আগামী বাজেটে ধনীদের ওপর কর হার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। সেই সঙ্গে গরিবের নানা ধরনের ভাতা বাড়িয়ে কমপক্ষে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে জনতুষ্টির প্রকল্প না নেয়ার পরামর্শ দিয়ে বর্তমান ‘কঠিন সময়ের’ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের স্বস্তির জন্য ‘কল্যাণমুখী’ বাজেট করতে বলেছে সংস্থাটি।
আগামী অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেয় সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান সময়টি অত্যন্ত কঠিন। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ক্রমেই বাড়ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, নিম্ন আয়ের মানুষকে কীভাবে স্বস্তি দেয়া যায় সেটাই হওয়া উচিত আগামী বাজেটের মূল উদ্দেশ্য।’
কর কাঠামোতে পরিবর্তনের প্রস্তাব
বর্তমানে ধনী করদাতাদের জন্য সর্বোচ্চ কর হার ২৫ নির্ধারিত আছে। সিপিডি মনে করে, করোনা-পরবর্তী দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বদলেছে। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বড় করদাতাদের জন্য কর হার আগের মতো অর্থাৎ ৩০ নির্ধারণ করা উচিত।
করপোরেট করে বিভিন্ন স্তরের পরিবর্তে একটি স্তর নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি এবং এটি হবে ৩০ শতাংশ।
ঋণখেলাপি ও কর খেলাপির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে নতুন বাজেটে একটি পথ নকশাও দেখতে চায় সংস্থাটি।
ভাতা বাড়ানোর পরামর্শ
সমাজে যারা পিছিয়ে আছে তাদের মাঝে কীভাবে আয় বণ্টন নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছে সিপিডি। সংস্থাটি মনে করে, বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে বৈষম্য কমে আসবে।
এবার বাজেটে বয়স্ক, বিধবাসহ সব ধরনের ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। নিম্ন আয়ের মানুষদের সুরক্ষা দিতে খাদ্যসহায়তা ও নগদ অর্থ দেয়ার পরামর্শও দিয়েছে তারা। সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদও দেয়া হয়।
ভর্তুকির কাঠামোগত পরিবর্তনের তাগিদও দেয়া হয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, যাদের জন্য ভর্তুকি দেয়া হয় এর সুফল পায় না তারা। এ জন্য যেখানে যেখানে ভর্তুকি প্রয়োজন সেখানে দিতে হবে এবং তা নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
আরও যত পরামর্শ
প্রণোদনার কাঠামোতে পরিবর্তনের কথাও বলেছে সিপিডি। সংস্থাটি মনে করে, করোনাকালীন যেসব খাতে কর ছাড় বা অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তা এখন তুলে নেয়া উচিত।
দেশ থেকে টাকা পাচার রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের করা ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শও দিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে আমদানির ব্যয়ে চাপ কমাতে বিলাস পণ্যের আমদানি কাটছাঁট করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আয় বাড়াতে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের কথা বলেছে সিপিডি। প্রবাসী-আয়ে প্রণোদনা অব্যাহত রাখার কথাও বলেছে তারা।
সিপিডি মনে করে, ৬ মূল্যস্ফীতির হার সঠিক নয়। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যস্ফীতি হিসাব নির্ধারণের তাগিদও দিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে সিন্ডিকেশন, মজুত, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ও চাঁদাবাজিকে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘বাজার স্থিতিশীল রাখতে তদারকি আরও জোরদার করতে হবে।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শও দিয়েছে সিপিডি।
ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবও করা হয়েছে। অন্যদিকে অলাভজনক ও মৃতপ্রায় সরকারি প্রতিষ্ঠান ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া নৈতিকতাবিরোধী উল্লেখ করে এটিকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না বলেও মন্তব্য করে সিপিডি।
রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প নয়
এই প্রস্তাব দিয়ে সিপিডি বলে, নির্বাচন আসলে দেখা যায় রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রভাবিত হয়ে এডিপিতে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়নের সুফল সাধারণ জনগণের কাছে ঠিকমতো পৌঁছায় না। তাই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে অর্থনৈতিক বিবেচনায় আগামী বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্পকে প্রাধান্য দিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনের আগে এডিপিতে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এর ফলে উন্নয়নের সুফল সমভাবে মেলে না। এ বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। এমন প্রকল্প নিতে হবে যাতে অর্থনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়। জনতুষ্টির প্রকল্প নয় বরং অর্থনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আগামী বাজেট হতে হবে কল্যাণমুখী। নতুন বাজেটে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
পুঁজিবাজার উন্নয়নে সুশাসন ও নজরদারি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন সিপিডির ঊর্ধ্বতন গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
রাজস্ব সংগ্রহ লক্ষ্যভিত্তিক না হয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে করা উচিত বলে মনে করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:টানা পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমার পর একই প্রবণতা ছিল সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার। লেনদেন শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা বাকি থাকতে কোনো রকমে টেনেটুনে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ায় লেনদেন। কিন্তু পরের আধা ঘণ্টায় পাল্টে যায় পুরো চিত্র।
শেষ আধা ঘণ্টায় ২০০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের পাশাপাশি দিনভর সূচকের টানাটানির মধ্যে ১ ঘণ্টা টানা বাড়ল সূচক।
বেলা দেড়টার সময়ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট কম ছিল এবং তা ক্রমেই নিচে নামছিল। কিন্তু সেখান থেকে শেষ ১ ঘণ্টায় সূচক বাড়ে ২২ পয়েন্ট। আর আগের দিনের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট যোগ করে শেষ হয় লেনদেন।
বস্ত্র, সাধারণ বিমা, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারধারীরা হাসিমুখে শেষ করেছেন লেনদেন। শেষ পর্যন্ত যে ২৩১টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, তার মধ্যে একটি বড় অংশই এই তিন খাতের।
বস্ত্র খাতে ৫৯টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ৪৭টির দর, অপরিবর্তিত থাকে সাতটির দর, কমে পাঁচটির।
সাধারণ বিমা খাতের ৪১টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ৩৮টির দর, কমে দুটির আর একটির দর থাকে অপরিবর্তিত।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৩১টি কোম্পানির মধ্যে বাড়ে ১৯টির দর। অপরিবর্তিত থাকে চারটির দর আর দর হারায় আটটি কোম্পানি।
বেশ কয়েক দিন চাপে থাকার পর ব্যাংক খাতেও কিছুটা হাঁফ ছেড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এই খাতে তিনটি কোম্পানির দর হারানোর বিপরীতে বাড়ে ১৭টি। তবে দর বৃদ্ধির হার খুবই কম।
আর্থিক খাতে পাঁচটির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১১টির দর। এ ছাড়া প্রধান বাকি সব খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।
এদিন প্রবণতা বলতে আবার দুর্বল ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে অনেকটাই। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টানা ছয় বছর লোকসান দেয়ার পর চলতি বছর সামান্য মুনাফা দেখানো অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির পাঁচটিই হয় লোকসানি, ৯ টানা লোকসানের মধ্যে সামান্য মুনাফার মুখ দেখা কোম্পানি, যেগুলোর লভ্যাংশের ইতিহাস বেশ হতাশাজনক।
দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৭০০ কোটি ৭৬ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের চেয়ে ১০৬ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বেশি।
গত ১৬ জুন লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর পুঁজিবাজারে আশার সঞ্চার হলেও এর পরদিন থেকে প্রতিদিনই লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
দিনভর দেখা গেছে উত্থান-পতন। প্রথম ৪৮ মিনিটেই আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১০ পয়েন্ট সূচক হ্রাস পায়। পরবর্তী ২ ঘণ্টায় হারানো দর ফিরে পেতে থাকে শেয়ারগুলো। দুপুর ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত সময়ে সূচকে যোগ হয় ৩১ পয়েন্ট। তবে সেটা স্থায়ী হয়নি। আবারও দরপতনে সূচক থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে ৩ পয়েন্ট হারিয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রয় চাপে কিছুটা উত্থানে শেষ হয়েছে লেনদেন।
ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সিইও সুমন দাস বলেন, ‘ভলিউমটা অনেক কম হয়ে যাচ্ছে, লেনদেন ৮০০ কোটির নিচে ঘোরাফেরা করছে। প্রফিট গেইন, অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং মানি মার্কেট অনেক কঠিন হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা ঘটছে।’
দুর্বল কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘চাহিদা বাড়লে অনেক সময় দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। তবে ধারাবাহিক এমন দর বৃদ্ধি অবশ্যই সন্দেহজনক। এগুলোর পেছনে অনৈতিক কিছু ঘটা অস্বাভাবিক নয়। আর এমন দাম বাড়ার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও এটার পেছনে দৌড়ান।’
দর বৃদ্ধির শীর্ষে আবার দুর্বল কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের। ২০১৫ সালে ৪ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের পর আর লভ্যাংশের মুখ দেখেননি বিনিয়োগকারীরা। টানা ছয় বছর লোকসান দেয়ার পর চলতি বছর সামান্য মুনাফা দেখিয়েছে কোম্পানিটি।
গত ২১ জুন থেকে ধারাবাহিক দর বাড়ছে শেয়ারের। ওই দিন ২২ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়া শেয়ার আজ সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভু্ক্ত কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। এ নিয়ে টানা ১৪ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত বাড়ল মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর। গত ৮ জুন ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করে কোম্পানিটি।
রোববার ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পরদিন ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা।
এর পরেই ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি সোনারগাঁও টেক্সটাইলসের। গত পাঁচ বছরে লোকসানে থাকলেও ২০১৯ সালে ৩ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। আর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কিছুটা আয় দেখিয়েছে কোম্পানি।
আর্থিক সঙ্গতি ভালো না হলেও সাত মাস ধরে দর বাড়ছে সোনারগাঁও টেক্সটাইলসের। গত বছরের ২২ নভেম্বর ১৬ টাকা ৭০ পয়সায় শেয়ার লেনদেনের পর কিছুটা ওঠনামা করলেও ধারাবাহিক বেড়েছে দাম।
রোববার ৪১ টাকা বেচাকেনা হওয়া শেয়ার আজকে হাতবদল হয়েছে ৪৪ টাকা ২০ পয়সায়।
প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চার কর্মদিবস ফান্ডটির ইউনিট দর বাড়ল। ১৭ টাকা ১০ পয়াস থেকে হাতবদল হয়েছে ১৮ টাকা ৪০ পয়সায়। ২০০৯ সালে তালিকাভুক্ত হলেও ২০১৪ সাল থেকে ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিয়ে আসছে কোম্পানিটি।
দর বৃদ্ধির তালিকায় পরের স্থানেই রয়েছে আরেক মিউচ্যুয়াল ফান্ড সিএমপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ২০১৯ ও ২০২১ সালে মুনাফা হওয়া বিনিয়োগকারীরা যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ পেয়েছেন। তবে মাঝে ২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ৪৮ পয়সা লোকসানের কারণে ওই বছর কোনো লভ্যাংশ দেয়া হয়নি।
আগের দিনের মতো আজকেও দর বৃদ্ধির তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে সাভার রিফ্যাক্টরিজ। রোববার ২৩৪ টাকায় হাতবদল হওয়া শেয়ারের দর ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪৭ টাকায়।
১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনোদিন লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তারপরেও অজানা কারণে শেয়ারটির দাম অনেক বেশি।
দর বৃদ্ধির তালিকার সপ্তম স্থানে থাকা রহিমা ফুডের দর ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ২৭৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে।
গত ৫ বছরের মধ্যে তিন বছরই লোকসান দিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তনের পাশাপাশি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কোম্পানি জানায়, ট্রায়াল প্রোডাকশন শেষে কোম্পানি ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নারকেল তেল উৎপাদন ও বিপণন করবে। সঙ্গে সয়াবিন ও মাস্টার্ড অয়েল বোতলজাত ও বিপণনের কথা বলা হয়।
এরপর ৩১ মে ডিএসইর নিউজে আবার বলা হয়, ৩১ মে ট্রায়াল প্রোডাকশনের পরে কাজু বাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকিং এব দেশে-বিদেশে বিপণনের জন্য বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে কোম্পানি।
এ ছাড়া প্রাইম টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স ও মালেক স্পিনিং মিলসের দর ৫ শতাংশের বেশি বেড়ে যথাক্রমে ৩২ টাকা ৬০ পয়সা, ১৪৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং ৩০ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফরচুন সুজ লিমিটেড। শেয়ারটির দর ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ ৯৩ টাকা ৩০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন ৪৩৯ বারে কোম্পানিটির ২ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এমারেল্ড অয়েল লুজার তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ৯০ পয়সা বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা পেপার প্রসেসিং লুজারের দর ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ১.৯৮ শতাংশ কমেছে। শেয়ারের ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ১৭৩ টাকা ৫০ পয়সা।
দর পতনের শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানি হলো- বিডি মনোস্পুল পেপার, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, ফাইন ফুডস, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কস ও সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওয়ালটন হাইটেক। দর কোম্পানিটির শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
বেক্সিমকো সুকুক বন্ডের দর ৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট।
ব্র্যাক ব্যাংক সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ০৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
এ ছাড়া রেনাটা, ইউনাইটেড পাওয়ার, পূবালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইউনিক হোটেল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে গ্রামীণফোনের কারণে। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমিয়েছে বার্জার পেইন্টস। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ।
বিকন ফার্মার দর ১ দশমিক ১৫ শতাংশ দর কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ১৮ পয়েন্ট।
এ ছাড়া রবি, আইসিবি, আইপিডিসি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ব্যাংক ও ফরচুন সুজের দরপতনে সূচক কিছুটা কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি কমিয়েছে ১৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন:দেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৩০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছে পদ্মা ব্যাংকসহ ৪৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
ঢাকার তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের করবী হলে সোমবার সকালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী ও পরিচালকরা অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পক্ষে অনুদানের অর্থ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
পদ্মা ব্যাংকের পক্ষে অনুদানের চেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের হাতে তুলে দেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী তারেক রিয়াজ খান।
ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। পশ্চিমা বাধা উপেক্ষা করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোতে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে রাশিয়া।
এমন পরিস্থিতিতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর এই প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি।
রোববারের মধ্যে রাশিয়ার ১০০ মিলিয়ন ডলার শোধ করার কথা ছিল।
ঋণখেলাপ এড়াতে সংকল্পবদ্ধ ছিল রাশিয়া- এমনটাই জানিয়ে ক্রেমলিন বলছে, ‘এটি রাশিয়ার মর্যাদার ওপর আঘাত।’
রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে, রাশিয়ার কাছে অর্থ রয়েছে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য দেশটি অর্থ প্রদান করতে ইচ্ছুক। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের অর্থ প্রদান করা অসম্ভব করে তুলেছে।
রুশ অর্থমন্ত্রী এন্তোন সিলুয়ানভ এই পরিস্থিতিকে একটি প্রহসন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার। এদিকে রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ করে দৈনিক ১ বিলিয়ন ডলার আয় করছে।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী সিলুয়ানভ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর কোনো বৈদেশিক ঋণ নেবে না রাশিয়া।
শেষবার রাশিয়া বৈদেশিক ঋণখেলাপি হয়েছিল ১৯১৮ সালে। বলশেভিক বিপ্লবের সময় নতুন কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিন রুশ সাম্রাজ্যের ঋণ পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিলেন।
১৯৯৮ সালেও দেশটি একবার অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলেও সে সময়ও দেশটির বৈদেশিক ঋণখেলাপ হয়নি।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক ব্যাংকিং সিস্টেম সুইফট থেকে ছিটকে পড়ে রাশিয়া। সে সময়েই রাশিয়ার ঋণখেলাপি হওয়া অনিবার্য বলে মনে ধরে নেয়া হচ্ছিল।
ইউক্রেন আক্রমণের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে রাশিয়া ডিফল্টের একটি অনিবার্য পথে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
রাশিয়া প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি রপ্তানি করছে এবং ভবিষ্যতে তাদের ঋণ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:যানবাহনের প্রচলিত অ্যাসিড ব্যাটারির মেয়াদকাল ছয় মাস থেকে এক বছর। এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। অথচ একটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি চলে পাঁচ থেকে ছয় বছর। এটি যানবাহন চালানোর খরচ কমিয়ে দেয়। পরিবেশও বাঁচায়।
এমন দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারির থ্রি হুইলার বাজারে আনছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘বাঘ মোটরস’। আগামী জুলাইয়ে উৎপাদনে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি জানান, দেশে এটি হবে প্রথম ইকো থ্রি-হুইলার ট্যাক্সি। এর নাম রাখা হচ্ছে ‘বাঘ’। গাজীপুরের নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের তেলের বিকল্প নিয়ে ভাবতেই হবে। শুধু থ্রি-হুইলারই নয়, আগামী তিন বছরে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহনও যুক্ত হবে বাঘ মোটরসের বহরে।’
গত মার্চে এ বাহনটিকে চলাচলের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। উচ্চ নিরাপত্তা ফিচার, কম খরচ ও উন্নত প্রযুক্তির এই গাড়ির দাম ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাঘ মোটরস জানিয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলেও তাদের থ্রি হুইলারে তেমন গরম অনুভূত হয় না।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘বাঘ মোটরস প্রথম কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি নিজস্ব প্যাটেন্ট দিয়ে, নিজস্ব ডিজাইনে নিজস্ব প্রকৌশলে দেশে গাড়ি উৎপাদন করছে। বর্তমানে দেশে অন্যরা যেসব গাড়ি উৎপাদন করছে, সেগুলো প্রযুক্তিসহ সব কিছুই অন্য দেশের। এখানে শুধু উৎপাদন হচ্ছে। আর আমাদের পেটেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছুই নিজস্ব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ পরিবহন শতভাগ পরিবেশবান্ধব, কোনো দূষণ নাই, সৌরশক্তিতে চলে, গ্রিন এনার্জি ব্যবহার হয়। এমন হাজারটা কারণ আছে, যাতে মানুষ আমাদের এই বাঘ ইকো মোটরসের ইকো ট্যাক্সি ব্যবহার করবে।’
অ্যাসিড ব্যাটারির কারণে দেশে প্রায় ২ কোটি লিটার অ্যাসিড নির্গত হয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। ফলে বিদ্যুৎচালিত যানবাহন উৎসাহিত করার সময় এসেছে।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই ইকো থ্রি-হুইলারের ডিজাইন-ড্রইং করে পেটেন্ট করেছি। এটা পৃথিবীর প্রথম সোলার ইকো থ্রি-হুইলার, যেটা লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে চলে। এটির পারমিশন পেতে আমাদের প্রায় ৩০ মাস সময় লেগেছে।’
এটির দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একটা সিএনজি অটোরিকশার দাম এখন প্রায় ১৮ লাখ টাকা, সেখানে আমরা একটা ইকো থ্রি-হুইলার ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় দিচ্ছি। আমাদের একটা ব্যাটারি ৬ বছর পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয় না। প্রচলিত যেসব অ্যাসিড ব্যাটারি আছে, ছয় বছরে সেখানে ১২টি ব্যাটারি প্রয়োজন হয়।’
২০২০ সালের এপ্রিলে বাঘ মোটরস ১১টি যান তৈরি করে। ডুয়াল পাওয়ার-ব্যাটারি এবং সৌরচালিত এ থ্রি-হুইলারে যাত্রীর নিরাপত্তায় বেশ কিছু ফিচার যুক্ত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে যাত্রীর সিটের সঙ্গে ‘প্যানিক বাটন’ রাখা রয়েছে। এই বাটনে চাপ দিলে গাড়ির গতি মুহূর্তেই ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটারে নেমে আসবে। এরপর ২০ মিনিটের জন্য গাড়িটি অচল হয়ে যাবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সতর্কবার্তাও পাঠাবে। এতে কর্তৃপক্ষ ট্যাক্সির কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় করতে পারবে।
এতে থাকবে নিরাপত্তা ক্যামেরা, যা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে যুক্ত থাকবে। সব ধরনের ভিডিও রেকর্ড ও সংরক্ষণ থাকবে সার্ভারে। থাকবে এমবেড করা রিয়াল-টাইম জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম, যা থ্রি-হুইলারের রিয়াল-টাইম অবস্থান দেখাবে। চুরি ঠেকাতে থাকবে আলাদা প্রযুক্তিও।
গাড়িগুলোতে উচ্চমানের ইস্পাত ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সাধারণত বাস-কারে ব্যবহৃত হয়।
জসিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গাড়ি শতভাগ মেটাল বডির তৈরি। পুরো বডিই মোটরগাড়ির মতো করে তৈরি, যা যাত্রীকে অধিক নিরাপত্তা দেবে। ব্রেক ও লাইট ছাড়া পুরো গাড়ির দুই বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি থাকবে। গাড়িতে ওয়াইফাই সিস্টেম থাকবে, মোবাইল চার্জিং সিস্টেম থাকবে, জিপিএস থাকবে, মনিটর থাকবে।’
২০২৫ সালের পর বিশ্বে কোনো ডিজেলচালিত গাড়ি তৈরি হবে না। ২০৩০ সাল থেকে তৈরি হবে না কোনো অকটেন গাড়িও। সব গাড়িই বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে পরিণত হবে।
নিজস্ব রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে একটি ট্যাক্সি সার্ভিস হিসেবে কাজ করবে এই ইকো ট্যাক্সি। এর বাইরে ব্যক্তিগতভাবেও এটি কেনা যাবে।
সাধারণ সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলার এবং হিউম্যান-হলারের চেয়ে বড় চাকা থাকবে বাঘ ইকো ট্যাক্সিতে। পাশাপাশি অ্যান্টি-লক ব্রেক সিস্টেম (এবিএস)-সহ একটি হাইড্রোলিক ব্রেক সিস্টেমও থাকবে। গাড়ির ছাদে থাকবে সোলার প্যানেল। এতে ব্যবহৃত একটি ৪৮০ ওয়াটের সোলার প্যানেল দিনের বেলায় ৪০ শতাংশ চার্জ হবে ব্যাটারিতে। যার ফলে অতিরিক্ত ৪০ কিলোমিটার যেতে পারবে গাড়িটি।
প্রতি কিলোমিটারে এটি চলার খরচ হতে পারে ১ দশমিক ৩৩ টাকার মতো। সম্পূর্ণ চার্জে ১৫০০ ওয়াটের গাড়িটি ৯০ কিলোমিটার চলতে পারে। এতে চালকের দিনে খরচ হবে ১২০ টাকা। ব্যাটারির চার্জ শেষ হলেও চিন্তা নেই। ৬০ ভোল্টের ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগবে।
বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব চার্জিং পয়েন্টও বসানো হবে। চার্জিং পোর্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-সহ একটি মাইক্রো চিপ ইনস্টল করা থাকবে। একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পোর্টটি খোলা হবে। গাড়ির মালিক নির্দেশ দিলেই চার্জ শুরু হবে।
আরও পড়ুন:প্রত্যাশা করা হয়েছিল, রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদের আগের মাস জুনেও বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে। কিন্তু তেমনটা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
এই মাসের ২৩ দিনের তথ্য রোববার প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনের ১ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১২৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে প্রতিদিন রেমিট্যান্স এসেছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। মাসের বাকি সাত দিনে এই হারে রেমিট্যান্স এলে দাঁড়াবে ১৬৭ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা হবে গত তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
গত ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। মার্চে আসে ১৮৬ কোটি ডলার।
গত ৩ মে মাসে দেশে রোজার ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদ সামনে রেখে এপ্রিলে ২০১ কোটি (২.০১ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, একক মাসের হিসাবে যা ছিল ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ঈদের পরের মাসেও মোটামুটি ভালোই এসেছিল। মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ (১.৮৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন তারা।
প্রতি বছরই দুই ঈদ সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসীরা। কিন্তু দুই ঈদের পরের এক-দুই মাস রেমিট্যান্স বেশ কম আসে। কিন্তু রোজার ঈদের পর মে মাসে তেমনটি হয়নি।
৯ অথবা ১০ জুলাই দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। সেই উৎসবকে কেন্দ্র করে জুন মাসে এপ্রিলের মতো ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করা হচ্ছিল। ১৬ দিনের (১ থেকে ১৬ জুন) তথ্যে তেমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছিল; ৯৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। কিন্তু পরের সপ্তাহে অর্থাৎ ১৭ থেকে ২৩ জুন এসেছে ৩২ কোটি ৬ লাখ ডলার। এই সাত দিনে গড়ে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
জুনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসতে হলে মাসের বাকি সাত দিনে (২৪ থেকে ৩০ জুন) প্রতিদিন ১০ কোটি ডলারের বেশি আসতে হবে; সেটা কখনই আসেনি দেশে।
২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছর বা বছরে আসা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে আসে ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসেছিল ১৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাস ২৩ দিনে (২০২১ সালের ১ জুলাই-থেকে ২০২২ সালের ২৩ জুন) মোট ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশের মতো কম।
বিদায়ী অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে রেমিট্যান্স কমার কারণ জানতে চাইলে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সে হঠাৎ যে উল্লম্ফন হয়েছিল, তার একটি ভিন্ন পেক্ষাপট ছিল। ওই বছরের পুরোটা সময় কোভিডের কারণে গোটা পৃথিবী বন্ধই ছিল বলা চলে। সে কারণে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোও বন্ধ ছিল। প্রবাসীরা সব টাকা পাঠিয়েছিলেন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে। সে কারণেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল।’
‘আমার বিবেচনায় বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আসলে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে এর চেয়ে বেশি যে রেমিট্যান্স এসেছিল সেটা আসলে হুন্ডি বন্ধ থাকার কারণেই এসেছিল। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবং কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি থাকায় এখন আগের মতো অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
‘এর পরও বিদায়ী অর্থবছরের সাত দিন বাকি থাকতেই সাড়ে ২০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্সকে আমি খুবই ইতিবাচক মনে করছি।’
টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মার্চে এসেছিল ১৮৬ কোটি ডলার।
ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় ওই মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমেছিল বলে জানায় ব্যাংকগুলো।
তবে মার্চে এই সূচকে ফের গতি ফেরে; ১৮৮ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। ওই মাসে ফেব্রুয়ারির চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুন মাসের ২৩ দিনে যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। আর পাঁচটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম নিম্নমুখি হওয়ার পর দেশেও কমানো হলো দাম। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যতটা কমেছে, সেই তুলনায় দেশে দাম কমেছে অনেকটাই কম।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা কমিয়ে করা হয়েছে ১৯৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে ১৮০ টাকা।
৫ লিটারের বোতলের দাম ঠিক করা হয়েছে ৯৮০ টাকা। অর্থাৎ ৫ লিটারের বোতলে প্রতি লিটারে দাম পড়ে ১৯৬ টাকা।
সোমবার থেকে এই দাম কার্যকর হবে।
রোববার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানায়।
অর্থাৎ তেলের দাম লিটারে কমেছে ৩ শতাংশেরও কম। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম ২৬ শতাংশের মতো কমেছে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব।
গত ৯ জুন বাজেট ঘোষণার দিন সব শেষ তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সেদিন লিটারে ৭ টাকা বাড়িয়ে বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয় লিটারে ২০৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৮৫ টাকা।
এক বছর আগেও বোতলজাত তেলের লিটার ছিল ১৩৪ টাকা করে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তা নির্ধারণ করা হয় ১৬৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকার রাজি না হলে সেদিন থেকে বাজারে সরবরাহে দেখা দেয় ঘাটতি।
এরপর সরকার ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিক্রির ওপর থেকে ভ্যাট পুরোপুরি আর আমদানিতে ৫ শতাংশ রেখে বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেয়। পরে গত ২০ মার্চ লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৬০ টাকা।
সেদিন পাঁচ লিটারের বোতল ৭৯৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৭৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের দাম ১৪৩ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এরপর ৫ মে তেলের দাম লিটারে এক লাফে ৩৮ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ১৯৮ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ক্রমেই বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই পড়তির দিকে।
ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাব গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানায়। তারা জানায়, বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দাম ২৬ শতাংশ কমেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৯ সালে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ৭৬৫ ডলার। ২০২০ সালে দাম ছিল ৮৩৮ ডলার এবং ২০২১ সালে সয়াবিনের টনপ্রতি দাম ছিল ১ হাজার ৩৮৫ ডলার।
চলতি বছরের মার্চে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম হয় ১ হাজার ৯৫৬ ডলার। এপ্রিলে তা কমে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম হয় ১ হাজার ৯৪৭ ডলার। আর বর্তমানে টনপ্রতি ১ হাজার ৪৬৪ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ এক মাসে তেলের দাম কমেছে ২৬ শতাংশ।
তবে যে হারে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে কমানোর ক্ষেত্রে এতো কমহারে সন্তুষ্ট নয় ভোক্তারা। এ বিষয়ে ভোক্তাদের জন্য সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান কিছুটা নাখোশ বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘হ্রাসকৃত হারটি আরও বাড়তে পারতো। আশা করি সরকার দাম কমানোর এই হারটি পুনর্বিবেচনা করবেন। একইভাবে ডলারের দাম উঠা-নামায় যাতে তেলের মূল্যে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে সে জন্য সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।’
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম কমেছে ২৬ শতাংশের মতো। এর বিপরীতে দেশে সয়াবিনের দাম কমেছে মাত্র ৩ শতাংশ।
তেলের দাম কমানোর এই হারে সন্তুষ্ট নন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘আশা করি সরকার দাম কমানোর এই হারটি পুনর্বিবেচনা করবে। একইভাবে ডলারের দাম উঠামা যাতে তেলের মুল্যে তেমন কোনো প্রভাব ফেরতে না পারে সে জন্য সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।’
দাম এত কম কমল কেন- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সয়াবিন আমদানি হয়ে থাকে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো দূরপ্রপাচ্যের দেশগুলো থেকে। ওই সব বাজার থেকে তেল আনতে ৪০ থেকে ৫০ দিন সময় লাগে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে তার প্রভাব পড়তে দেরি হয়। আবার দেশে যখন কমে আসে তার সুফল পেতে না পেতেই দেখা যায় আন্তর্জাতিকবাজার আবারও বেড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার দাম কম হারে কমানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে ডলারের দামে অস্থিরতা। আগে এক ডলারে যে টাকা পাওয়া যেত, এখন তার চাইতে আরও বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর প্রভাব এই তেলের মূল্যে পড়েছে। ফলে দাম আশানুরূপ হারে কমানো সম্ভব হয়নি।’
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আগামীতেও তেলের দাম হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়ে সরকার নজর রাখবে বলেও জানান সচিব।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া, টোল প্লাজা, নদীশাসনসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল দেশীয় প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। স্বপ্নের এই সেতুর ৫টি প্রকল্পের ৩টিই করেছে বাংলাদেশের নির্মাণ শিল্পের পথিকৃৎ এই প্রতিষ্ঠানটি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরলসভাবে যুক্ত ছিল একমাত্র দেশীয় প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। ঐতিহাসিক এই যাত্রায় জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়নের গর্বিত অংশীদার প্রতিষ্ঠানটি। পুরো প্রকল্পে সেতুর গুনগত মান ঠিক রাখতে প্রায় এক কোটি আমেরিকান ডলার খরচ করে জার্মানি থেকে দুটি মেশিন নিয়ে আসার পাশাপাশি অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতেও আব্দুল মোনেম লিমিটেড বিনিয়োগ করেছে।’
আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন মোনেম বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৫টি প্রকল্পের ৩টিই করেছি আমরা। এই প্রকল্পে একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে গিয়ে আমরা আমাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও একবার নিশ্চিত হয়েছি। ভবিষ্যতে দেশের আরও যেকোনো বড় প্রকল্পে আরও দক্ষতার সাথে অবদান রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করে।’
আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য এবং জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জনের গর্বিত অংশীদার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য