নিজ বাসার সামনে থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহরের মালতিনগরের বাসিন্দা জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে যায়। এখনও কোনো সন্ধান মেলেনি।
পেশায় ঠিকাদার জাহিদের আক্ষেপ, মামলা করতে চাইলে তাও নেয়নি পুলিশ। পরে চুরির ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হন তিনি। দাবি করেছেন, অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম উল্লেখ থাকায় চুরির মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু শহরের মালতিনগর এলাকাতেই দুই মাসে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) অন্তত পাঁচটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। একটিরও খোঁজ মেলেনি।
এদিকে বগুড়া সদর থানা পুলিশের দাবি, সদর উপজেলা মিলে চলতি বছরে মাত্র ১০টি বাইক চুরি হয়েছে। চুরির ঘটনা স্বীকার করলেও এক্ষেত্রে মামলা নথিভুক্ত করার কোনো রেকর্ড দেখাতে পারেনি তারা। বাইকগুলো উদ্ধারেও তেমন কোনো তৎপরতা নেই।
পুলিশ বলছে, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরির সিসি ফুটেজ তারা পেয়েছেন। কিন্তু কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। বাইরের চোর চক্র বগুড়ায় এসে মোটরসাইকেল চুরি করে চলে যাচ্ছে বলেই কাউকে ধরা সম্ভব হচ্ছে না, দাবি তাদের।
বাইক চুরির শিকার জাহিদ হাসানের ভাষ্য, যদি চুরি হয়, তবে মামলা কেন হবে না? আর মামলা যদি না নেয়, তবে এর প্রতিকার কী?
জাহিদ বলেন, ‘একটি মোটরসাইকেল কেনার সময় সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়। আবার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ দিয়ে নিবন্ধন করছে মোটরসাইকেল মালিক। যখন একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়, তাতে কারও কি দায় থাকবে না?’
জাহিদের ধারণা, তার মোটরসাইকেল চোর অন্য কোনো জেলায় নিয়ে বিক্রি করেছে। সেটি কিনে আরেক মানুষ ব্যবহার করছে। কিন্তু মামলা না থাকার কারণে এটি শনাক্তের কোনো চিহ্ন থাকছে না।
মালতিনগরের আরেক বাসিন্দা পরিবহন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রিপন জাহিদের প্রতিবেশী। গত ১৯ মার্চ তার বাড়ির সামনে থেকেও মোটরসাইকেল চুরি হয়। মোটরসাইকেলটির মালিক রিপনের জামাই একরামুল বিন নাছির। তিনি বগুড়ার রাডার স্টেশনে চাকরি করেন।
এই চুরির পর সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন রিপন। সেগুলো পুলিশকে দিয়েছেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
রিপন জানান, তাকেও থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেকটা ‘জোর জবরদস্তি’ করার পর পুলিশ অভিযোগ নিয়েছে।
রিপন বলেন, ‘দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আমার জামাইয়েরটা নিয়ে এলাকায় অন্তত চারটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। থানায় মামলা করতে গেলেও তারা নিতে চান না। কেন মামলা নেয় না তাও ঠিক করে বলে না পুলিশ!’
তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, ‘শহরে চোর ঘুরছে। কিন্তু সেটি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো মাথাব্যথা নেই। মামলা দিতে চাইলে নেয় না। জিডি করলে তার অগ্রগতি জানা যায় না। তাহলে নাগরিক হিসেবে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’
খোঁজ করতে গিয়ে আরও একজনের বাইক চুরির খবর পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তির নাম আব্দুর রশিদ। বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার বাসিন্দা। চাকরি করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঠনঠনিয়া ভাই পাগলার মাজার মসজিদ থেকে রশিদের বাইকটি চুরি হয়। সেদিন ছিল শুক্রবার। শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ার সময় আব্দুর রশিদ বাইকটি মসজিদের সীমানার ভেতরেই রাখেন। কিন্তু নামাজ শেষে দেখেন, এটি নেই!
থানায় গেলে পুলিশ আব্দুর রশিদকে আগে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। সেখানে এক কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে বিস্তারিত দেখে তাকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললে তখন থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
থানায় গেলে সেই একই কাহিনী। পুলিশ মামলা নিতে চায়নি। এক পর্যায়ে রশিদকে সাধারণ ডায়েরি করতে বলা হয়। পরে জিডি করলেও তার কোনো ফল আসেনি।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মোটরসাইকেল পাওয়ার আশা আমি এখনও করি না। তবে আমার মোটরসাইকেল ব্যবহার করে যদি কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়, তখন আমাকেই দায়ী করা হবে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই জিডি করেছি।’
তবে রশিদের বাইক চুরির ঘটনা জিডি করেই শেষ হয়নি। জিডি করে থানা থেকে বের হয়ে আধা কিলোমিটার পথ আসার পরই ঘটে আরেক ঘটনা।
রশিদ বলেন, ‘থানা থেকে বের হয়ে মফিজ পাগলার মোড়ে আসতেই আমার মোবাইলে একজন কল দেন। রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে আমার মোটরসাইকেলের নম্বর উল্লেখ করে বলেন, গাড়ি ফেরত চাই কি না। আমি যখন বললাম- ফেরত তো অবশ্যই চাই।
‘এ কথা শুনে মোবাইলের অপর পাশের ব্যক্তি ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু মোটরসাইকেল ফেরত পাওয়ার পর টাকা দেব বলতেই সম্ভব না বলে লাইন কেটে দেন সেই ব্যক্তি।’
বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশকে জানান আব্দুর রশিদ। পুলিশের পরামর্শে ওই নম্বরে তিনি নিজেই কল দেন। দিয়ে বাইকের ছবি চান। কিন্তু সেটিও সম্ভব নয় বলে কল কেটে দেন অপরিচিত ফোনদাতা।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘নম্বরটি ট্র্যাক করলে সিমকার্ডের মালিকের ঠিকানা রংপুর দেখায়। এরপর আর তার সঙ্গে কথা হয়নি।’
ক্ষতিগ্রস্ত এই তিন ব্যক্তির মোটরসাইকেল চুরির তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন বনানী ফাঁড়ির এসআই সাজ্জাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চুরির ঘটনায় আমরা সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলোতে যাদের দেখা গেছে; খোঁজ খবর করছি। কিন্তু কাউকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না।’
এ কয়টি ঘটনা ছাড়াও শহরের মফিজ পাগলার মোড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে মোটরসাইকেল চুরির খবর পাওয়া যায়। এ ছাড়াও মার্চ মাসে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। ১০ এপ্রিল আদালত চত্বর থেকে মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক আইনজীবীর মোটরসাইকেল চুরি হয়। এই চুরির সিসিটিভি ফুজেটও রয়েছে।
বগুড়া সদর থানায় মোটরসাইকেল চুরির পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান নেই বলে দাবি ওসি সেলিম রেজার। গত তিন মাসে ১০টি মোটরসাইকেল চুরির জিডি ও অভিযোগ পেয়েছে বলে জানান তিনি। তবে বাস্তবে এ সংখ্যাটি আরও অনেক বেশি বলে দাবি করছেন শহরের বাসিন্দারা। তাদের মতে, অনেকে চুরির পর থানায় অভিযোগ দেন না। এ জন্য মোটরসাইকেল চুরির সঠিক হিসাব পাওয়া দুষ্কর।
মামলা না নেয়ার বিষয়ে ওসি বলেন, ‘সাধারণত এমন হওয়ার কথা নয়। থানায় কেউ মামলা করতে আসলে সেটি গুরুত্ব নিয়ে গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া আছে।’
বগুড়ার এক থানার সাবেক ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মোটরসাইকেল চুরি তো হয়-ই। কিন্তু পুলিশ এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে চায় না। কারণ চুরির মামলা বেশি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি প্রকাশ পায়। এই দায় পুলিশ এড়াতে চায়।’
এদিকে সদর থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সাধারণত মোটরসাইকেল চুরি করে সোনাতলা উপজেলা হয়ে বাইরের জেলায় চলে যায় চোরচক্র। এ ছাড়া শিবগঞ্জ বা দুপচাঁচিয়া উপজেলা হয়ে চোরেরা জয়পুরহাটের হিলির দিকেও যায় বলে দাবি করেন তারা। কিন্তু জেলায় এই চোরচক্রের আশ্রয় বা মদদদাতা কারা সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
জানতে চাইলে মোটরসাইকেল হারানোর ঘটনায় মামলার পাশাপাশি উদ্ধারও হয় বলে দাবি করেন জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। তবে বগুড়া সদর প্রায় গত এক বছরে মোটরসাইকেল উদ্ধার হওয়ার কোনো খবর নেই।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মোটরসাইকেল হারিয়ে গেলে থানায় মামলা করতে হবে। শুধু মামলা করলেই হবে না, তা উদ্ধার করতে হবে। রাজশাহীতে রেঞ্জ মিটিংয়ে এসব নিয়ে কথা হয়েছে। মাসিক অপরাধ সভায়ও আলোচনা করা হয়।
‘প্রত্যেক থানায় মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি টিমকে এ কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
মন্তব্য