বছরের ১০ অক্টোবর লভ্যাংশ ঘোষিত হয়। এই ঘোষণা পছন্দ হয়নি বিনিয়োগকারীদের।
পর্ষদ সভার দিন শেয়ারদর ছিল ৩০ টাকা ২০ পয়সা। এর পর থেকে দর কমতে থাকে। ৮ নভেম্বর রেকর্ড ডেটে দর ছিল ২৩ টাকা ৭০ পয়সা।
৩ ফেব্রুয়ারি বোনাস লভ্যাংশ বাতিলের আগে শেয়ারদর ছিল ২৫ টাকা ৫০ পয়সা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিদ্ধান্ত জানানোর পর ধারাবাহিকভাবে কমে ৭ মার্চ সেটি দাঁড়ায় ২০ টাকা ৯০ পয়সায়। বর্তমান দর ২১ টাকা ২০ পয়সা।
কেন অনুমোদন, কেন বাতিল, কারণ জানানো হয় না
এসএস স্টিল ও মেট্রো স্পিনিংয়ের বোনাস লভ্যাংশ কেন বাতিল করা হলো, তার কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে।
তবে গত ১০ ফেব্রুয়ারি জেনেক্স ইনফোসিসের এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ১০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার অনুমোদন করা হয়।
২২ ফেব্রুয়ারি সাইফ পাওয়ারটেকের প্রস্তাবিত ৬ শতাংশ ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ৮ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ অনুমোদন করে।
এরপর ৭ মার্চ আরডি ফুডের ৩ শতাংশ এবং প্যাসিফিক ডেনিমের ১ শতাংশ বোনাস শেয়ার অনুমোদন করে।
এসব লভ্যাংশ অনুমোদন কোন বিবেচনায় অনুমোদন করা হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।
লভ্যাংশ ঘোষণার এতদিন পর বাতিল কেন?
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্টক ডিভিডেন্ড যদি বাতিল করতে হয়, তাহলে সেটা ঘোষণার দু-এক দিনের মধ্যেই করতে হবে। তার ওপর বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নেবেন, ওই শেয়ারটি তারা রাখবেন কি না। লভ্যাংশ ঘোষণার এতদিন পর এসে তা বাতিল করা হলে যারা শেয়ারটি ধরে রেখেছিলেন তারা কী করবেন?
‘তারা তো লসে পড়বেন। একে তো লভ্যাংশ বাতিল করা হচ্ছে। তার ওপর লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে তখনই প্রাইস অ্যাডজাস্ট হয়ে শেয়ারের দাম কমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ রকম ভুক্তভোগী এক বিনিয়োগকারী টাঙ্গাইল থেকে আমাকে ফোন করেছিলেন। অনুনয় করে বলেছেন, যে আমরা কিছু করি।’
কী বলছে বিএসইসি
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে বোনাস অনুমোদন করা হয় না। কারণ দেখা গেছে, কোম্পানি শুধু বোনাসই দিয়ে গেছে। পেইডআপ বাড়াচ্ছে। ডাইলুটেড হয়ে হয়ে ইপিএস কমবে। এই সময়ে বোনাস বিক্রি করে করে টাকা নিয়ে যাবে। একসময় গিয়ে লস দেখাবে। এতে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারবেন না।’
বোনাস দিতে পারবে না এমন কোম্পানিকে কেন আগেই সতর্ক করা হয় না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আগে বলা যায় কীভাবে, ডিভিডেন্ড কত দেবে না দেবে সেটা আগেই জেনে গেলে ইনসাইডারের ঝামেলা হবে না?’
তিনি বলেন, ‘কমিশন লভ্যাংশ অনুমোদন না করলে আবারও রেকর্ড ডেট দিতে হবে। স্টকের ক্ষেত্রে রেকর্ড ডেট সেকেন্ড টাইম দিতে হয়। ভবিষ্যতে অ্যাক্টে কোনো পরিবর্তন আসে তাহলে সেভাবে হবে।’
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য